বিশ্ব খ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত সৈয়দ আবুল হাসান আলী নদভী রঃ ওনার এক বইতে উল্লেখ করেছেন, “ফিলিস্তিনের ব্যাপারে আরব-জাতির ঔদাসীন্য রীতিমত অপরাধের পর্যায়ে পরে”।
আরব-নেতারা ও আরবলীগ আজ নির্লজ্জ ভাবে ব্যর্থ, নিজেদের অস্তিত্ত্ব সম্পর্কে সন্দিহান, বিশ্বের পরাশক্তিদের পা চাটতে ব্যস্ত। ইজরাইল জেরুজেলেমে তাদের রাজধানী স্থাপন করতে যাচ্ছে, অথচ তাদের ঘুম ভাংছে না। শুধু তাই নয়, এর পেছনে আরব-নেতাদের মৌন সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে। আর ইজ্রাইলের এ দুরভিসন্ধির বিরুদ্ধে চারিদিকে যে প্রতিবাদ উঠছে, তা হাস্যকরভাবেই অতি ক্ষীন (যেন বিড়ালের মিউ মিউ)।
ইজ্রাইলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে এই আরব-জাতি কি কিছুই করতে পারত না। নিজেদের মধ্যে কোন্দল আর নিজেরা নিজেরা বিভক্ত। এই সুযোগে মধ্যপ্রাচ্যে গেড়ে বসছে ইজ্রায়েল, ইরান, রাশিয়া আর আমেরিকা। আরব-জাতি আজ দুর্ভাগ্যজনকভাবে, নিজেদের অস্তিত্ত্ব হারিয়ে তা খুজে ফিরছে কখোন ইজ্রায়েলের মধ্যে, কখোন বা আমেরিকা আর রাশিয়ার মধ্যে। সুতরাং, এ অবস্থায় মধ্যপ্রাচ্যে জুলুম বন্ধ হবার সুযোগ নেই, কারন, ওরাই (ইজ্রায়েল, ইরান, রাশিয়া আর আমেরিকা) আজ মধ্যপ্রাচ্য ভাগ-বাটয়ারায় ব্যস্ত।
আসলে, আরব-জাতি আজ স্বাধীন নাই। তারা আমেরিকা বা রাশিয়াকে দোস্ত বানানোর মধ্যে স্বপ্ন-পূরন ও ভাগ্য পরিবর্তনের পথ দেখছে। আর এ সুযোগে তারাই (বিশ্ব-শক্তিগুলি) আরবে মানুষ মারছে। অর্থাৎ, শিয়ালের কাছে মুরগী বর্গা দেওয়া আর কি।
একদিকে সৌদিতে নতুন নতুন আনন্দ, গান-বাজনার নেশা পেয়ে বসছে, আর ওদিকে ফিলিস্তিন, ইয়েমেন আর শামে (সিরিয়ায়) নিরপরাধ বাচ্চারা গুলি খেয়ে মরছে।
আজ আরবদের অর্থ ও সম্পদের অভাব নেই। বিভিন্ন দেশের সাথে আছে বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা। অস্ত্র-ও কম নেই। প্রভাব খাটানোর সুযোগ আছে, যে প্রভাব ব্যবহার করে তারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি আনতে পারত। অথচ, এইটুকু সদিচ্ছা তাদের দেখা যাচ্ছে না।
আজ কেউ জানে না, শাম (সিরিয়া) আর ইয়েমেন কাদের? এই দেশগুলা কয়ভাগে বিভক্ত হয়েছে? লিবিয়া আজ কয়ভাগ? ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যে কী আছে?
ফিলিস্তিন ও সিরিয়ায় গণহত্যার ব্যাপারে আরব-জাতি আর কতকাল নীরব দর্শক থাকবে? তাদের এ নীরবতা বড় ধরনের অপরাধের পর্যায়ে পরে। আজ তারা শুধুই দৌড়াচ্ছে ট্রাম্প আর পুতিনের দিকে। ট্রাম্প ও পুতিনের কাছে স্বার্থ ছাড়া আর কিছুর মূল্য নেই। এটা ঐতিহাসিকভাবে সত্য, অন্য শক্তির আশ্রয় ভাল নয়। তারা উপরে পানি ঢালে, তলে দিয়ে গোড়া কাটে।
সিরিয়ার ব্যাপারে কারো উচ্চবাচ্য নেই। কসাই আসাদের গোলা থামছে না। শিশুদের পুড়ে যাওয়া লাশ, বোরকা-পরিহিতা ভদ্র মহিলাদের অসহায় ছুটাছুটি দেখতে দেখতে বিবেক যেন স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে, আর বিশ্ব নিয়তি যেন ক্রুড় হাসি হাসছে আর বলছে “ একদিন তোমাদের উপরেও আসবে”।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ দুপুর ১:৪৫