মুক্তবাজার অর্থনীতি'তে কোন আগ্রাসন নেই ? আগ্রাসন শুধু সাংস্কৃতিক লেনদেনে, আমাদের আদি পুরুষের কালচার না কি ধ্বংসের পথে ? 'পাখির' জন্য প্রান দিয়েছে আরো তিনটি পাখি। সিল্ভলেস আর হিপ্পি সাঁজে কেউ কেউ এগিয়ে এসেছেন আমাদের ক্যালচার উদ্ধার করতে যা ভারতীয়দের দখলে চলে গেছে !!
টেলিভিশন নিউজের কল্যাণে আমাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে এখন জাতিয়তাবাদের ঘুণ। আমরা এক্সট্রিম জাতীয়তাবাদী তাই ভারতীয় রুচিহীন সবকিছু এখানে বন্ধ করে দিতে হবে, রুচিহীনের তালিকায় পরেছে মেগাসিরিয়াল, শুধুই মেগাসিরিয়াল ! বাকী কোন কিছুই আগ্রাসন না ! কারন আমাদের এই সময়ের একটি বাংলা সিনেমা মানে একটি তামিল, একটি হিন্দি ও একটি ভোজপুরী সিনেমার মিশ্রণ !
মধ্যবিত্তদের বোকা বানানো বোকার বাক্স টেলিভিশন আসলে পরাজিত হয়েছে ভারতীয় চ্যানেলগুলোর সাথে কমপিটিশনে, তাদের আসল বানিজ্যিক সময়টিতে আগ্রাসী হয়ে হামলা করেছে ভারতীয় মেগাসিরিয়াল। আর সেই তালে তাল দিয়ে আমাদের দেশীয় বিজ্ঞাপনদাতারা হুমড়ি খেতে শুরু করেছেন ভারতীয়দের দাড়ে।
আমাদের টেলিভিশন ইন্ডাস্ট্রিতে লগ্নি করেছে দেশের বড় বড় কর্পোরেট হাউজ যাদের সাধ্যের মধ্যে ছিলো রিসার্চ ও অনুষ্ঠানের মানউন্নয়নের, কেউ কেউ চেষ্টাও করেছেন হয়তো তবুও পাল্লাদিয়ে পেরে উঠেনি। ২৪টি বেসরকারি চ্যানেল কেউই এমন কিছু উপস্থাপন করতে পারে নাই দর্শকদের কাছে; যা এদেশিও দর্শকদের নতুন কিছুর স্বাদ দিবে তারা জলসা থেকে বেরিয়ে এসে ৭১,৭২,৭৬ দেখবে।
পরাজয়টা আমাদের অক্ষমতা, নতুন চিন্তার আর উপস্থাপনের। আমাদের দেশের কিশোরী আত্নহত্যা করতে চায় দেব বাবুর জন্য, আমরা আরেফিন শুভ'কে দেবের মতন উপস্থাপনই করতে পারি নাই। আমাদের রনি;কে খুঁজে পায় মিরাক্কেল আর আমরা আক্কেলহীনের মতন তাকিয়ে তাকিয়ে দেখি।
আমাদের রুচির দীনতা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে তার নমুনা দেই; আমাদের সিনেমায় আর্ট বলতে স্রেফ শট টু শট কপি মিন করে, আমাদের গান মানে কপি, আমাদের নাটক মানে হিন্দি সিনেমার ছায়া তার মিউজিক ও তাদের থেকে সংগ্রহ করা !!
তারপরও একটা কথা থেকে যায় আমরা জাতীয়তাবাদী, তাই আমরা আমাদের মান উন্নয়নের চিন্তা বাদ দিয়েছি, আমরা অন্তর্জাতিক বাজারের কমপিটিশন কৌশলে
বাদ দিয়ে কোর্টের দাড়স্ত হয়েছি !!!! এই মুক্ত স্যাটালাইট যুগে এমন হীনমন্যতা সত্যি লজ্জার।
এখন দেশে প্রেমের দোহাই দিয়ে এই মানহীন গো খাদ্য অথবা ইভা রহমানের রবীন্দ্র সঙ্গীত দিয়ে বিনোদনের রুচি'কে ধর্ষণ করা হবে।