somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

মোহাম্মদ আলী আকন্দ
আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা-১৯

০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনুচ্ছেদ ৫
যখন কংগ্রেসের উভয় সভার দুই তৃতীয়াংশ প্রয়োজনীয় মনে করবে তখন এই সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করতে পারবে; অথবা দুই তৃতীয়াংশ রাজ্যের বিধানসভার আবেদনের প্রেক্ষিতে সংশোধনের প্রস্তাব করার জন্য সম্মেলন ডাকা হবে, তবে সংবিধান সংশোধনের ইচ্ছা এবং উদ্দেশ্য তখনই বৈধ হবে যখন তিন চতুর্থাংশ রাজ্যের বিধানসভা অথবা এই সংক্রান্ত সম্মেলনের তিন চতুর্থাংশ অনুমোদন করবে, কংগ্রেস সংশোধনী অনুমোদনের জন্য দুইটার মধ্যে যে কোন একটা পদ্ধতি প্রস্তাব করতে পারে; তবে এক হাজার আট শত আট সালের আগে অনুচ্ছেদ ১, ধারা ৯ এর দফা ১ এবং ৪ সংশোধন করা যাবে না; কোন রাজ্যের সম্মতি ছাড়া তাকে সিনেটে সম সংখ্যক প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।

ভাষ্য
এই অনুচ্ছেদে সংবিধান সংশোধনের পদ্ধতি বলা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সংবিধান সংশোধনের দুইটা ধাপ। প্রথম ধাপে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব পাস হতে হবে। দ্বিতীয় ধাপে রাজ্যগুলি দ্বারা তা অনুমোদিত হতে হবে। তা হলেই সংবিধানের সংশোধনী কার্যকর হবে। আবার প্রথম ধাপ সম্পন্ন হতে পারে দুই প্রক্রিয়ায়। যুক্তরাষ্ট্র সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়াটা বেশ জটিল, তবে এই জটিল প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়েই সংবিধান ২৭ বার সংশোধিত হয়েছে।

(১) প্রথম প্রক্রিয়ায় কংগ্রেসের উভয় সভার দুই তৃতীয়াংশ সদস্য ভোট দিলে সংশোধনের প্রস্তাবটি পাস হবে,
(২) দ্বিতীয় প্রক্রিয়ায় দুই তৃতীয়াংশ রাজ্য বিধানসভার এক সম্মেলনের মাধ্যমে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাব করতে পারে,
(৩) উপরে বর্ণিত যে কোন প্রক্রিয়ায় সংশোধনের প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর তা অনুমোদনের জন্য প্রতিটি রাজ্যে পাঠানো হবে,
(৪) তিন চতুর্থাংশ রাজ্য অনুমোদন করলে সংবিধান সংশোধনের প্রস্তাবটি সংবিধানের অংশে পরিণত হবে।
সংবিধান সংশোধনের ক্ষেত্রে দুইটা ব্যতিক্রমের কথা বলা হয়েছে--
(১) ১৮০৮ সালের আগে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১, ধারা ৯ এর দফা ১ এবং ৪ সংশোধন করা যাবে না। দাস প্রথা আমেরিকাতে নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ার পর, বর্তমানে এই বিধানটার আর কোন কার্যকারিতা নাই।
(২) প্রতি রাজ্য থেকে দুই জন করে সিনেটর রাজ্যকে প্রতিনিধিত্ব করে, রাজ্যের আকার আয়তন, জনসংখ্যা যাই হউক না কেন। এই সংখ্যা সংবিধান সংশোধন করে পরিবর্তন করা যাবে না।

অনুচ্ছেদ ৬।
দফা ১। এই সংবিধান গ্রহণ করার আগে কনফেডারেশন যে সমস্ত ঋণ চুক্তি করেছে এবং যে সমস্ত ঋণ গ্রহণ করেছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে বৈধ বলে গণ্য হবে।
ভাষ্য
যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান সংবিধান প্রণীত হওয়ার আগে আর্টিকেল অফ কনফেডারেশন দ্বারা পরিচালিত হচ্ছিলো। ওই সময়ে যে ঋণ চুক্তি করা হয়েছিল এবং যে ঋণ নেয়া হয়েছিল, তার দায়ভার যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করেছে। অর্থাৎ ওই সময়ে করা ঋণ, নতুন সংবিধানের অধীন গঠিত যুক্তরাষ্ট্র পরিশোধ করার অঙ্গীকার করেছে।

দফা ২।
এই সংবিধান, এবং এই সংবিধানের অধীন প্রণীত আইনসমূহ, এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সম্পাদিত সকল চুক্তিসমূহ বা ভবিষ্যতে করা হবে এমন চুক্তিসমূহ দেশের সর্বোচ্চ আইন হিসাব গণ্য হবে; এবং প্রত্যেক রাজ্যের বিচারকগণ এই আইন দ্বারা বাধ্য থাকবেন, কোন রাজ্যের সংবিধানে বা আইনসমূহে বিপরীতধর্মী যাই বলা হউক না কেন।

ভাষ্য
(১) সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন;
(২) সমগ্র যুক্তরাষ্ট্রের এবং সব রাজ্যের বিচারকবৃন্দ--
(ক) এই সংবিধান,
(খ) এই সংবিধানের অধীন প্রণীত আইনসমূহ,
(গ) যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সম্পাদিত সকল চুক্তিসমূহ বা ভবিষ্যতে করা হবে এমন চুক্তিসমূহ অনুসারে বিচার কাজ করবেন।
(৩) যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক সম্পাদিত চুক্তিসমূহ সিনেট কর্তৃক অনুমোদিত হওয়ার পর দেশের সর্বোচ্চ আইন হিসাব গণ্য হবে।
(৪) রাজ্যগুলি এই সংবিধানের বিপরীতধর্মী কোন আইন প্রণয়ন করতে পারবে না।

দফা ৩। সিনেটরগন এবং পূর্বে উল্লেখিত প্রতিনিধিগণ, এবং রাজ্য বিধানসভাসমূহের সদস্যগণ, এবং যুক্তরাষ্ট্র এবং রাজ্যগুলির সব নির্বাহী এবং বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাবৃন্দ এই সংবিধানকে সমর্থন করার জন্য শপথ বা অঙ্গীকার দ্বারা বাধ্য থাকবেন; কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি পদ বা ট্রাস্ট পদ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোন ধর্মীয় বিশ্বাস কোন যোগ্যতা হিসাবে গণ্য হবে না।
ভাষ্য
(১) সিনেটরগন
(২) প্রতিনিধিগণ
(৩) রাজ্য বিধানসভাসমূহের সদস্যগণ
(৪) যুক্তরাষ্ট্র এবং রাজ্যগুলির সব নির্বাহী কর্মকর্তাবৃন্দ
(৫) যুক্তরাষ্ট্র এবং রাজ্যগুলির সব বিচারবিভাগীয় কর্মকর্তাবৃন্দ এই সংবিধান সমর্থন করার জন্য শপথ নিবেন। অর্থাৎ নির্বাচিত ও মনোনীত উভয় ধরণের কর্মকর্তাবৃন্দকে এই সংবিধান সমর্থন করার জন্য শপথ নিতে হবে।

উল্লেখিত পদসমূহ গ্রহণ করার ক্ষেত্রে ধর্ম বিশ্বাসকে কোন যোগ্যতা হিসাবে বিবেচনা করা হবে না। অর্থাৎ যে কোন ধর্ম বিশ্বাসের মানুষ এই পদসমূহে অধিষ্ঠিত হতে পারবেন।

অনুচ্ছেদ ৭।
এই সংবিধান বলবত করার জন্য, সম্মেলনের মাধ্যমে নয়টি রাজ্যের অনুমোদনই যথেষ্ট বলে গণ্য হবে, যা সব রাষ্ট্রের অনুমোদন বলেই গণ্য হবে।
ভাষ্য
এই সংবিধান প্রণয়নের সময় ১৩ টি রাজ্য উপস্থিত ছিল। ১৩টির মধ্যে ৯টি রাজ্য অনুমোদন করার সাথে সাথেই এই সংবিধান কার্যকর হবে এবং ধরে নেয়া হবে, যেন উপস্থিত সব রাজ্যই অনুমোদন করেছে।

সম্মেলনে উপস্থিত রাজ্যসমূহের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত ক্রমে এক হাজার সাত শত সাতাশি খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসের সতরতম দিনে এবং আমেরিকার যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার বিংশতম বছরে এই সংবিধান প্রণয়ন করা হল।

সাক্ষী হিসাবে আমরা আমাদের নাম স্বাক্ষর করলাম:
জর্জ ওয়াশিংটন, প্রেসিডেন্ট এবং ডেপুটি, ভার্জিনিয়া
নিউ হ্যাম্পশায়ার:
জন ল্যাংডন, নিকোলাস গিলমান
ম্যাসাচুসেট্স:
নাথানিয়েল গোরহাম, রুফুস কিং
কানেক্টিকাট:
উইলিয়াম স্যামুয়েল জনসন, রজার শের্মান
পেনসিলভানিয়া:
বেঞ্জামিন ফ্র্যাংকলিন, থমাস মিফলিং, রবার্ট মরিস, জর্জ ক্ল্যামার, থমাস ফিটজ সিমন্স, যারেড ইঞ্জেরসোল, জেমস উইলসন, গোভার্নার মরিস
ডেলাওয়্যার:
জর্জ রিড, গানিং বেডফোর্ড, জন ডিকিন্সন, রিচার্ড ব্যাসেট, জেকব ব্রোম
মেরিল্যান্ড:
জেমস ম্যাক হেনরি, থমাস জেনিফার, ড্যানিয়েল ক্যারোল
ভার্জিনিয়া:
জন ব্লেয়ার, জেমস ম্যাডিসন
নর্থ ক্যারোলিনা:
উইলিয়াম ব্লউন্ট, রিচার্ড ডোবস স্প্রাইট, হিউ উইল্লিয়ামসন
সাউথ ক্যারোলিনা:
জন রুটলেজ, চার্লস কোটসঅর্থ পিন্কনেই, চার্লস পিন্কনেই, পিয়ার্স বাটলার
জর্জিয়া:
উইলিয়াম ফিউ, আব্রাহাম বল্ডউইন
নিউ ইয়র্ক:
আলেক্সান্ডার হ্যামিলটন
নিউ জার্সি:
উইলিয়াম লিভিংস্টোন, ডেভিড ব্রিয়ারলী, উইলিয়াম প্যাটারসন, জনাথন ডেটন
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১৭ রাত ১০:১৫
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×