somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কতিপয় আনুমানিক সত্য (কৌতুক নয় তবে ঐরাম-ই)

০৭ ই মার্চ, ২০১২ দুপুর ১২:৪১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এক.
বাসে আপনি সাধারণত বিপরীত লিঙ্গের অপরিচিত কারো সাথে বসেননা । প্রয়োজনে দাঁড়িয়ে যান। একবার হলো কি, আপনি বসে আছেন । বাস দাঁড়িয়ে লোক ডাকছে। হুড়মুড় করে উঠে বিপরীত লিঙ্গের একজন আপনার পাশে বসল। সিট তখনো এদিক ওদিক কয়েকটা খালি আছে। আপনি উঠে যাবেন কিনা ভাবছেন। পরমুহুর্তে মনে হল, এটা করলে হয়তো সহযাত্রীকে অপমান করা হবে। আপনি চুপ করে আরেকটু জড়োসড়ো হয়ে বসলেন।
-আজ রাস্তাঘাটে খুব জ্যাম ! আপনার দিকে তাকিয়ে মন্তব্য করল সহযাত্রী। কিন্তু আপনার মনে হয়েছে অন্যান্য দিনের তুলনায় জ্যাম তুলনামূলক কম। তাই বললেন,
-হ্যাঁ, না মানে...হ্যাঁ...জ্যাম....
তারপর দুজনই নিরব। একটু পর বাস নিজস্ব লাইন রেখে শর্টকাটে যাবার জন্য অন্য লাইন ধরল। সহযাত্রী বলল, 'ওরা এত রাফ গাড়ি চালায় ! যখন যেদিকে পারে সেদিকেই চালায়।' আপনি এই কথার কি উত্তর দিবেন ভেবে পেলেন না। মনে মনে উত্তর খুঁজে খুঁজে ক্লান্ত হয়ে বললেন 'আসলে ওরা খুব রাফ গাড়ি চালায়।' এবার আপনার মনে হল সহযাত্রী দু-দুবার করে আপনার সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছেন আপনারও কিছু বলা উচিত। নাহলে আপনাকে আনস্যোসাল মনে করবেন তিনি। আপনি বললেন- ক্লাস থেকে ফিরছেন ? তিনি উত্তর দিলেন- কেন ? (গলার স্বর শুনে আপনি কেঁপে গেলেন) আশপাশের যাত্রীরা আপনাদের দেখছে কিনা অনুমান করার চেষ্টা করছেন। পাল্টা প্রশ্ন শুনে আপনি মরমে মরে যেতে লাগলেন। ধুর কেন কথা বলতে গেলাম। অসমাজিক ভাবত তাতে কি হত। এখন তো মান সম্মান যায় যায়।-ভাবছেন আপনি। শেষ চেষ্টা করলেন-না মানে.. মনে হল আপনি ক্লাস শেষে ফিরছেন। -তো ? সহযাত্রীর উত্তর। আপনার সম্মান যেটুকু ছিল সেটুকুও গেল। আপনি ঠিক করলেন জীবনে আর এইরকম পরিস্থিতিতে কারো সাথে কথা বলবেননা।

বছর খানেক পর আপনার ভার্সিটির এক বিপরীত ঘরানার একজন আপনার পাশে বসল। আপনি অবশ্য ভার্সিটির পাট চুকিয়ে ফেলেছেন। আপনাকে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি অমুক ভার্সিটিতে পড়তেন ? আপনি জবাব দিলেন, দু:খিত নামটা আজই প্রথম শুনলাম।

দুই.
এক সেলিব্রেটি লেখক আপনার ফেসবুক বন্ধু। আপনি তার সব স্ট্যাটাসেই লাইক দেন। কমেন্টও করেন। কিন্তু তিনি আপনার কোন কমেন্টে লাইক দেননা। এমন কি আপনাকে কখনো মেনশন করে কিছু বলেনও না। একবার তিনি স্ট্যাটাস দিলেন-প্রধানমন্ত্রীর চিঠি পেয়েও ফিরিয়ে দিলাম। তার সাথে সাক্ষাতের কোন ইচ্ছে আমার এই মুহুর্তে নাই। সবাই হুমড়ি খেয়ে পড়ল। নানা মন্তব্য করল।আপনি তার নজর কাড়ার জন্য স্রোতের বিপরীতে গিয়ে একটা কমেন্ট করলেন। 'দাওয়াত কার্ডটা স্ক্যান কইরা আপলোড কইরা দিতেন। আমরা দেইখা ধন্য হইতাম।'

আপনার প্রিয় লেখক আপনারে সুলেমানী বান মারলো।মনের দু:খে আপনি এখন আর কোন সেলিব্রেটির স্ট্যাটাস পড়েও দেখেন না।

তিন.
আপনার ধারনা শিল্পরসিকরা সাধারণত রসিক হন। আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ডদের মধ্যে যারা লেখালেখি/আঁকাআঁকি করেন তাদের সাথে নিজের রসবোধ ঝালাই করার টেরাই মারেন মাঝে মাঝে। একবার আপনার এক কবি বন্ধু স্ট্যাটাস দিল- সৌদী কূটনীতিক খুন...স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আবারো ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটাম। আপনি কমেন্ট দিলেন-সব দোষ বিরোধী দলের। তারা সরকাররে ব্যস্ত রাখছে বইলাই সরকারের পক্ষে আইন শৃংখলা ঠিক রাখা সম্ভব হচ্ছেনা।'

আপনার বন্ধু আপনাকে ‌'সরকারের দালাল' বইলা গালি দিল।আপনি মনে মনে ভাবলেন- আমি এমনই দুবোর্ধ্য ! একজন কবিও আমার কথা বোঝেনা ! যাহ শালা আর কারো সাথে কথাই কমুনা।


নোট: ঘর পুড়লে কেউ আলুপোড়া খায়, কেউ মেঘ দেইখা পালায় আবার কেউ ঘরটা আগের মত কইরা গড়ে তোলার চেষ্টা চালায়।
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×