somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রাচীন মিশরের পিরামিড তৈরির ভিন্নধর্মী কেচ্ছা কাহিনী-৪

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১ম পর্ব
২য় পর্ব
৩য় পর্ব

(পুরো সিরিজটিতে অনেক ছবি ব্যবহার করা হয়েছে। স্লো নেট স্পিড এর কারনে ছবি দেখতে না পারলে- অপেক্ষা করুন। ছবি ছাড়া টেক্সট পড়ে মূল বিষয়টি সহজে বুঝতে পারবেন না)

সুখ স্বাচ্ছন্দ ও উদ্যানঃ
No nation like them was created elsewhere on earth- Al Quaran

তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, আমার আনুগত্য কর। ভয় কর তাকে যিনি তোমাদেরকে দিয়েছে সেই সমুদয় বস্তুসমূহ যা তোমরা জান। তোমাদেরকে দিয়েছেন চতুষ্পদ জন্তু ও সন্তান-সন্ততি। এবং উদ্যান (জান্নাত) ও ঝর্ণাধারা। (সুরা শুআ’রাঃ ১৩১-১৩৪)

এবং যাদেরকে আমি দিয়েছিলাম পার্থিব জীবনে প্রচুর ভোগ-সম্ভার। (সূরা মু’মিনুন ৩৩)


আনন্দময় জীবন


দেয়াল চিত্র


একহাতে ২টি পশু। তারা কত শক্তিশালী?

ইতিহাস চুরিঃ
কোরআনে দেখা যায় তৎকালীন ফেরাউন বংশ আ’দ জাতি সম্পর্কে আগে থেকেই জানত।

ফেরাউন বংশের একব্যক্তি যে মুমিন ছিল এবং নিজ ঈমান গোপন রাখত, বললোঃ তোমরা কি এ ব্যক্তিকে এ জন্য হত্যা করবে যে, সে বলেঃ আমার প্রতিপালক আল্লাহ অথচ সে তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ তোমাদের নিকট এসেছে? সে মিথ্যাবাদী হলে তার মিথ্যার প্রতিফল সে ভোগ করবে, আর যদি সে সত্যবাদী হয় তবে সে তোমাদেরকে যে শাস্তির কথা বলে তার কিছু তো তোমাদের উপর আপতিত হবেই। আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারী ও মিথ্যাবাদীকে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (সূরা মু’মিন ২৮)

মুমিন ব্যক্তিটি বললোঃ হে আমার সম্প্রদায়! আমি তোমাদের জন্য পূর্ববর্তী সম্প্রদায়সমূহের (শাস্তির) দিনের আনুরূপ আশংকা করি। যেমন ঘটেছিল নূহ (আঃ) এর সম্প্রদায়, আ’দ, সামূদ এবং তাদের পরবর্তীদের ক্ষেত্রে। আল্লাহতো বান্দাদের প্রতি কোন যুলুম করতে চান না। (সূরা মু’মিন ৩০-৩১)

ফারাও মূসা (আঃ) কে সেই জাতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে।
ফেরাউন বললঃ হে মূসা (আঃ) কে তোমাদের প্রতিপালক? মূসা (আঃ) বললেনঃ আমাদের প্রতিপালক তিনি যিনি প্রত্যেক বস্তুকে তার যোগ্য আকৃতি দান করেছেন, অতঃপর পথ নির্দেশ করেছেন।
ফেরাউন বললঃ তা হলে অতীত যুগের লোকদের অবস্থা কি?
মূসা (আঃ) বললেনঃ এর জ্ঞান আমার প্রতিপালকের নিকট লিপিবদ্ধ আছে; আমার প্রতিপালক পথভ্রষ্ট হন না এবং ভুলেও যান না। (সূরা ত্বা-হা ৪৯-৫২)

লক্ষনীয় যে, মূসা (আঃ) বস্তুর যোগ্য আকৃতির কথা বলায় ফেরাউন অতীত যুগের লোকদের কথা জানতে চায়। কিন্তু তৌরাত তখনও মূসা (আঃ) এর উপর অবতীর্ণ হয়নি। তাই মূসা (আঃ) সেই মূহুর্তে পূর্বের জাতি সম্পর্কে অবগত ছিলেন না।

তৎকালীন মিশরীয়রা সম্ভবত এই সুযোগটি গ্রহন করে। আ’দ জাতির ইতিহাস ও স্থাপত্য কর্মগুলো নিজেদের বলে চালিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে আমরা দেখতে পাই- তৌরাত মূসা (আঃ) এর উপর অবতীর্ণ হওয়ায় তিনি পূর্বের জাতিগুলো সম্পর্কে অবগত হন।

মূসা (আঃ) বলেছিলেনঃ তোমরা এবং পৃথিবী সকলেই যদি অকৃতজ্ঞ হও তথাপি আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং সর্বপ্রশংসিত। তোমাদের কাছে কি সংবাদ আসে নাই তোমাদের পূর্ববর্তী নূহের (আঃ) সম্প্রদায়ের, আ’দের ও সামূদের এবং তাদের পরবর্তীদের? তাদের বিষয় আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ জানেনা; তাদের কাছে স্পষ্ট নিদর্শনসহ তাদের রাসূল এসেছিলেন। .... (সূরা ইবরাহীম ৮-৯)

ফেরাউন তাহলে কি বানিয়েছিল?

বর্তমানকালের অনেক গবেষক একমত যে, ফেরাউন গ্রেট পিরামিড তৈরি করেনি। তারা হয়তো আগের পিরামিডগুলো দেখে নিজেরা কিছু তৈরি করার চেষ্টা করেছে, নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করতে চেয়েছে।


গ্রেট পিরামিডের পাশে ছোট আকৃতির স্টেপ পিরামিড









ছোট আকৃতির স্টেপ পিরামিড- অমসৃণ ও কোনগুলো জ্যামিতিক নয়। যারা গ্রেট পিরামিডের মতো অবিষ্মরনীয় কাজ করতে পারে তাদের দিয়ে এ ধরনের পিরামিড তৈরি হয়েছে ভাবতে কষ্ট হয়।

জায়ান্টদের পিরামিড তৈরির কলাকৌশল কিছুটা হলেও পরবর্তী জাতির মাঝে প্রবাহিত ছিল। বহু সংখ্যক দাস জায়ান্টদের আয়ত্বে ছিল, তারাও পিরামিড বানানোর কলাকৌশল দেখেছে। তারা জেনে এসেছে এগুলো স্মৃতি স্তম্ভ অথবা দেবতাদের সন্তুষ্টির জন্য। ফলে আ’দ জাতি ধ্বংস হলেও তাদের আচার একেবারে শেষ হয়ে যায়নি।

তার মানে ছোট পিরামিডগুলো অন্য কারো তৈরী? ফেরাউনদের অথবা জায়ান্ট পরবর্তীদের?

ফেরাউন কিছু একটা তৈরি করেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় পবিত্র কোরআনে;

ফেরাউন বললঃ হে পরিষদবর্গ ! আমি ছাড়া তোমাদের অন্য কোন উপাস্য আছে বলে আমি জানিনা! হে হামান! তুমি আমার জন্য ইট পোড়াও এবং একটি সুউচ্চ প্রাসাদ তৈরি কর; হয়তো আমি তাতে উঠে মূসা’র (আঃ) মা’বূদকে দেখতে পাবো। তবে আমি অবশ্য মনে করি যে, সে মিথ্যাবাদী। (সূরা কাসাসঃ ৩৮)
[Quran 28:38] And Pharaoh said to his people: "I have not known a god for you other than myself; so Haman, light me a fire to bake clay so that I could build a rise high enough, maybe I see Moses' god whom I think is a liar."

এখান থেকে বোঝা যায় ফেরাউন মাটি পুড়িয়ে কিছু একটা তৈরি করেছিলেন। ফেরাউন পাথরের বিশাল পিরামিড নিশ্চিতভাবেই বানাননি।

“And with Fir'aun, Lord of Awtad (Stakes/pegs?” (89:10)
"Before them (were many who) rejected messengers,- the people of Noah, and 'Ad, and Pharaoh, the Lord of Awtad (Stakes/pegs).” (38:12)

ফেরাউন কি তৈরি করেছিল? কোন ধরনের সুউচ্চ টাওয়ার?

কোরআন মতে ফেরাউন নির্মিত কীর্তিকলাপ ও স্থাপনা সম্পূর্ণরুপে ধ্বংস করা হয়েছে। তাই বর্তমান পিরামিড তাদের তৈরি তা ভাবা যায় না।

আর ফেরাউন ও তার সম্প্রদায়ের নির্মিত কীর্তিকলাপ ও উচ্চ প্রাসাদ সমূহকে আমি ধ্বংস করেছি। (সূরা আ’রাফ ১৩৭)

“And we destroyed completely all the great works and buildings which Fir‘aun (Pharaoh) and his people erected.” ( Al Aaraf: 137 ).

(চলবে)

৫ম ও শেষ পর্ব
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:১২
১৪টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×