somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চোর চোর!!!???

২৫ শে আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৫:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সারা রাত ট্রেনে জার্নি করে সকাল ৭টা ৩০এ রংপুর স্টেশনে এসে নেমেছি। সেখান থেকে গাড়িতে করে গ্রামের বাড়ি। আমাদের বাড়িতে এখনও কারেন্ট যায় নাই। ভূল বললাম বাড়িতে নয় গ্রামেই কারেন্ট আসে নাই। আমাদের বাড়িতে সৌরবিদ্যুতের ব্যাবস্থা করা হয়েছে। আমাদের গ্রামের বাড়িটা ইউ সেপের।

আমরা ভাই-বোন মোট আটজন।আর ভাবী দুলাভাই মিলে ষোলজন। ভাইবোনদের অনেকের ছেলে মেয়ের বিয়েশাদি হয়ে একেকটা পরিবার মোটামুটি এক গ্রাম লোকের সমান হয়েছে। আমি যখন বাড়িতে এসে পৌঁছালাম তখন দুই বোনের তার পরিবারসহ আসা শুধু বাকি আছে।

আমরা বছরে একবার দুই-তিন দিনের জন্য হলেও একত্রিত হই গ্রামের বাড়িতে। তাতে পরিবারের সবার সাথে বছরে অন্তত একবার দেখা হয়। এবারে আমাদের সাথে এসেছে বড়ভাইয়ের মেয়ে জামাই, বড় বুবুর ছেলে ফিরোজ-সে অস্টেলীয়া থেকে এসেছে ও বড় ভাইএর ছেল শুভ সেও দেশের বাইরে থেকে এসেছে । আর আমাদের ছেলে মেয়েরা তো আছেই সঙ্গে।

সারাদিন হৈচৈ করেই কেটে গেল। ক্লান্তি বিহীন হা হা হি হি করে করে রাতে আমরা খুব ক্লান্ত। ১২টার মধ্যে শুয়ে পরেছি । সবাই গভীর ঘুমে। আমার ছেলে বাথরুম করার জন্য উঠেছে। আমি ঘুম ঘুম চোখে ছেলেকে নিয়ে বাথরুমে গেলাম। মনে হোল, কে যেন বারান্দায় দাঁড়িয়ে? ভাবলাম আমাদের কেউ!? আবার খটকা লাগল! তবে আমাকে দেখে লুকালো কেন? ওরা তো জানে আমি ভিতুর ডিম! ওদের তো আমাকে দেখে আমার সামনে আসার কথা? আর বারান্দাতে দাঁড়িয়ে কি করছে? আমি আবার উঁকি দিলাম- দেখি একদম দেয়াল ঘেষে দাঁড়িয়ে একজন-সন্দেহ হল। তারপরেই ঠান্ডা একটা স্রোত বয়ে গেল আমার মেরুদন্ড বেয়ে। ভয়ে পাথর হয়ে গেলম, নড়তে পারছি না এক চুলও । আমার পিচ্চি কাঁদছে, আর আমি চলৎ খমতা রহিৎ হয়ে দঁড়িয়ে আছি। পিচ্চি শুরু করল চিৎকার। আমি পারছি না নড়তে বা কোন শব্দ করতে । ভয়ে কাঠ শব্দটার একেবারে সঠিক ব্যবহার করছি । জানু চুপচাপ উঠে এসে বলল “আমি তো জেগে গেছি ছেলে উঠার সাথে সাথে , কি ভয় পেয়েছ।“
আমি ফিসফিস করে কিছু বলার চেষ্টা করলাম কিন্তু কোন শব্দই বের হোল না গলা দিয়ে। না পারলাম এতটুকু হাত,প্‌ মাথা নড়াতে।
ও বড়ভাই বললেন “শুভ আর ফিরোজ শুয়ে পর, আর কতক্ষন বারান্দায় থাকবি।
ফিরোজ তার ঘরের বিছানা থেকে বলল “আমরা তো বিছানাতে।”
বড়ভাই বলল,”তবে বারান্দাতে কে?“
জামাই আমাদের কথা শুনে বের হল ওর ঘর থেকে। জামাইএর ঘরের দরজার পাশেই ওরা দাঁড়িয়ে। জামাই ওদের দেখেই একটাকে জাপটে ধরে চিৎকার শুরু করেছে “চোর,চোর” বলে। সবাই হই হই করে উঠে ঘর থেকে বের হোয়ে এল। শুভ ,ফিরোজ আর জামাই তিনজন মিলে বারান্দার দু’টাকে জাপটে ধরেছে । আর আমি যাকে দেখেছিলাম আমার দরজার পাশে তাকে ধরল জানু। কিন্তু সে পালাল জানুও পিছনে ছুটল। অন্যান্য বাড়ি থেকে সব এসে পরলো। শুভদের হাত থেকে ওই দুই চোর ও পালাল। চোরের পিছন পিছন ছুটলো সবাই। জানু তো চোরের সাথে দাড়িয়াবান্দা খেলা খেলতে শুরু করল। চোর দাঁড়ায় তো জানুও দাঁড়ায় চোর দৌঁড়ায় তো জানুও দৌঁড়ায়। সবারই একই আবস্থা। চোর ওদের তারা করলে ওরা পালায় আর চোর দৌঁড়ালে ওরা দৌঁড়ায়। জানুর চোর উঠল দেয়ালের উপর আর জানু চোরের পা ধরলো চেপে। চোর পা টানে জানু ছাড়ে না। অন্য পা দিয়ে লাথি দিয়ে চোর পালাল। আর জানু নাক চেপে ধরে ‘আমার নাক, আমার নাক বলে কান্না শুরু করল। বাড়ির মহিলারা জানুর নাক নিয়ে পরল। আমি জানু কে বললাম "তুমি কেন চোরের পা ধরে মাপ চাইতে গেলে। চোর তো বার বার বলছিলো--- আমি মাপ করে দিয়েছি এবার পা ছাড়ুন।“ জানুর কটমটে চোখের সামনে থেকে নিরাপদ দূরে সরে গেলাম।
আর এদিকে মেজ দুলাভাই প্রথম থেকে দরজা চেপে ধরে চিৎকার করে যাচ্ছেন ক্লান্তিহীন ভাবে “চোর চোর!!!!।“ চোর যেন তার ঘরে ঢুকতে না পারে তাই তিনি দরজা ঠেসে ধরে আছেন।
গ্রামবাসী তিনটা চোরকেই ধরেছে। চোরগুলি ধরা পরবার পর দুলাভাই কে বললাম-- আর চোর, চোর চিৎকার করতে হবে না । চোর সবগুলিই ধরা পরেছে।---দুলাভাই চোখ পিটপিট করে আমাদের বলল “তোমরা এই ঘরে ঢুকলে কোন দিক দিয়ে।“
তখন তিনি খেয়াল করলেন যে তিনি ঘরের দরজা নয় কাঠের আলমারি চেপে ধরে চিৎকার করছিলেন। এবার সবাই চোর ছেড়ে দুলাভাই কে নিয়ে পরল।

৪২টি মন্তব্য ৪২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×