somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

 ধর্ষণের আরেকটি অধ্যায় 

১৫ ই জুন, ২০১৫ সকাল ১১:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

 ধর্ষণের আরেকটি অধ্যায় 

ঘটনা একঃ একটি জায়গায় খুব শোরগোল, নারী কন্ঠে চিৎকার আসছে...... বাঁচাও! বাঁচাও!! বাঁচাও!!! কিছু ভদ্রলোক দৌড়ে গেল শোরগোল হওয়ার স্থানে, দেখল একটি নারীর সম্ভ্রুম হানি করছে কয়েকটি বখাটে যুবক। [হতে পারে ইভটিজিং (উত্যাক্ত করা) এমনকি ধর্ষণের মতো] নারীর আকুতি-মিনতি যেন ঐ বখাটেগুলো মানছে না। নারীর এই আকুতি-মিনতির জবাব দেওয়ার জন্য ভদ্রলোকগুলো বখাটেগুলোকে দাওয়া করল। তারা দৌড়ে পালিয়ে গেল। কয়েকজন ভদ্রলোক রেগে গিয়ে স্বমস্বরে বলল- আপনিইতো আপনার বিপদ ঢেকে এনেছেন। ঐ নারী অন্যমনষ্কা ভাব নিয়ে আমতা আমতা করে বলল- কি? আমি এখান দিয়েতো হেঁটে যাচ্ছিলাম কিন্তু ঐ বখাটেগুলো আমাকে দূর থেকে ফলো করতে করতে আমার পিছু নেয় এবং এই স্থানে পৌঁছতে পৌঁছতে ওরা আমার উপর হিংস্রের মত ঝাঁপিয়ে পড়ল। ওরা আমার প্রতিবাদ মানতেই চাইছেনা; আপনারা না আসলে আমার কি যে অবস্থা হতো। আরেকজন ভদ্রলোক খুব রেগে মুখের সামনে বলেই ফেলল- “আপনার যে অবস্থা না...! ওরাতো আপনাকে খুব সম্মান করেছে। ভাত ছিটানো ছাড়া কাক আসা কখনো কি কামনা করা যায়”। নারীটি লজ্জ্বায় আর মুখ খুলল না।

ঘটনা দুইঃ সিলিমা নামক একটি মেয়ে মা-বাবাকে ম্যানেজ করে এক ঘনিষ্ঠ বান্ধবীর সাথে তাদের বাসায় যাবে বলে বাসায় থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু তার আসল উদ্দেশ্যে ছিল সে তার বয়ফ্রন্ডদের নিয়ে বেড়াতে যাবে। তারা বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণ করলো; এমনি বিভিন্ন হোটেলে একসঙ্গে রাত্রি যাপন করল। দুই-এক দিন অতিবাহিত হওয়াতে বাবা, মাকে বলল- সিলিমাকে একটু ফোন করে দেখনা মেয়েটার কি যে হলো; এখনো বাড়ি আসছে না। মা তৎক্ষাণিক সিলিমাকে ফোন দিল- দুঃখিত আপনার ডায়ালকৃত নাম্বারটি সংযোগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে। অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসলে। বারং বার একই অবস্থা। বাবা-মা দুজনে দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলে। এবার তার বান্ধবীকে ফোন দিলে তারাতো “থ” হয়ে গেলে। সে বলল তার সাথে এই দু-একদিন কোন কথাবার্তা নেই, যোগাযোগও নেই। ঘন্টা দুয়েক পড় মোবাইলে এক প্রতিবেশীর দেওয়া কলে মোবাইলের রিং বেজে উঠলো। তারা এই ভেবে খুশি হলে যে তাদের সিলিমা মনে হয় কল দিয়েছে; কিন্তু স্ক্রীণে চোখ দিতে মুখ ফ্যাকাশে হয়ে গেল। রিসিভ করল। কিছু সময় যেতে না যেতে মেয়ের বাবা বলে উঠল আমাদের সিলিমা খোজ-খবর পাচ্ছিনা। কথা শেষ না হতেই প্রতি উত্তরে বলল আমিতো ওকে অমুক জায়গায় কয়েকজন যুবকের সাথে আড্ডারত অবস্থায় দেখলাম। বাবা প্রতি উত্তরে বলে “নো প্রবলেম” এই বয়েসে এমন কিছু হয়। প্রতিবেশি ভদ্রলোক লাইন কেটে দিল। পরের দিন মেয়ে বাড়ি ফিরল। বাবা-মা তাকে কিছু জিজ্ঞাসা না করলে উল্টো তার খোজ-খবর নেওয়া শুরু করলে। কেমন কাটল দিন। এই দুদিন কেন ফোন করিসনি। মোবাইলে চার্জ ছিলনা বুঝি? এই বলে বলল- যা ফ্রেশ হয়ে আয় এক সাথে খাব। তুই কি জানিস না; তোকে ছাড়া আমাদের এই দুদিন কত কষ্ট হয়েছে।

ঘটনা তিনঃ কনসার্ট হচ্ছে......। নামকরা একটি ছাত্রী হোষ্টেলে বাস ধনাঢ্য বাবা-মার আদূরে সন্তান জুতির। হোষ্টেলের সীমানা অতিক্রম করে ফোন দিল বয়ফ্রেন্ডকে। -এই আজ না “অমুক” জায়গায় খুব চমৎকার একটি কনসার্ট হচ্ছে, যাবে? বয়ফ্রেন্ড ডাইরেক মানা- না যাবনা। জুতি- কেন যাবে না। বয় ফ্রেন্ড- তুমি খুব অসহ্য; তোমার কাছে কিছু চাইলেও তুমি দিতে চাওনা। জুতি- যাক বাবা হয়েছে আমি বুঝেছি তোমার কথা, তুমি আজ যা চাইবে তাই পাবে। বয় ফ্রেন্ড- আচ্ছা তাহলে ঠিক আছে। আমি এক্ষুণি রওনা করছি। জুতি- আচ্ছা ঠিক আছে। বয় ফ্রেন্ড খুব বেশি খুশি। আজ সে তার প্রেমিকা/গার্ল ফ্রেন্ডে থেকে বকেয়া-আসল সব উসুল করে নেবে। তার চিন্তা তার ভিতরে কাজ করতেছে। বাবাকে বলল- আমার টাকা লাগবে ক্লাশের একটি কাজে পেইমেন্ট করতে হবে। বাবা জিজ্ঞাসা না করে টাকা বের করে দিয়ে দিল। জুতি এবং বয়ফ্রেন্ড কনসার্টের টিকিট কাটল। ভিতরে প্রবেশ করল। গানের তালে তালে দু’জন মন খোলে নাচছে আর (এ্যালকোহল) ড্রিংক পান করেই যাচ্ছে। একজন গায়ে আরেকজনের হাতে পড়ছে। কখন যে সে তার বয়ফ্রেন্ডকে ছেড়ে আরেকজনার সাথে নাচতেছে, সে ড্রিংক করার কারণে বুঝতে পারলো না। অপরিচিত ছেলেটার হাত জুতি শরীরে অনাকাংখিত ভাবে আসছে। জুতির যখন ড্রিংক শেষ এবং হুশ ফিরে আসলে তখনতো সে দেখল সে তার বয়ফ্রেন্ডকে রেখে অন্য একজনের সাথে অনাকাংখিত অবস্থায় নাচছে। আর এমন সময় দিল সে চিৎকার। হঠাৎ করে কনসাটে নিস্তব্ধতা বিরাজ করল। সবার নজর চলে গেলে জুতির দিকে। জুতিতো আরো জোরে চিৎকার দিয়ে শুধু বলেই যাচ্ছে- আমার ইজ্জ্বত লুন্ঠন হয়েছে, আমার গায়ে ঐ যুবক হাত দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই। বিচার চাই। এই বলে তার চিৎকার এবং কান্না আরো বাড়িয়ে দিতে লাগল............।

এমন অসংখ্য ঘটনা ঘটে যাচ্ছে আমাদের সমাজে। উপরে ঘটনাগুলো একটু বিশ্লেষণ করুন; আর ভাবুন। ধর্ষণকারী বা ধর্ষকের বিচার আমাদের সমাজ কি ভাবে করবে? তাদের চিহ্নিত কে করবে? এইসকল ঘটনা নৈপথ্যে কে বা কারা রয়েছে? এইসকল ঘটনায় প্রশাসনের উক্তি “দুষ্টমি” ছাড়া আর কি হতে পারে? সমাজের মানুষ প্রশাসনকে দোষারপ কি ভাবে করবে? মানুষ যদি ঠিক না হয় প্রশাসন কি ভাবে মানুষদের ঠিক করতে পারে? সম্মলিত প্রচেষ্টা ছাড়া এমন কর্ম সমাজ থেকে কখন বিতাড়ন কর সম্ভব হবে না। আসুন আমাদের সবার সম্মলিত প্রচেষ্টায় সকল অন্যায় কাজকে প্রতিহত করি। তখন আর প্রশাসনের দরকার হবে না। আমরা হয়ে যাই আমাদের প্রশাসন।

এই সম্পর্কে আমার পূর্বের পোষ্ট দেখতে পারেন।
http://www.somewhereinblog.net/blog/alamgirit/30044691
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৫ বিকাল ৪:২৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১:৫৩

বাংলাদেশ একদিন মাথা উঁচু করে দাঁড়াবেই

ছবি এআই জেনারেটেড।

ভিনদেশী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সত্যের বজ্রনিনাদে সোচ্চার হওয়ার কারণেই খুন হতে হয়েছে দেশপ্রেমিক আবরার ফাহাদকে। সেদিন আবরারের রক্তে লাল হয়েছিল বুয়েটের পবিত্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজাকারের বিয়াইন

লিখেছেন প্রামানিক, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:০৪


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

রাজাকারের বিয়াইন তিনি
মুক্তিযোদ্ধার সন্তান
ওদের সাথে দুস্তি করায়
যায় না রে সম্মান?

কিন্তু যদি মুক্তিযোদ্ধাও
বিপক্ষতে যায়
রাজাকারের ধুয়া তুলে
আচ্ছা পেটন খায়।

রাজাকাররা বিয়াই হলে
নয়তো তখন দুষি
মেয়ের শ্বশুর হওয়ার ফলে
মুক্তিযোদ্ধাও খুশি।

রচনা কালঃ ১৮-০৪-২০১৪ইং... ...বাকিটুকু পড়ুন

দাসত্বের শিকল ভাঙার স্বপ্ন দেখা এক ক্রান্তদর্শী ধূমকেতু ওসমান হাদী।

লিখেছেন মুঃ গোলাম মোর্শেদ (উজ্জ্বল), ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:৪২

বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশে যে ধরণের রাজনৈতিক সংস্কৃতি চালু হয়েছে, তাহলো বিদেশী প্রভুরদের দাসত্ব বরণ করে রাজনৈতিক দলগুলোর রাষ্ট্র ক্ষমতায় গিয়ে দেশের মানুষের উপর প্রভুত্ব করা , আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

×