গতকালের দেয়া পোষ্টটাতে তো দারুন সাড়া পাওয়া গেছে। ৩ জনের লাইক, ১০ জনের শোকেজে, আর ১৫টি কমেন্টস রিপ্লাইসহ মোট ৩০টি। অবশ্য এর পেছনে কারণ হলো পোষ্টটি নির্বাচিত পাতায় যাওয়ার কারণে বেশী পাঠক পড়েছেন। ধন্যবাদ মডুকে।
তো আজ কথা না বাড়িয়ে সংক্ষেপে বাকিটুকু পোষ্ট করবো। তারপরের পোষ্ট সমুহে লিখিত ও ভাইবার সম্ভাব্য প্রশ্ন ও উত্তরগুলি দিয়ে দেবো। দোয়া করবেন সবাই।
স্মাকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্সঃ-
প্রার্থীকে নিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্সে উল্লেখিত তারিখ ও সময়ে নির্ধারিত পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহনের পর কৃতকার্য হলে মৌখিক পরীক্ষা এবং মৌখিক পরীক্ষায় কৃতকার্য হলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে হবে। কৃতকার্য প্রার্থীকে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য নির্ধারিত ফরমে নিম্নোক্ত কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট লাইসেন্সিং অথরিটিতে আবেদন করতে হবে।
১. শিক্ষানবীশ ড্রাইভিং লাইসেন্স (যেখানে পরীক্ষা পাশের রেকর্ড আছে),
২. জাতীয় পরিচয় পত্র/ পাসপোর্ট/ জন্ম নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি,
৩. পাসপোর্ট সাইজের তিন (৩)কপি রঙ্গিন ছবি,
৪. নির্ধারিত ফিঃ (পেশাদার-১৪৩৮/= টাকা ও অপেশাদার ২৩০০/= টাকা বিআরটিএ'র নির্ধারিত ব্যাংকে জমাদানের রশিদ,
৫. পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সে ক্ষেত্রে প্রার্থীর স্থায়ী ঠিকানার পুলিশ তদন্ত প্রতিবেদন।
উপরোক্ত কাগজপত্র ও প্রযোজ্য ফি সহ সংশ্লিস্ট অথরিটি বরাবর আবেদদাখিলে পর আবেদনকারীর বায়োমেট্রিক্স (ডিজিটাল ছবি, ডিজিটাল স্বাক্ষর আঙ্গুলের ছাপ) গ্রহন করে প্রাস্বীকার রশিদ প্রদান করা হবে। প্রাপ্তি স্বীকার রশিদ / এসএমএস এ যে তারিখ দেওয়া থাতোরিখ স্মার্ট কার্ড প্রদান করা হয়।
(আমার ধারণায় কেউ জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট এর কপি জমা দিলে তো আর পুলিশি ভেরিফিকেশন এর প্রয়োজন পরার কথা নয়। কারণ পাসপোর্টতো পুলিশি ভেরিফিকেশন এই হয়)। শুধু শুধু হয়রানি করা আর থানায় কিচু টাকা খাওয়ানোর জন্য এই নিয়ম চালু করেছে সংশ্লিষ্টরা)।
এরপরেও যদি পুলিশ ভেরিফিকেশন লাগে তবে তো বলতে হয় তারা পাসপোর্ট আর জাতীয় পরিচয় পত্র বিশ্বাস করেন না।
এবার নিন লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নোত্তরঃ-
প্রশ্ন ০১ঃ মোটরযান কাকে বলে?
উত্তরঃ মোটরযান হলো কোন যন্ত্রচালিত যান, যার চালিকাশক্তি বাইরের বা ভিতরের কোন উৎস থেকে সরবাহ করা হয়ে থাকে।
প্রশ্ন ০২ঃ গাড়ি চালনাকালে কি কি কাগজপত্র সাথে রাখতে হয়?
উত্তরঃ ড্রাইভিং লাইসেন্স, রেজিম্ট্রেশন সার্টিফিকেট (ব্লু-বুক), ট্যাক্স টোকেন, ইন্সুরেন্স সার্টিফিকেট, ফিটনেস সার্টিফিকেট (মোটর বাইকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়), রুটপারমিট (মোটরবাইক, চালক ব্যাতীত সর্বোচ্চ ৭ আসন বিশিষ্ট ব্যাক্তিগত/যাত্রীবাহী গাড়ীর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়)।
প্রশ্ন ০৩ঃ গাড়ি চালনার আগে করনীয় কাজ কি কি?
উত্তরঃ ১) গাড়িতে জ্বালানি আছে কি না তা পরীক্ষা করা, না থাকলে পরিমান মতো নেওয়া।
২) রেডিয়েটর ও ব্যাটারীতে পানি আছে কি না তা পরীক্ষা করা।
৩) ব্যাটারী কানেকশন পরীক্ষা করা।
৪) লুব/ইঞ্জিন অয়েলের লেভেল ও ঘনত্ব পরীক্ষা করা, কম থাকলে পরিমানমতো নেওয়া।
৫) মাষ্টার সিলিন্ডারের ব্রেকফ্লুইড, ব্রেকঅয়েল পরীক্ষা করা, কম থাকলে নেওয়া।
৬) গাড়ির ইঞ্জিন, লাইটিং সিস্টেম, ব্যাটারি, স্টিয়ারিং ইত্যাদি সঠিকভাবে কাজ করছে কিনা, নাট-বোল্ট টাইট আছে কিনা তা অর্থাৎ সার্বিকভাবে মোটরযানটি ক্রুটিমুক্ত আছে কিনা তা পরীক্ষা করা।
৭) ব্রেক ও ক্লাচের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা।
৮) অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ও ফার্ষ্ট এইড বক্স গাড়িতে রাখা। (এটা আমাদের দেশের গাড়িতে সাধারণত থাকে না। উন্নত দেশে মাষ্ট থাকতে হবে)।
৯) গাড়ির বাইরের এবং ভিতরের বাতির অবস্থা, চাকা (টায়ার কন্ডিশন, হাওয়া, নাট, এলাইনমেন্ট, রোটেশন, স্পেয়ার চাকা) পরীক্ষা করা।
১০) ইন্ডিকেটর বাতিসমুহ কাজ করে কিনা তা পরীক্ষা করা।
১০) ফুয়েল লাইনে কোন লিকেজ আছে কিনা তা পরীক্ষা করা।
প্রশ্ন ০৪ঃ সার্ভিসিং বলতে কি বোঝায় এবং গাড়ী সার্ভিসিং এ কি কি কাজ করা হয়?
উত্তরঃ মোটরযানের ইঞ্জিন ও বিভিন্ন যন্ত্রাংশের কার্যক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর যে কাজগুলো করা হয়, তাকে সার্ভিসিং বলে। গাড়ী সার্ভিসিং এ করণীয় কাজ সমূহঃ-
ক) ইঞ্জিনের পুরাতন লুব অয়েল ফেলে দিয়ে নতুন লুবঅয়েল নেয়া। নতুন লুবঅয়েল দেয়ার আগে ফ্লাশিং অয়েল দ্বারা ফ্লাশ করা।
খ) ইঞ্জিন ও রেডিয়েটরে পানি ড্রেন আউট করে ডিটারজেন্ট ও ফ্লাশিং গান দিয়ে পরিস্কার করা, অতঃপর পরিস্কার পানি দিয়ে পূর্ণ করা।
গ) ভারী মোটরযানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন গ্রিজিং পয়েন্টে গ্রিজ গান দিয়ে গ্রিজ দেওয়া।
ঘ) গাড়ীর স্পেয়ার হুইলসহ প্রতিটি চাকাতে পরিমাণমতো হাওয়া দেওয়া।
ঙ) লুবঅয়েল ফিল্টার, ফুয়েল ফিল্টার ও এয়ার ক্লিনার পরিবর্তন করা।
প্রশ্ন ০৫ঃ রাস্তায় গাড়ির কাগজ-পত্র কে কে চেক করতে পারেন?
উত্তরঃ সার্জেন্ট বা সাব ইন্সপেক্টরের নিচে নয় এমন পুলিশ কর্মকর্তা, মোটরযান পরিদর্শকসহ বিআরটিএ এর কর্মকর্তা এবং মোবাইল কোর্টের কর্মকর্তা।
প্রশ্ন ০৬ঃ মোটর সাইকেলে হেলমেট পরিধান ও আরোহী বহন সম্পর্কে আইন কি?
উত্তর: মোটর সাইকেলে চালক ব্যাতীত একজন আরোহী বহন করা যাবে। উভয়কেই হেলমেট পরিধান করতে হবে।
আগামী পর্বে থাকছে আরো বেশি প্রশ্নোত্তর। সাথেই থাকুন। আমি যতদুর সম্ভব চেষ্টা করেছি বানান ভুল এড়িয়ে চলতে। তারপরও যদি আমার অজান্তে কোন ভুল বানান উপস্থাপন করে থাকি, তাহলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৪ সকাল ৯:৩৫