somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একান্ত সাক্ষাতকারে আমানউল্লাহ আমান যেকোন ত্যাগের বিনিময়ে জনগণের ভোটারাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে

২৪ শে জুলাই, ২০১২ দুপুর ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নব্বইয়ের স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম রূপকার আমানউল্লাহ আমান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ ডাকসু’র সর্বশেষ নির্বাচিত ভিপি। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে অত্যন্ত পরিচিত নাম। যেকোন গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অগ্রভাগে দেখা যায় তাকে। সম্প্রতি সরকারের রোষাণলে পড়ে গ্রেফতার হয়েছিলেন। কারামুক্ত হয়ে কথা বলেছেন দৈনিক দিনকালের সাথে। তার সাক্ষাতকারটি নিয়েছেন দিনকালের স্টাফ রিপোর্টার আরিফুজ্জামান মামুন-
প্রশ্ন: দুটি মামলায় কারাগাওে ছিলেন। এ সম্পর্কে কিছু বলেন।

উত্তর: আসলে আমাদেও বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেয়া হয়েছে। এই মিথ্যা মামলায় হাইকোর্ট জামিন দেয়ার পরও নিন্ম আদালতে হাজির হলে সরকারের নির্দেশে আমাদের কারাগাওে পাঠানো হয়। মামলাগুলো ছিলো জামিনযোগ্য তারপরও সরকারের নির্দেশে অন্যায়ভাবে জেল হাজতে পাঠানো হলো। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে গাড়ি পুড়িয়েছি, সচিবালয়ের যেখানে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকেরা দায়িত্ব পালন করে সেখানে আমরা বোমা মেরেছি এটি জনগণ বিশ্বাস করেনা। রিপোর্ট দেয়া হলো অজ্ঞাত দুই মটর সাইকেল আরোহী বোমা মেরেছে। মোট কথা মামলাগুলো নিপীড়ণ ও হয়রানিমূলক। আমাদের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যসহ ৩৩জন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে হয়রানি করার জন্য মামলা দিয়েছে। সরকার শুধু আমাদেও জেলে পাঠিয়ে ক্ষান্ত হয়নি, কেন্দ্রীয় কারাগাওে নিয়ে যাওয়ার পর প্রত্যেককে দেশের বিভিন্ন জেলার কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো। কারাগারে ডিভিশনপ্রাপ্তদের কারাগার পরিবর্তনের সময় মাইক্রোবাস বা গাড়িতে কওে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও আমাকে প্রিজন ভানে কুমিল্লা কারাগাওে পাঠানো হয়েছে হয়রানি করার জন্য, মানসিকভাবে কষ্ট দেয়ার জন্য। আমরা বার বার বলেছি সত্যের জয় হবেই। মিথ্যা দিয়ে সত্যকে কখনো থামাচাপা দেয়া যাবেনা। হাইকোর্টের জামিন নিয়ে আমরা বেরিয়ে এলেও এখন আমরা একটি বড় কারাগারে বন্দি হয়ে গেছি। পুরো দেশকে একটি বড় কারাগাওে পরিণত করেছে সরকার। এখন হুমকি ধামকি ও নির্যাতন চলছে। এই বৃহৎ কারাগার থেকে জনগণ মুক্তি চাই। বর্তমান সরকার জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাই আগামী দিনে বৃহৎ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে নব্য স্বৈরাচারী সরকারকে হঠিয়ে নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটবে ইনশাল্লাহ।

প্রশ্ন: বর্তমান দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কিছু বলুন।

উত্তর: জনপ্রিয় কমিশনার চৌধুরী আলম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি এম ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে সরকার। সরকার মনে করেছে এতে বিএনপি দূর্বল হয়ে যাবে। সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে সীমাহীন দূর্নীতি করেছে তা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যত্র সরাতে ও বিরোধী দল যাতে আন্দোলন না করতে পাওে সেজন্য গুম অপহরনের পথ বেছে নিয়েছে সরকার। পদ্মা সেতুর দুর্নীতি যখন ধরা পড়লো তখন সরকার চ্যালেঞ্জ করেছিলো পদ্মাসেতুতে দুর্নীতি হয়নি। এরপর সরকারের একজন মন্ত্রী সুরঞ্জিত বাবু চাকুরী দেয়ার নামে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিলো। এক পর্যায়ে বাড়িতে টাকা নিয়ে আসছিলো তখন ধরা পড়ে গেল। ধরা পড়ার পর একমাত্র সাক্ষী ড্রাইভারকে গুম করা হলো। আজকে মানবাধিকার ভূলণ্ঠিত। অবাধে বিচার বর্হিভূত হত্যাকাণ্ড চলছে। গণতন্ত্র আজ অবরুদ্ধ। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনিকে হত্যার মাধ্যমে সাংবাদিকদেও লেখনি বন্ধের অপচেষ্টা চলছে। এসব কাজ কওে সরকার মনে করেছিলো নিবিঘেœ দেশ পরিচালনা করবে। তাদের অনিয়ম দুর্নীতি চালাতে মানুষ গুম কওে আন্দোলন দমাতে পারবে। কিন্তু সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। আগে দেশীয়ভাবে বলা হতো সরকার দুর্নীতিবাজ। আজকে সরকার আন্তজার্তিকভাবে দুর্নীতিবাজের স্বীকৃতি পেয়েছে। দেশকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের দেশ হিসেবে পরিচিত করেছে। যে সরকার দেশকে জাতীয়-আন্তজার্তিকভাবে দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত করেছে, যে সরকার জনগণ তথা সাংবাদিকদেও নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, যে সরকার দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দেয় সে সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই।
আজ আন্তজার্তিকভাবে স্বীকৃত ব্যক্তিত্ব নোবেলজয়ী ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে পদে পদে অপমান করছে। দেশের বুদ্ধিজীবি, খ্যাতিমান সাহিত্যিক লেখক, সাংবাদিকদে বিচারের সম্মূখীন করছে। এসব কওে সরকার ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার হারিয়েছে। জনগণ এখন নিদর্লীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠ নির্বাচনে ভোট প্রদানের মাধ্যমে সরকারকে হটাতে উম্মূখ হয়ে আছে। জনগণের এই আকাঙ্খাকে ধারণ কওে বিএনপি জনগণের সরকার কায়েম করবে ইনশাল্লাহ।

প্রশ্ন: বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবেনা বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী বলেছেন দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে। এ সম্পর্কে আপনার মন্তব্য কি?

উত্তর: মাননীয় হাইকোর্ট তাদের রায়ে বলেছিলো পরবর্তী আরো দুই টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে। দেশের সকল শ্রেণীর মানুষও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলো। সবকিছু উপেক্ষ কওে সরকার এক তরফাভাবে নিদর্লীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রথা বাতিল করেছে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। বাতিল করেই ক্ষান্ত হয়নি সরকার এখন বলছে তাদেও অধীনে নির্বাচন হবে। তারা এও বলছে তাদেও অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবে।
তাদেও অধীনে যে নির্বাচন সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হবেনা তার প্রকৃষ্ঠ দুটি উদাহরণ হলো গত ১২ মার্চ ও ১১ জুনের মহাসমাবেশ। গত ১২ মার্চ ও ১১ জুন দুটি মহাসমাবেশ ঢাকায় হয়েছিলো। সেখানে দেখা গিয়েছিলো এই সরকার তার পেটোয়া বাহিনী পুলিশ র‌্যাবের সহায়তায় মহাসমাবেশের আগে অঘোষিত হরতাল দিয়েছিলো। রাজধানী ঢাকার সাথে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছিলো। বাস, ট্রাক, লঞ্চ, স্টিমার বন্ধ কওে দিয়েছিলো যাতে কওে সারাদেশ থেকে লোক না আসতে পারে। ঢাকার আবাসিক হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ কওে দিয়েছিলো যাতে আগতরা থাকতে না পাওে খাবার খেতে না পারে। এটা কওে সরকার মহাসমাবেশকে পণ্ড ও ছোট করতে চেয়েছিলো। এসব থেকে প্রমাণিত হয়েছে এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠ হতে পারেনা। যদি এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হয় তাহলে তার ফলাফল কি হবে তা জনগণ বুঝে গেছে। তাই এই সরকারকে ষষ্ঠদশ সংশোধনী মাধমে আবারো নির্দীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিধান সংবিধানে সংযুক্ত করতে হবে। আমাদেও নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষণা দিয়েছেন জনগণের ভোটারাধিকার রক্ষার জন্য দলীয় সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন গতে দেয়া হবেনা। যেকোন ত্যাগের বিনিময়ে জনগণের ভোটারাধিকার প্রতিষ্ঠা করা হবে ইনশাল্লাহ। ইতিমধ্যে আপনারা দেখেছেন, আন্তজার্তিক মহলও সকল দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ সরকারের কথা বলা হচ্ছে। বিএনপিকে বাদ দিয়ে যদি কোন নির্বাচন হয় সেটি জাতীয় ও আন্তজার্তিকভাবে গ্রহণযোগ্য হবেনা। তাই আগামী ঈদেও পর বৃহৎ আন্দোলনের কর্মসূচী ঘোষণা করা হবে। সেই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণের দাবী নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা হবে।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার কিছু ভুল!

লিখেছেন মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্‌, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮

১। ফ্লাস্কে চা থাকে। চা খেতে টেবিলে চলে গেলাম। কাপে দুধ-চিনি নিয়ে পাশে থাকা ফ্লাস্ক না নিয়ে জগ নিয়ে পানি ঢেলে দিলাম। ভাবছিলাম এখন কি করতে হবে? হুঁশ ফিরে এল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×