somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রী অনুগ্রহপূর্বক এখনই সতর্ক হোন

১০ ই মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৪:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সাধারণভাবে বলতে গেলে, যোগাযোগ, জ্ঞান, অর্থ তত্ত্ব, উদ্দীপনা, গঠন, ধারণা, জ্ঞান উপস্থাপন ইত্যাদিই তথ্যের ধারণা।অধুনা প্রযুক্তির হাত ধরে তথ্য অবাধে সকলের দুয়ারে পৌঁছে গেছে।তাতে সকলের তথ্য প্রাপ্তি যেমন সহজলভ্য হয়েছে, তেমননিভাবে ভ্রান্ত বা বিভ্রান্তিকর তথ্য সংগ্ঘবদ্ধভাবে সকলের দুয়ারে প্রবেশ করেছে। অজস্র সত্য ও অসত্য তথ্য পুরো তথ্য ব্যবস্থাকে ঘোলাটে করে ফেলেছে। সেই সুযোগে অশুদ্ধমতি মানুষেরা স্বার্থ হাসিলে ব্যস্ত সতত। আর রাজনীতিাঙ্গন সেখানে স্বার্থগুলজারের ভূমিকা রাখছে।

বিগত 03 মার্চ 2013 তারিখের কয়েকটি সংবাদপত্রের প্রাপ্ত তথ্যমতে-
(১) প্রথম আলো (03-03-2013 অনলাইন)-বগুড়া সদর, শাজাহানপুর, নন্দীগ্রাম, দুপচাঁচিয়া ও শিবগঞ্জ উপজেলায় আজ রোববার দিনভর তাণ্ডব চালিয়েছেন জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এ সময় তাঁরা কয়েকটি এলাকায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস, আওয়ামী লীগের নেতার বাড়ি ও কার্যালয় ভাঙচুর করে সেখানে আগুন ধরিয়ে দেন।

(2) আমাদের সময় (03-03-2013 অনলাইন) বগুড়া ব্যুরো জানায়, বগুড়ায় রোববার ভোর 4টা থেকে হরতাল সমর্থক এবং সাঈদী ভক্ত হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ নারী-পুরুষের গণবিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশের গুলিতে নারীসহ 12 জন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন দুই শতাধিক।

(3) মানবজমীন(04-03-2013)-স্টাফ রিপোর্টার: জামায়াতের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার হরতালের প্রথম দিনেই ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে সারা দেশে। পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের সঙ্গে দলটির নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ছয় জেলায় এক পুলিশ সদস্যসহ মারা গেছেন অন্তত ২৪ জন। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত আরও অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

অভিন্ন বিষয়ে ভিন্ন অর্থবহনকারী উপরের সংবাদ 3টি একটি থেকে অন্যটি অনন্য। আপনি যদি আওয়ামী সমর্থীত হয়ে থাকেন তাহলে আপনি (১)নং সংবাদটি বিশ্বাস করতে পছন্দ করবেন এবং আমি নিশ্চিত আপনি সেটিই বিশ্বাস করবেন। আর আপনি যদি বিএনপি সমর্থিত হয়ে থাকেন তাহলে (2)নং সংবাদটি বিশ্বাস করতে পছন্দ করবেন এবং করবেনও তাই। আর আপনি যদি নিরপেক্ষ হনা বা নিরপেক্ষ তথ্য পছন্দ করেন তাহলে কোন সংবাদটি বিশ্বাস করবেন আর কোনটি বিশ্বাস করবেন না সেই সিদ্ধান্ত আপনি এখনই নিতে পারবেননা যে ‘সত্যি কোনটা’?

03-03-2013 তারিখে সারা দেশের মানুষ জামায়াত ইসলাম এবং পুলিশের তান্ডব দেখলো। জামাত-শিবির এবং পুলিশের তান্ডব, জামাত শিবির ও সরকার উভয়পক্ষকেই ভ্রান্তপথে ঠেলে দিল; এর পেছনের ভ্রান্ত তথ্যের প্রবাহই মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। ‘সরকারকেও ভ্রান্তপথে ঠেলে দিয়েছে’ বলছি এই কারণে-ঐদিন দেশজুড়ে যে অর্ধ শতাধিক মানুষ প্রাণ হারালো সেটা রাজনৈকিত বিবেচনায় হোক, মানবিক বিবেচনায় হোক বা জামাত-শিবির প্রতিহতের বিবেচনায় হোক কোন বিবেচনাতেই অতমানুষের প্রাণ নাশ সঠিক বিবেচনাপ্রসূত কোন কার্যক্রম হয়নি। জ্ঞানেন্দ্রিয়গুলো লুপ্তপ্রায় সরকার, ধর্ম আশ্রয়ী রাজনৈতিক দলের অমানবীয় কোশৗলের কাছে হারল না জিতল সে প্রশ্ন সময়ের কাছে তুলা থাক। এটাকে বিরোধীদলীয় নেত্রী সংবাদ ব্রিফিং-এ গণহত্যা বললেন অপরদিকে সরকারপন্থী লোকজন গণহত্যা শব্দের চরম বিরোধীতা করলেন। গণহত্যা বলুন আর হত্যাই বলুন তাতে সংখ্যাগত তথ্যের হেরফের ঘটবে না এবং রাজনীতিবিদদের নিষ্ঠুর রাজনৈতিক স্বার্থোদ্ধার কৌশল ও লুকানো যাবে না।এই অনুচ্ছেদস্থ বাক্যগুলোর ভাবার্থই হোক বা আক্ষরিকার্থই হোক সবকিছুতেই বিপরীতমূখী নানান তথ্য বিভিন্ন গণমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে জনগণ জানতে পেরেছে এবং এ বিষয়েও জনগণের মধ্যে পরস্পরবিরোধী বিশ্বাসযোগ্যতা দেখা গেছে। নানান কথার মধ্যে আমি কোনটি বিশ্বাস করব আর কোনটি করবনা সেটা বুঝতে পারছিনা।

গণজাগরণ মঞ্চকে কেউ বলছে আওয়ামীলীগের স্ক্রিপ্ট মঞ্চায়ন করা হচ্ছে, কেউ বলছে তরুণ সমাজ জেগে উঠেছে। প্রকৃত সত্য কোনটা?
সংখ্যালঘুদের (সংখ্যা লঘু শব্দটি আমি এখানের ব্যবহার করেছি সত্য কিন্তু এটির ব্যবহার নিয়ে আমার ব্যাপক আপত্তি আছে কারণ এই শব্দটি মানুষকে ধর্মের নিচে স্থান দিয়েছে)। ঘরবাড়ী পুড়িয়ে দেওয়া হলো। তাদের উপর নানান ধরনের অত্যাচার চালানো হলো। এ বিষয়ে সরকার এবং সরকারদলীয় লোকজন বলছেন-জামাত বিএনপি’র সহযোগিতায় এটা করেছে, আর বিএনপি বলছে সরকার এটা করে বিরোধীদের উপর দায় চাপাতে চাইছে। এখানেও বিশ্বাসের ক্ষেত্রে পূর্বের মতই পরস্পরবিরোধীতা লক্ষ্য করা গেছে ।

(1) বিবিসি (01-01-2013) : শিরোনাম ‘মানবাধিকার পরিস্থিতি উদ্বেগজনক’। বাংলাদেশের একটি মানবাধিকার সংগঠন আইন ও শালিস কেন্দ্র বলছে ২০১২ সালে দেশটির মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে।বিদায়ী বছরের বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে রোববার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংস্থাটি।তারা বলছে মূলত আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির কারণেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা গুলো ঘটছে।লিংক-http://www.bbc.co.uk/bengali/multimedia/2013/01/130101_pg_bdhumanrights.shtml

(2) প্রথম আলো (09-03-2013 অনলাইন) : মানবাধিকার রক্ষায় অবদানের জন্য পুরস্কার পেয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থা এ পুরস্কার দিয়েছে। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে সংস্থাটির ২০১৩ সালের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমানসহ কয়েকজনকে মানবাধিকার পুরস্কার দেওয়া হয়। লিংক-http://www.prothom-alo.com/detail/date/2013-03-09/news/335206

প্রথম ঘটনা আর দ্বিতীয় ঘটনা সম্পূর্ণভাবে বিপরীতমূখী।এক তথ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে, অন্য ক্ষেত্রে মানবাধিকারের জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পুরস্কার পাচ্ছেন। জনগণ কোন বিষয়টি সঠিক বলে মনে করবে?

এধরনের অসংখ্য পরস্পরবিরোধী তথ্য, ঘটনা, কর্মকান্ড প্রতিনিয়িত ঘটে যাচ্ছে কিন্তু বিশ্বাসের তরী কোন কিনারায় নোঙ্গর ফেলবে সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা।যারা নিরপেক্ষভাবে সবকিছু বিবেচনা করেন তারা প্রা্য় ক্ষেত্রেই সঠিক তথ্য পাননা। যারা পক্ষপাতমূলকভাবে তথ্যগুলো বিচার করেন তারাই শুধু সঠিক তথ্য পান। কারণ তারা যা বিশ্বাস করতে পছন্দ করেন সেটাই বিশ্বাস করেন আর যেটা বিশ্বাস করতে পছন্দ করেন না সেটা বিশ্বাস করেন না। রাজনীতিবিদদের অবাধ মিথ্যাচার সত্য-মিথ্যার মধ্যে এতটুকু পার্থক্য রাখেনি। রাজনীতি নিয়ে রাজনীতিবিদদের মিথ্যাচার রাজনীতিকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সেই প্রতিষ্ঠানের মানুষের মধ্যে এটি নিয়ে আলোচনা করার ব্যাপারে প্রাতিষ্ঠানিভাবে বিধি-নিষেধ আরোপ করছে। যদিও রাজনীতি একটি অতিবগুরুত্বপূর্ণ ও সকল মানুষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়। তার মাণে রাজনীতিবিদগণ রাজনীতিকে একটি আতঙ্কের উপকরণ হিসাবে দাঁড় করিয়েছেন।

সন্দেহ নেই যে, রাজনীতিবিদদের বুক চিরে ফেললে আপনি সেখানে পাথর দেখতে পাবেন। সেই পাথর চর্মের অন্তরালে সযত্বে লুকিয়ে রাখেন রাজনীতির কারণে। আবার রাজনীতির কারণেই যখন প্রয়োজন হবে সেটা দিয়ে আপনার মস্তক ভাঙতে সংশায়ান্বিত হবে না। জনগণকে গোলক বানিয়ে খেলা করা রাজনীতিবিদদের নীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা কবে শেষ হবে জানিনা।জানিনা, রাজনীতিকে বিরাজনীতিকরণের মাধ্যমে এ খেলা শেষ হবে কিনা, তবে সেটা কখনই কামনা করিনা।তাই এব্যাপারে এখনই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেত্রীকেই সতর্ক হতে হবে এবং তারা সতর্ক হবে বলেও আশাকরি। তাই আশায় বুক বেঁধে বলি-

সংশয় কিরে তোর, সায়াহ্ন সাজে ইন্দু প্রভা,
নিশীত নির্ভার করে প্রত্যুষ শুক-তারা

জাগিবে যুদ্ধাজীব কাটিবে তিমির-সত্য’র
নিশাবসান হবেই হবে দেখিবে তুমি আসিবে ভাস্কর।

সকলকে ধন্যবাদ
আলমগীর কবির
3/10/2013 1:58:34 AM
http://prothom-aloblog.com/posts/8/178475
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ২:৩৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সবুজের মাঝে বড় হলেন, বাচ্চার জন্যে সবুজ রাখবেন না?

লিখেছেন অপলক , ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:১৮

যাদের বয়স ৩০এর বেশি, তারা যতনা সবুজ গাছপালা দেখেছে শৈশবে, তার ৫ বছরের কম বয়সী শিশুও ১০% সবুজ দেখেনা। এটা বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা।



নব্বয়ের দশকে দেশের বনভূমি ছিল ১৬... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×