somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমি কলেজ জীবন যেরকম আশা করেছিলাম, সেটা ঠিক সে রকম হল না ! [প্রথম দিন: অধ্যায়-১]

১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এটা আমার নিজস্ব ব্লগে লেখা, ব্লগের লিংক আমি কলেজ জীবন যেরকম আশা করেছিলাম, সেটা ঠিক সে রকম হল না !



প্রথম দিন: অধ্যায়-১
কলেজের সামনে এসে দাড়ালাম ছোট একটা কলেজ, তবে এটা বাসার কাছে বলে আমি এখানে ভর্তি হয়েছি। কলেজ থেকে আমার বাসায় হেটে যেতে মাত্রে পনের মিনিট লাগে। ছোট এই কলেজ দেখতে L এর মত। এর পাশে স্কুল আছে।

আমি কলেজে ঢুকে আমার ক্লাসে খোজে গেলাম, হুম আমি সেকশন-A তে। ফার্ষ্ট ইয়ার যখন নিচতলায় হবার সম্ভাবনা বেশী। বেশী হাটা লাগলনা আমার, একটু সামনে এগোতেই আমি পেয়ে গেলাম আমার ক্লাসরুম বিজ্ঞান-A। ক্লাসে ঢুকতেই কথাবার্তার আওয়াজ পেলাম। সবাই আমার মত সাধারন পোশাক পড়া, এখনো অনেকেই কলেজ ড্রেস বানায়নি। তবে দুই একদিনের মধ্যে সবাই কলেজ ড্রেস পড়ে আসবে। আমি ক্লাসরুমে ঢুকলাম। দেখি সবাই কথা বলছে তবে কে কার কথা শুনছে ঠিক বোঝা যাচ্ছে না। তবে অধিকাংশ ছেলেদের দেখলাম তারা মেয়েদের সাথে কথায় ব্যস্ত। হুম, মাঠে না নামতেই ছক্কা মারার ব্যবস্থা।

অল্প কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে থেকে পিছনের দিকে গেলাম। পরিচিত কাউকে পাবার আশা করলাম না, কারন সেই খুলনা হতে কেউ ঢাকায় আসবে না কলেজে পড়তে। প্রথম দিকের কিছু সিট ফাকা আছে কিন্তু ব্যাকবেঞ্চার হিসেবে যে উপাধি আমি স্কুলে পেয়েছিলাম সেটা অক্ষুণ্ণ রাখা দরকার আমার। তাই আমি পিছনের এক বেঞ্চে বসে আমি একটা লম্বা নিঃশ্বাস ফেললাম। মনে মনে ভাবতে লাগলাম, আজকে থেকে আমার কলেজ জীবন শুরু। আমি বেঞ্চে দুইপা ছড়িয়ে বসে চারিদিকে তাকালাম, কয়েকজন আমার দিকে তাকিয়েছিল কিন্তু সেই তাকিয়ে থাকা বেশীক্ষনের জন্য হলনা। আবার তার নিজেরদের কথার জগতে ফিরে গেল। আমি ক্লাস রুমের দিকে তাকালাম। কলেজ ছোট হলেও ক্লাসরুমটা বেশ বড়। আলো বাতাসে ভরপুর। প্রায় ষাট থেকে সত্তর জন আরাম করে বসতে পারবে। আবার হোয়াইট বোর্ডের উপর, মানে একটু বেশী উপরে দুটো সাউন্ড বক্স লাগানো। হুম, তাহলে স্যার-ম্যাডামরা এই মাইকের মাধ্যমে লেকচার দিবে। ভালই গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে ক্লাশ নেয়া লাগবে না।

এবার আমি মনে মনে প্ল্যান করতে লাগলাম কি কি করা দরকার। কারন আমি কলেজে শুধু ক্লাস করতেই আসি নাই আরো অনেক কিছু করতে এসেছি। প্রথমেই মনে হল লাইব্রেরী কার্ড করার কথা। কারন ওই একটা জিনিষ আমার দরকার। দেখতে হবে এই কলেজের লাইব্রেরীর অবস্থা কেমন। আরো কিছু কিছু জিনিশ মাথায় খেলতে লাগল সেগুলোও আমার বাস্তবায়ন করার দরকার।

মনে মনে সে গুলোর সংক্ষিপ্ত তালিকা বানানো শুরু করলাম-

১) লাইব্রেরী কার্ড বানানো।

২) কলেজ পালানোর সোজা পথ এবং বিকল্প পথ খোজা।

৩) কোন স্যারের ক্লাস ফাকি দিলে ধরা খাওয়ার সম্ভাবনা কম।

৪) আহ, ভালো একজন পালানোর সঙ্গী দরকার!

উপরের তালিকাগুলো দেখে যদি কারো চোখ উল্টে যায় তাহলে কিছু করার নাই, কারন কলেজ লাইফ হল পালানোর জন্য, সব কিছুই থেকে পালানো, এড়িয়ে যাওয়া এটা কলেজ জীবন থেকেই শিখতে হবে। এগুলো না শিখলে কলেজ জীবন বলতে গেলে বৃথা, অন্তত আমার মতে।

হুম কোথায় যেন ছিলাম, হা তালিকা তৈরীতে…

আর কি করা যায়…

ঠিক তখনই ক্লাসে বেটে-খাট করে গোলগাল ফর্সা চেহারার এক লোক ঢুকল। স্যার ঢোকার সাথে সাথে আমরা সবাই উঠে দাড়ালাম। স্যার অ্যাটেনশন ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আমাদের দিকে তাকাতে লাগল। যেন উনি কোন এক আর্মির মেজর আর আমরা হলাম গিয়ে সাধারন সিপাহী। তিনি এবার ফ্রন্ট ডেস্ক থেকে মাইক হাতে নিলেন এবং সেটাতে মৃদু টোকা দিয়ে পরীক্ষা করলান মাইকটা চালু আছে কিনা। তারপর তিনি তার চিকন গলা নিয়ে মোটা স্বরে বললেন, “সবাই বস,” এই বলে একটু থামলেন আবার বলা শুরু করলেন, “আমার নাম মিজানুর হায়দার, তোমাদের সবাইকে কলেজে স্বাগতম।”

ক্লাসে মৃসু গুঞ্জন উঠল। কেউ সেরকম ভাবে কিছু বললনা।

তিনি তার কথা চালাতে লাগলেন, “আমি কলেজের পি.টি. স্যার আর বানিজ্য ডিপার্টমেন্টের ক্লাস নিই।”

আমি এই শুনে একটা স্বস্তির নিশ্বাস নিলাম। যাক বিজ্ঞান বিভাগে নাই। আমার কেন জানি এই স্যারকে ভাল লাগলনা। কেমন জানি একটা ফালতু ভারিক্কি ভাব নিয়ে চলছে। অবশ্য সব স্কুল কলেজে এই ধরনের দুই একটা স্যার থাকে। এটা বাধ্যতামুলক!

তার কথা চলতে লাগল, “ এখানে ভর্তি হবার আগে হয়তো আমার নাম অনেকেই শুনেছ।”

উম, মনে হয় না, আমি মনে মনে বললাম।

“আমি খুব ফ্রেন্ডলি কিন্তু এর সাথে সাথে খুবই কড়া ধরনের টিচার, আমার কাছে নিয়ম অনেক বড়। এখানে অনেক নিয়ম থাকবে। অধিকাংশ তোমাদের ভাল লাগবেনা। যদি ভাল না লাগে এই কলেজ ছেড়ে চলে যাও, এই ঢাকা শহরে অনেক কলেজ আছে। আমি এখন কিছু নিয়ম বলে দিচ্ছি, সেগুলো ভাঙলে কঠিন শাস্তি আছে।” স্যার কথাটা এক নিশ্বাসে শেষ করলেন। তারপর বললেন, “নিয়মগুলো হচ্ছে…

“-কলেজ করিডরে দৌড়াদৌড়ি নিষেধ, আর সেখানে চেচামেচি নিষেধ।

- অহেতুক এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি নিষেধ, উপযুক্ত কৈফিয়ত দিতে না পারলে শাস্তি।

- ছেলেদের চুল অত্যাবশকভাবে ছোট রাখতে হব, সবচেয়ে ভাল আর্মি কাট দিলে”

এই বলে নিজের প্রায় অদৃশ্য চুলে হাত বুলালো। অদৃশ্য বলতে টাক নয়, অনেক ছোট করে কাটা, শুধু সামনে দিয়ে খানিকটা বড় তাও তা দুই আঙ্গুল দিয়ে সহজে ধরা যাবে কিনা সন্দেহ।

“-মেয়েরা বেনী করে আসবে, আর বাহারি কালারের ফিতা হলে চলবে না, সাদা কালার লাগবে। চুলে কালার করা নিষেধ সেটা ছেলদের ক্ষেত্রেও প্রযোয্য।

-কলেজে মোবাইল ফোন আনা নিষেধ, যদি জরুরী কিছু হয় তাহলে স্যার অথবা ম্যাডামের কাছে বলবে। কারো কাছে যদি আমি মোবাইল ফোন দেখি তাহলে সেটা বাজেয়াপ্ত করা হবে।

আর শেষ কথা যদি কাউকে যদি পালাতে আর ক্লাস ফাঁকি দিতে দেখি তাহলে পেদিয়ে পাছার চামড়া তুলে দিব।”

এত কথা একবারে বলার পর একটু নিশ্বাস ফেললেন। তারপর আবার বললেন, “কারো কি কিছু বলার আছে। থাকলে বল। আমি ফ্রী মাইণ্ডের কিছু বলব না প্রথম দিন বলে।”

হুম, স্যার অনেক কথাই বলল, যদিও ‘যদি’ শব্দটা উনি বহুবার উচ্চারন করলেন!

আমার কি হল জানিনা আমি বলে উঠলাম, “Sir You Are Rock.”

প্রথমে নিরবতা এরপর মৃদুগুঞ্জন উঠল সাথে আরো কয়েকজন ফিক ফিক করে হাসল।

মিজানুর স্যার থতমত খেল, কিন্তু সেটা তাড়াতাড়ি কেটে গেল, সিরিয়াস ভঙ্গিতে চারিদিকে তাকিয়ে বললেন, “কে, কে এই কথা বলল? দাঁড়াও সে।”

আমি উঠে দাড়ালাম, আমি স্যারের দিকে সরাসরি তাকালাম। আশেপাশে না তাকালেও আমি বোঝতে পারলাম ক্লাসের সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে।

মিজানুর স্যার আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “তুমি কি বললে?”

আমি মিজানুর স্যারের দিকে তাকিয়ে বললাম, “ স্যার আমি বলেছিলাম আপনি খুবই রকিং এক স্যার, আপনার কথা বলার মধ্যে একধরনের কুলিং ভাব আছে, এত সিরিয়াস কথা এমন ভাবে ভাবে বললেন যেন কিছুই না, কিন্তু আবার এই নিয়ম গুলো না মেনে পারা যায় না। ”

“তুমি কি আমার সাথে মজা করছ।” মিজানুর স্যার বলল।

“না স্যার, আমি আপনার সাথে মজা করছি না। আমি সিরিয়াস!”

মিজানুর স্যার আমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে বললেন, “তুমি সামনে এসে দাঁড়াও।”

এবার আমার থতমত খাবার পালা। আসলে আমি ভেবে চিন্তা করে এই কথা বলি নাই, মুখ ফস্কে বের হয়ে গেছে। আমার আবার এই বদঅভ্যাস, কিছু না ভেবেই মুখ ফস্কে কথা বলা। এর জন্য মার হাতে ধমক থেকে ধোলাই পর্যন্ত খেতে হয়েছে, আর আপিতো বলত, “মুখ ফস্কে কথা বলার কারনে দেখিস তোর কপালে অনেক দুঃখ আছে।”

হুম ঠেলা এবার বুঝলাম, কলেজের প্রথম দিনই এসে মার খেতে হবে। দুরুদুরু বুক দিয়ে স্যারের সামনে গেলাম। স্যার আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “এবার ক্লাসের সবার দিকে তাকাও।”

হাহ! মাইর দিবে না! ভালইতো আমি কিছুটা হাল্কা হয়ে সামনে তাকালাম, দেখলাম সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে। সবাই আমার দিকে তাকিয়ে আছে এটা ভাবতেই আমার কিছুটা অস্বস্তি লাগতে শুরু করল।

স্যার আমাকে জিজ্ঞেশ করল, “তা তোমার নাম কি।”

“রেদোয়ান হক রানা”, আমি বললাম।

“ও আচ্ছা, তা রেদোয়ান হক রানা তোমার সম্পর্কে এদের কাছে কিছু বল।”

“কি বলব?”

“যা মনে আসে।”

“কিছুইতো মনে আসছে না স্যার।”

“আরে বাপ কিছুতো বল,” স্যার যখন এই কথা বলল কিছু ছাত্র-ছাত্রীর হাসির আওয়াজ শুনতে পেলাম। স্যার বলতে লাগল, “তুমি কোন স্কুলে পড়েছ, তোমার হবি কি ইত্যদি।”

আমি একটু চুপ করে সবার দিকে তাকালাম, তারপর বলা শুরু করলাম, “আমার নাম রেদায়ান হক রানা। আমার বাড়ি খুলনা, আর আমার হবি হচ্ছে বই পড়া।” এই বলে আমি স্যারের দিকে তাকালাম।

মিজানুর স্যার আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “এই আর কিছু নেই।”

“না স্যার, নাই।”

“কোন স্কুল থেকে এসেছ, তোমার ফ্যামিলি কয়জন, তারা কি এখানে থাকে আরো আছে না ?”

স্যারের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম, বুঝেছি এই লোক আমাকে এত সহজে ছাড়বে না। আমি আবার বলা শুরু করলাম, “আমি খুলনা জিলা স্কুল থেকে এসএসসি পাশ করেছি, আর আমার বাবা মা খুলনায় থাকেন।”

“খুলনা জিলা স্কুল?” স্যার আমার দিকে তাকিয়ে বললেন।

“জ্বি স্যার, আর এর কাছেই রুপসা নদী আছে।”

“হুম”, স্যার এই বলে বাকী ছাত্র-ছাত্রীদের দিকে তাকাল, বলল, “তোমারা কি ওকে কোন প্রশ্ন করবে নাকি?”

হা! বলে কি! আমি কোন সেলিব্রেটি টকশোতে এসছি নাকি। যে আমাকে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন করবে আর আমি হাসি মুখে সব বলব। নির্ঘাত এই স্যার আমার উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। আরে বাপ, আমি তো স্যারের সাথে হাল্কা মশকরা করেছি। এটাতো সব ছাত্রই স্যারের সাথে করে। তাই আমিও করলাম, কিন্তু স্যার এটা নিজের অপমান বলে নিয়েছে, ঠিক বাংলা সিনেমার ভিলেনদের মত। এবার আমাকে ঠিক তারচেয়ে দুই ডবল বেশী পরিমানে হেনেস্থা করছে। আমিও দেখে নিব।

স্যারের কথা শেষ হতেই একটা মেয়ে হাত তুলল, বলল,“তোমাকে একটা কথা বলি কিছু মনে করবে না তো।”

কিছু মনে না করার মত কথা বললে না, মনে মনে বললাম।

“জান তোমার চেহারা না রজার মুরের মত, যে কিনা জেমস বন্ডে অভিনয় করেছিল,” মেয়েটা বলল।

ক্লাসে এবারো হাল্কা হাসির আওয়াজ পাওয়া গেল। কয়েকজন ছেলে মেয়েটার কথায় সায় দিল। স্যার এবার আমার দিকে ভালভাবে তাকিয়ে মেয়েটাকে বলল, “ঠিক বলেছ, তা তোমার নাম কি ?”

“নুশরাত জাহান।”

“ধন্যবাদ, সত্যিই, এইজন্য ওকে এত চেনা চেনা লাগছিল,” মিজানুর স্যার বলে উঠল, “তা রজার মুরকে চিন নাকি?”

আপনার চেয়ে ভাল চিনি, মনে মনে বললাম। সেটা মুখে বলার সাহস করলাম না, শুধু মাথা ঝাকালাম।

“ভাল, চিনলে ভাল তা আর কেউ আছে নাকি প্রশ্ন করার?” এই বলে স্যার সবার দিকে তাকাল।

আর কেউ মনে হয় আমাকে প্রশ্ন করবে না। আমি নুশরাত জাহান নামের মেয়ের দিকে তাকালাম। শ্যামলা বর্ণের কিউট চেহারার এক মেয়ে। তাকে দেখে আমি বুঝতে পারলাম সে একটু আগে আমাকে নিয়ে যে কথাটা বলছে সে এই কথা নিয়ে খুবই সিরিয়াস। যদি ফাজলামি করত তাহলে এখন সে মুখ টিপে টিপে হাসত। নুশরাতের পাশের জনের দিকে চোখ গেল। চশমা পড়া খুবই ধারাল চেহারার এক মেয়ে। দেখলেই ব্লেডের কথা মনে পড়ে যায়। চোখে হ্যারি পটার টাইপ চশমা যেটা বর্তমানে বলতে গেলে দেখাই যায়না আর চুল গুলো মাঝখান দিয়ে সিথী আর পাকানো রশির মত করে বেণী করা। দেখলেই মা-নানীদের কথা মনে পড়ে যায়। এক কথায় বলা যায় মেয়েটাকে দেখলে সত্তর-আশি সালের মেয়েদের কথা মনে পড়ে যায়।

হঠাৎ করেই মিজানুর স্যারের কথা শুনে হুশ ফিরল। তিনি আমার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেশ করল, “তুমিতো ঢাকায় থাক তাই না। তা কার সাথে থাকে, আত্মীয় স্বজনদের বাসায়, নাকি মেসে। ”

“আপির সাথে।”, আমি বললাম।

“আপি মানে?” স্যার আমাকে জিজ্ঞেশ করল।

“আমার ছোট বোন, আমরা চার ভাই-বোন, আমি সবার ছোট। বড় বোনকে আপা, মেজবোনকে আপু আর ছোটবোনকে আপি বলে ডাকি।”, আমি স্যারের প্রশ্নের উত্তর দিলাম।

স্যার এটা শুনে হাল্কভাবে মাথা ঝাকাল। তারপর বলল, “সবার কি ফ্যামিলি আছে নাকি?”

প্রথমে আমি স্যারের কথার মানে বুঝতে পারি নাই, একটু পরে বুঝতে পারলাম স্যার কি জানতে চাইছে।
আমি বললাম, “আপি বাদে সবার ফ্যামিলি আছে।”

স্যার এবারও মাথা ঝাকাল। আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “সিঙ্গেল তাই না। ”

আমি কিছু না বলে মাথা ঝাকালাম। স্যার এবার আমার পিঠে হাত দিয়ে বলল, “হুম তোমার সাথে আমার বনবে ভাল পরে আরো কথা হবে, যাও সিটে গিয়ে বস।”

আমি বুঝতে পেরেছি ‘চাঁদ’ তুমি কি বোঝাতে চেয়েছ। কিন্তু সেটা তোমার স্বপ্নের বাইরে ‘চাঁদ’, চেহারা একটু ভাল দেখে প্লেবয় হয়ে গেছ তা মনে কর না। আমি এই ভাবতে ভাবতে আমার বেঞ্চের দিকে গেলাম, বেঞ্চের কাছাকাছি আসতেই বললাম, “স্যার আপি একটু অহংকারী টাইপের, আর তার হাইট পাচ ফিট ছয়, তাই সে তার চেয়ে খাট লোককে পাত্তাই দেয় না। ”

স্যার একটু থতমত খেল, আমার ধারনা স্যার পাচ ফিট চারের বেশী হবে না, তাই স্যারকে এটা জানিয়ে দিলাম। স্যার কিছু বলল না বলতে গেলেই হয়তো বাকী ছাত্র-ছাত্রীরা বুঝে যাবে আমি কি বলতে চেয়েছি, যদিও আমার সন্দেহ অনেকেই বুঝে ফেলেছে। স্যার শুধু আমার দিকে কিছুক্ষন তাকাল এরপর সে কিছু না বলে বের হয়ে গেল।

আমি বুঝতে পারলাম একটু আগের কথাটা আমার বলা উচিত হয়নি। কিন্তু এখন কিছু করার নেই। আমি বসে পড়লাম, আমার কাছে এটা পুরো পানির মত পরিষ্কার যে এই মিজানুর হায়দার স্যার আমাকে মার্ক করে রেখেছে এবং আমার প্রতি তিনি এক ধরনের বিশেষ দৃষ্টি রাখবেন, অবশ্যই সেটা ভাল নজরে নয়।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১৪ দুপুর ১২:১৮
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×