somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সিপ্পির পথে পথে

০৯ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



সিপ্পির প্ল্যান অনেক দিন ধরে মাথায় ঘুরছে।কিন্তু কিছুতেই ব্যাটে বলে মিলছেনা।এবারও যে হয়ে যাবে সেটাও এক ইতিহাস।কয়েকদিন ধরে পাহাড় আমাকে খুব করে ডাকছে।কিন্তু এই প্রচণ্ড গরমে কাউকে সঙ্গী পাচ্ছিনা।আমার মত কারও তো আর মাথার তাঁর সব ছিড়ে যায়নি!তাছাড়া গহীন পাহাড়ে একা যাওয়াটাও খুব একটা বুদ্ধিমানের কাজ না।আগে অনেকবার গিয়ে এই শিক্ষাই পেয়েছি আমি! হঠাৎ একটা সুযোগ আসলো।দু’দুবারের এভারেস্ট জয়ী মুহিত ভাই তাঁর পুরো টিম নিয়ে বান্দরবান যাচ্ছেন ক্লাবের মিটিং এ।নিজাম ভাইয়ের সাথে আগে থেকেই পরিচয় ছিল।ভাই বলল আমি চাইলে তাদের সঙ্গী হতে পারি।সেতু ভাই ও যেতে চাচ্ছে।আগের রাত উনারা মিটিং করবেন মিলনছড়িতে।ওখান থেকে পরদিন ভোরে আমাদের অভিযান শুরু হবে।আমাদের সিপ্পির প্ল্যানের কথা শুনে মাহি ভাই আর শাওনও যোগ দিতে চাচ্ছে আমাদের সাথে।

যাত্রা হল শুরু





পরদিন সূর্য্যি মামা জেগে উঠার আগেই আমরা প্রস্তুত হয়ে গেলাম।মাহি ভাই আর শাওনও এসে যোগ দিল।আমাদের ৫ জনের টিমের প্রথম গন্তব্য রোয়াংছড়ি।আগের রাতেই সি,এন,জি ঠিক করে রেখেছিলাম।যদিও বান্দরবান থেকে রোয়াংছড়ির বাস ছাড়ে প্রতি দের ঘণ্টা পর পর।ভাড়া ৬০ টাকা মাত্র।এক ঘণ্টাতেই পৌঁছে যাওয়া যায় এই ১৯ কিলোমিটারের দূরত্বটুকু।আমরা রোয়াংছড়ি পৌঁছাই ইলশে গুড়ি বৃষ্টি সাথে নিয়ে।রোয়াংছড়ি হোটেলে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে নিলাম।কিছু জরুরী তথ্য নিয়ে নিলাম হোটেল মালিক কলিম ভাইয়ের কাছ থেকে।এখানে বলে রাখি যারা রোয়াংছড়ি তে রাত যাপন করে পরদিন এখান থেকে যাত্রা শুরু করতে চান তাদের জন্য এখানে বেশ কয়েকটা ছোট বড় আবাসিক হোটেল আছে।

পেট বাবাজী আপাদত ঠাণ্ডা সারাদিনের জন্য।এখন আমাদের গাইড খুঁজে বের করতে হবে।আমরা এই রুটে সবাই নতুন।নিজাম ভাই যদিও সব ম্যাপ করে নিয়ে আসছে তবু নতুন রুটে গাইড থাকা ভাল।আমরা বাজারে খুঁজতে খুঁজতে একজন কে পেয়ে গেলাম।পলাশ তঞ্ছঙ্গা।পেশায় ছোট ব্যাবসায়ী।ঘুরতে পছন্দ করেন।বলতেই রাজি হয়ে গেলেন আমাদের সাথে যেতে।আমরা যে রুটে যাব বলে ঠিক করেছি তা তার নখদর্পণে।অনেক পাড়ায় আবার তার আত্মীয়ও আছে।একসাথে রথ দেখাও হল কলাবেচাও হল।আমাদের আগামী কয়েকদিনের বাজার করে নিয়ে আমরা বেড়িয়ে পড়লাম সিপ্পি অভিযানের পথে।
যাত্রা শুরু হতেই আমাদের চোখে মুখে একটা আনন্দের ঢেউ খেলে গেল।নতুন পাহাড়ের গন্ধ পেতে শুরু করলাম আমরা।এ এক অন্য নেশা।নতুন নতুন পাহাড় জয়ের নেশা।পাহাড়ের সুউচ্চ চূড়ায় নিজেকে দেখার নেশা।দুর্গম পথ কে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়ার নেশা।সেই গন্ধ গাঁয়ে মেখে আমরা নেমে আসলাম রাস্তায়।কিন্তু কোথায় কি!পাহাড়ে এসে আমরা পাহাড় বাইব এমনটাই হওয়ার কথা!আমরা শুরুই করলাম পাহাড়ের বুকে নির্লজ্জ কোদাল চালিয়ে বানানো রাস্তায়।এ এক ধ্বংসের খেলা।আজকাল যেদিকে যাই সেদিকেই পাহাড় কেটে রাস্তা বানানোর এই মহোৎসব চোখে পড়ে।জানিনা এতে কে বা কারা বেশি লাভবান হয়।অন্তত আদিবাসীরা কেউ এতে সুখি নয় তা আগে পরে অনেকের মুখেই শুনেছি। সাজানো রাস্তায় চলতে চলতেই আমাদের সামনে প্রথম পাড়া ব্যাঙছড়ি।খালের একপাশে পাড়া কে ফেলে আমরা ব্যাঙছড়ি বাজারে চলে এলাম।ততক্ষনে ঘণ্টা দুয়েক কেটে গেছে।কিছুক্ষন রেস্ট নিয়ে আর হালকা কিছু খেয়ে শরীর মন কে চাঙ্গা করে নিলাম।দুপুরের তপ্ত রোদে একটানা বেশিক্ষণ ট্রেকিং করা যায়না।শরীর কে বিশ্রাম দেওয়া খুব জরুরী

পাখির চোখে অংজাই পাড়া



বৃষ্টি থেকে বাঁচার অভিনব আবিষ্কার



এমন পথে অনন্তকাল ধরে চলা যায়



ব্যাঙছড়ি বাজার পার হয়ে সামনেই পেয়ে গেলাম অংজাই পাড়া।অংজাই পাড়ার নিচ থেকেই চমৎকার একটা ট্রেইল নেমে গেছে।হঠাৎ করে আমরা যেন কোন এক আদিম জনমানবশুন্য নির্জন প্রান্তরে নেমে আসলাম।দু’পাশে উঁচু পাহাড় আর সামনে বয়ে চলা ঝিরির টলটলে জলধারা আমাদের এমনই এক উত্তেজনায় নিয়ে যায়।ব্যাঙছড়ি ঝিরি ধরে কিছুক্ষন চলার পর আবার সেই কৃত্রিম রাস্তায় উঠতে হল।ঘণ্টা খানেক হাটার পর পেয়ে গেলাম দেবতা পাহাড়।অনেকে একে ৭ পরীর পাহাড়ও বলে।ভাল করে খেয়াল করলে দেখা যায় ওখানে ৭ টা চূড়া।যাদের ৭ পরী বলা হয়।এই পাহাড় কে নিয়ে অনেক কল্পকাহিনী প্রচলিত আছে।আমাদের মধ্যেও ৭ পরীকে নিয়ে রীতিমত কাড়াকাড়ি লেগে গেল মাহী ভাই আর নিজাম ভাইয়ের মধ্যে।প্রথমে নিজাম ভাই একাই ৭ পরী কে নিয়ে নিবে স্বার্থপরের মত।মাহী ভাই তা মানবে কেন!রীতিমত যুদ্ধ লেগে গেল।শেষে মাহী ভাইকে এক পরী দিয়ে ঠাণ্ডা করল।আমরা ৩জন নীরব দর্শক হয়ে শুধু দেখে গেলাম।

হঠাৎ ধেয়ে আসা মেঘদল



কিছুদূর এগুতেই হঠাৎ আকাশের চেহারা বদলে গেল।একটু আগেই উত্তাপের পশরা নিয়ে বসেছিল সে।উত্তপ্ত হয়ে যেন কিসের এক অজানা আক্রোশ ঢেলে দিচ্ছিল আমাদের ওপর।আমরা সিদ্ধ হচ্ছিলাম সেই আক্রোশে।এখন আবার সে ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেল।যেকোন সময় সমস্ত আকাশ ভেঙ্গে নিয়ে নেমে আসবে।সামনেই লুংলাই পাড়া দেখা যাচ্ছে।মনে হচ্ছে ওখানেই বিরতি নিতে হবে আমাদের।লুংলাই পাড়ার ঠিক আগে মস্ত এক বট গাছ পেয়ে গেলাম।আমাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্যই সে অপেক্ষা করছিল।আমাদের মত ক্লান্ত পথিক আশ্রয় নেয় তাঁর কাছে যুগ যুগ ধরে।পাড়া থেকে কিছু আম কিনে নিলাম খুব সস্তায়।একদম টাটকা ফরমালিন ছাড়া আম।আমরা সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লাম।কিন্তু বেরসিক বৃষ্টির তা একদমই পছন্দ নয়।বাধ্য হয়ে আমরা পাড়ার একটা বাড়িতে গিয়ে উঠলাম।কিছুক্ষন বসে বসে পাহাড়ের বৃষ্টি দেখলাম।এর মধ্যেই আমরা প্রস্তুতি নিয়ে নিলাম বৃষ্টিতেই বেরিয়ে পড়ার।কারন সময় নষ্ট করার মত সময় আমাদের হাতে নেই।এর মধ্যেই বৃষ্টি কমে আসছে।কিন্তু রাস্তার বারটা বাজিয়ে দিয়ে গেছে।এক হাঁটু কাঁদা সাথে ভয়াবহ রকমের পিচ্ছিল।এই রাস্তায় সাধে কি আর কেউ হাঁটতে চায়!আমরাও ঠেকায় পরে রাস্তায় নেমেছি।

মেঘে ঢাকা হাতি পাহাড়



মস্ত হাতিটা কি পরম মমতায় আগলে রেখেছে তাড়াছা পাড়া কে





বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ৪ টার দিকে আমরা এসে পৌঁছলাম তাড়াছা পাড়ায়।হাতি পাহাড়ের নিচে ছোট্ট একটা পাড়া।মনে হয় যেন হাতি পাড়াটির দেখভাল করার দায়িত্ব নিয়ে তার বিশাল দেহ দিয়ে আগলে রেখেছে ছবির মত সুন্দর এই পাড়াটি কে।এটা একটা ত্রিপুরা অধ্যুষিত পাড়া। যেকারনে একে অনেকে তারাছা/তাড়াশা ত্রিপুরা পাড়াও বলে।আমরা উঠেছি মনিলা কারবারির বাড়ি। ঘণ্টা দুয়েক বৃষ্টি মাথায় নিয়ে কাদায় গড়াগড়ি করে আপাতত সবাই ক্লান্ত।সবারই পেটে কিছু দিতে হবে নইলে আর শরীর চলেনা।নিজাম ভাই নিজেই দায়িত্ব নিয়ে নুডলস নিয়ে চলে গেল অন্ধরমহলে।কিছুক্ষনের মধ্যেই সুমধুর নুডলস প্রস্তুত।একটা ব্যাপার সবসময় দেখেছি যে পাহাড়ে গেলে যাই খাইনা কেন সবই অনন্য মনে হয়।এতো স্বাধের রান্না মনে হয় জীবনেও খাইনি।প্রতিবারই এমনটা মনে হয়।কেন এমন মনে হয় তা নিশ্চয় বোঝা যাচ্ছে।সারাদিন ট্রেকিং করে ক্লান্ত শরীরে যাই দেওয়া হোক না কেন তাই অমৃতসম।

এমন সবুজের সাথেই ছিলাম কটা দিন





শরীর,মনকে তৃপ্ত করে আবার নেমে পড়লাম রাস্তায়।অন্ধকার হতে এখনও বেশ বাকি।তার আগে যতটা সম্ভব এগিয়ে থাকতে চাই আমরা। সামনের কোন এক পাড়ায় আমরা রাত্রীযাপন করব।হাতি পাহাড়ের নিচ দিয়ে আমরা বেরিয়ে গেলাম।একটা অদ্ভুত ব্যাপার খেয়াল করলাম বৃষ্টি মাথায় পাহাড়ের পথে চলেছি অথচ অতি প্রিয় জোঁকের দেখা এখনও সেভাবে পাইনি।দূর থেকে দেখেছি কিন্তু শরীরে মোহনীয় স্পর্শের কোমলতা পাইনি।যাইহোক,সামনে আরও অনেক পথ বাকি।নিশ্চয় সে তার ষোলআনা শোধ করতে ঝাঁপিয়ে পড়বে।

দূরের পথে পায়ে পায়ে



বৃষ্টির পর আকাশ টা রক্তাভ লাল হয়ে আছে।যেন সমস্ত আকাশ জুড়ে আবীর মাখিয়ে দেওয়া হয়েছে সুনিপুণ হাতে।আকাশের এই রঙ টা আমার খুব পছন্দের।সূর্যাস্তের শেষ সময়ে অভিমানী আকাশ এমন হয়ে থাকে।লাল রঙা টগবগে ছাতা মাথায় আমরা অভিযাত্রী দল আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছি।সামনেই প্রতিক্যা পাড়া।আপাতত আমাদের গন্তব্য সেখানেই।এর বেশি বোধহয় আজ আর এগোনো যাবেনা।কত শত নিদ্রাহীন ঝিরি,আর সদম্বে আকাশ ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে থাকা পাহাড়ের দলকে পেছনে ফেলে আমাদের প্রথম দিনের অভিযাত্রা সফল সমাপ্তির পথে।ওই দূরে দেখা যায় মেঘের মধ্যে লুকিয়ে থাকা অনিন্দ্য সুন্দর এক গ্রাম,প্রতিক্যা পাড়া। এক খণ্ড সবুজের পিয়াসায় অতৃপ্ত মন আজ ওখানেই আশ্রয় গড়বে মেঘদলের সাথে,সবুজ ঘেরা পাহাড় সারির সাথে।

নিঃসঙ্গ অভিযাত্রী



আজন্ম সলজ্জ স্বাধ একদিন বৃষ্টিভেজা রাতে বৃষ্টির সাথে প্রেম করব এমন জুম ঘরে



প্রতিক্যা পাড়ার নাম হয়েছে মূলত কারবারির নাম অনুসারে।পাহাড়ের বেশিরভাগ পাড়াতেই তাই দেখেছি।আমরা যার বাড়িতে উঠেছি তার নাম প্রতিক্যা তঞ্ছঙ্গা।কাপড় চেঞ্জ করতে গিয়ে দেখি এংলেট এর ভেতর দুইটা জোঁক রক্ত খেয়ে অলস পড়ে আছে।বিনা বাঁধায় অনেক আদর করে যত্ন নিয়ে চুমু দিয়েছে বোঝাই যাচ্ছে।একদম ফুলে ঢোল হয়ে আছে।প্রথম দিনের বলে ওরা বেশ আদর যত্ন পেল আমার কাছে।মাহি ভাইয়ের স্পেশাল কেয়ারও পেল। বাকীরাও ২/১ টার দেখা পেয়ে ধন্য হয়েছে। পাড়ার পাশে তাড়াছা খালে গিয়ে কিছুক্ষন ঝাপাঝাপি করে সারাদিনের ক্লান্তি কে ওখানেই জমা দিয়ে আসলাম।ফ্রেশ হয়ে সবাই রান্না বান্নার প্রস্তুতিতে লেগে গেলাম।এতক্ষনে দুইটা মুরগী ধরে আনা হয়েছে।আজকে তাদের দিয়েই পেট পূজা হবে।সাথে অতি প্রিয় আলু ভর্তা আর পাশের অনন্ত জলরাশি থেকে কিছুটা ধার নিয়ে ডালের ব্যাবস্থাও হয়ে যাবে এক বালতি।তাতে আমরা মনের সুখে সাঁতার কাটব আর পেট ভরে,মনের সুখে ডিনার করবো।খুব জমবে বোঝা যাচ্ছে।
ভাত রান্নার সুকঠিন কাজটা আমিই নিলাম!এতো কঠিন কাজ সবাই পারেনা।দেখা গেল ভাত রাঁধতে গিয়ে অন্য কিছুও রেঁধে ফেলতে পারে।তাই আর রিস্ক নিলাম না।অন্য সহজ কাজ গুলো সবাই ভাগাভাগি করে নিল।মুরগীটা যথারীতি নিজাম ভাইয়ের দখলে।বেশি করে আলু দিয়ে নিজাম ভাই আবারও ফাটিয়ে দিয়েছে!অবশ্য বাড়িতে কেমন হয় তাতো আর পরখ করা হয়নি।ভাই এর আবার আলুর প্রতি বিশেষ দুর্বলতা।পারলে একাই সবআলুর দখল নেয়।কিন্তু আমরাই বা এই অন্যায্য দাবী মানবো কেন!তাই শেষে কাড়াকাড়ি টাও ভালই জমেছে।জম্পেশ ডিনার হল।আমি হলফ করে বলতে পারি এমন সুস্বাধু খাবার হোটেল সোনারগাঁ, রেডিশনেও রান্না হয়না।

কিছুটা বিশ্রাম বটের ছায়ায়



খাওয়া দাওয়া শেষে আকাশের দিকে তাকাতেও সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম।সমস্ত আকাশ জুড়ে শুভ্র আলোর ঝলকানি।প্রতিটা ইঞ্চি ইঞ্চিতে তারা’রা জায়গা নিয়ে বসে আছে।আজ সারা আকাশ ভরে আনন্দ নৃত্যে মাতবে তারাদের দল।এমন তারা ভরা আকাশ এই জীবনে খুব বেশিবার দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমার।ঘার উঁচু করে সেইযে তাকিয়েছি কিছুতেই আর নামাতে পারিনা।পরে আর না পেরে খোলা আকাশের নিচে শুয়েই পড়লাম উপুর হয়ে।প্রান ভরে তৃষ্ণা মিটাতে লাগলাম।ভেবে অবাক হই এতো তারাদের মিছিল হঠাৎ কত্থেকে এসে হাজির হল!সমগ্র আকাশের বুকে এক ইঞ্চিও মনে হয় খালি জায়গা নেই।এমন করেতো কখনও তাদের পাইনা!এমন উজ্জ্বল জ্বলন্ত আকাশের নিচে দাঁড়ালে মাঝে মাঝে বুকটা শুন্যতায় ভরে যায়।তখন খুব মরে যেতে ইচ্ছে করে।ইচ্ছে করে নিজেও এমন তারা হয়ে যাই। হঠাৎ মনে পড়ে গেল কাজী মোতাহার হোসেনের কাছে লিখা কবি নজরুলের একটি চিঠির কথা।যেখানে বিষণ্ণ,বিধ্বস্ত কবি আপন মনে শান্তনা খুঁজতে বেছে নিয়েছেন কাগজ,কলম।লিখেছেন অসাধারন এক চিঠি।ওখানেই কোন এক জায়গায় কবি বলেছেন,নিশুতি রাতের তারাগুলিকে কবি নামকরণ করেছেন ইচ্ছেমতন।আমারও খুব ইচ্ছে করছে এদের নাম দেই আমার মতন করে।কিন্তু আমার সে কষ্ট আর করতে হয়নি।দৃশ্যপটে মাহী ভাই এসে হাজির।উনি সপ্তর্ষি মণ্ডল থেকে শুরু করে একে একে আমাদের তারাদের অবস্থান বুঝিয়েছেন।অতিশয় ধৈর্য নিয়ে সবাইকে তারা চেনানোর এই সুমহান দায়িত্ব টা উনি সানন্দেই নিলেন।কিন্তু এতো শত তারাদের ভীরে মনে রাখাও খুব দুঃসাধ্য।আর তাছাড়া এতো তারার মিছিল দেখার ভাগ্যও আবার কবে হয় কে জানে!

সবুজের পথে,স্বপ্নের পথে অভিযাত্রীদল



তারা দেখতে দেখতেই পেছনে ডাক পড়ল।এবার ঘুমাতে যেতে হবে।ঘুমাতে যেয়ে যে গল্প শুনলাম পলাশ দা’র কাছে তাতে ঘুমের বাড়ি আর যাওয়া যাবেনা মনে হয়।এই পাড়ায় এবং এই বাড়িতে নিষিদ্ধ বাহিনীর অবাধ বিচরণ।তারা যখন খুশি আসে এবং খেয়ে দেয়ে চলে যায়।তবে সুখের কথা হল ওরা পারতপক্ষে কারও দিকে বন্দুক তাক করেনা।কেউ বেশি মাতব্বরি করতে গেলেই বিপদে পড়ে।আজ রাতে না হলেও কাল সিপ্পি যাওয়ার পথে তাদের সাথে দেখা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।কারন আমরা ইতিমধ্যে তাদের রাজত্বের মধ্যে প্রবেশ করেছি।এদিকে সেনাবাহিনী বা বিজিবির কোন ক্যাম্প নেই।তাই নিরবেই তারা এদিকে ঘুরে বেড়ায়।এক্ষেত্রে পরামর্শ হল সামনে পড়ে গেলে নিঃশব্দে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।ঘুম বাবাজী এবার তুমি আসো।


চলবে ....
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:১২
৫৬টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×