somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কোরিয়ান মুভি রিভিউঃ ‘THE CHASER’

১৭ ই জুন, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রিভিউটির পরিচ্ছন্ন ভার্সন দেখতে ক্লিক করুনঃ এখানে

‘Na Hong-jin’ এর পরিচালনায় সাউথ কোরিয়ান এই মুভিটা সেরা সাউথ কোরিয়ান মুভির লিষ্টে তিন নাম্বারে আছে। মুভির প্লট একেবারেই ব্যাতিক্রম। আসলে মুভির প্লটের চাইতেও ব্যাতিক্রম হচ্ছে মুভির দৃশ্যপটের উপস্থাপন। মুভি শুরু হয়েছে ‘এম জং হো’ নামের এক পতিতা ব্যবসায়ী কে দিয়ে যে কিনা সাবেক এক্স ডিটেকটিভ ছিল। তাঁর ব্যবসা খারাপ যাচ্ছে কারণ তার অনেকগুলো মেয়ে ভেগে গেছে বা অন্য কেউ চড়া দামে রি সেল করে দিয়েছে। আসলে কি হচ্ছে সেই মেয়েগুলোর সেটার ব্যাপারে তার কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই। তাই সে এই বিষয়ে তদন্ত করতে নিজেই উঠে পরে লেগে যায়। এভাবে সে একদিন তার ভেগে যাওয়া একটা মেয়ের পরিত্যাক্ত গাড়ি দেখতে পায় শহরের আপ টাউনে। সে বুঝতে পারে এখান থেকেই সেই মেয়ে ভেগে গেছে। এরপর দেখাযায় নতুন এক কাষ্টমার ফোন করে মেয়ে চায়। কিন্তু শর্টেজ থাকায় সে মেয়ে সাপ্লাই দিতে পারে না। সে ফোন করে ‘মাই-জিন’ নামে তার আন্ডারে থাকা এক মেয়েকে যে কিনা অসুস্থ অবস্থায় তার ৭ বছরের মেয়েকে নিয়ে ফ্ল্যাটে কাৎরাচ্ছিল। মাই-জিন কে ফোনে চাপাচাপি করায় সে এক পর্যায়ে রাজি হয় কাষ্টমারের সাথে দেখা করার জন্য। এরই মধ্যে সেই শহরের মেয়রের মুখে এক আক্রমণকারী মানুষের গু মেলা মারে। এটা নিয়ে শহরের মিডিয়াতে তোলপাড় শুরু হয় যে পুলিশ মেয়রের প্রোটেকশন দিতে পারে না জনগনের প্রোটেকশন কি দিবে ? অন্যদিকে ঐ দালাল নাম্বার দেখে বুঝতে পারে যে তার নতুন কাষ্টমারের সাথে তার মেয়েদের মিসিং হওয়ার একটা যোগসূত্র আছে। কিন্তু তখন সে মাই জিনকে ফোন দিয়েও পায় না ট্রেস করতে। এদিকে তার লিঙ্কে থাকা পুলিশদের ফোন করেও সে কোনো গতি করতে পারে না। কারণ তখন শহরের পুলিশ মেয়রের ঘটনা নিয়ে ব্যস্ত। জং হো ব্যস্ত হয়ে পরে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করতে। আপ টাউনে খুঁজতে থাকে সেই কাষ্টমারকে...

এদিকে মাই জিন ঐ কাষ্টমারের বাসায় এসেই বুঝতে পারে কিছু একটা অস্বাভাবিক আছে। সে বাথরুমে আসার নাম করে মোবাইল করতে চাইলে মোবাইলের কোনো সিগনাল পায় না। আর বাথরুমে সে মানুষের মাথার মগজ দেখে বুঝতে পারে তার আসন্ন বিপদ সম্পর্কে।

...মাই-জিন কে বেঁধে সেই সিরিয়াল কিলার ‘ইয়ং মিন’ তার টুল ব্যাগ থেকে একে একে বের করে হাতুড়ি, বাটল, হুক... মাথার উপর বাটল রেখে আঘাতের দুইতিনবার চেষ্টা করে এক পর্যায়ে ভুলবশত তার নিজের হাতেই লেগে যায়। সে সরাসরি হাতুড়ি দিয়েই আঘাত করে মাইজিন কে। ঠিক সেই সময় চার্চের থেকে বাসার ইনকোয়ারিতে আসে দুই বৃদ্ধ। তাদেরকে খুন করে তাদের গাড়িকে অন্য কোথাও পার্ক করে রেখে আসার জন্য বের হয় ইয়ং মিন। পথের মধ্যে দালাল জং হো এর গাড়ির সাথে তার গাড়ি ধাক্কা খেয়ে যায়। জং হো গাড়ির থেকে নেমে ইয়ং মিন এর ফোন নাম্বার জানতে চায়। সে অপরাগত প্রকাশ করলে গাড়ির ইন্সুরেন্স দেখতে চায়। ইয়ং মিন তাও দেখাতে ব্যর্থ হলে জং হোর সন্দেহ জাগে তার বিষয়ে। সে কল করে দেখে তার সেই কাষ্টমারকে। ফোন বেজে উঠে ইয়ং মিনের পকেটে। ইয়ং মিন ভাগতে থাকে, জং হোও পিছনে ছুটতে থাকে। একসময় জং হো তাকে ধরে যখন তাঁর বাসায় নিয়ে যেতে চায় পথের মধ্যে দুইজনকেই আটক করে পুলিশ। পুলিশ স্টেশনে ইয়ং মিনেকে সবাই নির্দোশ ভাবে প্রথমার্ধে, কিন্তু তাকে যখন জিজ্ঞাসা করে আসলেই সে নারী গুলো পাচার করেছে কিনা ? সে তখন হেসে নির্বিকার ভাবে জবাব দেয় “না আমি তাদের মেরে ফেলেছি”

উপরের সব কিছুই ঘটেছে মুভি শুরু হওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে। মুভির দৈর্ঘ্য হচ্ছে পাক্কা দুই ঘন্টা। পরের ১ ঘন্টা ৪০ মিনিট যে কি দেখলাম সেটা আপনারা না দেখলে কিছুতেই বুঝাতে পারবো না। প্রতিটা মূহুর্তে আপনার ভিতরে কাজ করবে টান টান উত্তেজনা। সাধারণত দেখা যায় সিরিয়াল কিলাররা থাকে ঘটনার অন্তরালে। ট্রেস করতে করতেই মুভি শেষের দিকে চলে যায়। কিন্তু এই মুভিতে পুরো উল্টোটা ঘটেছে। সিরিয়াল কিলার ধরা পরে মুভির শুরুতেই, স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়ার পরও পুলিশ খুজে পায়না তার আস্তানা। আর কোরিয়ান আইন অনুযায়ী প্রমান ছাড়া ১২ ঘন্টার বেশী কাউকে আটক রাখা যাবে না।

পুরো মুভিতে তিনটি ঘটনা একটার সাথে আরেকটা জড়িয়ে যায় ঘটনার বেড়াজালে। একদিকে দালাল মাই জিনের ৭ বছরের মেয়েকে নিয়ে খুজতে থাকে 'মাই জিন' কে। অন্যদিকে মেয়রের মুখে গু মেলা মারা আক্রমণকারীর ঘটনা জড়িয়ে যায় সিরিয়াল কিলারের ঘটনার সাথে। আর স্বীকারোক্তিমূলক জবাব দেওয়া সিরিয়ালকিলারকে নিয়ে বিপাকে পরে পুলিশ ডিপার্টমেন্ট।

অবশ্যই অবশ্যই এবং অবশ্যই দেখার মতো একটা মুভি। এরকম আনপ্রিডিক্টেবল মুভি আমি আর একটাও দেখি নাই। আমার দেখা সেরা ১০ টা মুভির মধ্যে এটাকে অবশ্যই উপরে রাখবো।

অফটপিকঃ সদ্য ৪ টা ওয়েবসাইট খুলেছি আমি। এর মধ্যে ত্রিভকাল.কম একটি। যা কিনা আমরা ১৭ই অগাষ্ট লঞ্চ করবো একেবারেই ছোট পরিসরে। যাইহোক এই সাইটের এড থেকে উপার্জিত ৪ ভাগের ৩ ভাগ টাকা গরিব ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার জন্য দেওয়া হবে। তাই সাইটের একজন লেখক হওয়ার জন্য আপনার প্রতি বিনীত অনুরোধ রইলো। আর যদি না হতে চান তাহলেও সমস্যা নেই। আপনাদের শুভকামনাই আমাদের সামনের পথটাকে আরো মসৃণ করে তুলবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামায়াত শিবির রাজাকারদের ফাসির প্রতিশোধ নিতে সামু ব্লগকে ব্লগার ও পাঠক শূন্য করার ষড়যন্ত্র করতে পারে।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৪৯


সামু ব্লগের সাথে রাজাকার এর সম্পর্ক বেজি আর সাপের মধ্যে। সামু ব্লগে রাজাকার জামায়াত শিবির নিষিদ্ধ। তাদের ছাগু নামকরণ করা হয় এই ব্লগ থেকেই। শুধু তাই নয় জারজ বেজন্মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাওরের রাস্তার সেই আলপনা ক্ষতিকর

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:৫৯

বাংলা বর্ষবরণ উদযাপন উপলক্ষে দেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম আলপনা আঁকা হয়েছে কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম হাওরের ‘অলওয়েদার’ রাস্তায়। মিঠামইন জিরো পয়েন্ট থেকে অষ্টগ্রাম জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এই আলপনার রং পানিতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×