শোন ভাইয়া,আমি তোমার কাছ থেকে কিছুই চাই না শুধু পাস করার পর আমাকে একটা চাকরী যোগাড় করে দিবা।সব কিছু বাদ দিছি তো। তুমি দেখ আমার রেজাল্ট আগের থেকে অনেক ভাল হইছে, এবার আরো ভাল হবে…………………….. গত রোজার ঈদের তিন দিন আগে জুবায়েরের সাথে এই আমার শেষ কথা। এখন আর তার চাকরীর দরকার নেই,দরকার নেই ভাল রেজাল্টের।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনেক সাহস করে জুবায়ের এর মৃত্যুর দুইদিন পর আপনাকে লিখতে বসলাম। বুঝতে পারছিলাম না ঠিক কোথায় লিখলে আপনার কাছে এক ভাইয়ের এই করুন আর্তনাদ পৌছাবে। আপনি ঠিক ধরেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জুবায়ের আমার ছোট ভাই ছিল।আমার কলিজা ছিল সে।মায়ের পেটের ভাই না হলেও ক্যাম্পাস জীবনে তার আচরনের কারনে সে আমার কলিজাই ছিল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সে এক সময় ছাত্রলীগ করত এটা সত্য এবং পরবর্তীতে সে আপনার সংগঠন বাদ দিয়ে,ক্যাম্পাসের হল ছেড়ে ঢাকায় থেকে পড়াশুনা করত এটাও সত্য। তাহলে তার অন্যায় কোনটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার সংগঠন করা নাকি ছেড়ে দেয়া? জানি এরপর ও বলবেন দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
জুবায়ের হত্যার কারন পুরো জাহাঙ্গীরনগর জানে শুধু আপনি জানেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।আপনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি দিলেন, তারাই তো আপনার সংগঠন তাই নয় কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?এখন কেউ যদি আপনার সেই নতুন কমিটির তথা ছাত্রলীগের রাজনীতি করে অন্যায় করে তবে আর বলার কিছুই নেই। জুবায়ের ছাত্রলীগ করেছিল, সভাপতি গ্রুপের এটাই তার বড় অন্যায়। আপনার নতুন কমিটি ক্যাম্পাসে বেশিদিন টিকতে পারে নাই,কারন সকলের জানা শুধু আপনি জানেন না।ভাবতে অবাক লাগে কত দূর্বল আপনার সংগঠন। শাফিন-সাম্য কমিটিকে বিতারিত করার পর কারা কিভাবে ক্যাম্পাসের দখল নেয় এবং কোন বিশেষ মহলের কারনে একটার পর একটা খুন,খারাপি করে টিকে আছে সেটা সকলের জানা শুধু আপনি জানেন না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
জুবায়েরের মৃত্যুর পর সাধারন ছাত্র-ছাত্রীরা যখন আন্দোলন করছিল তখন ছাত্রলীগ নামধারী ক্যাম্পাসের এই সংগঠন ‘ভিসি তোমার ভয় নাই ক্যাম্পাস ছাড়ি নাই’ স্লোগান দিয়ে সাধারন ছাত্র-ছাত্রীদের ভয় ভীতি দেখায় এবং তাদের সরিয়ে দেয়।এরা কারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?এরা তো আপনার ছাত্রলীগ নয়। প্রথম আলোতে এদের ভিসি লীগ বলা হয়েছে।কারন কি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী?খুনী কি এরাই?আর আপনার এই ভিসির ই বা ভয় কিসের? যতদূর জানা যায় আপনার এই ভিসির বাড়ি নাকি গোপালগঞ্জে! গোপালগঞ্জে হলেই সে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে??? গোপালগঞ্জে তো বঙ্গবন্ধুর মত মানুষের জন্ম,এদের কোন অধিকার নেই বঙ্গবন্ধুর মত মহান মানুষের নামকে কলঙ্কিত করার।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমার অপরাধ নেবেন না,আমি শুধু এসেছি আমার ভাই হত্যার বিচার চাইতে। যাকে ছাত্রলীগ নামধারী কিছু কুকুর হত্যা করেছে আরেক কুকুরের প্রচ্ছন্ন মদদে। যারা আপনার ছাত্রলীগ নয় এবং এই সব জানোয়ার দের কারনে কত মায়ের যে বুক খালি হচ্ছে তার কোন হিসাব নেই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কোন ধরনের রাজনৈতিক উদ্দ্যেশ্য নিয়ে আমার এই লেখা নয়, আমি শুধু আমার ভাই হত্যার বিচার চাই। আজ যদি আমি আমার ভাই হত্যার সুষ্ঠু বিচার না পাই তবে প্রতি নিয়ত এভাবে জুবায়েরদের কে প্রান দিয়ে যেতে হবে কোন বিচার ছাড়াই।
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১২ দুপুর ১২:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



