somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একদিন- ১

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার ছোটোভাই এবার এইচএসসি পাস করল। চবি থেকে ডি ইউনিটের ফরম উঠাই। সেই সুবাদেই দুই ভাইয়ের প্রথম চট্টগ্রাম ভ্রমণ। প্রথম ট্রেন ভ্রমণও বটে। চিন্তা করলাম আমার মত অনেকের ভবিষ্যতে হটাত প্রয়োজনে চট্টগ্রাম বা নতুন জায়গায় যাওয়া লাগতে পারে, সেক্ষেত্রে আমার অভিজ্ঞতা হয়ত খানিক কাজে লেগে যেতে পারে। সাধারণ সময় থেকে ভর্তি পরীক্ষার সময়ের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আশা করি পরেরবার ভর্তি পরীক্ষার সময় যারা ঢাকা থেকে চবিতে যাবেন তাদের জন্য খুবই কাজে দিবে।



প্রথমে আসি ট্রেনের টিকেট কাটার ব্যাপারে। যেদিনের ট্রেনে যাবেন সেদিনের টিকেট ৯ দিন আগে থেকে কাউন্টার এবং অনলাইনে পাবেন। অনলাইনে রেলওয়ের এই সাইটে একাউন্ট খুলে টিকেট কিনতে পারেন। এখন নির্দিষ্ট সিটের টিকেট কাটা যায়, আগে এই সুবিধাটা ছিলো না। এছাড়া বাংলালিংক, রবি এবং গ্রামীণফোন দিয়ে মোবাইলেও টিকেট কিনতে পারেন। তবে যেভাবেই কিনুন না কেনো যেদিন টিকেট ছাড়বে সেদিনই টিকেট কিনে ফেলুন। ভর্তি পরীক্ষার সময় বাড়তি চাপ থাকে।


পরীক্ষা ছিলো ২৭ তারিখ সকাল ১০ টায়। আমাদের মূল প্ল্যান ছিলো ২৬ তারিখ রাত সাড়ে ১১ টায় যাবো আবার ২৭ তারিখ রাত সাড়ে ১১ টার ট্রেনে ফিরে যাবো। সাড়ে ১১টার ট্রেনটা ছিলো তুর্না এক্সপ্রেস। বন্ধুমহলে আলাপ করে জানলাম এই রুটে সবথেকে ভালো ট্রেন হলো সোনার বাংলা, এরপর হলো তুর্না। একই সুবিধার সিটের ভাড়া অন্যান্যগুলো থেকে সোনার বাংলায় ২০০ টাকা বেশি, খোঁজ নিয়ে জানলাম ২০০ টাকা খাবারের জন্য নেয়া হয়। তবে টাকা অনুযায়ী খাবারের অবস্থা ভালো না। অনলাইনেই বেশ কয়েকটা পত্রিকার প্রতিবেদন পাবেন খুঁজলে। এর থেকে বাসা অথবা ভালো কোনো হোটেল থেকে খাবার কিনে সাথে নিতে পারেন। তো হিসাব অনুযায়ী ২৬ তারিখ রাতের টিকেট ছাড়বে ১৭ তারিখে।


সে অনুযায়ী চলে যাই কমলাপুর রেলস্টেশন। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের মত আন্ত-নগর ট্রেনের টিকেট কাউন্টার একেবারে প্রথমেই চোখে পড়ে, তাই লাইন খুজতে কোনো বেগ পেতে হলো না। লাইনে দাড়ানোর পর খানিক পর পর শুধু টিকেট নাই, টিকেট নাই আওয়াজ! রাবিতে চবি ৩-৪ দিন আগে পরীক্ষা। যারা রাবির টিকেট কিনতে এসেছিলো তারা খালি হাতে ফিরে যাচ্ছে। মনে মনে স্থির করে ফেললাম এসি সিট পেলেও নিয়ে নিবো। ৪নং কাউন্টারে টিকেটের দায়িত্বে থাকা ভদ্রমহিলা জানালেন রাতে ৯ টায় শোভন চেয়ারের টিকেট আছে। পটাপট টাকা দিয়ে টিকেট নিয়ে নিলাম। বের হয়েই আগে সোজা ২ রাকআত নামায পড়েছি। ঐ মুহূর্তের জন্য এই টিকেট পাওয়া অভাবনীয় ব্যাপার লেগেছিলো। ভাগ্যেশ যেদিন ছেড়েছে সেদিনই গিয়েছিলাম, এই টিকেটই ব্ল্যাকে পরদিন ডাবল দামে বিক্রি হতেও দেখেছি। যাই হোক আমরা একদম শেষ বগির টিকেট পেয়েছিলাম। পরদিন আবার গেলাম রিটার্ন টিকেট কাটতে। ৫ নং কাউন্টারে অন্য শহরগুলো থেকে ঢাকা আসার অগ্রিম টিকেট দিচ্ছিলো। যাওয়ার পর বললো দুপুর ১২ টার পর ২৭ তারিখের টিকেট কাটা যাবে। সে পর্যন্ত নিরুপায় হয়ে বসে থাকা লাগলো। ১২ টার পর ঘটলো আরেক ঘটনা টিকেটের দায়িত্বে থাকা লোক পাশের সরকারি টেলিফোনটা কানে লাগিয়ে একের পর এক টিকেট বের করতে লাগলো। সবাই মিলে প্রতিবাদ করেও ভাইটির মহান কাজে ব্যাঘাত ঘটানো গেলো না। এর ফাঁকে আবার মন্ত্রী থেকে শুরু করে বিভিন্ন হোমড়া-চোমড়ার রেফারেন্স দিয়ে লাইনে না দাঁড়িয়েই টিকেট নিয়ে নিলো। আমরা নিজ দেশেই শরণার্থী লেভেলের নাগরিক সুবিধা পাই, প্রবাসে যাদের নিতান্ত বাধ্য হয়ে বিভিন্ন কাজে দুতাবাসে যাওয়া লাগে তাদের না জানি কি ভোগান্তিটা পোহাতে হয়! সাড়ে ১১ টায় লাইনে দাঁড়িয়ে ১২ টা ৩৯ এ টিকেট পেলাম। এরই মধ্যে নন-এসি সব টিকেট শেষ হয়ে গেছে! দুপুর ৩ টা অথবা বিকাল ৫ টার এসি টিকেট নেয়া যাবে। ৩ টার কাটলে ১৩১২ টাকা পড়বে দুইজনের আর ৫ টার কাটলে একই সিটের জন্য পড়বে ১৭০০+ টাকা। শেষে ৩ টার টিকেট নিলাম। আমার টিকেট কাটার ঝামেলা শেষ হলো।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩২
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×