জাতীয় সংসদের স্থপতির নাম না জানার কারনে ক্লাস সেভেনে থাকতে দেবেন্দ্র স্যারের হাতে মার খেয়েছিলাম,আজো তা মনে পড়ে।আবার কত যে চাকুরিপ্রার্থী জাতীয় সংসদের স্থপতির নাম না বলতে পারার কারনে চাকরী হয়নি তার কোনো ইয়ত্তা নাই। তবে এখন আর চিন্তা নাই। সাধারন জ্ঞানের বই আর পড়া লাগবে না। শিক্ষিত,অর্ধ শিক্ষিত,অশিক্ষিত সবাই জেনে যাবে জাতীয় সংসদের স্থপতির নাম।বিরাট এক আলোড়ন স্রষ্টি করবে জাতীয় সংসদের স্থপতি লুই কান।
আসলে দেশে এখন আর কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা শুধু লুই কানের নকশা। তাই যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মূল নকশা আনার জন্য চার লাখ ডলার বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। লুই আই কানের মূল নকশা আনতে চার লাখ ডলার বরাদ্দ
তবে নকশা আসার আগেই জাতীয় সংসদ ভবন এলাকা থেকে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। স্থপতি লুই কানের নকশায় শেরেবাংলা নগর এলাকায় কবরস্থানের জন্য কোনো জায়গা রাখা হয়নি—এই যুক্তিতে জিয়াউর রহমানসহ সেখানকার আরও সাতটি কবর সরানোর পক্ষে মত দিয়েছে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
সংসদ এলাকায় থাকছে না জিয়ার কবর
এখন সংবাপত্র-ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার বড় অংশ দখল করে নেবে লুই কান।টক শোতে কথার ফুলঝুড়ি ঝড়াবে আমাদের বিশেষজ্ঞগন।সংসদে আলোচনার বিরাট অংশ বরাদ্দ থাকবে লুই কানের নকশা জন্য। আমরা নতুন নতুন অনেক ভালো কথা শুনতে পাব,
১)অসহায় সুরে কেউ বলবেন, 'আমার কি করার আছে?লুই কানের নকশায়তো জিয়াউর রহমানের কবর নাই।এখন আপনারাই বলুন জিয়াউর রহমানের কবর না সরিয়ে কি করব?
২)আবার কেউ চেতনায় উজ্জিবিত হয়ে বলবেন,'যারা লুই কানের নকশা মানে না,তারা স্বাধীনতা বিরোধী।তাদের পাকিস্তান চলে যাওয়া উচিত।'
৩)কেউ ভিশন-২০৪১ অনুসারে বলবেন, 'লুই কানের নকশা বাস্তবায়ন আমাদের অংগীকার। আমরা এর সঠিক বাস্তবায়ন না করলে জনগনের কাছে দায়বদ্ধ থাকব।জনগন চায় লুই কানের নকশা বাস্তবায়ন।
যেন লুই কানের নকশা ঐশি বানী। এর কোনো ধরনের পরিবর্তন করলে বিরাট পাপ হয়ে যাবে। অথচ এই আটটি কবর ছাড়া শেরেবাংলা নগরে আছে লুই কানের নকশাবহির্ভূত আরও সাতটি স্থাপনা। এগুলোর মধ্যে বড় স্থাপনা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি), স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের বাসভবন। । এগুলোর ব্যপারে কি করা হবে তা কিন্তু বলা হবে না। শুধু মাথা ব্যাথা হবে জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে।
হয়তো সরকার জোর করে জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে দেবে।কারন বিএনপি দুএকটা আবেগময় কথা বলা ছাড়া কিছুই করতে পারবে না। কিন্তু এখন যেমন মানুষ বলে আওয়ামী লীগ আমলে মায়ের গর্ভে শিশুও নিরাপদ নয়। ভবিষ্যতে মানুষ বলবে কবরও আওয়ামী সরকারের প্রতিহিংসার স্বীকার।এই ব্যাপারটি অন্তত সরকারের চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮