somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্র তার সেবায় সর্বোচ্চ মেধাবী সন্তানদের বেছে নিক

১২ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কদিন ধরে দেশে নতুন আন্দোলনের ঢেউ উঠেছে, 'কোটা সংস্কার করতে হবে'। আবার জেগে উঠেছে শাহবাগ। দাবী আদায়ের পাদপীঠ হয়ে ওঠা শাহবাগ আবার দেখতে পেল একটি দাবী নিয়ে স্বতঃস্ফূর্ত জনতার ঢল। কোটা নিয়ে এ দেশের মানুষের মধ্যে বহুদিন ধরেই চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল। কারণ এটা হচ্ছে একটি দেশে ঘোষিত বৈষম্য। যা হয়ত একটা সময়ের প্রেক্ষাপটে ভীষণ প্রয়োজন ছিল কিন্তু কালক্রমে তা হয়ে ওঠে মেধার অপচয় আর বৈষম্যের উদাহরণ।
'কোটা সংস্কার করতে হবে' দাবীটা যে শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের দাবী ছিল না তা আমরা বুঝতে পারি অসংখ্য অভিভাবকদের অশংগ্রহন থেকেই। সব থেকে লক্ষণীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের পরেই যারা সবথেকে লাভবান হতেন সেই মহিলাদের অংশগ্রহণ এই আন্দোলনকে বেগবান করতে অনন্য ভূমিকা পালন করেছে। পত্রিকায় প্রকাশিত খবর অনুযায়ী এই দাবীর সাথে একমত হয়ে অনেক মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরাও এতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছে। যা এই আন্দোলনকে যৌক্তিক ভিত্তি দিয়েছে। একটি পর্যায়ে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকেও এই দাবীর সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখেছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আমরা সব সময়ই দেখেছি সাধারণ মানুষের ইচ্ছাকে সমর্থন জানিয়ে যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে। এ ক্ষেত্রেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি।

তারই ফলশ্রুতিতে কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে গত রোববার থেকে চলা দেশব্যাপী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যেই বুধবার জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা পদ্ধতি তুলে দেয়ার ঘোষণা দেন।

তিনি বলেন, কোটা নিয়ে যখন এতকিছু, তখন কোটাই থাকবে না। কোনও কোটার দরকার নেই। কোটা পদ্ধতি তুলে দিলাম। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে সবাই চাকরিতে আসবে। আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রতিবন্ধীদের চাকরির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন থেকে চলমান আন্দোলন স্থগিত করার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
এই অবস্থায়, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান সংগঠনের নেতারা মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে । তাদের মতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি বিশেষ আন্তরিক। দেশের উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই নিয়েছেন।
তবে তারা চান মুক্তিযোদ্ধাদের যে সম্মান জাতির জনক দিয়েছেন, সেটা যেন তার কন্যার হাতে নষ্ট না হয়। তাদের মতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত পুনর্বহাল না করা হলে ’৭১-এ পরাজিত দলেরা জয়ী হবে। এটা তাদের ভূল ধারনা। কোটা পদ্ধতি তুলে দিলে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করা হয় না। মুক্তিযোদ্ধাদের যে সম্মান জাতির জনক দিয়েছেন সেটা চিরকাল অব্যাহত থাকুক এটা আমরা সবাই চাই। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া বীর সেনানীরা ও তাদের সন্তান সন্ততিরা বংশ পরম্পরায় ভাল থাকুক, স্বাচ্ছন্দ্যে থাকুক, সম্মানের সাথে বাঁচুক সেটা সবাই চায়। এ নিয়ে কারো মধ্যে কোন দ্বন্দ্ব নেই।
তাদের সুযোগ সুবিধা আরও বাড়িয়ে দেয়া হোক। তাদের বিভাগীয় শহরগুলোতে, প্রয়োজনে রাজধানীতে একাধিক ফ্ল্যাট দেয়া হোক। তাদের ভাতা দ্বিগুণ করে দেয়া হোক।
কিন্তু কোটা ভুক্ত করে চাকুরী কেন দিতে হবে? তারা চাকুরী নিবেন নিজেদের যোগ্যতায়। যাতে কেউ তাদের অনুকম্পা করা হয়েছে বলে ছোট করতে না পারে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত যুগান্তকারী। আজকের বাংলাদেশের প্রয়োজন মেধার সর্বোচ্চ ব্যবহার। এ দেশের মানব সম্পদকে পুরোপুরি কাজে লাগানো। এখানে আবেগ দিয়ে বিচার করলে চলবে না।
পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা যেতেই পারে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের স্বাচ্ছন্দ্যে রাখতেও রাষ্ট্র অনেক কিছু করতে পারে কিন্তু তাদেরকে এভাবে কোটা ভুক্ত করে মেধার অপচয় রাষ্ট্র করতে পারে না।

একজন বাবা তার সযত্নে গড়া প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করে যে কোন এক সন্তানের হাতে তুলে দেন না। কিংবা তুলনামুলকভাবে অযোগ্য হওয়ায় পিছিয়ে পড়া সন্তানটিকে এগিয়ে নেয়ার মানসে তার হাতে তার সযত্নে গড়া প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব তুলে দেন না।
বাবা দায়িত্বটি তুলে দেয়ার জন্য প্রথম থেকেই তার মেধাবী সন্তানটিকে
বেছে নেন। তাকে সেভাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন আর এক সময় সবথেকে যোগ্য তার সেই সন্তানের হাতেই প্রতিষ্ঠানটির দায়িত্ব তুলে দেন, যাতে তার প্রতিষ্ঠানটির উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি ঘটে। এবং তার সন্তানেরাও সবাই ভাল থাকেন। তাতে কেউ সে বাবাকে অবিবেচক বলে না বরং সুবিবেচক বলেই স্বীকার করে নেয়।
একই বিবেচনায় রাষ্ট্রও কি তার সেবায় সর্বোচ্চ মেধাবী সন্তানদের বেছে নেবে না? নাকি রাষ্ট্র কারো ব্যক্তিগত সম্পদ নয় বলে সে ক্ষেত্রে বিবেচনার পারদটা উল্টোমুখি হবে!
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই এপ্রিল, ২০১৮ দুপুর ১২:৫৭
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পরিণতি - ৩য় পর্ব (একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস)

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১২:২৮



( পরিণতি ৬১ পর্বে'র একটি মনস্তাত্ত্বিক রহস্য উপন্যাস ।)

তিন


আচানক ঘুম ভেঙ্গে গেলো ।

চোখ খুলে প্রথমে বুঝতে পারলাম না কোথায় আছি । আবছা আলোয় মশারির বাহিরে চারপাশটা অপরিচিত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইফতার পার্টি মানে খাবারের বিপুল অপচয়

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:৫৩



গতকাল সরকারি ছুটির দিন ছিলো।
সারাদিন রাস্তাঘাট মোটামুটি ফাকাই ছিলো। ভাবলাম, আজ আরাম করে মেট্রোরেলে যাতায়াত করা যাবে। হায় কপাল! মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখি গজব ভীড়! এত ভিড়... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×