somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কয়েকটি অনুবাদ কবিতা, ভালো লাগবে আশা করি।

১৫ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবি কে


তিনিই কবি যিনি কবিতা লেখেন
আবার তিনিও কবি যিনি পদ্যটদ্য লেখেন না।

তিনিই আসলে কবি যিনি পায়ের বেড়ি খুলে ছুঁড়ে ফেলে দেন
আবার তিনিও কবি যিনি এই শৃঙ্খলে আবদ্ধ হতে ভালোবাসেন

কবিকে আসলে বিশ্বাসী হতে হয়
তিনিও কবি যার কোনো কিছুতে বিশ্বাস নেই

কবি আসলে এমন মানুষ যাকে মিথ্যে কথা বলতে হয়
আবার তিনিও কবি যাকে বলা হয়েছে অনেক মিথ্যে কথা

তিনিই হলেন কবি যিনি টাল খেয়ে ভেঙে পড়েন
আবার তিনিও কবি যিনি উদ্ধত ভঙ্গিতে উঠে দাঁড়ান

কবি তিনিই যাকে সবকিছু ছেড়েছুড়ে ফেলে দিতে হয়
আবার তিনিও কবি যিনি কোনো কিছুই ছেড়ে চলে যান না।




একটি আধুনিক প্রেমের কবিতার খসড়া



এখনও শাদা
একে শুধু ভালো করে বর্ণনা করা যায় ধূসরতার পটে
পাখিকে পাথর দিয়ে
সূর্যমুখি
ডিসেম্বরে

পুরনো প্রেমের কবিতা
মাংসের চমকপ্রদ বর্ণনায় ভরা
এটা-সেটা কত যে কচকচানি থাকে
যেমন চোখের পাতার

এখনও লাল
এটা বর্ণনা করা দরকার
ধূসরতা দিয়ে সূর্যকে বৃষ্টি দিয়ে
নভেম্বরের পপি
ঠোঁটকে রাত্রি দিয়ে

রুটির সবচেয়ে
স্পর্শকাতর বর্ণনা হলো
খিদের একটা বিবরণ দাঁড় করানো
রোমকূপের ভেজা অংশ
উষ্ণ অভ্যন্তর
রাতের বেলায় সূর্যমুখি
প্রজননের দেবী সিবিলির স্তন-পেট-উরু
জলের
একটি বসন্তস্বচ্ছ
পরিষ্কার বর্ণনা হলো
তৃষ্ণার বিবরণ
ছাই
মরুভূমি
সৃষ্টি করে দৃষ্টিবিভ্রম
মেঘ আর গাছ সরে এসে
ঢুকে পড়ে আয়নায়

খিদের অভাব
মাংসের
অনুপস্থিতি হলো
ভালোবাসার আরেকটি বর্ণনা
এই হলো সেই আধুনিক প্রেমের পদ্য



অনেক কাজের ভিড়ে


অনেক কাজের মাঝে
খুব জরুরি
আমি ভুলেই গিয়েছিলাম
এটাও খুব দরকারি

মরে যাওয়া

অকিঞ্চিৎকর
আমি এই বাধ্যবাধকতাকে অবহেলা করেছিলাম
অথবা একে পূরণ করছিলাম
হেলাফেলার সঙ্গে

আগামীকালের শুরুতে
সবকিছু বদলে যাবে
বিজ্ঞতার সঙ্গে আশা নিয়ে
সময়ক্ষেপণ না করে
আমি নিষ্ঠার সঙ্গে মরে যাওয়া শুরু করবো




জীবনের মধ্যপর্বে

পৃথিবীতে কেয়ামত আসা আর
আমার মৃত্যুর পর
দেখলাম জীবনের মধ্যপর্বে আমি দাঁড়িয়ে আছি
আমাকেই আমি সৃষ্টি করেছি
গড়ে নিয়েছি এই জীবন
মানুষ পশু প্রাকৃতিক দৃশ্য

আমি বলছি, এটা একটা টেবিল
একটা টেবিল
টেবিলের উপর সটান শুয়ে আছে রুটি ও একটা ছুরি
ছুরির কাজ হচ্ছে রুটি কাটা
মানুষ এই রুটি দিয়েই নিজেদের ঋষ্টপুষ্ট করে

সবারই মানুষকে ভালোবাসা উচিত
রাত্রি আর দিনের কাছ থেকে আমি এটাই শিখেছিলাম
একজন মানুষের কী কী ভালোবাসা উচিত

একজনের প্রশ্নের উত্তরে এই কথাগুলোই বলেছিলাম



ফেরা

হঠাৎ করে খুলে যাবে জানালা
মা ডেকে বলবেন
ঘরে ফেরার সময় হয়েছে

দেয়াল যাবে খুলে আর আমি
কাদামাখা জুতা পায়ে প্রবেশ করবো বেহেশতে

এরপর টেবিলের কাছে সরে আসবো
কোনো কথা জিজ্ঞেস করলে রেগেমেগে উত্তর দেবো

আমি ভালো আছি একা থাকতে
দাও। মাথায় হাত দিয়ে আমি
বসে থাকবো অপেক্ষায়। কেমন করে তাদের বলি
সেই দীর্ঘ
আর জটিল পথের কথা

এখানে এই বেহেশতে মা
বুনে চলেছেন সবুজ স্কার্ফ

চারদিকে মাছির মধুর গুনগুন

ছ’দিন একটানা কাজ করার পর
বাবা চুলার কাছে ঘুমঘুম চোখে ঢুলু ঢুলু

না, একেবারেই আমি তাদের বলতে পারবো না
মানুষ একজন আরেক জনের গলার
কাঁটা হয়ে আছে



বেঁচে যাওয়া মানুষ

আমার বয়স চব্বিশ
আমাকে কসাইখানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল
কিন্তু বেঁচে গেছি।

নিচের কথাগুলো শূন্যতার সমার্থক:
মানুষ আর পশু
প্রেম আর ঘৃণা
বন্ধু আর শত্রু
অন্ধকার আর আলো।

মানুষ আর পশুকে একই পদ্ধতিতে হত্যা করা হচ্ছিল
আমি এটা দেখিনি:
টুকরো টুকরো করে কাটা মানুষে বোঝাই সব ট্রাক
ওরা রক্ষা পায়নি।

আদর্শের কথা শুধুই কচকচি:
সদ্গুণ আর ষণ্ডামি
সত্য আর মিথ্যা
সুন্দর আর কদর্য
সাহস আর ভীরুতা।

সদ্গুণ আর ষণ্ডামিকে একই পাল্লায় মাপা হয়
আমি এটা দেখিনি;
মানুষ একই সঙ্গে কী করে
ষণ্ডামি আর সদ্গুণের অধিকারী হয়।

আমি একজন শিক্ষক ও গুরুজিকে খুঁজছি
হয়তো তিনি আমার দৃষ্টি আর বাচনের ক্ষমতাকে আবার ফিরিয়ে আনতে পারবেন
হয়তো তিনি আবার বস্তুর নাম ও আদর্শকে
অন্ধকার আর আলোকে আলাদা করে শিখিয়ে দিতে পারবেন

আমার বয়স চব্বিশ
আমাকে হত্যা করার জন্যে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল
কিন্তু আমি বেঁচে গেছি।



আমার খুজে পাওয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই আগস্ট, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:২২
১০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×