...তারপর সে ঠিক করলো যে সে একাই থাকবে।
তার ছোট্ট মাটি-ঘরটার দক্ষিণপাশে দাঁড়ানো জলপাই গাছের ছায়া আর লৌহ-জানালার ফাঁক দিয়ে অনুপ্রবেশকৃত লেবুপাতার সুঘ্রাণ দুপুরের এই কড়া রোদে নীরব সম্মতি জানালো। ঠাণ্ডা মাটির মেঝের উপর শুয়ে থাকা শীতলপাটি আর শক্ত চৌকির নরম উষ্ণতা দ্বিমত পোষণ করেনি। মধ্যবয়সী উত্তপ্ত টিনের চালের শুকনো পাতা আর নিচু ছাতের বাঁশের পাটাতন সংলগ্ন মোটা কাঠের তক্তাখানি নিশ্চুপ-গম্ভীর। ঘরের কোনে জ্বলন্ত উনুন। আগুন অথবা মধ্যাহ্নের আঁচ টের পাওয়া যাচ্ছে। উনুনের উপর ভাত-পোড়া গন্ধ।
ঘটনার ঘনঘটায় পূবদিকের আম্রকানন আর উত্তরের বাঁশঝাড়ের চকিত চোখাচোখি দেখে থম্কে দাঁড়ালো পাশের পুকুরের কচুরিপানার উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া এক ডাহুক। সতীর্থ এক নারকেল গাছ থেকে তাই দেখে রীতিমত অবাক্ এক দোয়েল। তার আবেশে আবেশিত দেবদারু গাছের ঐ কাঠঠোকরা। স্তব্ধ এই দুপুরের নীরবতা ভাঙতে অস্বীকৃতি জানালো সে। এত সুনসান নীরবতা তবে ভালো লাগছে না এক গৃহপালিত মুরগীর। মা’র চোখে বিরক্তি দেখে কোন ভাবান্তর হোলো না বটে ছানাপোনাদের। নির্বিকার তারা। চড়ে বেড়াচ্ছে উঠোন জুড়ে। ছোট্ট এই উঠোন। এতগুলো সাদা ছানাদের মাঝে হঠাৎ কৃষ্ণকায় কৌতূহলী একজন এগিয়ে গেলো এক ছোট্ট মাটি-ঘরের দিকে। দরজার কপাট খোলা। ঘরের ভেতর ভাত পোড়া গন্ধ।
উঠোন জুড়ে শুধু এক এলোকেশী ছায়া।
আর দাওয়ায় ফেলে যাওয়া রমণীয় পায়ের ছাপ।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




