একটা সাধারণ মানের চাইনিজ স্মার্ট ফোনের চাইতে নিম্নমানের একটা মেশিনকে নারীর আকৃতির একটা কেসে ভরে সুফিয়া নাম দিয়ে প্রথমে নেয়া হল পৃথিবীর নিকৃষ্টতম স্বৈরশাসকের দেশ সৌদিতে। সুফিয়া নামের যন্ত্রটাকে এর নির্মাতা ডেভিড হ্যানসন সৌদিতে নিয়ে গেয়েছিল পয়সা কমানোর ধান্দায়। বিনিময়ে সৌদি স্বৈরশাসকদের ভাবমূর্তি কিছুটা উজ্জ্বল করতে। স্বৈরশাসক একটা মেশিনকে মানুষের মর্যাদা দিয়ে নাগরিকত্ব দিয়ে দিল। বিশেষ কোন কূটনৈতিক কারণ ছাড়া সাধারণ ভাবে সৌদিরা কোন মানুষকে নাগরিকত্ব দেয় না।
এরপর সুফিয়ার নির্মাতা চিন্তা করলেন কোথায় গেলে আরো কিছু কামান যাবে। তিনি সহজেই খুঁজে পেলেন আরেকটা নিকৃষ্ট স্বৈরশাসকের দেশ। যে দেশের মিডিয়া স্বাধীন স্বাধীন ভাব করে নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছে স্বৈরশাসকের কাছে । যেই মিডিয়া দিনের পর দিন লেখে, "সুফিয়া মা হতে চায়", "সুফিয়া সংসার চায়" । যে মিডিয়া বিতর্কে লিপ্ত হয়, "সুফিয়া ওড়না পরবে, না পরবে না?"; যে মিডিয়া সংবাদ প্রকাশ করে, "সুফিয়া এখন পাঁচ তারকা হোটেলে বিশ্রাম নিচ্ছে" .
সুফিয়া নামের যন্ত্রটাতে কয়েকটা সফটওয়্যার এবং হার্ডওয়্যার ব্যবহার করা হয়েছে, যা এখন সাধারণ মানের স্মার্ট ফোনেও পাওয়া যায়।
১. চাটবোট (Chatbot, talkbot, chatterbot, Bot, IM bot, interactive agent, or Artificial Conversational Entity) নামের একটা প্রোগ্রাম। যা আপনি আপনার স্মার্ট ফোনেও পাবেন।
২. ফেসিয়াল রেকগনেশন সিস্টেম বা সফটওয়্যার। এই সফটওয়্যার আপনি স্যামসাং, আইফোন এবং অবশ্যই চাইনিজ ফোনে পাবেন।
৩. ভয়েজ রেকগনেশন সফটওয়্যার। এটাও সব স্মার্ট ফোনে পাবেন।
৪. ভিজুয়াল ডাটা প্রসেসর। যন্ত্রটা যে কোন প্রশ্নকে ভয়েজ রেকগনেশনে প্রসেস করে, এর সম্ভাব্য উত্তরের মধ্যে কোন ধরণের ইমোশনাল শব্দ আছে, সেই উপযোগী অভিব্যক্তি প্রকাশ করা।
এই চারটা জিনিসকে সমন্বয় করা এর নির্মাতার সাফল্য। সফটওয়্যার গুলি ভবিষ্যতে যত উন্নত হবে তো উন্নত যন্ত্রপাতি মানুষের কল্যাণে বানান হবে। এই সফটওয়্যারগুলি শুধুমাত্র স্মার্টফোনে না, এইগুলি জাতীয় নিরাপত্তা, সামরিক বাহিনী, শিল্পউৎপাদন ইত্যাদি নানা জনকল্যাণমূলক কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
তবে স্বৈরশাসকরা, তার ক্রীতদাস মিডিয়া এবং ধান্ধাবাজরা এইগুলি নিয়ে ধান্ধাবাজী করতেই থাকবে।
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৭ রাত ১১:৩২