বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ট্রাক ব্যবসায়ী সফদর আলী তরফদারের একমাত্র আদরের কন্যা কেটি। মা মরা এই মেয়েটাকে সফদর সাহেব অনেক স্নেহ করেন। মেয়ের কোন ইচ্ছাই তিনি অপূর্ণ রাখেন নাই। অনেক শখ করে মেয়ের নাম রেখেছিলেন কইতরী। কিন্তু বড়লোকের মেয়ের status-এর সাথে এই নাম যায় না তাই কইতরী তার নাম পালটে করে দিল কেটি। সফদর সাহেবের নামটা মোটেও পছন্দ হয় নাই কিন্তু একমাত্র মেয়ে বলে মেনে নিলেন।
কেটি গুলশানে তার আলীশান বাড়ির দোতালার বারান্দায় বসে রোদে চুল শুকাচ্ছিল। বাসার সামনের রাস্তা দিয়ে এলাকার রিকশাচালক সমিতির উঠতি নেতা কেরামত তার রিক্সা চালিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ রাস্তা দিয়ে গার্মেন্টসকর্মী সখিনাকে হেটে যেতে দেখে কেরামত শিষ দিল। ভুল বুঝাবুঝির কারণেই হোক অথবা বাংলা সিনেমা বলেই হোক সেই শিষের শব্দ কেটি সাহেবার কানে গেল। কেটি সাহেবার শিশু মন ধনী-গরীব বুঝে না। তাই কেরামতের সুরেলা শিষে “খাইরুন গো”-র টিউন শুনে কেটি তার প্রেমে পড়ে গেল। সেলুকাস, কি বিচিত্র এই বাংলা সিনেমা।
সেদিনই বারান্দা দিয়ে কেটি আর কেরামতের প্রথম পরিচয়। কেরামতেরও কেটিকে প্রথম দেখায় ভাল লেগে গেল। সিনেমার এই পর্যায়ে একটি প্রেমের গান(১)। কিছুদিন পর তাদের মধ্যে চিঠির সাহায্যে ভাবের আদান প্রদান হতে লাগল। মোবাইলের যুগেও তাদের মধ্যে চিঠি আদান প্রদান হচ্ছিল কারন কেরামতের কাছে মোবাইল ছিল না। কেটি কেরামতকে মোবাইল কেনার জন্য টাকা সাধলেও কেরামত তা নিতে রাজি হল না। কারন কেরামত আগেই পণ করেছিল যেদিন সে নিজের টাকায় একটা রিক্সার ওয়ার্কশপ খুলতে পারবে সেদিন সে মোবাইল কিনবে। ধীরে ধীরে কেটি কেরামত সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারল। জানতে পারল, পিতৃহীন কেরামত শুধু শিক্ষিতই না বরং উচ্চ শিক্ষিত। ঢাকা শহরে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠা কোন এক ইউনিভার্সিটি থেকে সে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছে। কিন্তু পাশ করার পর কোন চাকরি না পেয়ে আজ সে রিক্সার ইঞ্জিনিয়ার(মিস্ত্রি) ও পার্ট-টাইম রিক্সাচালক। ছাত্র অবস্থায় যে ছেলে গাড়ি বানানোর স্বপ্ন দেখত সেই কেরামত আজ রহিম মিয়ার ওয়ার্কশপে রিক্সা মেরামত করে। বিধির কি নিঠুর খেলা। সিনেমার এই পর্যায়ে একটি দুঃখের গান(২)।
কেটি আর কেরামতের সে প্রেম প্রেম খেলা যখন ধীরে ধীরে সেমিফাইনালের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই হঠাৎ সফদর সাহেব ব্যাপারটা ধরে ফেললেন। তিনিও তথা কথিত বাংলা সিনেমার ব্যতিক্রম না করে স্বীয় আদরের কন্যাকে একঘরে করে রাখলেন। সেইসাথে নিজের জিগরি দোস্ত কাদের মোল্লার একমাত্র লাফাঙ্গা ছেলে দাউদ ওরফে ড্যানি-র সাথে কেটির বিয়ে ঠিক করে ফেললেন।
বাংলা মুভি রিভিউ : রিকশাওয়ালার প্রেম
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই অক্টোবর, ২০০৮ রাত ২:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।





