somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার বইপড়া এবং একটি নতুন বই

২২ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৫:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ধারণা যখন থেকে আমি রিডিং পড়তে শিখেছি তখন থেকেই আমার বই পড়ার নেশা । সময়ের সাথে সাথে এই অভ্যাসের গতি, প্রকৃতি ওঠা নামা করেছে তবে কখনোই বিলীন হয়ে যায়নি।যখন হাই স্কুলে পড়তাম তখন ভাবতাম কলেজে গেলে লেখা পড়ার চাপ কমবে তখন অনেক বেশী বেশী বই পড়বো । কলেজে উঠে মনে হলো না একেবারে পরীক্ষা শেষ করে পড়বো । ছাত্র জীবন শেষ করে ভাবলাম একাডেমিক পড়ার পাঠ তো চুকলো এবার কর্মজীবনে শুধু বই পড়বো । সারাদিন অফিস সন্ধ্যা আর রাতে তো সম্পূর্ণ ফ্রি । মনের মধ্যে জমে আছে অজস্র না পড়া বইয়ের নাম; দিন দিন তালিকা টা আরো দীর্ঘ হচ্ছে।এক সময় কালের স্বাভাবিক নিয়মে আমার একটা পৃথক সংসার হলো । শুধু দুজনের ঘর। নতুন সংসার, নতুন জীবন , নতুন স্বপ্ন কিন্তু আমার মনের মধ্যে সেই পুরাতন বাসনা রয়েই গেল। না পড়া বই গুলো এবার বুঝি আমার পড়া হবে । শৈশবের সেই অধরা বই গুলো এবার মনে হয় ধরতে পারবো। সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরে আমি মহা উঃসাহে সেই ধুলি পড়া বই গুলো হাতে তুলে নিলাম ।বাসায় তখনো টেলিভীষন আনা হয়নি তাই র্নিবিঘ্নে আমি আমার কাজ চালিয়ে যেতে পারবো----সাথে সাথে মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা কৈশোরের সেই নিষিদ্ধ ইচ্ছে (লেখা-লেখি) -টাও একটু পূরণ করতে পারবো----এসব ভেবে আমার শরীরে রীতিমত শিহরণ খেলে গেল । ক্ষুধার্ত নেকড়ে যেমন খাবার গলা:ধরণ করে ঠিক সেভাবে একে এক আমি পড়ে ফেল্লাম সুকান্ত সমগ্র, যাযাবর সমগ্র, নিমাই ভট্রাচার্য, বারট্রান্ড রাসেল থেকে আনিসুল হকের মা পর্যন্ত। সেই সময় আমার হাতে আসলো মাসুদ আহমদ নামক একজন উচ্চপদস্ত সরকারী চাকুরে( যিনি একজন সৌখিন লেখক-ও)র লেখা বই -"স্বপ্নযাত্রা"। বইটি ১৯৪৭-এর পটভুমিতে লেখা । বইটির সবেমাত্র কয়েক পৃষ্টা পড়েছি , ভীষন আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছি ঠিক এমন সময় বাধলো বিপত্তি। দেশের বাড়ী থেকে স্বয়ং আমার মায়ের অভিযোগ!!! এত কি পড় সারাদিন ?? বৌমার ঠিকমত সময় দাওনা । আর আমার ঘরণী আমার বই পড়ার উপর সাথে সাখে নিশেধাজ্ঞা আরোপ করে ফেল্লেন। শৃক্র, শনি ছাড়া বই-এর গায়ে হাত দেয়া যাবেনা । কি আর করা এভাবেই চলছে ।।।।।
------------
গত শনিবারে ২য় বারের মত পড়ে শেষ করলাম "স্বপ্নযাত্রা"। আমার আবার একটা বিশেষ কূ অভ্যাস আছে । যে বইটি মনে ধরে সে বইটি আমি কয়েকবার পড়ি এবং প্রত্যেকবার পড়ার সময় নতুন কিছু আবিষ্কার করি।এমনিতে ঐতিহাসিক উপন্যাসের উপর আমার আলাদা কোন টান নেই তবে এই বইটি পড়ার পড় এ জাতীয় উপন্যাসের প্রতি আমার রীতিমত লোভ জন্মে গেছে।সাড়া জাগানো উপন্যাস --খুশবন্ত সিং-এর "ট্রেন টু পাকিস্তান" আমি অনেক মনোযোগ দিয়ে কয়েকবার পড়েছি। সত্যি বলতে কি এই উপন্যাসের কাহিনী বিন্যাস আমার কাছে এলোমেলো লেগেছে । সেখানে অনেকটা একই পটভূমিতে লেখা "স্বপ্নযাত্রা" উপন্যাসটি অনেক গোছালো এবং মার্জিত। অনেক পরে লেখা হয়েছে বলেই এত সমৃদ্ধ কিনা জানিনা তবে বইটির প্রতিটি চরণ আমার কাছে অসম্ভব সুগঠিত এবং কাহিনীর সাখে বিন্যস্ত বলে মনে হয়েছে । পাশাপাশি সঠিক ইতিহাস-কে লেখক ধারণ করেছেন একবোরে নিরপেক্ষ ভাবে ; যা একজন লেখকের জন্য কিছুটা অসাধ্যই বটে। বইটি পড়লে জানা যাবে-- ৪৭-এর পট পরিবর্তন কিভাবে আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনে ভুমিকা রেখেছে ? ৪৭-এর আগে আমরা কেমন ছিলাম ? সে সময় কার কেমন ভুমিকা ছিল ? ইংরেজরা কেন আমাদের দীর্র্ঘদিন শাষন করে গেল ? কাশ্মীর এখনো কেন প্রধান ইস্যু?------------- ইত্যাদি অনেক ঐতিহাসিক প্রশ্নের উত্তর। সবচেয়ে বড় ব্যাপার দেশ ভাগের মত একটি জটিল বিষয় যে বইটির মূল উপজীব্য এবং লেখক যেখানে আমাদের স্বদেশী নিসন্দেহে সেই উপন্যাসটি আমাদের পড়ে দেখা দরকার ।
বইটির শেষে লেখক পরিচিতি তুলে ধরা হয়েছে । লেখক মাসুদ আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাহিত্যে লেখাপড়া শেষ করে এখন বাংলাদেশ সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করছেন ।
----এই সামহোয়ারইন ব্লগ -এ আমি আমার ভালোলাগার বিষটি প্রকাশ করি অনেকটা প্রাণ খুলে। আমার ভালোলাগা বইটির কখা তাই আপনাদের জানাতে ভুললাম না ।।।।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১০ বিকাল ৫:৩২
২৪টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিজয় দিবসের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে, প্রতিবাদ ও ঘৃণা জানিয়ে । সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান ২০২৫, ১৬ই ডিসেম্বর।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:১৯




দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে ত্রিশ লক্ষ তাজা প্রানের এক সাগর রক্তের বিনিময়। দুই লক্ষাধিক মা বোনের সম্ভ্রম হারানো। লক্ষ শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত‍্যু। এক কোটি মানুষের বাস্তুহারা জিবন। লক্ষ কোটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×