somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আধার আমি
আমি শেষ রাতের অবহেলিত চাঁদ। যাকে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় সমাজের বেশির ভাগ মানুষ দেখতে পারে না। ঘুমের দোহাইয়ে সবাই আমার সাথে প্রতারণা করে। আর আমি সমাজ জাগতে জাগতে তে-পান্তরে হারিয়ে যায়।

থেকেও না থাকার গল্প, শুন্যতার গল্প………

২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



শীতের এই কুয়াশাঘেরা রাত বাড়ে শুন্যতার পাহাড় নিয়ে। বুকের ভেতর চিনচিন করে ব্যথা আর স্নায়ুগুলো না পাওয়া ব্যথায় বিদ্রোহ করে।

স্বামী থাকতেও ২৫ বছর বয়সী রমনীর দিন-রাত অসহায়ত্বের বেড়াজালে বন্দি হয়ে কাটে। সারা দিন পাগল স্বামীর অপূর্ণ খেদমত আর রাতে শুন্য বিছানার অবহেলা যেনো পাগল করে সুমনাকে।

তেমনি আজ রাতে ঘুম আসছে না নিঃসঙ্গ বিছানার সাথে। বসে বসে পুরাতন স্মৃতির জাদুঘরে একলা বিচরণ করে হাহুতাশ করছে সুমনা।

এইতো সেদিন মাত্র চৌদ্দ বছর বয়সে বাবা-মা বিয়ে দিয়েছিল ৪০ বছর বয়সী প্রাচুর্যে ভরপুর এক মেন্টাল রোগীর সাথে।

বিয়ে সম্পর্কে ধারণা ছিলো না মোটেও। স্বামীর পাশে রাত কাটানোর প্রথম তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তার স্মৃতি বারবার দহন করে মস্তিষ্কের চলন্ত স্নায়ুগুলোকে।

ফরিদপুরের গ্রাম্য সেই বাড়ি থেকে সোজা ঢাকা স্বামীর ফ্লাটে। তারপর শুরু সংসার। পাগল স্বামীর সাথে দশ বছরের সংসার জীবন নিয়ে ভাবলে নিজেকে জীবন্ত ভাবতে কষ্ট লাগে।

সব রকমের চেষ্টা করা হয়েছে, দেশের সবচেয়ে বড়বড় মেন্টাল স্পেশালিস্টদের দেখানো হয়েছে। গত তিন বৎসর হলো এখন আর দৌড়াদৌড়ি করা হয় না।

স্বামীর সাথে কখনো মন খুলে গল্প করেনি সুমনা। কোনোদিন ঢাকার কোনো পার্কে বা অন্য কোথাও হাত ধরে হাটা হয়নি। হাটবে কি করে বয়সের ভারে স্বামীর সখ আহ্লাদ আগেই শেষ হয়ে গেছিল। তারপর আবার মেন্টাল রোগী।

চৌদ্দ বছরের বালিকা যখন স্বামীর হাত ধরে প্রিয় জায়গাগুলো ঘুরবে, তখনই স্বামীর পাগলের স্বীকৃতি পেলো।

যৌবন বাড়ছে সৌন্দর্য্য জাপটে ধরেছে। আর স্বামী তখন বিড়বিড় করে আকাশের তারকা গুণে সময় পার করছে। নিয়তির এমন অদ্ভূত খেলা সহজেই মেনে নিতে পারেনি। যৌবনা সুমনা।

বুকের চিরশুন্যতা নিধনে বন্ধু করতে চেয়েছে অনেক যুবককে। এই তো সেদিন পরিচয় হলো রুম্মান নামে এক যুবকের সাথে। বাসের মধ্যে তার সাথে পরিচয়। যুবক বিবাহিত তাই গল্প করতে বন্ধুত্ব গড়তে সুবিধা হবে।

এই শীতের ব্যাকুল রাতে ফোন দিবে কি রুম্মানকে! সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে রুম্মানের নম্বর মোবাইলের স্ক্রিনে উঠালো ক্লান্ত হাতের আঙ্গুলগুলো।

রুম্মান ঢাকায় থাকে। স্ত্রী দেশের বাড়িতে। বাড়ি যাওয়া হয় না। তিন মাস হতে চললো। মাঝে মাঝে বউয়ের সাথে কথা কাটাকাটি, অভিমান-রাগারাগি প্রায় হয়।

অনুরাগে স্ত্রী মোবাইল ফোন কেটে দেওয়া নিত্য ঘটনা। রুম্মানের কাছে বিষয়টি এখন অনেক কষ্টের লাগে। মাঝে-মাঝে একরাশ বিরক্তি নিয়ে হতাশ হয়ে পড়ে। বুকের মাঝে শুন্যতা লাগে। কান্না আসে।

আজও এমন হলো। ঠিক এমনি মূহুর্তে রুম্মানের মোবাইলের স্ক্রিনে ভেসে উঠলো সাম্প্রতিক পরিচয় হওয়া সুমনার নম্বর। এক ঝলক জ্বলে উঠে থেমে গেলো। মিসড কল।

শুন্যতা বা একাকিত্ব দুরের জন্যই হোক। রুম্মান ফোন দিলো সুমনার নম্বরে।

রু: হ্যালো………
সু: কেমন আছেন?
রু: ভালো…এত রাতে?
সু: আপনার কথা খুব মনে পড়ছিলো……সেদিন গাড়ির মধ্যে আপনার সাথে কত কথা বলেছি। আপনি কি করছেন? আপনার পরিবারের সবাই ভালো তো? এত রাতে কি করছিলেন?.........


রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙ্গে এমনিভাবে এগিয়ে চললো শুন্যতার গল্প, একাকিত্বের গল্প। রাত্রদেবীর করুণায় তাদের কাছে ঘুমের বার্তা আসবে কি না লেখক জানে না।
প্রিয় পাঠক আপনারা জানেন কি?.........

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৯
৫টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৯


হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদে মসজিদে মোল্লা,ও কমিটি নতুন আইনে চালাচ্ছে সমাজ.

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

গত সপ্তাহে ভোলার জাহানপুর ইউনিয়নের চরফ্যাশন ওমরাবাজ গ্রামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। লোকটি নিয়মিত মসজিদে যেত না, মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়েনি, জানা গেল সে আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী ছিল, স্বীকারোক্তিতে সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×