গত বেশ কিছুদিন বিশ্বের প্রধান খবরের শিরোনাম গুলোতে "টোটেনহাম" অবস্থান করছে। শুধু টোটেনহাম নয়, সমগ্র লন্ডন এবং যুক্তরাজ্যের অন্যান্য অঞ্চল গুলোর বর্তমান পরিস্থিতি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যদের রাতের ঘুম হারাম করার জন্য যথেষ্ট। তবে প্রেক্ষাপট যদি বাংলাদেশ হতো তাহলে নিশ্চয় এখানে ভিন্ন কিছু চিন্তা করতে হতো, কারন জনগণের যে কোন দুর্ভোগ যদি সরকারের স্বার্থসিদ্ধি না করতে পারে তবে বর্তমান সাহারা খাতুন আঈনে সেতা "বিচ্ছিন্ন ঘটনায়" পরিণত হবে। যাক এসব, আবার একটু টোটেনহাম-এ ফিরে যাই। গত ৪ঠা আগস্ট ব্রিটিশ কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিক মার্ক ডুগান পুলিশের গুলিতে নিহত হয়। তাকে হত্যা করার সময় পুলিশ কোন প্রকার কারন দর্শায়নি। তবে এই মৃত্যু যে কতটা সুখকর হয়েছে সেটা সবথেকে ভাল বুঝতে পারছে ব্রিটিশ সরকার (কারন জনগণের ভোগান্তি তাদের কাছে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়)। প্রতিবাদের নামে সেখানে চলছে তাণ্ডব, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হতাহতের ঘতনা ইত্যাদি। ইতিমধ্যে মোট কত টাকার ক্ষতি হয়েছে সেটা এখনো জানা যায়নি, তবে এই ঘটনার মূল কারন সমূহ যা পাওয়া গিয়েছে সেগুলোর সংক্ষিপ্ত হচ্ছে -১)পুলিশের বর্ণবাদি আচরণ ২) অর্থনৈতিক মন্দা ৩) বেকারত্ম ৪) কার্যত পুলিশের অভাব ইত্যাদি। উক্ত বিষয়গুলো যদি আমরা আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে বিচার করি তাহলে চিত্রটা কেমন হতে পারে?? আমাদের দেশে একাধিক ধর্মের লোক থাকলেও একাধিক বর্ণের লোক নেই, তবে বর্ণভেদে বিচার করতে গেলে সেটা রাজনৈতিক পটভূমি থেকে দেখতে হবে। ক্ষমতাসীন দলের লোক সে যেই হোক না কেন ৫ টা হত্যা করেও ছাড়া পেয়ে যাবে এই দেশে, সারকারের মদতপুস্ট সন্ত্রাসী বাহিনী কে পুলিশ বাহিনী তে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বিরোধী দল দমনের জন্য। সুতরাং দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক ভেদাভেদটাই এখানে বর্ণভেদের কাজ করছে। এরপর যদি অর্থনীতির কথা বলি তবে সেটা বিস্তারিত বলার কিছু নেই। আমাদের মাল সাহেব গাল ফুলিয়ে যতই তুব্রি ছুটাক না কেন একজন ব্যার্থ অর্থমন্ত্রী হিসেবে তিনি নিজেকে বহু আগেই প্রমান করেছেন। যে কারনে কিছুদিন পরে বাজারের সামনে হয়ত সাইনবোর্ড টাঙান থাকবে- "শুধুমাত্র ধনীদের প্রবেশাধিকার রয়েছে"। দ্রব্যমুল্য সহ দেশের অচল অর্থনীতির কথা এখানে বার বার উচ্চারণ করার কোন কারন দেখছি না। এরফলে তৃতীয় কারন (বেকারত্ম) এর আবির্ভাব হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। চতুর্থ কারণটা( পুলিশের অভাব) আমাদের দেশে সবচাইতে প্রকট। হয়ত ভাবছেন যে - "পুলিশের যন্ত্রনায় ঘর থেকে বের হতে পারি না তাহলে পুলিশের অভাব হল কোত্থেকে"? এখানে একটা বিষয় লক্ষণীয় যে বর্তমানে দেশে পুলিশ নামের লাইসেন্স ও পোশাকধারি সন্ত্রাসীর সংখ্যা অনেক। তা না হলে মিলন, লিমন, কাদের, ৬ ছাত্র হত্যা ইত্যাদি ঘটনা আমাদের প্রতিনিয়ত পরতে হতনা। সুতরাং সন্ত্রাসী বাহিনীর কাছে আমরা কখনই নিরাপত্তা আশা করতে পারি না।
এই সমস্ত কিছু বিচার করলে আমরা যা দেখতে পাই সেটা হচ্ছে টোটেনহামের আগুন বাংলাদেশে প্রতিস্থাপন। টোটেনহামে একদিনে এই আগুন জ্বলেনি, বহুদিনের চাপা ক্ষোভ রুপ নিয়েছে এই ভয়ানক পরিস্থিতির, তবে টোটেনহামের জন্য আশার বানী এই যে তাদের দেশে সাহারা নামের কোন অন্ধ পাহারাদার দেশের আঈনশৃংখলার প্রধান দায়ীত্মে নেই। যে কারনে তাদের সরকারের তড়িৎ হস্তক্ষেপে লন্ডনের আগুন অনেকটাই নিভে এসেছে, তবে এই আগুন আমাদের ঢাকা তথাপি সমগ্র দেশে লাগলে সাহারা, মাল, খাদ্য মিতব্যায়ী ফারুক সাথে তাদের মাত্রি সমতুল্য প্রধান্মন্ত্রী কি দিয়ে নিভাবেন সেটা যদি কারো যানা থাকে তাহলে একটু বলবেন।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



