somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Universal Series: The Final Chapter

০৩ রা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়ের ক্রোধ

মহাবিশ্বের মাঝে এক ক্ষুদ্র বিন্দুর মত পৃথিবী। মানুষগুলো ব্যস্ত আর সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে ছুটছে। কিন্তু পারছে না। আর তাই বিভিন্ন সময়ে তাদের আক্ষেপগুলো সময়ের উপর পড়ছে। প্রতিনিয়ত সময়কে তারা গালমন্দ করছে। হয়ত সময় না থাকলেই ভালো হত। কিন্তু একি! এমন এক শুন্যতার মাঝে কিছু একটা চলছে যার কোন স্থির লক্ষ্য নেই কিন্তু সেটা সব কিছুকে ব্যাপ্ত করে আছে। হযা এটাই “সময়” সে তার নিজ গতিতে চলছে, সে কিছুটা রাগান্বিত আর তার গতি কিছুটা ব্যাহত। হঠাৎ তার মধ্য থেকে একটা ছোট বিস্ফোরণ হল। মানব জাতির জন্য কিছু আশ্চর্যজনক হতে যাচ্ছে। হয়ত সে সময় আরো কাছে।

ক্ষুদ্র চিন্তা


মিশরের একটি শহর কায়রো, অনেক মানুষের আনাগনা। এরই মাঝে ইজিকিয়েল বড় হয়েছে। তার অবস্থ তেমন ভালো নয়, দিন আনে দিন খায় গোছের। তারপরেও সে সবসময় ভাবে “সময়” টা আসলে কি? তার এই চিন্তার জন্য সে কাজের মাঝে মনোযোগ দিতে পারে না। আজ তাকে একটা বাড়ি তৈরির কাজে যেতে হবে, অনেক কষ্টের কাজ। আজ আকাশ কিছুটা কালো আর বেগুনী। আবহাওয়াটা মজার কিন্তু ইজিকিয়েলের মনটা বড় বিষন্ন। সে তাড়াতাড়ি বাসায় আসলো। আর না খেয়ে শুয়ে পড়ল। সে আর সময় নিয়ে ভাবতে চায় না।

নতুন পৃথিবী

সময় তার নতুন তৈরি একটা অংশ দিয়ে পৃথিবীকে ঢেকে দিল। তার নাম টাইমপিস্ট। সে হল সময়ের রাগের কারনে এক পরিবর্তিত বিকৃত এন্ট্রপি। কেউ জানে না কি হয়েছে কিন্তু সময় তার ভার টাইমপিস্ট এর হাতে দিয়ে প্রতিশোধ নিতে চায়। স্বাগতম টাইমপিস্ট এর নতুন পৃথিবীতে। হুম থেকে সবাই উঠলো কিন্তু তাদের পরস্পরের মধ্যেকার সম্পর্ক গুলো যেন এক মুহুর্তে বদলে গেল। ইজিকিয়েল ঘুম থেকে উঠে দেখলো- এ কি!! সবাই কোথায়, এ কোন জায়াগায় এসে পড়লাম। পরিচিত মুখ গুলো আজ বদলে গিয়েছে। সে বের হল আসল ঘটনার সন্ধানে। কোন রাস্তা ঘাট, বাড়ি-ঘর, এলাকা একটিও তার পরিচিত অবস্থায় নেই। সব কিছুর নাম বদলে গেছে। ইজিকিয়েল ঘড়ি দেখল, হায়! এটা কি ঘড়ির কোন পরিবর্তন নেই। সে জিজ্ঞাসা করলো একজনের কাছে ‘দয়া করে বলবেন কি এখন কয়টা বাজে?’ লোকটি হা করে তাকিয়ে রইলো। সময়!! সেটা আবার কি জিনিষ। বিষয়টা তার কাছে ভালো ঠেকছে না। সে দৌড়ে গেলো তার বাসায়। একমাত্র তার ঘড়িটাই চলছে।

অস্থিরতার শুরু

সারা পৃথিবীতে কর্মব্যস্ততায় মানুষ চলছে। প্রফেসার বায তার ল্যাবেরটরিতে কিছু অদ্ভুত খেয়াল করছেন, ‘তুমি কি খেয়াল করেছ মুসা! মহাবিশ্বের কিছু একটা ধ্রুবকে গরমিল হচ্ছে আমার মনে হয় গ্যাভাট্রাইটসটা কাজ করছে না!’

মুসা বলল, ‘কিন্তু প্রফেসার! আমাদের মনে হয় কোন একটা বিষয় ভুলে যাওয়া হচ্ছে। সব সুত্রের মাঝে সমন্ব্যয় সাধন হলেও একটা মাত্রা আমরা কম অনুভব করছি আমাদের একবার সিওয়েরা লিওনায় কথা বলা দরকার’ ।

সমস্ত পৃথিবীর বড় বড় বিজ্ঞানিরা আজ এক হয়ে এক মহা সম্মেলনে বসেছেন। তাদের সবার এক কথা, ‘কোন একটা এন্ট্রপিতে মারাত্মক ঘটতি আছে, কিছু একটা মিসিং’।

এদিকে মানুষ বার বার ভুলে যাচ্ছে সে কি করবে কখন করবে। তার মধ্যে একটা শুন্যতা এসে গেছে। তারা নির্নয় করতে পারছে না কখন কি হচ্ছে।

এদিকে টাইমপিস্ট তার নতুন কয়েকটা শক্তির মাত্রা এক করে ফেলেছে। তার প্লান হল মানব জাতির কাছে এর দুর্যোগ সৃষ্টি করা। একে একে ১০ জন তৈরি হলঃ আজারকাবাইজেন, আসুকা, ম্যানড্রেক, সেন্ট্রিনো, কাজামা, ঘোষ্ট, অ্যাম্বার, অ্যান্ড্রয়েড, সালেম, ফেইট আর এদেরকে ছড়িয়ে দেয়া হল সারা পৃথিবীতে।

গেইম থিওরী

১০ টা নতুন মাত্রা এক এক নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞ। তারা সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল আর প্রত্যেক বিষয়ে মানব জাতিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল। আজারকাবাইজেন- এদের সবার নেতা। তার নেতৃত্বে আসুকা- ইউনিট অফ ইমশোন, ম্যানড্রেক- ইউনিট অফ ফোর্স, সেন্ট্রিনো- ইউনিট অফ ক্যাল্কুলেশান, কাজামা- ইউনিট অফ গেইম, ঘোষ্ট- ইউনিট অফ থিঙ্কিং, অ্যাম্বার- ইউনিট অফ ফান্ডামেন্টাল ম্যাটার, অ্যান্ড্রয়েড- ইউনিট অফ ইমাজিনেশান, সালেম- ইউনিট অফ পাওয়ার, ফেইট- ইউনিট অফ ফেইট তারা নিজেদের ক্ষমতার বলে সবাইকে একের পর এক হারিয়ে দিচ্ছেন তাদের কাজ, চিন্তায়, শক্তি, বুদ্ধিতে, পদ্ধতি আর দক্ষতায়। মানুব জাতির সবাই প্রায় তাদের নিজ কাজের ফলাফল দেখে একদম অসন্তুষ্ট। মানুষেরা বুঝতে পারছে না কিভাবে এসব হচ্ছে কিন্তু ঐসব নতুন প্রাজাতিরা তাদের সুপ্রিম পাওয়ার দিয়ে একেবারে চরম লজ্জায় ফেলে দিচ্ছে। আজ মানুষেরা বুঝতে পারছে যে তারা কতটা অসহায় এসব নতুন প্রজাতির কাছে। টাইমপিষ্ট আজ সফল প্রায়!! সে মানব জাতিকে একটা শিক্ষা দিয়েছে তাদের কাজের দুর্বলতা গুলো আর তাদের কাজ গুলো আস্তাকুড়ে ফেলে দিল। কিন্তু এভাবে কতদিন যাবে। আনুব জাতির অন্তিম কাল ঘনিয়ে আসছে। কারন তারা পরাজিত!!

পজিটিভ ভার্সেস নেগেটিভ সাইড

আজারকাবাইজান একটা বিষয় নিয়ে চিন্তিত। কারন সে হল নেগেটিভ এন্ট্রপি আর হিসাব মতাবেক আরো একটা এনট্রপি আছে যেটা ১১ তম স্থানে আছে। কারন অবশ্যই পজিটিভ এন্ট্রপি থাকতে হবে। তা না হলে মহাবিশ্বের ভারসাম্য থাকবে না। কিন্তু কি সেই নতুন এনার্জি?? তার প্রশ্নের উত্তর তাকেই খুজতে হবে। সে অ্যান্ড্রয়েডকে পাঠালো নতুন এনার্জি লেভেল খুজতে আর, সেন্ট্রিনোকে বলল, ‘দ্রুত বের কর কোথায় এই পজিটিভ এনার্জি লেভেল আছে!!’

চারপাশে খোজ শুরু হল। তারা কিছুটা অবাক মানব জাতির এই দুর্যোগ মুহুর্তে যখন তাদের উল্লাস করা দরকার তখন তাদের এমন কি আসতে পারে যেটা তাদের জন্য মারাত্মক?

কিন্তু টাইমপিস্ট ভালোভাবে জানে যে তার ১১ টা ভিন্ন এনার্জি লেভেল থাকার কথা কিন্তু একটা জাগায় কিছুটা ঘাটতি আছে। আর এটাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে যদি সেটা মানুব জাতির পক্ষ থেকে হয়!!

ইজিকিয়েল

ইজিকিয়েল এ কয়েক মাসে অনেকটাই নিজেকে সামলে নিয়েছে। সে বুঝতে পারছে সে একা একটা বড় গোলকধাধাঁয় পরে গেছে। তার সপ্ন তাকে অনেক কিছু দেখায় কিন্তু সে বুঝতে পারে না কি হচ্ছে। ‘আরে ইজিকিয়েল! তুমি কি ঘুমিয়ে পড়লে নাকি?’, মিস্টার পিসো তার বাড়িওয়ালা তাকে ডেকে বলল। সে একটা বাড়ির ছাদে থাকে আর তার কাজ হল মিস্টার পিসোর ব্যবসায় সাহায্য করা। সে কিছুটা হিসাব রাখে। ‘না মিস্টার পিসো! আমি এমনি শুয়ে আছি।’, ইজিকিয়েল জবাব দিলো।

মিস্টার পিসো, ‘আজ কোন সংবাদ তেমন নেই! তবে শুনলাম ওরা নাকি কিছু হারিয়ে যাওয়া বস্তু খুজছে, কে জানে আবার কি হল। ওদের ক্ষমতার কাছে আমরা কিছুই না তারপরেও ওরা কি চায় এখনও জানা গেলো না’

ইজিকিয়েল চুপ থাকলো। তার মনে একটাই ভয়, হয়ত তাদের ভুলের জন্য আজ এই অবস্থা। সে বেরিয়ে গেলো মিস্টার পিসোর মেয়ে সোরানার কলেজের দিকে। সেখানে তাকে একটা বক্স নিয়ে যেতে হবে।

সে কিছু সময় পর পৌছল। সেখানে একটা সাইন্স প্রদর্শনী হচ্ছিল, ইজিকিয়েল সোরানাকে বক্সটা এগিয়ে দিলো। তার পকেট ঘড়িটা বের করে দেখলো ৩টা বাজে। ‘ওয়াও এটা কি?’, পিছন থেকে কেউ জিজ্ঞেস করল। ইজিকিয়েল কিছুটা থমকে গেল, ‘ইয়ে মানে! এটা ঘড়ি, সময়ের পরিমাপ করে।’

‘সময় সেটা কি জিনিষ?? এটা কি তোমার প্রজেক্ট? খুবই সুন্দর’, ছেলেটা বলল। ইজিকিয়েল ঘড়িটা তাকে দিয়ে বলল, ‘তুমি কি কখনো ঘড়ি দেখনি? সময় বলতে কিছু শুননি?’। যদিও গত ৬ মাস যাবৎ এই প্রশ্ন সে সবাইকে করে আসছে, কিন্তু এর উত্তর হসে পেয়েছে, ‘না!’।

আজো সে একই উত্তর পেল। কিন্তু একজন জোরে বলে উঠলো, ‘টাইম! একটা মাত্রা যেটা অদৃশ কিন্তু গতিময়, আর এটা ধরা ছোয়ার বাইরে, পরিমাপের অযোগ্য। তোমার ঘড়িটা সুন্দর কিন্তু সেটা পারফেক্ট সময় দিচ্ছেন না।’

আজ প্রথম একথা শুনে ইজিকিয়েল একেবারে হতভম্ভ! কে এই লোকটি? আস্তে করে এগিয়ে এলো ঘোষ্ট। ‘হ্যালো ইজিকিয়েল! আমি ঘোষ্ট’, সবার সামনে বলে উঠলো সে। ইজিকিয়েল ভয় পেয়ে গেল। ঘোষ্ট বলল, ‘আর তুমি হল ইজিকিয়েল! আমি কি ভুল বলেছি?’

১১তম এন্ট্রপীর যাত্রা

ইজিকিয়েল এখন সবার মাঝে। চারপাশে ঘিরে আছে ১০জনের সবগুলো নতুন প্রজাতি। আজারকাবাইজান সুন্দর কন্ঠে বলল, ‘ইজিকিয়েল আমরা কারা তা নিশ্চই জানো, কিন্তু আমাদের পরিচয় আরো নির্দিষ্ট করে দেয়া উচিৎ তোমার কাছে- আমরা হলাম ইউনিভার্সাল সিরিজ যারা বিভিন্ন অস্তিত্বের একক হিসেবে ধরা হয়। আমাদের পরাজয় অসম্ভব কারন আমরাই হলাম ইউনিট (একক) তাই আমাদের মাত্রা অতিক্রম অসম্ভব। কিন্তু তুমি কি?’

ইজিকিয়েল কিছুটা চিন্তা ফিরে পেল, ‘আমি কি মানে? আমি মানুষ, এটা কেমন কথা!’
সেন্ট্রিনো রেগে গেলো, ‘না তুমি মানুষ হলেও তোমার এনার্জি লেভেল একটা নতুন এন্ট্রপী তৈরি করেছে আর সেটা নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে। তুমি ভেঙ্গে বল তোমার কথা!!’

সবাই নিশ্চুপ, চরম শান্ত পরিবেশ। ইজিকিয়েল কে ধরে আনার আগে সেখানে মুসা ছিলো। তাকে দেখিয়ে বলা হল, ‘তুমি তোমার রহস্য প্রকাশ করবে নয়তো এ বেচারা মারা যাবে।’

ইজিকিয়েল এর মাথায় কিছু আসছে না। সে বলল, ‘দেখ!! আমি সাধারন একজন মানুষ, আর কিছুই না, আমি আমার সৃষ্টিকর্তার এক সৃষ্টি। বুঝার চেষ্টা কর তোমরা হল মরীচিকার মত তোমাদের কোন লক্ষ্য নেই কেন তোমরা এসব করছ?’

প্রত্যেকেই চুপ। তারা এসব কথা নতুন শুনছে। ইজিকিয়েল এর সামনে মুসাকে আনা হল। তাকে জোর করা হল বলার জন্য, কিন্তু ইজিকিয়েল কিছু জানে না। হঠাৎ একটা ঝলক দিয়ে কেটা দুটুকরো করে মারা হল মুসাকে। ইজিকিয়েল এর চোখের সামনে!! সে হতভম্ভ তার চোখের কিনারায় পানি গড়িয়ে পড়ল। আস্তে করে ঠান্ডা মাথায় সে বলল, ‘এটা কি করলে?? আমার মনে হয় এটা করা তোমাদের জন্য উচিৎ ছিলো না’।

ইউনিট অফ টাইম

ইজিকিয়েল অতন্ত্য রেগে গেলো। তার সমস্ত শরীর আলোতে ঝলমল করে উঠলো। সে আর তার নিজের মাঝে নেই। প্রত্যেকটা কোষ তার নিজের জিনোম পরিবর্তন করে এক নতুন ভাবে সাজিয়ে নিচ্ছে। তার মধ্যে ক্রোধ এর চরম সীমা ছাড়িয়ে গেল। সে উঠে দাড়ালো তাকে বাধা শিকল গুলো গুড়ো গুড়ো হয়ে পড়ে রইলো। সবাই হা হয়ে তার ট্রান্সফরমেশান দেখলো। এটা কি সম্ভব!! একটা মানুষের পক্ষে। ইজিকিয়েল অনেক কষ্টে বলল, ‘আমি জানি না আমি কি! কিন্তু তোমরা আমাকে বাধ্য করলে। কেন ওকে এভাবে মারলে? কেন?…’। ইজিকিয়েল আর্তচিৎকার ছড়িয়ে গেল।

ইতিমধ্যে পৃথিবীর চারপাশে অস্থিরতা শুরু হয়ে গেছে। প্রকৃতির দুর্যোগ আর আবহাওয়ার চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ইজিকিয়েল রেগে গেল আরো বেশি। আজারকাবাইজেন সবাইকে নির্দেশ দিলো ইজিকিয়েল সাথে যুদ্ধের জন্য। কিন্তু তার রাগের কাছে কেউ কিছুই পেরে উঠতে পারছে না। সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ল। তাদের প্রত্যেকের মাঝে হারজিতের ব্যবধানটা বিশাল মনে হল। ইজিকিয়েল এনার্জি লেভেল স্বাভাবিকের তুলনায় হাজারগুন বেশি। এভাবে সবাই দ্রুত নড়ে উঠলো।

ইজিকিয়েল তাদের বলল, ‘আমি তোমাদের মারবো না! কারন আমি জানি আমি কি!! হয়ত তোমাদের শেষ সময় তোমরাই ডেকে আনছো। শুনে রাখো আমি ইজিকিয়েল- ইউনিট অফ টাইম!’

ফিউসান

আজারকাবাইজান অবস্থায় আঁচ করতে পেরে সবাইকে দ্রুত সরে যেতে বলল। একটা বিশাল সমুদ্রের মাঝে ইজিকিয়েল একা। হঠাৎ দূরে একটা ঝলক দিয়ে মেঘ আসতে শুরু করল। হ্যা! সবগুলো ইউনিভার্সাল সিরিজ ফিউসান করেছে। তাদের মিলিত শক্তি ইজিকিয়েলকে হারানোর জন্য যথেষ্ট হবে কি? কিন্তু ইজিকিয়েল কিছুটা ভয়ংকর হাসি দিল।

এদিকে ল্যাবে প্রফেসার পিসো মাথা ঝাকিয়ে উঠে বসলেন। তাকে জোরালো আঘাত করা হয়েছে। সে মুসা কে আসে পাশে পেল না তাই দ্রুত উঠে তার নতুন যন্ত্র- ডিজিভ্যাল টা চেক করতে লাগলেন। এর দ্বারা সে জানতে পারবে আসলে কোন মাত্রাটা অনুপস্থিত। তাই সে দ্রুত অন করলো।

ফিউসানের ফলে হাজার গুল বেশি শক্তিশালী হয়ে উঠলো আজারকাবাইজান। প্রথম ঘুসিটা তার পক্ষ থেকে আসলো। ইজিকিয়েলর নাক দিয়ে রক্ত পড়ল। আজারকাবাইজান হেসে দিল, ‘তুমি একটা সাধারন মানুষ ছাড়া আর কিছুই না। তোমাকে হারতেই হবে’। ইজিকিয়েল তার পরের ঘুষিটা ঠেকিয়ে দিল, ‘হ্যা আমি একজন মানুষ! কিন্তু আমি সেই প্রজাতি যে সৃষ্টিকর্তার সকল সৃষ্টির সেরা আর আমি এক সাধারন এন্ট্রপীর কাছে হারতে শিখিনি…’। দুইজনের মাঝে তুমুল যুদ্ধ সারা সমুদ্রকে কাপিয়ে দিল।

শেষ প্রশ্ন


ইজিকিয়েল আর আজারকাবাইজান হাপিয়ে উঠেছে। কেউ কারো কম নয়। কিন্তু এভাবে চলতে থাকলে পৃথিবীর অবস্থায় খারাপ হতে থাকবে। আজারকাবাইজান হেসে উঠলো, ‘ইজিকিয়েল! আমাকে বল তুমি কি? তোমার উদ্দেশ্য কি? কেন তুমি তোমার অস্তিত্ব ধরে রেখেছ?… আমার মনে হয় এটা পাগলামি…… বেঁচে থাকার কোন উদ্দেশ্য হয় না।’

ইজিকিয়েল মাথা ঘুরিয়ে নিল, ‘আজারকাবাইজান! প্রত্যেকের একটা উদ্দেশ্য থাকে। যেমনি ভাবে তুমি এখানে তোমার কর্তার উদ্দেশ্য পূরনের জন্য এসেছ তেমনি আমিও আমার সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্য পালনে এখানে আছি। এখানে কেউ অনর্থক নই।’

আজারকাবাইজান উত্তেজিত হয়ে বলল, ‘না! এটা হতে পারে না আমরা স্বাধীন এক অস্তিত্ব!!…’

ইজিকিয়েল কথা থামিয়ে দিল, ‘না! তোমরা কারও অধীনে আছো। এটাই মহাবিশ্বের নিয়ম, অনিশ্চয়তা আর নির্ভরশীলতা। আজারকাবাইজান!! তুমি তোমার ভাগ্যের গতিতে চলছো। বুঝার চেষ্টা কর… আমাদের একটা গন্ত্যব আছে।’

আজারকাবাইজান হতাশ কন্ঠে বলে উঠলো, ‘যদি তাই হয় তাহলে আমাদের কেন এই খেলায় আনা হল!! আমার প্রশ্নের জবাব দাও আমাদের উদ্দেশ্য কি?’

ইজিকিয়েল নিশ্চুপ। সে জানে কিছু একটা রহস্য তাদের সাথে খেলা করছে। কিন্তু এটাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। তার কিছুই করার নেই। শেষ প্রশ্নের জবাব তার জানা নেই। ইজিকিয়েল বলল, ‘শান্ত হও! এর জবাব একদিন পাবে কোনকিছুই রহস্যের মধ্যে থাকবে না……’।

শুরুর শেষ


প্রফেসার তার যন্ত্রের মাধ্যমে জানতে পারলেন এটা ঐ মাত্রা যার উপর সব কিছু নির্ভর করে আছে। সেটা হল ‘সময়’। অথচ এতদিন সেটা মানব জাতির অজানা ছিল। ইজিকিয়েল টাইমপিস্টের সাথে কথা বলল। টাইমপিস্টে তার প্রতিশোধ নিয়ে সন্তুষ্ট। আর সে এটাও বুঝলো আসলে মানব জাতির চেয়ে উন্নত কোন শক্তি হতে পারে না। এটা তার সৃষ্টিকর্তার এক অসামান্য সৃষ্টি। টাইমপিস্ট ফিরে গেল তার গতির রাজ্যে। হয়ত সেও জানে না কেন তার আসা। শুধুমাত্র একটা প্রতিশোধ তাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। সময় আবার তার নিজ গতিতে চলা শুরু করেছে। শেষ থেকে সব আবার শুরু হল। আবার পৃথিবী সময়কে ফিরে পেল কিন্তু এর অভিজ্ঞতা একমাত্র ইজিকিয়েল আর প্রফেসার বায ছাড়া কেউ জানে না। হয়ত মানব জাতির উচিৎ সময়কে গালমন্দ বিরত থাকা। কেননা এটা তাদের জন্য একটা আশির্বাদ। ইজিকিয়েল একটা বিষয় ভালোভাবে বুঝেছে যে, ‘পৃথিবী একটা পাক খেলো, কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর পাওয়া গেল না। হয়ত এটাই চাক্ষুষ শিক্ষার সহায়ক।’
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা এপ্রিল, ২০১৫ রাত ১১:৪৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×