somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বেকার জীবনটায় প্রেম হল অভিশাপ

২২ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ৩:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই বেকার জীবনে কি করব কিছুই বুঝতে পারছি না ।চাকরীর আশায় প্রতিদিন বাসা থেকে বের হই , কিন্তু বাসায় প্রতিদিনই গোমরা মুখ করে ফিরে আসি । এই দুনিয়ায় ভাল ডিগ্রি নিয়েও ভাল চাকরী পাচ্ছি না । মামা চাচা না থাকলে এই চাকরীর বাজারে ভাল চাকরী পাওয়া অনেকটা অমাবস্যার আকাশের চাঁদ দেখার মত ।

প্রতি রাতেই চিন্তা করি এইভাবে আর কতদিন বাপের হোটেল এ খামু । বাবা মাঝেমধ্যে শুক্রবারে যখন বলে যা বাবা , আজকে বাজারটা তুই করবি । কিন্তু পকেটে টাকা নাই , বাজার করব কিভাবে ?
তবুও বাবাকে বুঝতে দেই না , চাকরী না পাওয়ায় আমার পকেট টা ফাকা । যেভাবেই পারি মেনেজ করে নিই ।

আজ ক্যালেন্ডারের পাতা লক্ষ্য করে দেখলাম প্রায় দুই বছর হয়ে গেছে আমার বেকার জীবনের ।

বেকারত্ব যে আমার রঙ্গিন জীবনটাকে বিবর্ন করে দিচ্ছে তা আমার আর বুঝতে বাকি রইলো না ।

সিকারেট টা মাত্র শেষ করে মাটিতে ফেলে দিলাম ,সাথে সাথে মোবাইলে রিং বেজে উঠল । এত রাতে আমার মত বেকারকে আবার কে ফোন দিল ।

ফোন রিসিভ করেই দেখি , অপর প্রান্ত থেকে কে যেন হ্যালো বলছে । কন্ঠটা বেশ পরিচিত ই মনে হল , তাই বললাম কে বলছেন :-
'নাহিদ , আমি মিলি চিনতে পেরেছিস নিশ্চই '
:-কিছুটা হতভম্ব হয়ে গেলাম , আমার ভার্সিটি লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড মিলির হঠাত এতো রাতে ফোন করেছে বলে ,
এই সেই মিলি যাকে অনেক ভালবাসতাম কিন্তু বলবো বলবো করে আর মনের কথা বলতে পারি নি ।
"-কিরে কথা বলছিস না কেন ? "
:- অই পাগলি , এত দিন পর আমার কথা মনে পড়েছে বুঝি , তুই দেশে আসলি কবে?
"তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলি , তাই তোকে মনে পরবে নাতো কাকে মনে পড়বে বল ,এইতো এক সপ্তাহ হলো দেশে এসেছি , তা তর কি খবর বল ?
:-নারে অবস্থা তেমন ভাল না । চাকরী নাই তাই এখনও বেকার , তোর কি খবর বল ?
" সব খবর কি ফোনেই নিবি নাকি , কালকে চল কোথাও বসে আড্ডা দেই , তখনই সব কথা হবে । কোথায় দেখা করবি বল ? "
:- ও তাই বুঝি ,কালকে পার্কে আসিস ।
"নাহিদ ভাল থাকিস কালকে দেখা হবে ,বাই ।

ফোনটা রেখে দেওয়ার পর ভার্সিটি লাইফের কথা গুলো মনে পড়ল । ভার্সিটিতে মিলি আর আমিই ছিলাম আমাদের ফ্রেন্ড গ্রুপের বাচাল পারসন । কথা , আড্ডা আর ঝগরা সবসময় লেগেই থাকতো ।ভার্সিটি লাইফের শেষের দিকেই মিলি হঠাত করে আমেরিকা চলে যায় । তারপর থেকেই যোগাযোগ কমে যেতে যেতে এক সময় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ।

রাতে কখন ঘুমিয়ে পড়লাম বুঝতে পারি নি , সকালে ঘুম থেকে উঠেই মিলির সাথে দেখা করার কথা মনে পড়ল । নাস্তা করেই ওর সাথে দেখা করলাম ।

অনেকক্ষন কথা বলার পর জানতে পারলাম,আমেরিকাতে ওর পড়ালেখা শেষ ,দেশে এসেই নাকি ব্যাংকে জয়েন করছে ।

তারপর থেকেই প্রায়ই দেখা হত মিলির সাথে , ফোনে সবসময় ই কথা বলা শুরু হল ।

অন্যদিকে হন্য হন্য হয়েও চাকরি না পেয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম আর চাকরি করবো না । ঘোষ দিয়ে চাকরি করা আমার পক্ষে সম্ভব নয় । তাই ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নিলাম । কিন্তু ব্যবসায় প্রথমেই সুপার লোকসান করে বুঝলাম আমি আসলেই অকর্মা । কোন কাজের ই নই ।

অই দিকে মিলির সাথেও সম্পর্ক ঘনিষ্ট হতে শুরু করল । বেকার লোকের গার্লফ্রেন্ড হওয়ার মাশুল হিসেবেই সবসময় মিলিকেই বিল দিতে হত ।

এভাবে কিছুদিন চলার পরে হঠাত একদিন মিলি বলল দেশে এসে তোর মত বন্ধুকে আবার পাবো বলে আশা করি নি । সত্যিই আমি লাকি ।

আরও কিছুদিন অতিবাহিত হবার পর হঠাত একদিন মিলি ফোন দিয়ে বলল যে* ওর বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে ওর খালাতো ভাইয়ের সাথে যাকে, সে ছোট থেকেই পছন্দ করত । *

আমার মাথায় সাথে সাথে আকাশ ভেঙ্গে পড়ল । বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লাম এই স্বাভাবিক জীবন থেকে । পা বাড়ালাম নেশার পথে । আজ আমি নেশার পথে মৃত্যুর দিকে পা দিচ্ছি ।

কিন্তু আমি প্রেম করতে না পারার ব্যার্থতায় ভুলে গিয়েছিলাম আমার মা বাবার কথা । যারা আমার এই করুণ অবস্থা সহ্য করতে না পেরে পৃথিবী থেকে চিরবিদায় নিয়েছেন । প্রেমের পরাজয়ে আমি এমনি অন্ধ হয়ে গিয়ে ছিলাম যে ,ভুলে গিয়েছিলাম প্রেম একবার গেলে আবার আসবে এই জীবনে , কিন্তু আমি একবার চলে গেলে আমার মা আরেকটি ছেলে খুজে পাবে না ।
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গু এনালিস্ট কাম ইন্টারন্যাশনাল সাংবাদিক জুলকার নায়েরের মাস্টারক্লাস অবজারবেশন !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২৬

বাংলাদেশের দক্ষিণপন্থীদের দম আছে বলতে হয়! নির্বাচন ঠেকানোর প্রকল্পের গতি কিছুটা পিছিয়ে পড়তেই নতুন টার্গেট শনাক্ত করতে দেরি করেনি তারা। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ ঘিরে নতুন কর্মসূচি সাজাতে শুরু করেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিবাদ: দিল্লির ছায়া থেকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র

লিখেছেন কৃষ্ণচূড়া লাল রঙ, ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৫:৫৭

একটা সত্য আজ স্পষ্ট করে বলা দরকার—
শেখ হাসিনার আর কোনো ক্ষমতা নেই।
বাংলাদেশের মাটিতে সে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত।

কিন্তু বিপদ এখানেই শেষ হয়নি।

ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা এখন ভারতে আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

×