somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পৃথিবীর ইতিহাসে আজো বিস্ময়কর একটি গ্রাম!!..“ভিলেজ অব ডেড!!...”

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


হলিউডি সিনেমার কল্যানে আমরা অনেক ভৌতিক দৃশ্যপট দেখেছি।
দেখেছি ড্রাকূলা এর মত মুভি যাতে দেখা যায় একটি র্নিদিষ্টতম
স্হানে হঠাৎ কেউ একজন রক্ত পিপাসু রাক্ষস যা দেখতে অনেকাংশে
মানবরুপী। সেইসব রাক্ষসের কামড়ে সুস্হ সবল মানুষজনও দিনে দিনে
রক্ত পিপাসু রাক্ষসে পরিনিত হয়ে ওঠে। একসময় র্নিদিষ্ট এলাকায় মানুষের
সংকট হওয়ায় এইসব রাক্ষসেরা দলবেধে নিকটবর্তী শহরের দিকে ছুটে যায়।
এরকম দৃশ্য হলিউডের অনেক সিনেমায়ই দেখেছি আমরা।
আর যাদের কম্পুটারে গেম খেলার অভ্যাস আছে তারা কম
বেশি হাউজ অব দ্যা ডেড গেমটি খেলেছেন।যেখানে মোকাবেলা করতে
হয় মানবরুপী রাক্ষসের।

তবে আজ আমি যে বিষয়ের অবতারনা করছি তা পৃথিবীর ইতিহাসে এক বিস্ময়কর ঘটনা!!..
ঘটনাটি ঘটেছিল ১৯৩০ সালের কিছু সময় পূর্বে।কানাডার একটি প্রত্যান্ত অণ্ঞ্চলে অর্থাৎ একটি পাহাড়ী গ্রামে
যেখানে বসবাস করতেন প্রায় দুই হাজার উপজাতী। এই গ্রামের নাম ’ভিলেজ অব ডেড’
গ্রামটি বিস্ময়কর ঘটনার জন্য বিশ্বের ইতিহাসে আজো একটি রহস্যজনক গ্রাম হয়ে আছে যার
কূল-কিনারা উধঘাটিৎ সম্ভব হয়নি আজ পর্যন্ত।

ভিলেজ অব ডেডের অবস্হানঃ
ভিলেজ অব ডেড গ্রামটি উত্তর পশ্চিম কানাডার আজকূনি হ্রদের পাশে অবস্হিত।
বছরের প্রায় বারো মাসই বরফের চাদরে ঢাকা থাকতো গ্রামটি। গ্রামের বাসিন্দার সংখ্যা
ছিল প্রায় দুই হাজার। গ্রামটির লোকজনের উপার্জনের মাধ্যম ছিল পশু পালন করে সেইসব
পশুর পশম বিক্রী করে তাদের জীবন যাপন করতেন। গ্রামটিতে পশু এবং পশুর লোম ক্রয়ের জন্য
প্রচুর ব্যবসায়ী যাতায়াত করেছেন।গ্রামটির অধীবাসীরা সবাই আন্ঞ্জুকূণী গোত্রের।
হঠাৎ একদিন গ্রামের লোকজন হারিয়ে যায়!!.. কিন্তু কিভাবে??...
তা আজ পর্যন্ত বিস্ময়ই রয়ে গেছে…. এই বিস্ময়কর ঘটনার পরই গ্রামটি
পরিচিতি লাভ করে।



ভিলেজ অব ডেডের ঘটনা!!..
।১৯৩০ সালের আগ পর্যন্ত এই গ্রামটি তেমন একটা বিখ্যাত ছিল না। বাণিজ্যিক কাজে কিছু মানুষের আনাগোনা
থাকলেও এতটা খ্যাতি গ্রামটির কখনোই ছিল না। কিন্তু ১৯৩০ সালে প্রকাশিত একটি ঘটনার পরই সবার নজরে চলে আসে গ্রামটি।
সে বছর একজন সাংবাদিক ম্যানিটোবার নিকটবর্তী আজনিকুনি হ্রদের পাশেই একটি গ্রামের কথা প্রকাশ করেন।
এই হ্রদটি উত্তর-পশ্চিম কানাডায় অবস্থিত। নিভৃত এই গ্রামটি পশুর লোম উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত ছিল।
পশম কেনার জন্য সেখানে ব্যবসায়ীদের ভালো যাতায়াত ছিল। ঘটনার প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী জো লাবেল নামের
একজন পশম ব্যবসায়ী। লাবেলের ভাষ্য মতে, তিনি একদিন পশম সংগ্রহের উদ্দেশে গ্রামে যান। আর গ্রামের ভেতর
গিয়ে দেখেন সেখানে একটি মানুষও নেই। গ্রামের সব মানুষ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। শুধু তাই নয়, তারা যে শার্টগুলো
বুনছিল সেগুলো অসমাপ্ত অবস্থায় পড়েছিল। খাবারগুলো তখনো চুলোতে গরম হচ্ছিল। দেখে মনে হচ্ছে একটু আগেও এখানে অনেক
মানুষের উপস্থিতি ছিল। সব দেখে মনে হলো গ্রামের সবাই আকস্মিকভাবে গ্রাম ত্যাগ করেছে। একটির পর একটি বাড়ি ঘুরেও
কোনো মানুষের দেখা পাওয়া গেল না। সবখানে একই অবস্থা। কোথায় যেন মিইয়ে গেছে সবাই। এর মধ্যেই সাতটি কুকুরকে
অনাহারে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেল। এ ছাড়া গ্রামের একমাত্র কবরস্থানের সবগুলো কবর পাওয়া গেল খোদিত অবস্থায়! কিন্তু কবরস্থানের ভেতরে কোনো লাশের দেখা মিলল না। ভেতরের সবগুলো লাশ কোথায় যেন উধাও হয়ে গেছে। এটা কোনো প্রাণীর কাজ নয়, কারণ কবরের সঙ্গে যে পাথরের ফলক ছিল সেগুলো যথাস্থানেই ছিল।
উৎকট এই দৃশ্য দেখার পর ভড়কে যান লাবেল। তিনি দ্রুত দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশকে খবর দেন। মেজর থিওডোর লিস্টোর্টের নেতৃত্বে দ্য রয়েল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ পুরো গ্রাম ও আশপাশের এলাকা তন্ন তন্ন করে খুঁজল। কোনো গ্রামবাসীকে পাওয়া গেল না। তবে পুলিশ আরও ভয়াবহ কিছুর সন্ধান পেল। লেখক জর্জ সাভারভিও, যিনি এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন ১৯৩১ সালের জানুয়ারিতে নর্থওয়েস্ট জার্নালে এ সংক্রান্ত ৫ পর্বের একটি নিবন্ধ লিখেন। তার ভাষ্য মতে পুলিশ দেখল, ওই গ্রামের এস্কিমোদের পূর্বপুরুষদের সবগুলো কবর খোদিত অবস্থায় আছে আর সেগুলোর ভেতর থেকে লাশগুলো গায়েব! যে বা যেটি গ্রামবাসীদের নিয়ে গেল সে কি একই সঙ্গে কবরগুলোর ভেতরে থাকা লাশগুলোও নিয়ে গেছে? কিন্তু কবরের ওপরের মাটি বরফ জমে এতটাই শক্ত হয়ে গিয়েছিল যে এগুলো খনন করা যে কারও জন্যই বেশ দুঃসাধ্য কাজ। শুধু এই গ্রামের এস্কিমোদের সবচেয়ে প্রাচীন গোত্রপ্রধানের কবর অক্ষত ছিল।

পৃথিবীতে আজ উদঘাটিত হচ্ছে কত অজানা রহস্য….
কিন্তু ১৯৩০ সালের কিছুদিন পুর্ব ঘটে যাওয়া কানাডার আন্জ্ঞিকুনি উপজাতী
হঠাৎ করে গ্রামসুদ্ধ হারিয়ে গেল এই বিস্ময়কর রহস্য কি রহস্যই থেকে যাবে??...
জানার বড় আগ্রহ জাগে।


ছবি সংগ্রহ-গুগল থেকে।
২৬টি মন্তব্য ১৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×