somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কেমন আছো সামহোয়ার ইন!

২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



দুটো ছোট গল্পঃ

১। পরীবাগে আগুন!
বৃহস্পতিবার মধ্যরাত্রীতে কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়ে দপ করে জ্বলে ওঠে উপশহর মাগীপাড়া। বাড়িওলি থেকে শুরু করে সর্দারনী, ছুকরী কেউ রেহাই পায়নি সেদিন, মরন এই আগুন হতে। উরুসন্ধিতে বন্দী কামনার আগুন নেভাতে বিশ টাকা হাতে করে নিত্য এই পরীবাগে হাজির হওয়া ভদ্রলোকেদের কাছে পরীবাগ, তখন শুধুই একটি বেশ্যাখানার নাম আর সর্দারনী জুলেখা নানী শুধুই একজন মাগী! লোকচক্ষুর ভয়ে ভদ্রলোকেরা সেদিন দেবতা বনেছিলেন, হয়েছিলেন শুদ্ধিকরনের অগ্নিসাক্ষী। আর তাই এক ঘটি জল ছুড়ে মারবারর থেকে জ্বলন্ত মাগীপাড়ার রগরগে আগুন আর আর্তনাদ ছিল বেশ উপভোগ্য। পরদিন বাদ জুম্মা উপশহর জামে মসজিদে দুই মন জিলাপী সমেত একটা শোকরানা দুয়া-খায়েরের আয়োজন করেন জমসেদ মোল্লা। নিশ্চয়ই ঈশ্বর খুশি হয়েছিলেন সেদিন, মাগীপাড়া উচ্ছেদ বলে কথা! আবার দুই মন জিলাপী। যদিও এলাকায় কথিত আছে যে, এই পরীবাগের এক নম্বর খদ্দের নাকি তিনিই ছিলেন। কেউ বিশ্বাস করতেন, আবার অনেকেই করতেন না। কারন তার মত কামেল এবং পরহেজগার ব্যাক্তি আর যাই হোক অন্তত মাগীবাজ হতে পারে না। তবে দুষ্টু লোকেরা বলত অন্য কথা। তাদের অনেকেই জমসেদ কাকাকে আড়ালে, আবডালে পরীবাগের পাহাড়াদার ডাকত। যাই হোক, পরীবাগে অগ্নিসংযোগ নিয়ে বিস্তর বিস্তর গবেষনা আর তদন্তের প্রয়োজন ছিল কিন্তু সেটা আর হয়নি কারন ওটা মাগীপাড়া ছিল। মাগীপাড়া এমন একটা জায়গা, যেখানে চাইলে আগুন নেভানো যায় আবার লাগানোও যায়। কেউ কিছু বলে না। এমনকি আগুন নেভায়ও না, মাগীবাজ হয়ে যাবার ভয়ে। পুলিশ আসে, টাকা খেয়ে চলে যায়। এভাবেই চলে সমাজের শুদ্ধি অভিযান।

২। মৃত্যুঞ্জয়ী আমেনা!
আমেনা মরে নাই! পুরো এক বোতল তরল বিষ ভেতরে যাবার পরও নিষ্ঠুর সমাজটা গু আর গোবর খাইয়ে বমি করিয়ে বাঁচিয়ে তুলে যেন তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছে। কিন্তু এই গু আর গোবর খেয়ে বেঁচে থাকা জীবন থেকেই তো আমেনা চিরমুক্তি খুঁজেছিল। যন্ত্রনাগুলো বলবার জায়গা ছিলনা, কেউ কখনো জিজ্ঞেসও করে নাই। বিষ খাবার পর শুধু, রমিছার মা জয়তুন ভাবী বারবার জিজ্ঞেস করেছে, এই মাগী তুই এইটা ক্যান করতে গেলি? কোলের বাচ্চাটার কথা একবারও ভাবলি না? আমেনা কি করে বলবে যে, বাচ্চাটা দিব্যি ভাল থাকবে কারন এটা তাদের রক্ত! খারাপ তারা থাকতে দিবে না কিন্তু সে মরলে তার বাপ, ভাই আর সে অন্তত মুক্তি পায়। আর কত? বিয়ের সময় যে তিরিশ হাজার দেয়া হয়েছিল, মহাজনের খাতায় সেটা পঞ্চাশ পেরিয়েছে অনেক আগেই। আবার নতুন করে দশ হাজার? সাথে স্বামী- শ্বাশুড়ির নিত্য নির্যাতন। লম্পট স্বামীটা যেদিন কিসমত মেম্বারের বাড়িতে চাউলের সিলিপের জন্য পাঠাল, সেদিনই মেম্বারকে অভিশাপ দিতে দিতে ঘরে ফিরেছিল আমেনা। রক্ষাকর্তা না হয়ে, মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে যে স্বামী তার স্ত্রীকে বেশ্যা বানাতে চায় আর যাই হোক সে স্বামীর সাথে একই ঘরে আর থাকা যায়না। কার কাছে ফরিয়াদ জানাবে সে? এর থেকে মৃত্যুই শ্রেয় গো জয়তুন ভাবী!!

প্রায় আট বছর তিন মাস পূর্বে, এই ব্লগ প্ল্যাটফরমটিতে আমার যাত্রা শুরু হয়। সে সময়ের অনেক জ্ঞানী-গুনী লেখকের সঙ্গটা বেশ প্রকট ভাবে প্রভাবিত করেছিল আমার চেতনার জগতকে। একজন পাঠক হতে পুরোদস্তুর লেখকে কিভাবে পরিণত হতে হয় তা হাতে কলমে ধরে ধরে শিখিয়েছিল আমাকে সামহোয়ার ইন, অস্বীকার করব না! ধীরে ধীরে পাঠক হতে পুরোদস্তুর লেখকও হয়ে উঠেছিলাম আমি। যা আমাকে ২০১৬ সালে ডয়েচে ভেলে কর্তৃক বেস্ট অফ অনলাইন এক্টিভিজম এওয়ার্ডের জন্য মনোনীত করতেও সাহাজ্য করে। মনোনয়নটা নিঃসন্দেহে আমার ব্লগার জীবনের জন্য সর্বোচ্চ পাওয়া ছিল। তবে এর পেছনে ছিল ব্লগ পরিবারটার অক্লান্ত শ্রম আর উৎসাহ!
নানান ক্ষোভ, অভিমান আর ভূল বোঝাবুঝি প্রায় দেড় বছর আমাকে ব্লগ পরিবারটি থেকে দূরে রাখে।

সামহোয়ার ইন থেকে দেড়টা বছর দূরে থেকেছি সত্য কিন্তু এমন একটা অবসর নেই যে আমি আমার নিত্য অভ্যাস মোতাবেক ঢু মারিনি।

অভিমানটা আর ধরে রাখতে পারলাম না তাই দীর্ঘ দেড় বছর পর আবারো লেখায় ফিরলাম। হয়তোবা ভূল কোন সিদ্ধান্ত আমি নেই নাই।

আমি আবারো ব্লগ পরিবারটার সাথে থাকতে চাই, আপনাদের সহব্লগার হয়ে থাকতে চাই। আছেন কি বরন করে নেবার মত কেউ?
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১০:১৬
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চুরি করাটা প্রফেসরদেরই ভালো মানায়

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৩


অত্র অঞ্চলে প্রতিটা সিভিতে আপনারা একটা কথা লেখা দেখবেন, যে আবেদনকারী ব্যক্তির বিশেষ গুণ হলো “সততা ও কঠোর পরিশ্রম”। এর মানে তারা বুঝাতে চায় যে তারা টাকা পয়সা চুরি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিব নারায়ণ দাস নামটাতেই কি আমাদের অ্যালার্জি?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৫:৫৭


অভিমান কতোটা প্রকট হয় দেখেছিলাম শিবনারায়ণ দাসের কাছে গিয়ে।
.
গত বছরের জুন মাসের শুরুর দিকের কথা। এক সকালে হঠাৎ মনে হলো যদি জাতীয় পতাকার নকশাকার শিবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দেখা করা সম্ভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতি মাসে সামু-ব্লগে ভিজিটর কত? মার্চ ২০২৪ Update

লিখেছেন জে.এস. সাব্বির, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:০৮

মার্চ ২০২৪ সালে আমাদের প্রিয় সামু ব্লগে ভিজিটর সংখ্যা কত ছিল? জানতে হলে চোখ রাখুন-

গত ৬ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভিউ ছিল জানুয়ারি মাসে। ওই মাসে সর্বমোট ভিজিট ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×