somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিপ্রতীপ

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাগরমুখো রুম পাবার জন্য আমার বরাবরই একটা কাঙালপনা থাকে। যতবার কক্সবাজার গিয়েছি, খুঁজে-টুজে আমি একটা সাগরমুখো রুম পেতে চেষ্টা করেছি।

প্রথমবার যখন কলম্বো এসেছিলাম তখন মা প্রকৃতির দানেই বুঝি এমন একটা রুম মিলেছিল যেটি সাগরমুখো না হলেও, জানালা খুলে দিলেই সাগর দেখা যায় আর ঢেউয়ের শব্দে ঘরের ভেতর সাগর নেমে আসে।

এবার যখন রাবনের দেশে এলাম তখনো, সাগর দেবতার ভক্ত বলেই হয়তো, কী করে যেনো আমার কপালে একটা সাগরমুখো রুম জুটে গেলো।

স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, সাগরমুখো রুম পেয়ে আমার যা সুখ লেগেছিল!

তো, আমি যে কাজে এসেছি সেই কাজে এই লংকায় দক্ষিণ এশিয়ার আরো অন্যান্য দেশ থেকেও অতিথিরা এসেছেন। চা বিরতির ফাঁকে আলাপ হচ্ছিলো মালদ্বীপ থেকে আসা গোল-গোল ডাগরচোখের কন্যার সাথে।

নানা কথার ফাঁকে কোন কথা থেকে কোন কথায় আমি বল্লাম, কলম্বো আমার এতো ভালো লেগেছে! সাগরের শব্দ শুনতে, সমুদ্রের পাড়ে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে আমার কী যে ভালো লাগে!

তিনি বড় নিরস বদনে উত্তরে জানালেন, কলম্বোর সাগর তার মোটেই ভালো লাগে না। দেখতে একদমই সুন্দর না। বরং তাদের দেশের সাগরের নীল জলরাশির তুলনায় এই জল ঘোলা, অসুন্দর।

এইসব বলে তিনি আমাকে তার মোবাইল থেকে তার দৈনন্দিন জীবনের ফাঁকে ধরা কয়েকটা ছবি দেখালেন। নীলজলরাশি!
নীল। উপচে পড়া নীল! মায়াবী নীল!

এই নীল দেখাতে দেখাতে সাগর কন্যা বললেন, দেখুন! এই নীল দেখে কারো আর কলম্বোর এমন তীর ছাড়া ঘোলাজলের সাগর দেখতে ভালো লাগে!

তারপর স্বগতোক্তির মতন বললেন, তবু কলম্বো এসে মানুষ কেন যে সি-সাইড রুম নিতে চায় আমি একদম বুঝি না! আমি এমন একটা রুম নিয়েছি যেখান থেকে সিটি ভিউ ভালো পাওয়া যায়। আমাদের দেশে মানুষ খুবই কম। আমি যে দ্বীপে থাকি সেই দ্বীপে মানুষ আরো কম। তাই, আমার মানুষ দেখতে ভালো লাগে।

এইসব বলতে বলতে আমরা আবার অন্য কথায় চলে গেলাম।

কিন্তু আমার ভেতর গুমরে গুমরে উঠলো তার সিটিভিউ। আমার ভেতর গুমরে গুমরে উঠলো সাগর তীরে ঢেউ ভেঙার কলরোল।

২৭ জুলাই। শুক্রবার। ২০১৮


সর্বশেষ এডিট : ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ সকাল ৯:৫৭
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×