যখন হারিয়ে গেলে বনলতা.....
পরিপূর্ণ সমুদ্র জোয়ারের জলে
অকালে... বড়ই অকালে..
আমি তখনো...
তোমার অপূর্ব বর্নন ব্যাঞ্জনা পড়ছি...
মনের জঠরে পুষে প্রেমের তৃষায় মরছি...
প্রতি রাতেই গলিত অপূর্ব অর্গল
পাঁজরার ডঙ্কা নিষ্ফল....
ফিরে এসো বনলতা.. ভুলে গিয়ে সব বাধা...
এই হাতে রেখো হাত.. ভালবাসার নেবো স্বাদ..
মরু বুকে ফুটিয়ে ফুল..এসো কাছে.....করো না ভুল..
চল তুমি ঢেউ তোলে...আমার এই সমুদ্র জলে..
মনে আছে এখনো সেই রাতের কথা
জানালার পাশে আবছা রুপোলি চাঁদ,
অজস্র নক্ষত্র ফুল, ঝিরিঝিরি পবন....
আমি সে রাতে আর ঘুমোই নি...
নীল আকাশ, উত্তাল সমুদ্র বুকে নিয়ে
নিস্পলক নিভৃতে ....দেখি...
সহস্র মুক্তো শুক্তোর বুকে খসে খসে ছড়ায় আভা.....
জোনাকিপোকার পিদিম জ্বলে অপূর্ব রজনী প্রভা..
অপরাজিতার ডালে ডালে অমূল্য সব আভরণ...
চন্দ্রতারার দিগন্তরেখা উত্তাল প্রেম নিবেদন ...
গলে পড়ে সব... গলে গলে পড়ে..
সেই কথোপকথন এখনো ভেসে মরে
মাঝপুকুরে ভুস করে ভেসে ওঠা কিশোরী বালার মতন...
তিয়াসে... দিলের তিয়াসে...
তারপর কেটে গেল দশটি বসন্ত...
মোনালিসারা এঁকে যেতে ভিঞ্চির মনে রঙ...
কখনো বুনো হাসের পেখমের মত ডানা মেলে..
বর্ষাতি কদমের ফুলে, গন্ধরাজের ঘ্রানে...
হেটে গেছে উত্তর থেকে দক্ষিন...
তবুও সর্ষে ক্ষেতে ঘুঘুদহ চলছে....
জীবন কবিতা পাতার সেই কটি লাইন, আহ .. গলছে...
অনর্গল... আর বলছে....
বনলতা, মুখোমুখি হই আরও কিছুক্ষণ ...
দেখো আজ....
আহুত পাখির মতন ..
ভিজে একাকার হই প্রতিদিন..
হেমন্ত কি বসন্ত, ফাগুন কি শরৎ....
আমি স্থির নই..
আমি ঝরে যাই, আমি ঝরে হই শ্রাবণ...
আবার প্রবল বৈপরীত্য কালে
চৈত্র কি বৈশাখে
ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠে
আমার মাঝে এক প্রকাণ্ড ফুজিয়ামা দহন..
দাবানল প্রলয়লীলা..
আমি স্থির নই
আমি পুড়ে যাই, উড়ে যাই
ধ্বংসস্তূপে জ্বলে প্রেমের সাতকাহন ...
শুধু তুমিই বনলতা...
বড্ড অসময়ে সেই পাখির নীড়ের মত চোখ তুলে...
নক্ষত্র সূদুরে একান্ত বসে
চকিত কিছু ক্ষণ...
মুহুর্ত মাঝেই হারিয়েছি আমি
মনের কেওড়া বন,
সুন্দরী মূলশ্বাস....
হরিনের ছাপ, কস্তুরী মৃগমায়া, বসন্ত বাতাস..
এরপর থেকেই আমি...
এক ক্লান্ত প্রাণ হাল ভাঙা নাবিক...
চোখে ভেসে সমুদ্র সফেন..
বুঝেছি জীবনবাবুর অস্তায়মান জীবন...
মধ্যরাতের আলোক নক্ষত্রাদি পতন..
আর, বিরান সমুদ্র আঁচলের নিরন্তর নিষ্ফল কাঁপন....
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই আগস্ট, ২০১৮ বিকাল ৪:৫০