somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যে ৫ টি বিদেশি গোয়েন্দাসংস্থা বাংলাদেশের মাটিতে সর্বাধিক সক্রিয়..আজকের পর্ব রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর আদ্যপান্ত

২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে এ ৫ টি বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা সর্বাধিক সক্রিয় আছে বলে বিবেচনা করা হয়। এর মধ্যে ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং কে প্রধানতম ধরা হয়ে থাকে। এই সংস্থা বাংলাদেশের অনেক ইতিহাস ঘটনঘটনের সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে যুক্ত। (সতর্কীকরনঃ এখানে আমি এমন কিছু তথ্য দিয়েছি যা হয়তো মতাদর্শগত বা অন্যকোন কারনে কারো কারো ভালো নাও লাগতে পারে সেক্ষেত্রে তার ভিতরে আর না ঢুকাই ভালো)

পুর্ব কথাঃ
১৯৬২ সালের ইন্দো চীন সীমান্ত সংঘাতে ব্যার্থতার পরে বৃটিশদের সময় থেকে বৈদেশিক গোয়েন্দা ততপরতা পরিচালনার দায়িত্ব পালন কারী আইবি র পরিবর্তে জহর লাল নেহেরু ভারতে জন্য একটি ভিন্নধর্মী ও সু-সঙ্গঠিত পেশাদার বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা সৃস্টির প্রয়োজনিয়তা অনুভব তারই ধারাবাহিকতায় ইন্দীরা গান্ধী ক্ষমতায় আসার পরে ১৯৬৮ সালে ২১ সেপ্টেম্বর প্রাক্তন বৃটিশ ইন্টেলিজেন্স অফিসার ও আইবি র ডেপুটি ডাইরেক্টর আর এন কাও এর নেতৃত্ব ও নির্দেশনায় তৈরি করা হয় ভারতের প্রধান বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং সংক্ষেপে “র” । র এর প্রধান কে একজন ক্যাবিটে সেক্রেটারি পদমর্যাদা সম্পন্ন সচিব হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।

নয়া দিল্লির লোদী রোডের সদর দফতর




থিমঃ রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর থিম ২৪০০ বছর পুর্বের মৌর্য সম্রাজ্যের বিখ্যাত স্ট্রাটেজিস্ট বিষ্ণগুপ্ত চানক্যের প্রনীত রাস্ট্র ও বৈদেশিক নীতির উপর গড়ে উঠেছে। “র” এর প্রতিটি পরিকল্পনা প্রনয়ন ও অপারেশনাল অ্যাক্টিভিটি চানক্য প্রদর্শিত নীতিসমুহের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়ে থাকে।সাম,দান,ভেদ,দন্ড চানক্যের অর্থশাস্ত্রের এই চারটি পন্থা ভারত তথা “র” এর বিদেশনীতির ভিত্তি।
শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী “র” এর কার্যক্রমের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের সময়ে উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তার অন্যতম মেন্টর লুইস এফ হালির একটি উধতি কোট করে বলেন “'Ability to get what one wants by whatever means: eloquence, reasoned arguments, bluff, tirade, threat or coercion, as well as, by arousing pity, annoying others, or making them uneasy''

বর্তমান প্রধান সঞ্জিব ত্রিপাঠি


লক্ষ ও উদ্দেশ্য
পার্শবর্তী দেশসমুহ যাদের সাথে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সরাসরি জরিত তাদের রাজনৈতিক ও সামরিক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষনের মাধ্যমে ঐ সব দেশের বৈদেশিক নীতি নির্ধারনে ভুমিকা রাখা।
প্রবাসে অবস্থানকারী ভারতীয় বা ভারতীয় বংশভুত জনগোস্টীকে ব্যাবহার করে আন্তর্জাতিক সমর্থন সহানুভুতি নিজের পক্ষে নিয়া আসা।
পশ্চিম ইউরোপ ও যুক্তরাস্ট্র থেকে পাওয়া পার্শবর্তি দেশগুলি বিশেষত পাকিস্তানের সমরাস্ত্র সাপ্লাই পর্যবেক্ষনে রাখা ও সীমিত করা চেস্টা।

সংগঠনঃ

রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর সাংগঠনিক কাঠামো সম্পর্কে যতদুর জানা যায় তা মার্কিন সি আই এ ধাঁচে গঠিত। একজন ক্যাবিনেট সেক্রেটারির(রিসার্চ)পদর্যাদা সম্পন্ন প্রধানের অধীনে বিভিন্ন ডেস্ক ও অপারেশনাল গ্রুপে বিভক্ত।বিভিন্ন ডেস্কের অধীনস্তরা বেশির ভাগ চীন ও পাকিস্তান সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ।“র”প্রধান প্রাশনিক ভাবে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের কাছে রিপোর্ট করেন এবং মন্ত্রী পরিষদ সচিব প্রধানমন্ত্রীকে রিপর্ট করে থাকে। তবে ক্ষেত্র বিশেষে “র” সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও রিপোর্ট করে থাকে। এছাড়া জাতীয় নিরাপত্তা উপদেস্টার কাছেও রুটিন মাফিক প্রতিদিন “র” প্রধান রিপোর্ট দেন।


“র” এর সংঠন ভৌগলিক এলাকা ও অপারেশনাল কার্যক্রমের ভিত্তিতে বিভক্ত।
দুইজন বিশেষ সচিবের ও একজন ডাইরেক্টর পদমর্যাদার এ্যাভিয়েশন রিসার্চ সেন্টারের জন্য
চারজন অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা বিভিন্ন ভৌগলিক এলাকার জন্য
এছাড়া ৪০টি ডেস্কে বিভক্ত কার্যক্রমের জন্য কমপক্ষে ৪০জন জয়েন্ট সেক্রেটারী পদমর্যাদা কর্মকর্তা বর্ত্মানে কর্মরত।

নয়াদিল্লীর লোদি রোডের সদর দফতর –আঞ্চলিক সদর দফতর-বিদেশে অবস্থিত স্টেষন অফিস-মাঠকর্মী। বিদ্দেশে অবস্থিত স্টেষন অফিস গুলি একএকজন কন্ট্রোলিং আফিসারের অধীনে যারা মাঠ পর্যায়ে অবস্থানকারী কর্মীদের অ্যাসাইন্ট প্রদান,নিয়ন্ত্রন,সুপারভিশন তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষন করে থাকে। বিভিন্ন সুত্র থেকে ফিল্ড অফিসার ও সহকারী ফিল্ড অফিসাররা তথ্য সংগ্রহ করে সিনিয়ার ফিল্ড অফিসারকে দেয় সিনিয়ার ফিল্ড অফিসার বা স্টেশন অফিসার সেই প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে আঞ্চলিক বা সদর দফতরের বিভিন্ন ডেস্কে প্রেরন করেন।এরপর ডেস্ক প্রধান সেই তথ্য গুরত্ব বিচারে আরো উপরে প্রেরন করেন। “র” এ কর্মীদের কে এজেন্ট হিসাবে না বলে রিসার্চ অফিসার বলা হয়। এই গোয়েন্দা সংস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিমানে নারী অফিসার কাজ করে থাকে। বগত বছরে চীন ও পাকিস্তান ডেস্ক ভেঙ্গে আলাদা ভাবে চীনের জন্য একটি ডেস্ক করা হয়েছে।
এস এফ এফঃ এস্টাবলিশমেন্ট ২২ “র” পরিচালিত বিশেষ বাহিনী।যারা ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে থাকে।

রিক্রুটমেন্টঃ
স্বাধীন সংস্থা হিসাবে “র” এর কর্মকর্তা বা মাঠ পর্যায়ে কর্মী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সাধারনত ধরাবাঁধা কোন নিয়ম নেই। সাধারনত ভারতীয় সেনা,নৌ,বিমান বাহিনীর স্পেশালফোর্স,পুলিশ বাহিনী, আই এ এস ক্যাডার,আই বি,সিবিআই অথবা মেধা বিচারে সরাসরি বিশ্ববিদ্যালয় গ্রাজ্যুয়েট ও শিক্ষা প্রতিস্টান থেকেও নেয়া হয়ে থাকে। “র” এ কর্মরত চাকরিকে অ্যানালাইসিস ক্যাডার সার্ভিস বা আরএএস বলা হয়।

আই এ এস (বাংলাদেশি মান্দন্ডে বি সি এস) অফিসারদের মধ্য থেকে যারা “র” তে যেতে ইচ্ছুক তাদের ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েট এর অধীনে ডেপুটি ফিল্ড অফিসার DFO পদের পরীক্ষায় বসতে হয়.পরীক্ষায় উত্তির্নদের মধ্য থেকে মেধার ভিত্তিতে সেরাদের বেছে নেয়া হয় এরা সবাই রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস ক্যাডার নামে পরিচিত হয়। কমপক্ষে ৮ বছর DFO থাকার পরে তাকে পরবর্তি লেভেলে ফিল্ড অফিসার FO পদে পদায়ন করা হয়। কমপক্ষে ৫ বছর FO থাকার পর তাকে সিনিয়ার ফিল্ড অফিসার SFO (ক্লাশ ওয়ান) হিসাবে প্রমোশল করা হয়। এরপরের ধাপে স্টেষন প্রধান বা রেসিডেন্স অফিসার RO হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়।এরপর তাকে কোন ডেস্ক প্রধান হিসাবে “র” আঞ্চলিক দফতর,সদর দফতর এ রাখা হয় অথবা নিজ নিজ বাহিনী বা ভারতের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের যেকোন স্থানে পাঠানো হয়।

DFO FO SFO রা সরাসরি বিদেশের মাটিতে কর্মরত থাকে।তারা তাদের স্টেশন অফিসারের ভাগ করে দেয়া দায়িত্ব অনুযায়ি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে এবং ইনফর্মার হিসাবে স্থানীয় গুরুত্বপুর্ন ও প্রয়োজনিয় ব্যক্তিদের,ঐ দেশের গোয়েন্দা সংস্থা বা ঐ দেশে অবস্থানকারি তৃতীয় কোন দেশের গুপ্তচর কর্মীকে নিজের পক্ষে আনার চেস্টা করে।


বিদেশের মাটিতে টার্গেট নির্বাচন পদ্ধতিঃ

বিদেশে এজেন্ট অথবা ইনফর্মার রিক্রুট করবার ক্ষেত্রে সাধারনত ডবল এজেন্টদের প্রাধান্য দেয়া হয়।বিদেশের মাটিতে রিক্রুটমেন্টের জন্য চানক্যের অর্থশাস্ত্রর নির্দেশনা অনুযায়ি টার্গেট সিলেকশন করে তাকে রিক্রুট করার জন্য যে সব দুর্বলাতাকে কাজে লাগানো হয় তা হলো যৌনক্ষুধার প্রতি দুর্বলতা, অর্থর প্রতি দুর্বলতা, প্রতিশোধপরায়নতা,ক্ষমতার লোভ। এছাড়া
শাষকগোস্টির প্রতি অসন্তুস্ট নির্যাতিত ও নির্বাসিত এমন কাউকে।
ক্ষতিপুরন হতে বঞ্চিত ব্যাক্তি।
ন্যায়পরানয়তার কারনে প্রতিস্টান কর্তৃক বঞ্চিত ব্যক্তি।
জোরপুর্বক নিগ্রহের স্বীকার হওয়া নারী।
উচ্চাকাংখি সুন্দরী তরুনী।
সরকার কর্তৃক সম্পত্তি বা অর্থ বাজেয়াপ্ত হয়েছে এমন ব্যক্তি।
উপরের দুর্বলাতার কারনে ব্ল্যাকমেইলের স্বীকার হওয়া লোক।
সংখ্যালঘু জনগোস্টি।

প্রশিক্ষনঃ

রিক্রুট হিসাবে নির্বাচিত হওয়ার পড় নির্বাচিত ব্যাক্তিকে প্রয়োজন ভেদে সল্পমেয়াদি বেসিক ও দীর্ঘ মেয়াদি কালেক্টিভ ট্রেনিং প্রদান করা হয়। সল্প মেয়াদে ১০ দিনের ট্রেনিং এ প্রধানত রিক্রুটের মনবল বৃদ্ধির ব্যাবস্থা করা হয় পাশাপাশি বহির্দুনিয়া আর গোয়েন্দা জগতের পার্থক্য ব্যাখ্যা,প্রতিপক্ষের গোয়েন্দা চেনার উপায়,গোয়েন্দা জগতে শ্ত্রু বা বন্ধু নেই সবাই প্রতিদন্দ্বি,সাধারন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যাবহার যেমন রেডিও ট্রান্সমিটার ব্যাবহার ইত্যাদি।এই ট্রেনিং সাধারনত হরিয়ানার গুরুগাও এ ট্রেনিং স্কুলে প্রদান করা হয়। এছাড়া প্রশিক্ষিত অফিসারদের মুম্বাইয়ে ফিনান্সীয়াল ইন্টেলিজেন্স স্কুলে প্রশিক্ষন দেয়া হয়।
প্রাথামিক ট্রেনিং শেষ প্রয়োজনমাফিক দেরাদুনে ১-২ বছরের ফিল্ড ট্রেনিং প্রদান করা হয়।ফিল্ড ট্রেনিং এ আন্ডার কাভার অপারেশন,কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স,স্যাবোটেজ,জনমত ম্যানিপুলেট ও দন্দ্ব সৃস্টির কৌশল সহ অনেক বিষয়ে ব্যাপক ট্রেনিং প্রদান করা হয়। ট্রেনিং সেন্টারে সবাই নিজ নিজ নাম পরিচয়ের বদলে কোড ব্যবহার করে থাকে।
সরাসরি নিয়োগকৃত DFO দের সাধারনত বেসিক ও অ্যাডভান্স দুই ধরনের ট্রেনিং সম্পন্ন করার পর বিদেশে ডেপুটি ফিল্ড অফিসার হিসাবে পাঠানো হয়।।সংস্লিস্ট দেশের স্থানীয় রিক্রুটদের মেধা,গুতুত্ব ও কাজের ধরন বুঝে শুধু বেসিক অথবা অ্যাডভান্স ট্রেনিং উভয়ই দেয়া হয়।

কর্ম পদ্ধতিঃ

“যা বল প্রয়োগে অর্জন সম্ভব নয় তা ধোঁকা দিয়ে সিদ্ধ করা যায়,বিষাক্ত গোখারা সাপও কাক আর সোনার হারের ফাঁদে পরাজিত হয়।“ –চানক্য
তথ্য সংগ্রহ: কভার্ট ও নন কভার্ট উভয় পদ্ধতি ব্যবহার করে “র” তথ্যা সংগ্রহ করে থাকে।

আক্রমনাত্তক গোয়েন্দাবৃত্তি: “র” এলাকা ভেদে আক্রমনাত্তক গোয়েন্দা কৌশল পরিচালনা করে। এরমধ্যে গুপ্তচরবৃত্তি,মানসিক যুদ্ধ পরিচালন,অন্তর্ঘাতমুলক কর্ম কান্ড।

ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশনঃ সাম্রিক বাহিনীর স্পেশাল ফোর্স থেকে নেয়া বিশেষ প্রশিক্ষনপ্রাপ্তদের সহায়তায় গুপ্তহত্যা পরিচালনা করা হয়।

প্রতিগোয়েন্দাবৃত্তি: “র” দেশের অভ্যন্তরে ও দেশের বাইরে প্রতিবেশি রাস্ট্রগুলিতে প্রতিদন্দ্বি গোয়েন্দা সংস্থার বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স পরিচালনা করে।

মেইল হ্যাকিং ও ইন্টার্সেপ্সহনঃ “র” আই টি এক্সপার্টরা নিয়নিত স্থানীয় গুতুত্বপুর্ন দফতর ও ব্যক্তির ইমেইল হ্যাক করে থাকে এবং পোস্টাল মেইল ইন্টার্সেপ্ট করে থাকে।

গুরুত্বপুর্ন স্থাপনার কাছাকাছি ট্রান্সমিটার স্থাপনঃ সংশ্লিস্ট দেশের গুরুত্বপুর্ন স্থাপনা যেমন বিভিন্ন বাহিনী সদর দফতর,সরকারী গুরুত্বপুর্ন অফিস ও অত্যন্ত স্পর্ষ্কাতর ব্যক্তিবর্গর বাড়িতে টেলিফোনে আড়ি পাতে ও আশেপাশে স্থায়ী বা ভ্রাম্যমান হাই ফ্রিকোয়েন্সী ট্রান্সমিটার সহ প্রযুক্তি ব্যবহার করে নজরদারি ও তথ্য সংগ্রহ করে।

জনমত ঘুরানোঃ “র” বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে সংশ্লিস্ট দেশের জনমত তার পছন্দ ও সুবিধা অনুযায়ি ঘুরাতে চেস্টা করে এজন্য RO নির্দেশনা অনুযায়ি ঐ দেশে অবশানকারি DFO এবং FO রা তাদের স্থানীয় নেটওয়ার্ক, লোকাল ইনফর্মার ও রিক্রুটদের ব্যবহার করে প্রকাশিত তথ্য ম্যানিপুলেট করার চেস্টা করে।

পর্যবেক্ষন,ম্যাসেজ ইন্টারসেপশন, সিগন্যাল ও পোস্টাল চ্যানেল ব্যাবহার,পর্যবেক্ষন,ফোন ট্যাপিং,ই মেইল হ্যাক,কোড উদ্ধারের মত আধুনিক গোয়েন্দা কৌশল ব্যাবহার করে তথ্যা সংগ্রহ করা হয়।একই তথ্য একাধিক উতস হলে সংগ্রহ করে ক্রস চেক করে দেখা হয়। এম্ন কি ব্ল্যাকবেরি কোম্পানীর পরিসেবা ও নেটওয়ার্ক “র” পর্যবেক্ষন ও নিয়ন্ত্রনের চেস্টা করে।

প্রধানঃ সঞ্জিব ত্রিপাঠি
গুরুত্বপুর্ন ব্যক্তিঃ এবি মাথুর এবং আনন্দ অর্ণি ।

এপর্যন্ত পরিচালিত গুরুত্বপুর্ন অপারেশনঃ

হিমালয়ে ELINT অপারেশন যা ১৯৬৪ সালে চীনের পারমানবিক পরীক্ষা চালানোর পর সি আই এ ও “র” ১৯৬৮ সালে যৌথভাবে চীনের মিসাইল স্টেষন ও ঐ বিস্ফোরনের স্থান নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিখ্যাত ভারপ্ত্যীয় পর্বতারোহী নন্দা দেবীর সহায়তায় পরিচালনা করে।

১৯৭০ এ কাশ্মীরী বিচ্ছিন্নতাবাদি দের ব্যবহার করে ভারতের বিমান ছিনতাই করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া যার ফলশ্রুতিতে ভারত তার আকাশসীমার উপর দিয়ে পাকিস্তানে দুই পাশের বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করে দিতে পারে।

১৯৭১ এ বাংলাদেশ অপারেশনঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহন।
অপারেশন স্মাইলিং বুদ্ধাঃ “র” এর দেয়া ১৯৭৪ সালে ভারতের পারমানবিক অস্ত্র প্রোগ্রাম এর কোড নেম।১৯৭৪ এর ১৮ মে পারমানবিক অস্ত্র তৈরী ও পরীক্ষার আগে পর্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা।

সিকিম দখলঃ ১৯৭৫ এ “র” এর সহোযোগীতায় ভারতীয় বাহিনী সিকিম একিভুত করে।

কাহুটা ব্লু প্রিন্ট ফাঁসঃ১৯৭৮ সালে পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে কাহুটা এলাকায় খান রিসার্চ ল্যাবটারিতে পাকিস্তানের পারমানবিক কর্মসুচির খবর উদ্ধার করে “র”। ল্যাবটারির কাছে তাদের পরিচালিত একটি নাপিতের দোকান থেকে সংগ্রহ করা চুলের স্যাম্পল এ বেডিয়েশন পরীক্ষা করে। এরপর তারা ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে প্রকল্প ধংস করতে চাইলে ভারতের ততকালীন প্রধান মন্ত্রী মোরাজি দেশাই তাদের নিবৃত্ত করেন এবং পাক প্রেসিডেন্ট জিয়াউল হক কে ফোন করে “র” এর পরিকল্পনার কথা জানিয়ে দেন।

জিয়াউর রহমান হত্যা ও জেনারেল এরশাদের ক্কখমতা দখলে সহায়তাঃ মোরাজি দেশাইয়ের চাপে আশির দশকের পুর্বে “র” জিয়া উতখাতে অপারেশন পরিচালনা করতে না পারলেও ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান হত্যাকান্ড দিক নির্দেশনা দেয় এবং পরবর্তিতে জেনারেল এরশাদ কে ক্ষমতায় বস্তে সহায়তা করে।

অপারেশন মেঘদুতঃ ১৯৮২ তে ভারতের সেনা বাহিনীর যে ধরনের স্নো ওয়ার্ফেয়ারের গীয়ার ব্যবহার করে একই ধরনের আর্টিক ওয়ার্ফেয়ারের গীয়ার পাকিস্তান লন্ডনের একটি কোম্পানী থেকে সংগ্রহ করছে জানতে পারে “র”।যার ফলে ভারতীয় সেনা বাহিনী পাকিস্তানি দের পুর্বেই সিয়াচেল হিমবাহের সিংভাগ দখল করে নেয়।

মধ্য আশির দশক জুড়ে পাকিস্তানের অবস্থিত খালিস্তানি (শিখ) বিদ্রোহীদের ঘাটিতে ক্ল্যান্ডেস্টাইন অপারেশন পরিচালনা করে।

মালদ্বীপ অভিযানঃ ২০০ তামিল গেরিলার হাতে দখল হয়ে যাওয়া মালদ্বীপ কে সহায়তায় “র’ ও ভারতীয় বিমান বাহিনী একসাথে অভিযান পরিচালনা করে।
শ্রীলংকায় তামিল ট্রেনিংঃ আশির দশক ধরে “র” শ্রী লংকায় তামিলদের স্বাধীন রাস্ট্রের জন্য উদ্বুদ্ধকরন ট্রেনিং পরিচালনা সহ পরবর্তিতে ভারতীয় বাহিনীর অভিযানে সহায়তা করে।
অপারেশন চানক্যঃ পুরো ৯০ এর দশক ধরে কাশ্মীর উপত্যাকায় আই এস আই ও তাদের ট্রেনিং প্রাপ্ত গেরিলাদের ধরতে এ অভিযান চালানো হয়।

এছাড়া আফগান গৃহযুদ্ধে ৯০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে নর্দান অ্যালায়েন্স কে র” সহায়তা করে। মার্কিন যুক্ত রাস্ট্র পরিচালিত ওয়ার অন টেরর এ সক্রিয়ভাবে সি আই এ মোসাদ সহ অন্যান্য পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার সাথে অংশগ্রহন।
২০১১ সালে পাকিস্তানের মেহেরান নৌ ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে তিনটি অত্যাধুনি আর্লি ওয়ার্নিং রাডারযুক্ত পাকিস্তানের একমাত্র আর্লি ওয়ার্নিং বিমান স্কোয়াড্রন ধংস করা।
পাকিস্তানের বালুচিস্তানে বিদ্রোহীদের প্রশিক্ষন ও অস্ত্র প্রদান।পাকিস্তানের করাচী ভিত্তিক রাজৈতিক হত্যাকান্ড পরিচালনা।নেপালের রাজা বিরেন্দ্র বীর বিক্রম কে নির্বংশ করা।৯০ এর দশকে নেয়া এক পরিকল্পনার অংশ হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের আরব দেশগুলিতে গত দেড় দশক ধরে ৫,০০০ ভারতীয় তরুনীদের বিয়ের জন্য উপযুক্ত পাত্রী হিসাবে তৈরী করে প্রেরন করা হয়েছে।


ব্যার্থতাঃ

বাংলাদেশ কে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট এর হত্যাকান্ডে বাধা প্রদানে ব্যার্থতা অথবা ইচ্ছাকৃত নির্লিপ্ততা গ্রহন।
রাজীব গান্ধীর হত্যাকান্ড রুখতে ব্যার্থতা।

কার্গিল যুদ্ধে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মুভমেন্ট ধরতে ব্যার্থতা।

মুম্বাই হামলার আগাম তথ্য প্রদানে ব্যার্থতা।

আফগানিস্তানে আহামেদ শাহ মাসুদের হত্যা পরিকল্পনা সম্পর্কে তথ্যা সগ্রহে ব্যার্থতা।

২০০৭ সালে “র” মানিক চন্দ্র ছদ্যনাম ব্যবহারকারী বাংলাদেশের ডিজি এফ আই এর একজন গুপ্তচরের
অস্ত্বীত্তের কথা জানতে সক্ষম হয়। ঐ লোক ১৯৯৯ থেকে দীর্ঘ দিন পুর্ব দিল্লিতে অবস্থান করে গুতুত্বপুর্ন তথ্য সংগ্রহ করতো।

বড় ধরনের ডিফেকশনঃ ২০০৪ সালে “র” এর একজন জয়েন্ট সেক্রেটারি পদমর্যাদার কর্মকর্তা ও দক্ষিন পুর্ব এশিয়া ডেস্কের প্রধান রাবিন্দার সিং দলত্যাগ করে অনেক গুরুত্বপুর্ন ডকুমেন্ট সহ মার্কিন যুক্তরাস্ট্রে আশ্রয় নেয়।

বাংলাদেশে এ “র” এর অপারেশন ও কার্যক্রমঃ
বাংলাদেশে কমপক্ষে ৩ লক্ষ ‘র” কর্মী ও ইনফর্মার সক্রিয় আছে বলে জানা এর মধ্যে ভারতীয় ৪,০০০ এর মত (স্পেকুলেশন) আর বাকিরা ইনফর্মার ,ধর্মীয় ও মতাদর্শগতভাবে 'র" এর প্রতি চরম সহানুভুতিশীল যাদের যেকোন কাজে লাগানো সম্ভব। (কারেকশন ১০.০৯)

বাংলাদেশে যে সব বড় ঘটনার সাথে রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর সংশ্লিস্টতা নিয়ে আঙ্গুল তোলা হয়ঃ
বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি বাহিনী গঠন ও পরিচালনায় “র” জরিত আছে বলে ধারনা করা হয়।
১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমান হত্যা পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে র” এর সংশ্লিস্টতা ছিলো বলে ধরা হয়।
এরশাদের ক্ষমতায় আরোহন এ সহযোগীতা ও তাকে ডবল এজেন্ট সন্দেহে এরশাদের পতনে সহায়তা।
১৯৯৬ এর জেনারেল নাসিমের ব্যার্থ অভ্যুত্থান প্রচেস্টা।
সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এম এস কিবরিয়া হত্যাকান্ড।
১/১১।
বিডিয়ার বিদ্রোহ।
এছাড়া বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা তৈরীর জন্য রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং কে দায়ি করা হয়।

বাংলাদেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল,এন জিও,সরকারী প্রতিস্টান,বানিজ্য অ্যাসোসিয়েশন থেকে শুরু করে প্রতিটি সরকারী বেসরকারি গুরুত্বপুর্ন প্রতিস্টানের মধ্যে রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং এর কর্মীরা সক্রিয় আছেন। বাঙ্গালদেশের তাদের প্রধানতম রিক্রুটিং মাধ্যম হচ্ছে "ইন্ডিয়ান কালচারাল সেন্টার"। ঢাকা শহরের অন্তত দুইটি মসজিদ এর ইমাম অথবা সহকারি হিসাবে "র"
কর্মকর্তা কাজ করছেন। চট্টগ্রাম, সৈয়দপুর, গোপালগঞ্জ ও সিলেটের একাধিক মাদ্রাসার শিক্ষক কভারে "র" অফিসার কর্মরত আছেন।বাংলাদেশের প্রতিটা গ্যারিসন শহরের প্রবেশ মুখে এবং আশেপাশে একাধিক "র" সার্ভেইলেন্স পোস্ট এ "র" অফিসাররা কর্মরত আছেন।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি (আমার জানা মতে) যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখামুখি হওয়া জামাতের একজন নেতা(এখনো চার্জ গঠন করা হয় নি) "র" এর পুরানো সক্রিয় কর্মী।

*ঢাকায় "র" পরিচালিত ব্যবসা প্রতিস্টান ও ব্যক্তি বিশেষ এর নাম দেয়া থেকে সঙ্গত কারনেই বিরত থাকলাম।

পরেও পর্বঃ আই এস আই বা ইন্টার সার্ভিসেস ইন্টেলিজেন্স (পাকিস্তান)

তথ্যসুত্রঃ
১।ইন্ডিয়াস এক্সটার্নাল ইনটেলিজেন্স ,সিক্রেটস অফ ড়িসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং
-মেজর জেনারেল(অব ভি কে সিং )
২।দি কাওবয়েজ অব 'র"- বি.রমন
৩।“এক জেনারেলের নীরব সাক্ষ্যঃ স্বাধীনতার প্রথম দশক”
-মেজর জেনারেল মইনুল হোসেন চৌধুরী বীর বিক্রম
৪।ইন সাইড "র" - অশোক রায়না।
৫।জিয়া হত্যা ও কিচু কথা-লেখকের নাম মনে নাই
৬।"র" এর ভায়াবহ থাবা"-সালাউদ্দিন শোয়েব চৌধুরি ।
৭।ইন্টার্নেট ও নিজেস্ব সুত্র।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:০৯
৭৫টি মন্তব্য ৬৭টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে...

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯

ছিঁচকাঁদুনে ছেলে আর চোখ মোছানো মেয়ে,
পড়তো তারা প্লে গ্রুপে এক প্রিপারেটরি স্কুলে।
রোজ সকালে মা তাদের বিছানা থেকে তুলে,
টেনে টুনে রেডি করাতেন মহা হুলস্থূলে।

মেয়ের মুখে থাকতো হাসি, ছেলের চোখে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহমিকা পাগলা

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


এক আবেগ অনুভূতি আর
উপলব্ধির গন্ধ নিলো না
কি পাষাণ ধর্মলয় মানুষ;
আশপাশ কবর দেখে না
কি মাটির প্রণয় ভাবে না-
এই হলো বাস্তবতা আর
আবেগ, তাই না শুধু বাতাস
গায়ে লাগে না, মন জুড়ায় না;
বলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

হার জিত চ্যাপ্টার ৩০

লিখেছেন স্প্যানকড, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩




তোমার হুটহাট
চলে আসার অপেক্ষায় থাকি
কি যে এক ছটফটানি
তোমার ফিরে আসা
যেন প্রিয় কারো সনে
কোথাও ঘুরতে যাবার মতো আনন্দ
বারবার ঘড়ি দেখা
বারবার অস্থির হতে হতে
ঘুম ছুটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জীবনাস্ত

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৪৪



ভোরবেলা তুমি নিশ্চুপ হয়ে গেলে একদম,
তোমার বাম হাত আমার গলায় পেঁচিয়ে নেই,
ভাবলাম,তুমি অতিনিদ্রায় আচ্ছন্ন ,
কিন্তু এমন তো কখনো হয়নি
তুমি বরফ জমা নিথর হয়ে আছ ,
আমি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে দেশে সকাল শুরু হয় দুর্ঘটনার খবর দেখে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৮ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১১

প্রতি মিনিটে দুর্ঘটনার খবর দেখে অভ্যস্ত। প্রতিনিয়ত বন্যা জলোচ্ছ্বাস আসে না, প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার খবর আসে। আগে খুব ভোরে হকার এসে বাসায় পত্রিকা দিয়ে যেত। বর্তমানেও প্রচলিত আছে তবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×