somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সবকিছুই স্বাগতম, শুধু ইসলাম ছাড়া

১৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১২:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

- আমাদের সংস্কৃতি আমাদের নিজস্বতার পরিচয়। কোন অপসংস্কৃতি বা মৌলবাদী অপশক্তি একে বদলাতে পারবে না।
- হাজার বছরের বাঙালী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পালন করে মানুষ ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর আস্ফালনের সমুচিত জবাব দিয়েছে।
- যতদিন এদেশে বাঙালী ঐতিহ্য পালিত হবে, ততদিন এদেশ নিয়ে কোন চিন্তা নেই।

হায় সেলুকাসঃ

* পহেলা বৈশাখে মেয়েরা সবাই বাঙ্গালীর ঐতিহ্য শাড়ী পরবে। কিন্তু অনেক মেয়েই যে পশ্চিমা বিজাতীয় সংস্কৃতির অশ্লীল শার্ট-প্যান্ট পরে সেদিন।
- এ তো নতুন যুগের নতুন প্রজন্মের পোশাক। এ নিয়ে বাড়াবাড়ি করার কিছু নেই।

* মুসলিম মেয়েদের হিজাব পরে আসা উচিৎ।
- মৌলবাদীরা তাই চায়, আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ধ্বংস হোক, বন্দী হোক নারীরা।

* শাহাবাগের সবাই তো এবার মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে মঙ্গল চাইলো।
- তা তো চাইবেই। হাজার বছরের বাঙালী ঐতিহ্যতো তা-ই।

* মঙ্গল প্রদীপ হিন্দু সংস্কৃতির অংশ।
- প্রতিক্রিয়াশীলরা এমনই। সবকিছুতে ধর্মকে টেনে আনে।

* সবাই যদি মোনাজাত করে আল্লাহ্‌র কাছে দেশের মঙ্গল চাইতো?
- ধর্মান্ধ। দেশটাকে আফগানিস্তান বানাবার ষড়যন্ত্র চলছে।

* অনেক ছেলে আর অনেক শিশু ধুতি পরে এসেছে।
- আসতেই পারে। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে না।

* ধুতি হলো হিন্দুদের ধর্মীয় পোষাক।
- উগ্রবাদী মোল্লাদের মতো কথা।

* কেউ যদি বলে আমরা এ বার পাঞ্জাবী-টুপি পরে দাড়ি রেখে মানুষকে বোঝাব?
- মৌলবাদ, মৌলবাদ। দেশ আজ ধ্বংসের পথে।

* অনেক যায়গায় বৈশাখে হিন্দী গান বাজিয়ে নাচানাচি করে। এটা কি বাঙালী সংস্কৃতি?
- এটা সংস্কৃতি বিনিময়। তরুণদেরতো আর বেঁধে রাখা যায় না।

* কিছু তরুণ যদি ইসলামী সংস্কৃতি মেনে কুরআন নিয়ে আলোচনায় বসে?
- মৌলবাদের টনিক দিয়ে ব্রেইন ওয়াশ করে আজ আমাদের তরুণদের ধ্বংস করা হচ্ছে।

* রবীন্দ্র সঙ্গীতের বয়স একশ বছরের বেশী নয়। এটাও হাজার বছরের সংস্কৃতি হয় কিভাবে?
- রবীন্দ্র সঙ্গীত পবিত্রতার প্রতীক ও বাঙ্গালীর প্রাণের সঙ্গীত। যারা বাঙালী সংস্কৃতিকে ধারণ করেনা তারাই এর বিপক্ষে যেতে পারে।

* পবিত্রতার সাথেই যদি শুরু করতে হয় তাহলে কুরআন দিয়ে শুরু করাই উচিৎ।
- এরাই মৌলবাদী। সবকিছুর মধ্যে ধর্মকে টেনে আনতে হবে কেন?

* পহেলা বৈশাখের আগে চৈত্র সংক্রান্তি এমন ঘটা করে পালন করা শুরু হয়েছে কেন?
- এটা তো বাঙালী ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অংশ।

* কিন্তু এটাতো হিন্দুদের ধর্মীয় বিষয়ের অংশ।
- নিজেদের শেকড়ের এসব বিষয়ে ধর্মকে টেনে আনা ধর্মান্ধদের কাজ।

* সংস্কৃতির নামে এদেশে ভারতীয় অবাঙ্গালী কত্থক নাচের শিল্পী, যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পী এরাতো হরহামেশাই আসছে।
- এটা আমাদের হাজার বছরের উপমহাদেশীয় সংস্কৃতির জয়গান।

হাজার বছর শব্দটি মাথার ভেতর কেমন একটা বিস্তৃত মায়াজাল তৈরী করে। গড়পড়তা ষাট বছর আয়ুপ্রাপ্ত আমাদের এই মানব সমাজে মাত্র এক দেড়শো বছর আগের জীবনাচরণই যেমন অনেক পুরনো মনে হয় সেখানে হাজার বছর এমন আবেদন সৃষ্টি করা খুবই স্বাভাবিক। হাজার বছরের সংস্কৃতির নামে সাতচল্লিশ বছর আগে শুরু হওয়া রমনা বটমূলের অনুষ্ঠান চালিয়ে দেয়া যায়, চালিয়ে দেয়া যায় ইসলাম ছাড়া অন্য ধর্মীয় অনেক আচার অনুষ্ঠান, শুধু ইসলামের স্থান সংস্কৃতিতে নেই।

আজ থেকে তেরশ বছর আগে সদ্য কৈশোর পেরুনো তরুণ মুহাম্মাদ বিন কাশিম এই উপমহাদেশে নিয়ে এসেছিল অনন্য এক সংস্কৃতি। নানা কুসংস্কার আর শোষণে জর্জরিত এ অঞ্চলের মানুষ সেই তরুণের চরিত্র আর সত্যের উপর দৃঢ়তায় মুগ্ধ হয়ে দেবতা হিসাবে তাকে পূজা শুরু করেছিল। দেবলের সেরা ভাস্কর বানিয়েছিল তার বিশাল মূর্তি। দেবতা নিজের হাতেই তার উদবোধন করবেন এই ভেবে মুহাম্মাদ বিন কাশিমকেই আনা হলো অনুরোধ করে। তিনি এসে বললেন, "আমি কোন দেবতা নই, আল্লাহ্‌র নগন্য একজন ভৃত্য এবং রাসুল সাঃ এর একজন সামান্য অনুসারী, যার চরিত্র আর ইনসাফের ধারে কাছে যাবার সৌভাগ্য হলেই আমি ধন্য হব। ইসলামে ব্যক্তি আর মূর্তি পূজার স্থান নেই। এ মূর্তি তুমি নিজ হাতে ভেঙে ফেল"। ভাস্কর ভেঙে ফেলল সেটা। লোকজন বুঝে নিল সত্য এসে দাঁড়িয়েছে তাদের দরজায়। এ আলো মুহাম্মাদ বিন কাশিমের নয়, এ আলো সবার জন্যই এসেছে।

বাংলা ভাষায় এ যাবত প্রাপ্ত সবচেয়ে পুরানো গ্রন্থটির নাম চর্যাপদ যার বয়স হাজার বছর। এর পরের শতাব্দীগুলোর অনেক সাহিত্য ও লেখনিও সংরক্ষিত আছে। এসব লেখনির রাক্ষস-খোক্কসের গাল গল্প আর ভাষার সাথে চর্যাপদেরও সাড়ে চারশ বছর আগে পৃথিবীতে আসা গ্রন্থ কুরআনকে মেলালে অবাক না হয়ে পারা যায় না। কত জীবন্ত ও কত বাস্তব এই গ্রন্থ। আজ এই সময়ে এটা খুলে বসলেও সেরকমই আবেদন রাখে যা রেখেছিল হাজার বছরেরও বেশী আগে। শেকড়ে ফিরে যাবার আওয়াজ অনেক জোরেশোরে শোনা যায় আজকাল। মুসলিমদের ফিরে যেতে হবে চৌদ্দশ বছর আগের শেকড়ে
১৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

"ছাত্র-জনতার বেপ্লবের" ১৮ মাস পরে, আপনার ভাবনাচিন্তা ঠিক আগের মতোই আছে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৭



২০২৪ সালের পহেলা জুলাই "ছাত্র-জনতার বেপ্লব শুরু হয়, "৩৬শে জুলাই" উহা বাংলাদেশে "নতুন বাংলাদেশ" আনে; তখন আপনি ইহাকে ব্যাখ্যা করেছেন, ইহার উপর পোষ্ট লিখেছেন, কমেন্ট করেছেন; আপনার... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

×