এই আন্দোলন চালকদের বিরুদ্ধে নয়। এই আন্দোলন পরিবহন শ্রমিকদের বিরুদ্ধে নয়। এই আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে নয়।
তাহলে কেন এই আন্দোলন?
এই আন্দোলন একটি সিস্টেমের বিরোধীতা। এই আন্দোলন ৪৭ বছর ধরে গড়ে উঠা অচলায়তন ভাঙার ডাক।
পান্ডা লেলিয়ে দিয়ে এই আন্দোলন হয়তো দমানো যাবে। কিন্তু ঘৃনা থামানো যাবে না।
স্যাবোটাজ করে এই আন্দোলন হয়তো ভন্ডুল করা যাবে। কিন্তু ঘৃণা থামানো যাবে না।
বুলেট ইজ নট এনাফ টু কিল অ্যা ড্রিম।
আরেক ফাল্গুনে এরা— আজকের এই বিচ্ছুরা— দ্বিগুন-চৌগুন হয়ে ফিরবে। দাবানলের মতন ছড়িয়ে পড়বে টেকনাফ থেকে তেতুঁলিয়া।
জানতে চান কিভাবে আমি এতো আত্মবিশ্বাসের সাথে এই কথা বলছি? কারণ শেখ মুজিব বলে এই দেশে একজন নেতা ছিলেন। যাঁকে ভালোবেসে এদেশের মানুষেরা বঙ্গবন্ধু বলে ডাকে।
বঙ্গবন্ধুর ডাকে ভেঙে পড়েছিল একটি অন্যায়কারী দেশ। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ভেঙে পড়েছিল প্রাচীন এক অচলায়তন। তাঁর ডাকেই জন্ম নিয়েছিল একটি নতুন পতাকা।
সেই পতাকাকে এত দিন খুবলে খেয়েছে কিছু পুরনো শকুন। সেই পতাকাকে তিলে তিলে হতাশা লজ্জা কান্না বিষণ্নতা আর স্বপ্নহীনতা দিয়ে ঢেকে দিয়েছে দুর্নীতিবাজ ক্ষমতালোলুপ কিছু দুবৃত্ত।
কিন্তু এই দেশ বঙ্গবন্ধুর দেশ। এদেশের বিচ্ছুরা বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী চেতনার উত্তরাধীকারী। এই বিচ্ছুরা মুজিবকোটকে ভেক হিসেবে ব্যাবহার করেনি। এই বিচ্ছুরা বঙ্গবন্ধুকে তাদের চেতনায় ধারণ করেছে। এদের দাবায়া রাখতে গেলে সব ছাড়খাড় হয়ে যাবে।
কসম খোদার! মানুষ যখন স্বপ্ন দেখতে শিখে যায় তখন সে আর মরনকে ভয় পায় না।
যদি এই কথা বিশ্বাস না হয় তো বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ পড়ুন। পড়ুন তাঁর ‘কারাগারের রোজনামচা’।
আজকে যারা পথে নেমে এসে লাইসেন্স চেক করছে তাদের অপমান করবেন না; অসম্মান করবেন না, তাদেরকে হীন স্বার্থে ব্যাবহার করবেন না।
বিশ্বাস করুন আর নাই করুন এরা সব প্রমিথিউস। এরা কেউ ভেকধারী নয়। এরা সব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উত্তরাধীকারী। এরা সব স্বপ্নের জন্য মরতে শিখে গেছে। এদের দাবায়া রাখা যাবে না।
দাবায়া রাখতে গেলে এরা মুখের উপর বলে দেবে, “রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো। এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।”
আরেকটা কথা, আপনারা যারা মনে করেন বঙ্গবন্ধু কোনো একটা দলের সম্পত্তি তারা দূরে গিয়া মরেন। বঙ্গবন্ধু আমার। বঙ্গবন্ধু আপনারও। আর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আপনি যদি সন্দেহ প্রকাশ করেন তবে আমি আপনাকে নিয়ে ঘোর সন্দিহান।
আপনারা যারা এই দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব শংকিত তাদেরকে বলি, আপনার পরিচিত সব কিশোর-কিশোরীকে বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ আর ‘কারাগারের রোজনামচা’ উপহার দিন। পাশাপাশি উপহার দিন জাহানারা ইমামের ‘একাত্তরের দিনগুলি’ এবং প্রথমা প্রকাশিত গ্রন্থ ‘একাত্তরের চিঠি’।
হলফ কররে বলছি, যে কিশোর-কিশোরী এই চারগ্রন্থ পাঠ করে বড় হবে কোনো কুচক্রী তাদের দাবায়া রাখতে পারবে না। কোনো বুলেটই কোনোদিন বিদীর্ণ করতে পারবে না তাদের হৃদয়। ঝাড়ে-বংশে তাদেরকে নির্বংশ করা হলেও বানের ঢলের মতন অতর্কিত তারা আসবে। তারা আসবেই।
০৩রা অগাস্ট ২০১৮। শুক্রবার।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:১৮