(প্রায় তিন মাস গ্রীষ্মের ছুটি ছিল। ছুটিতে বাংলাদেশে ছিলাম, তাই এই তিন মাস লেখালেখির দূরে ছিলাম)
আগের একটি লেখায় ওয়াদি লাজাবের কথা বলেছি। সেই ভ্রমণে সময় স্বল্পতার জন্য ওয়াদি’র ভেতরে যেতে পারিনি। তখনই প্ল্যান ছিল ভেতরটা আরেকবার এসে ঘুরে যাব।
এক শুক্রবারে আমি, আযম ভাই, লিটু ভাই ও জহির ভাই রওনা হলাম ওয়াদি লাজাবের পথে। প্ল্যানটা এরকম সকাল বেলায় ওয়াদি লাজাব ঘুরে বিকালে ‘ওয়াদি বেইশে’ মাছ ধরে আবহা ফিরব।
লিটু ভাই ড্রাইভ করছেন। আবহা থেকে খুব ভোরে রওনা হয়ে ‘দরব’ নামক স্থানে থামলাম। এখানে নাস্তা করব ও মাছের জন্য বরফ কিনতে হবে। নাস্তা করতে গেলাম এক ইয়েমেনি রেস্টুরেন্টে। আমরা রেস্টুরেন্টের ভেতরে না বসে বাহিরে বেছানো মাদুরে বসেছি। ২ প্লেট মোগলগুল ও ২ প্লেট কিবদা’র অর্ডার করা হল। নাস্তা আসার পর দেখা হল সাথে ৪ গ্লাস ‘সুরবা’ ফ্রি হিসাবে দিয়েছে।
“মোগলগুল” হচ্ছে খাসীর মাংসের তরকারী। ধনেগুড়া বা জিড়াগুড়া ও সামান্য লবণ দিয়ে রান্না করা হয়। মনে হবে যেন শুধু পানিতে সেদ্ধ করা। “কিবদা” একরকম কলিজা ভাজি। ফালি ফালি করে কাটা কলিজা ধনেগুড়া, জিড়াগুড়া, অল্প পেয়াঁজ ও টমেটো দিয়ে ভাজা ভাজা করা হয়। দেখতে খুব সাধারণ। ‘সুরবা’ সাধারণভাবে যে কোন পানীয়কে বুঝায়। আমাদের ‘সুরবা’ ছিল মাংস সেদ্ধ করার পর যে পানি থাকে তা, স্যুপ হিসাবে খাওয়া হয়।
মোগলগুল
কিবদা
সুরবা
রুটি দিয়ে বর্ণহীন “মোগলগুল” মুখে দিতেই এর স্বাদ আমার জিভের বিভিন্ন গ্রন্থীকে আলোড়িত করে তুলল। ভেবেই পেলাম না প্রায় মশলা ছাড়া সেদ্ধ মাংস কিভাবে এত স্বাদের হতে পারে। এই স্বাদ আমার লেখনি দিয়ে পাঠককে বুঝানো সম্ভব নয়। “কিবদা” একটু মিস্টি মিস্টি লাগল, খেতে দারূণ। আর ‘সুরবা’ খেয়ে, আরো এক গ্লাস খাওয়ার ইচ্ছা জাগল। আসলে, ইয়েমেনি খাবারের স্বাদ যে না নিয়েছে, তার খাবার জীবন অপূর্ণই থেকে গেছে। আমরা চারজনেই এত তাড়াতাড়ি খাবারগুলো শেষ করলাম যে, আরো বেশী খাবার কেন অর্ডার করলাম না সেই আফসোস করলাম। কিন্তু আমাদের হাতে সময় বেশী নেই। নাস্তা শেষে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা সেরে ওয়াদি লাজাবের পথ ধরলাম।
(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ বিকাল ৪:১৬