somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নির্বাচনী হলফনামা

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

দু’দিন ধরে হেভিওয়েট মন্ত্রী, এমপি ও হবু এমপিদের নির্বাচনী হলফনামায় লেখা তথ্যাদি সংবাদ মাধ্যমে শিরোনাম হচ্ছে। অতীব কৌতূহলে লক্ষ্য করছি, হলফনামায় প্রকৃত তথ্য এড়ানোর হিড়িক পড়েছে যেন। আর এ তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছেন নীতি কথা বলে মুখে খ‍ই ফোটানো মন্ত্রী থেকে শুরু করে খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পর্যšত্ম। কেউ অর্থসম্পদ নিয়ে বিভ্রাšিত্ম তৈরি করেছেন, কেউবা পেশা নিয়ে। কেউবা আবার এড়িয়ে গেছেন শিক্ষাগত যোগ্যতার তথ্যও।

নিপাট ভদ্রলোক ও সৎ বলে বাজারে সুনাম আছে যার, সেই যোগাযোগমন্ত্রী
ওবায়দুল কাদের তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় নিজের পেশা বলছেন সাংবাদিকতা। তিনি কোথায়, কবে থেকে সাংবাদিকতা করেন, আমাদের জানা নেই। সাংবাদিকতা আদৌ তার মূল আয়ের উৎস কি না তা নিয়েও জনমনে যথেষ্ট সন্দেহ আছে।
ওবায়দুল কাদেরের নাকি নগদ অর্থের পরিমাণ মাত্র ৫৫ হাজার টাকা!! পাঁচ বছর আগে যেখানে ব্যাঙ্কে গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ তিনি উল্লেখ করেছিলেন প্রায় পাঁচ লাখ টাকা, এবারের নির্বাচনী হলফনামায় সেই অর্থ ফলবান হয়ে হয়েছে ৩১ লাখ ২৯ হাজার টাকা। ২০০৮ সালে যেখানে স্থায়ী আমানতে তার বিনিয়োগ ছিল সাড়ে ১৫ লাখ টাকা, সেখানে ২০১৩তে এসে হয়েছে ৭১ লাখ ২৩ হাজার টাকা। সাংবাদিকতা আর মন্ত্রিত্বের ভাতা নিয়ে কিভাবে অল্পদিনে এই অল্প (!) সম্পদের মালিক হওয়া যায়, তা আসলেই গবেষণার বিষয়।
তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এবং সদ্য টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী পদে নিয়োগপ্রাপ্ত রাশেদ খান মেননের অন্যতম আয়ের উৎস নাকি "টক শো"!!! তিনি নাকি লেখালেখি আর টক শো থেকে বছরে এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা, আর হাসানুল ইনু টক শো থেকে বছরে এক লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকা আয় করেন!! অর্থ্যাৎ তারা মাসে গড়ে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা টক শো থেকে আয় করেন। যেহেতু এটাই তাদের মূল আয়ের উৎস, কাজেই এ টাকায় রাজার হালে তাদের সংসারও চলে! এও কি সম্ভব? কি জানি বঙ্গদেশে বোধহয় তাদের এমন কৌতূক পরিবেশনও স্বাভাবিক।
অবাক হয়েছি যখন জেনেছি, বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামের পুত্র সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এম.এ পাশ হওয়া সত্ত্বেও হলফনামায় নিজেকে এইচ.এস.সি পাশ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা কমিয়ে এনে নির্বাচনে তিনি কি সুবিধা লাভ করবেন তা কিছুতেই বোধগম্য হচ্ছে না।

দিনরাত শেয়ার বাজারকে দুষ্টু, রাবিশ, বোগাস বলে ওঠা অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত একজন শেয়ার ব্যবসায়ী- এই চমকপ্রদ তথ্য জেনে আমরা নির্মল বিনোদন লাভ করি। হলমার্ক কেলেংকারীর হোতা তানভিরের পক্ষ নেয়া মুহিত সাহেবের নাকি জনতা ব্যাঙ্কে ৩৫ লাখ টাকা ঋণ আছে। জনতা ব্যাঙ্কে ঋণ আছে জন্যই, তিনি জনতা ব্যাংকের ঋণখেলাপি তানভিরকে আরো ঋণ দেবার সুপারিশ করেন কি না তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
অবাক হই যখন জানতে পারি আমাদের প্রধানমন্ত্রী একজন কৃষক! কৃষিই তাঁর আয়ের উৎস! কৃষি ও মৎস্যখাত থেকে আমাদের প্রধানমন্ত্রীর বছরে আয় প্রায় সোয়া ৫ লাখ টাকা। সবচে’ মূল্যবান তথ্য হলো- তিনি গাছ বিক্রি করেই বছরে পান ১০ লাখ টাকা।
সন্দেহ নেই, সবাই প্রকৃত তথ্য এড়িয়ে গেছেন। অথচ নির্বাচনে প্রার্থীদের সঠিক তথ্য দেবার বিধান রয়েছে। আমাদেরও অধিকার আছে তাদের ব্যক্তিগত সম্পদের হিসাব-নিকাশ জানার। কিন্তু কি অনায়াসেই তারা একেকজন কৃষক, সমাজসেবা, শেয়ার ব্যবসা ও টক শোকে নিজেদের মূল আয়ের উৎস বলে হলফনামায় চালিয়ে দিলেন!

সম্পদের হিসাব দেখে মনে হয়, এরা ফুটপাথের হকারদের চেয়েও গরীব। পাজেরো গাড়ি নাকি উপহার হিসেবে পেয়ে থাকেন! কে দেন উপহার, কেন দেন আর কেনই বা তারা নেন? স্ত্রীরা কোনো কিছু না করেই একেকজন আমাদের এসব এমপির চেয়েও ধনী। কেউ কেউ তো স্ত্রীর কাছে লোন আছে বলেও হলফনামায় জানিয়েছেন।
দিনের প্রকাশ্য আলোয় গৃহস্থের সামনে দিয়ে গরু চুরি করে নিয়ে যাবার মতই প্রকাশ্য ও স্পষ্ট এই মিথ্যার প্রকাশ। কিন্তু কেন? কেন এই চাতুরি? কেন সত্য এড়ানোর এই প্রবণতা? দেশের সেবা করার প্রতিশ্র“তি দিতে আসা এসব ব্যক্তি শুরুতেই যদি এমন জালিয়াতি করেন, তবে তাদের কাছে জনগণ ভালো কিছু কি প্রত্যাশা করতে পারে?
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পিরিতের সংস্কৃতিওয়ালা তুমি মুলা’র দিনে আইলা না

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৬


---- আমাদের দেশে ভাষা, সংস্কৃতি এবং সামাজিক সমুন্নয়ন তলানিতে। তেমন কোন সংস্কৃতিবান নেই, শিরদাঁড়া সোজা তেমন মানুষ নেই। সংস্কৃতির বড় দান হলো ভয়শূন্য ও বিশুদ্ধ আত্মা। যিনি মানবের স্খলনে, যেকোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইসরায়েল

লিখেছেন সাইফুলসাইফসাই, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮

ইসরায়েল
সাইফুল ইসলাম সাঈফ

এ মাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বাবাকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
নিরীহ শিশুদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এই বৃ্দ্ধ-বৃদ্ধাদের হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ ভাইক হত্যা করেছে ইসরায়েল
এ বোনকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
তারা মানুষ, এরাও মানুষ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গ্রামের রঙিন চাঁদ

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১২


গ্রামের ছায়া মায়া আদর সোহাগ
এক কুয়া জল বির্সজন দিয়ে আবার
ফিরলাম ইট পাথর শহরে কিন্তু দূরত্বের
চাঁদটা সঙ্গেই রইল- যত স্মৃতি অমলিন;
সোনালি সূর্যের সাথে শুধু কথাকোপন
গ্রাম আর শহরের ধূলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:১৭



পাহাড়পুর বৌদ্ধ বিহারের ধ্বংসাবশেষঃ
পালবংশের দ্বিতীয় রাজা শ্রী ধর্মপালদেব অষ্টম শতকের শেষের দিকে বা নবম শতকে এই বিহার তৈরি করছিলেন।১৮৭৯ সালে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরবাসী ঈদ

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৬ ই এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:২৩

আমার বাচ্চারা সকাল থেকেই আনন্দে আত্মহারা। আজ "ঈদ!" ঈদের আনন্দের চাইতে বড় আনন্দ হচ্ছে ওদেরকে স্কুলে যেতে হচ্ছে না। সপ্তাহের মাঝে ঈদ হলে এই একটা সুবিধা ওরা পায়, বাড়তি ছুটি!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×