somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অসাধারনদের সরকারের অসাধারন এক অর্থমন্ত্রী

০৩ রা জুন, ২০১৭ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমাদের একজন অর্থমন্ত্রী আছেন যিনি-

* ব্যাংক লুটেরাদের ধরেন না বা ধরার যোগ্যতা রাখেন না!
* শেয়ার মার্কেটের শেয়ার কারসাজি নিয়ে কুটোটি পর্যন্ত ছিড়তে পারেন না!
* এনবিআরকে দিয়ে কর আদায়ের ক্ষমতা রাখেন না কিন্তু কর দাতাদের উপর করের বোঝা চাপাতে সিদ্ধ হস্ত।
* সাধারন মানুষ ব্যংকে টাকা গচ্ছিত রেখে একটা সময় ভাল মুনাফা লাভ করত এখন সেই মুনাফা এক তৃতীয়াংশে এসে নেমেছে। আর সেই অবস্থায় আমাদের অর্থমন্ত্রী
চশমার ফাক দিয়ে চেয়ে বলেন, ব্যাংকে রাখলে এক হাজার আবার উঠালেও লাখে এক হাজার কেটে নেব?
এ যেন রবি ঠাকুরের “দুই বিঘে জমি’র সেই বাবু’র(!) মত কথা- “বুঝেছ উপেন? এ জমি লইব কিনে।” বাবু তো তাও কিনেই লইতে চাইছিলেন তবে আমাদের অর্থমন্ত্রী মহোদয় ও সব বেচা কেনার ধার ধারেন নি মুফতেই লইবেন বলে ঠিক করিয়াছেন। পাছে আওয়ামীলীগের গদি খানা উল্টে গেলেই বা তাহার কি? এরশাদের সময় ছিলেন আওয়ামীলীগের সময় আছেন, প্রয়োজনে বিএনপিতেও ঠাই লইবেন, তাহাতে সমস্যা কি?

আওয়ামী লীগ অর্থ মন্ত্রলায়ের দায়িত্ব দেয়ার মত মুহিত সাহেবের চেয়ে যোগ্য লোক খুঁজে পাচ্ছে না এটাই সত্য(!) আর সে কারনেই যে মন্ত্রী মহোদয় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে নিয়েছেন তা সহজেই অনুমেয়।

প্রসঙ্গত বাজেট প্রণয়নের অঙ্কটা বড় হলেই যে তা আদর্শ বা জনবান্ধব বাজেট হিসাবে পরিগণিত হবে বাজেটের ইতিহাস কিন্তু সে কথা বলে না। বাজেট হতে হবে সাধারণ মানুষের কল্যাণে। বাজেট ঘোষণার পর যদি মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যায় তাকে জনবান্ধব বাজেট হিসাবে গণ্য করা যায় না। অথচ মাননীয় অর্থমন্ত্রী বলছেন এই বাজেটই তাঁর জীবনের শ্রেষ্ট বাজেট। শ্রেষ্ট বাজেট বুঝি সাধারন মানুষের সাথে শ্রেষ্ট উপহাস করা?
হবে হয় তো। তবে অর্থমন্ত্রী মহোদয়ের চোখ দুখানা যে সর্বদাই সর্বহারা ‘উপেনদের’ দিকেই তাক করে আছে সে তো একটু আগেই বল্লাম।
এই সরকার যে আর এখন গন মানুষের নয় মাননীয় এবার সেটাও বুঝিয়ে দিলেন জোরে সোরে। এক লাখ টাকার মালিকেরা যথেষ্ট সম্পদশালী(!) মনে করে তিনি হুকুম জারী করে বসলেন, যে সব সম্পদ হীনেরা(কোটি পতি) সম্পদের অভাবে ব্যাংক লুট করে চলেছে তাদের লুটের ক্ষত সারাতেই কি না? সম্পদশালীদের (এক লাখ টাকার মালিক) গচ্ছিত সম্পদ থেকে ব্যাংকের মুলধন ঘাটতি মেটানোর ব্যবস্থা করতে হবে!

তার কোন গুণমুগ্ধ হয়ত এক্ষুনি এই বলে আমার দিকে তেড়ে আসবেন যে, তিনি এই ভাবে কথাটি বলেন নি। হ্যাঁ তা ঠিক, সরাসরি তিনি এমন কথা বলেন নি। তবে তিনি এটাও বলেন নি যে, ব্যংকের মুলধন ঘাটতির টাকা আর কতবার দিবেন বা ঘাটতি রোধ কল্পে তিনি কি করবেন? টাকাটা কিন্তু সাধারন মানুষের যা এভাবে দেয়ার ক্ষমতা জনগন সরকারকে দেয় নি।

আবগারী সুল্ক ধার্য্য করা হয় সেই পন্যের উপর। সরকার যে কোন কারনেই হোক যার বিস্তার রোধ করতে চান অর্থাৎ যা ব্যবহারে জনসাধারনকে নিরুতসাহিত করতে চায়। মাননীয় অর্থমন্ত্রী এটাও বলেন নি ব্যংকে টাকা গচ্ছিত রাখতে কি কারনে সরকার নিরুৎসাহিত করছে।

মাননীয় অর্থমন্ত্রী ব্যাংক লুটেরাদের দুর্বৃত্ত বলছেন না। তাদের শাস্তির ব্যাপারে কথা বলছেন না। কিন্তু যারা খেয়ে না খেয়ে এক লাখ টাকা বা তার বেশি আপদ কালীন সময়ের জন্য জমিয়ে রেখেছেন তাদেরকে সম্পদশালী বলে ঠিকই ঘোষণা দিয়ে দিলেন! সাধারন মানুষ টাকা যদি গচ্ছিতই না রাখে তাহলে তার অসুখবিসুখে বা যে কোন আপদে বিপদে সে কোথায় হাত পাতবে? কে তাকে সাহায্য করবে?

মন্ত্রী মশাই জানেন না, আধ পেটা খেয়েও সাধারন মানুষকে টাকা জমাতে হয়। আর আধ পেটা খেয়ে টাকা জমাতে কতটা কষ্ট সেটা সোনার চামচ মুখে দিয়ে জন্ম নেয়া মন্ত্রী মহোদয় কোনোদিনই উপলব্ধি করতে পারবেন না। আর পারবেন না বলেই এমন হুকুম জারী করতে পারছেন। আপনি সাধারন মানুষের সামান্য সঞ্চিত অর্থ থেকে যে হারে টাকা কেটে রাখতে চাইছেন ওটাকে মহাজনী সুদের থেকেও ভয়ঙ্কর তান্ডব বলে মনে হচ্ছে।
আপনি যদি বলতেন দশ লাখ টাকা বা তার থেকে বেশির কথা; আমরা ভাবতাম আপনি প্রকারান্তরে আভ্যন্তরিন বিনিয়োগকে উতসাহিত করতে চাইছেন। আপনি সেটা বললেন নি। আপনি চোখ রাখলেন বেশি সংখ্যক সাধারন মানুষের দিকে। তার মানে হল আওয়ামী সরকার এখন সাধারনের থেকে উর্ধে উঠে অসাধারন দের সরকারে পরিণত হয়েছে। আগামী নির্বাচনে সেই অসাধারনগন আওয়ামীলীগের বৈতরণী পার করে দেবে তো?
আবার এই মন্ত্রী মশায়ই একদা বলেছিলেন, “হলমার্ক কেলেঙ্কারি নিয়ে হইচই করার কিছু নেই। এমনকি তিন বা চার হাজার কোটি টাকা বড় অঙ্কের অর্থ নয়” প্রথম আলো ৩১ আগষ্ট২০১৩ তাহলে বিষয়টা কি দাঁড়াল?

গ্রামের অনেক ভাল মানুষদের দেখেছি নিজে যদি কখনো আপন জন কর্তৃক আক্রান্ত হতেন তাহলে বলতেন, ইয়া আল্লাহ্‌ তুমি এমন স্বজন শত্রুকেও দিও না। এখন আমাদেরও তেমনি ভাল মানুষদের মত বলতে ইচ্ছে করছে, ইয়া আল্লাহ্‌ বাংলাদেশের শত্রু রাষ্ট্রকেও তুমি এমন স্বজন দিও না!
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৩৬
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×