বোতলজাত পানি প্রকৃতপক্ষে আমাদের কোন উপকারেই আসে না, কারণ, বোতল উৎপাদন বা বোতলে পানি ভরার সময় পানির গুণাগুণের সাথে আপোষ করা হয়; অর্থাৎ পানির মান বোতলের কারণেই কমে যায়। কিন্তু, ইমার্জেন্সি অবস্থায় আমাদের তো এই বোতলের পানিই খেতে হয়। তাই আসুন দেখে নিই, এই পানি পানের আগে নিজেদের খাতিরে আমরা কি করতে পারি।
অন্য অনেক পণ্যের মত এই মিনারেল ওয়াটারের বোতলেও ল্যাবেল থাকে, ল্যাবেলে অনেক কিছুই লেখা থাকে। কিন্তু আমরা বেশির ভাগ ভোক্তাই কখনো এসব লেখা আমলে নিই না। পানির বোতলগুলোর ল্যাবেলে সাধারণত একটা রিসাইকেল চিহ্ন (তিনটি তীর, তিনদিকে, পরস্পরমুখী) থাকে, এবং এই Recycle Sign এর ভিতরে একটি শব্দসংক্ষেপ বা Abbreviation লেখা থাকে। এই এব্রিভিয়েশন আপনাকে ঐ বোতল সম্পর্কে অনেক কিছুই বলে দিতে পারে, এবং সেটাই আপনার জানার বিষয়। যেকোন পানির বোতলের ল্যাবেল পড়ে দেখা একটি ভাল অভ্যাস এবং সেখানে লেখা শব্দসংক্ষেপের বিস্তারিত অর্থ জেনে আপনি নিজের স্বাস্থ্য ও পারিপার্শ্বিক পরিবেশ সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
১) PET বা PETE : যদি আপনি এই বোতল থেকে ইতিমধ্যে পানি খেয়ে থাকেন, তবে তা আপনার শরীরের হরমোনাল ব্যালেন্স পরিবর্তন করে দিতে পারে, কারণ এই বোতল তার ভিতরের পানিতে ধাতু ও রাসায়নিক পদার্থ মিশিয়ে থাকতে পারে।
২) HDP বা HDPE : অন্যান্য প্লাস্টিক বোতল ও তাদের অভ্যন্তরস্থ পানির সাথে তুলনা করলে এই বোতলের পানিই সবচেয়ে নিরাপদ ও পানযোগ্য; কারণ এই প্লাস্টিক সবচেয়ে কম পরিমাণে পানিতে কিছু মিশিয়ে থাকতে পারে।
৩) 3V বা PVC : এই বোতলের পানি আপনার পান করা উচিত নয়, কারণ এই জাতীয় প্লাস্টিক বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ নিঃসরণ করে, এবং এর ফলে আপনার শরীরের হরমোনে সমস্যা দেখা দিবে ও ভারসাম্য নষ্ট হবে।
৪) LDPE : এই প্লাস্টিক শুধুমাত্র নিম্নম্নানের প্লাস্টিক ব্যাগ তৈরীতে ব্যবহৃত হয়, যাকে আমরা সচরাচর পলিথিন বলে থাকি। খাদ্যদ্রব্য ছাড়া অন্যান্য অপচনশীল পণ্য পরিবহনে এই প্লাস্টিকের ব্যাগ ব্যবহৃত হয়। তাই, এই প্লাস্টিক দিয়ে যদি খাওয়ার পানির বোতল তৈরী করা হয়, তবে সেটা হবে জীবনবিধ্বংসী।
৫) PS বা Styrofoam: এই প্লাস্টিক কারসিনোজেনিক (ক্যান্সার রোগ সৃষ্টিতে সক্ষম) পদার্থ নিঃসরণ করে। ফাস্ট-ফুড কেসিং বা কফি কাপ তৈরিতে এটি ব্যবহৃত হয়।
৬) PC, বা কোন কিছু লেখা না থাকা : এই প্লাস্টিকে Bisphenol A (BPA) থাকে, যা হরমোন সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। হরমোন সিস্টেমে ক্ষয়ক্ষতির ফলে ক্যান্সার, টিউমার, জন্মকালীন জটিলতা, জন্মগত বিকৃতি ইত্যাদি হতে পারে। এই প্লাস্টিক সাধারণত স্পোর্টস ওয়াটার বোতল এবং কিছু ফুড কন্টেইনার তৈরীতে ব্যবহৃত হয়।
Source: Wonderful Engineering
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৫৮