somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ইলিয়াস নিখোঁজ রহস্যপ্রত্যক্ষদর্শী এক পুলিশ কর্মকর্তা »

২৬ শে এপ্রিল, ২০১২ সকাল ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

* ধমক দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয় পুলিশ কর্মকর্তাকে * গোপন ভিডিও ক্যামেরায় ঘটনাটি ধারণ করা হয় * উদ্ধার অভিযান লোক দেখানো>
বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর অপহরণ ও গুম ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্যসূত্র পাওয়া গেছে। ঘটনার সময় সাব-ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার এক পুলিশ কর্মকর্তা ধস্তাধস্তি অবস্থারত ঘটনাস্থলে হাজির হন। তিনি ছিনতাইকারী ভেবে অপহরণকারীদেরই (!) একজনকে পেছন দিক থেকে কলার চেপে ধরেন এবং কৌশলগতভাবে হুমকিও দেন। ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলে উঠেন, 'কেউ লড়বে না, গুলি করে দিব কিন্তু'। এ সময় ধস্তাধস্তিতে লিপ্ত একজন মাইক্রোবাসের সাইডে এগিয়ে এসে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে নিজেদের একটি বিশেষ বাহিনীর পরিচয় দিয়ে বলেন, আমরা অভিযান চালাচ্ছি। বাধার সৃষ্টি করবেন না, সরে দাঁড়ান। এ সময় মাইক্রোবাসের ভেতরে ওই বাহিনীর কিছু নমুনা প্রমাণ হিসেবে দেখতে পেয়ে কথিত অভিযান পরিচালনাকারীর শার্টের কলার ছেড়ে দিয়ে তিনি দুই পা পিছিয়ে যান। কিন্তু মাইক্রোবাসের লোকটি পুনরায় পেছন দিকে এসে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে আবার ধমক দিয়ে বলেন, 'সরে যেতে বললাম না, এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন_ চলে যান।'এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাটি আর এক মুহূর্তও ঘটনাস্থলে অবস্থান করা নিরাপদ ভাবেননি, তাই তিনি জোর কদমে হেঁটে গলি রাস্তাটির দক্ষিণ পাশের জলখাবার হোটেলের সামনে চলে যান। সেখানে ওই পুলিশ কর্মকর্তার মোটরসাইকেলটি রাখা ছিল। সেখান থেকে তিনি গুলশান জোনেরই তার কর্মস্থল থানায় পেঁৗছে তার অফিসার ইনচার্জ ও ঘনিষ্ঠ সহকর্মীদের কাছে পুরো বিষয়টির বর্ণনাও দিয়েছেন। কিন্তু অফিসার ইনচার্জ বিভিন্ন স্থানে টেলিফোনে আলাপ করে ওই সাব-ইন্সপেক্টরকে এ বিষয়ে আর মুখ খুলতে নিষেধ করে দেন। পাশাপাশি তাকে সাবধানে চলাফেরারও পরামর্শ দেন।এ ঘটনার পর রাতেই পুলিশ কর্মকর্তাটি ঘটনাস্থলে ইলিয়াস আলীকেই অপহরণ করা হয়েছে বলে জানতে পারেন। তিনি ঘটনাস্থলেও যান। এরপর থেকেই সংশ্লিষ্ট প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ কর্মকর্তাটি চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। তার ঘনিষ্ঠ একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, 'ইলিয়াস আলীর অপহরণ ও গুমের ঘটনায়' কোনো রকম তথ্যসূত্র-প্রমাণাদি রাখতে চাননি অপহরণকারীরা। এ কারণে তার গাড়িচালককেও জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় এভিডেন্স (সাক্ষ্য-প্রমাণ) হিসেবে ছিলেন শুধু ওই পুলিশ কর্মকর্তাটি। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সম্পৃক্ত থাকা প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ কর্মকর্তাকে 'অপহরণকারীরা' অবিশ্বাস করেননি মোটেও। সহকর্মী ওই পুলিশ কর্মকর্তার ধারণা, পরবর্তীতে ইলিয়াস আলীর অপহরণ বিষয়টি জাতীয় পর্যায়ে প্রভাব ফেলার পরই দ্বিতীয় এভিডেন্স হিসেবে প্রত্যক্ষদর্শী কর্মকর্তাটি নিজের জীবন নিয়েও চরম ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ কর্মকর্তাটি যে ঘটনাস্থলে পেঁৗছান তার সত্যতা পাওয়া গেছে মহাখালী মোড়ের পেট্রল পাম্প সংলগ্ন জলখাবার হোটেল থেকে। ওই হোটেলের একজন কর্মী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, ওই রাতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাটি সাদা পোশাকে মোটরসাইকেলযোগে মহাখালীর অদূরে ডিউটি দিচ্ছিলেন। থানায় ফেরার আগে তিনি রাস্তায় মোটরসাইকেলটি থামিয়ে নাস্তা খাওয়ার জন্য বসেন। হঠাৎ উল্টো দিকের গলি থেকে দুজন পথচারী এসে জানায়, রাস্তার মধ্যে ছিনতাই আর মারামারি হচ্ছে। এটুকু শুনেই ওই সাব-ইন্সপেক্টর গলির দিকে ছুটে যান। তার পেছনে আরও এক-দুজন এগিয়ে গেলেও তারা অজ্ঞাত আশঙ্কায় নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে থাকলেও প্রত্যক্ষদর্শী এসআই মাইক্রোবাস ও প্রাইভেটকারের মাঝামাঝি স্থানে পেঁৗছেই কথিত অপহরণকারীদের একজনের শার্টের কলার চেপে ধরেন।প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ কর্মকর্তাটি তার অফিসার ইনচার্জের কাছে ঘটনার বর্ণনা দেওয়ার সময় আরও জানান, তাকে যখন ধমক দিয়ে সরানো হচ্ছিল তখনও ৪-৫ জন মিলে একজনকে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নিচ্ছিলেন। গাড়ির ভেতর থেকেও ধস্তাধস্তি ও ধমকা-ধমকির শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল। এ সময় পাশের একটি ভবনের আড়াল থেকে একজন মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনাটি ভিডিও করছিলেন। সেখানে মোবাইল স্ক্রিনের আলো তিনিসহ অপহরণকারীদেরও একজন খেয়াল করছিলেন। তবে মোবাইলে ভিডিও ধারণকারী যুবকটিকে পরদিন থেকে আর পাওয়া যায়নি।প্রত্যক্ষদর্শী একমাত্র সাব ইন্সপেক্টর কর্মরত থানার অফিসার ইনচার্জকে আরও বলেন, ইলিয়াস আলীর গাড়ির পেছন দিকে কালো রঙের মাইক্রোটি ধাক্কা মারায় চালক ক্ষিপ্ত হয়ে নেমে যান এবং মাইক্রো চালকের সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক ও হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় মাইক্রো থেকে আরও ৪-৫ জন নেমে গিয়ে ইলিয়াস আলীর গাড়ির চালককে জোরপূর্বক ধরে মাইক্রোতে তুলে নিয়ে বেঁধে ফেলেন। পরক্ষণেই ৩-৪ জন নেমে গিয়ে প্রাইভেট কারে বসে থাকা ইলিয়াস আলীকেও ধরে গাড়িতে তোলার সময় ধস্তাধস্তির সৃষ্টি হয়। উদ্ধার হলো না আট দিনেও : একে একে আট দিন কেটে গেল, তবুও ইলিয়াস আলীকে উদ্ধার করতে পারল না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ১৭ এপ্রিল রাজধানীর বনানী থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক এমপি এম ইলিয়াস আলী। গত তিন দিন তাকে উদ্ধারে র্যাব ঢাকা ও ঢাকার বাইরে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে কয়েক দফা অভিযান চালালেও সেই অভিযান ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে পড়েছে।

এ ব্যাপারে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এমপি বলেন, ইলিয়াস আলীকে উদ্ধারের নামে সরকার যা করছে তা অবশ্যই লোক দেখানো। কারণ সরকারই তো তাকে অপহরণ করেছে। তাই সরকার জানে ইলিয়াস কোথায় আছেন। এসব লোক দেখানো কাজ জনগণ বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন, আমরা দ্রুত ইলিয়াসের সন্ধান চাই। তাকে জীবিত ফেরত চাই।

http://bangladesh-pratidin.com/index.php
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদী নামের এই ছেলেটিকে কি আমরা সহযোগীতা করতে পারি?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১০:০৪


আজ সন্ধ্যায় ইফতার শেষ করে অফিসের কাজ নিয়ে বসেছি। হঠাৎ করেই গিন্নি আমার রুমে এসে একটি ভিডিও দেখালো। খুলনার একটি পরিবার, ভ্যান চালক বাবা তার সন্তানের চিকিৎসা করাতে গিয়ে হিমশিম... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভালোবাসা নয় খাবার চাই ------

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:০৬


ভালোবাসা নয় স্নেহ নয় আদর নয় একটু খাবার চাই । এত ক্ষুধা পেটে যে কাঁদতেও কষ্ট হচ্ছে , ইফতারিতে যে খাবার ফেলে দেবে তাই ই দাও , ওতেই হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতীয় ইউনিভার্সিটি শেষ করার পর, ৮০ ভাগই চাকুরী পায় না।

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৯ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৭



জাতীয় ইউনিভার্সিটি থেকে পড়ালেখা শেষ করে, ২/৩ বছর গড়াগড়ি দিয়ে শতকরা ২০/৩০ ভাগ চাকুরী পেয়ে থাকেন; এরা পরিচিত লোকদের মাধ্যমে কিংবা ঘুষ দিয়ে চাকুরী পেয়ে থাকেন। এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×