somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

আলমগীর জনি
সূর্য থেকে অসম্ভব শক্তিশালী আলোকরশ্মি চাঁদের উপর পড়ে। সে চাঁদ কিছুদিন জোছনা বিলায় আমাদের মাঝে।অমাবস্যায় কেউ চাঁদকে ভুলে যায় না।অপেক্ষা করে জোছনা ফিরে আসার ।সূর্য না হই ,মাঝে মধ্যে জোছনা হতে চাই।অমাবস্যায় হাহাকার হতে চাই মানব মনে।

গল্পঃ বিচারক

২৫ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



একদিন অন্ধ ছেলেটি সমুদ্রের ধার দিয়ে হাঁটছিল। তার হাতে ছিল একটা ক্যানভাস সহ কিছু ছবি আঁকার সামগ্রী । ছেলেটির উদ্দেশ্য সমুদ্রের ছবি আঁকবে।কিন্তু বাধ সাধল তার অক্ষমতা। মজার ব্যাপার হচ্ছে এটা যে অক্ষমতা সেটা সে জানতই না।আপনি মুদ্রার এপিট না দেখলে ওপিটের মূল্য কিভাবে নির্ণয় করবেন?যে কখনো দেখেই নাই আলো কি ,তার কাছে আলোর গুরুত্ব কতটুকু?

চাঁদে গেলে কেমন অনুভূতি হয় সেটা আমিও জানি না।জানেন নিল আর্মস্ট্রং ,এডউইন অলড্রিন, মাইকেল কলিন্স সহ পরে যারা চাঁদে গিয়েছেন তাঁরা। এখন উনারা ফিরে এসে আমাদের চাঁদের অনুভূতির গল্প শুনিয়ে গিয়েছেন আমরাও শুনতে গিয়ে বলেছিলাম তারপর কি হয়েছে নিল আর্মস্ট্রং সাহেব?চাঁদের বাতাস কেমন? চাঁদে কি দক্ষিণা হাওয়ার মত কোন সুখ আছে? চাঁদের কলঙ্ক কেমন দেখলেন? তাঁদের গল্প আমাদের ছুঁয়ে গিয়েছে তাই এখন মানুষ মঙ্গল বিজয়ের নেশায় নেমেছে। তাঁরা মানুষকে উৎসাহ দিয়ে গেছেন।তাঁদের সে গল্প শুনে আমরা একটা চাঁদ কল্পনা করে চাঁদে ঘুরে বেড়াই।মন ভুলানো রুপালী জোছনায় আমরা সবাই মুগ্ধ হই আর মনে ভাবি ইশ! চাঁদের বুকে কম দামে প্লট বিক্রি শুরু হবে কবে?

কিন্তু ছেলেটাকে কেউ স্বপ্ন দেখায় না। ছেলেটার আশেপাশের মানুষ তাকে বুঝিয়ে দিয়েছে তুমি দেখতে পাচ্ছ না এটা তোমার অক্ষমতা। কারণ আমরা বাকিরা দেখতে পারি। ছেলেটা তা মানতে নারাজ।সে দুইটা ছবি আঁকবে আজকে,দুইটাই সমুদ্রের। একটা তার নিজের চোখে দেখা। নিজের চোখ বলতে ভেতরের চোখ।একজোড়া সুদৃশ্য চোখের বাহিরেও মানুষের আরেক জোড়া চোখ থাকে।বাহিরের দৃশ্যমান চোখে আলো না থাকলেও ভিতরের চোখের আলো কখনো নিভে না।সোলার প্যানেল থাকে তাতে।সূর্য যতদিন আছে এই আলো নিভবে না কখনো। আর একটা ছবি সে আঁকবে একজন অচেনা মানুষের চোখে দেখা সমুদ্র।তারপর দুইটা ছবি মিলিয়ে নিরপেক্ষ তৃতীয় একজনের মাধ্যমে দুইটা ছবির পার্থক্য জেনে নিবে। সে বিচার করবে।

সমুদ্রের ধারে হাঁটার সময় সে সেই একজন লোককে খুঁজছিল।কেউ একজন বলে দিবে আর সে আঁকতে থাকবে।অনেকটা শ্রুতি লেখকের মত।ছেলেটা হবে শ্রুতি চিত্রশিল্পী। সৌভাগ্যক্রমে সে একজনকে পেয়ে গেল।ওই ভদ্রলোক সমুদের ধারে বসে আছেন।ছেলেটি ওই ভদ্রলোকের কাছে গেলেন।ছেলেটি ভদ্রলোককে বলল আপনি কি আমাকে একটু সাহায্য করবেন? ভদ্রলোক উত্তর দিলেন, অবশ্যই। ছেলেটি ভদ্রলোককে বলল,আপনার চোখে সমুদ্র দেখতে কেমন তা আমাকে বলবেন।আমি সেটা আঁকব ।ভদ্রলোক বললেন,আচ্ছা।ছেলেটি বলল,এটা আমার একটা এক্সপেরিমেন্ট। আশা করব আপনি খুব সুন্দর করে বলবেন।আমি আপনার কথা অনুসারে আঁকতে থাকব।

ভদ্রলোক একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলা শুরু করলেন। (পাঠক,এই জায়গায় সে ভদ্রলোক যা বলেছেন তা থাকার কথা।কিন্তু সেটা বিশেষ কারণে গল্পের শেষ দিকে রাখা হলো।আগে বলা হবে তৃতীয় ব্যাক্তিটি মানে বিচারক ছবিটি দেখে কি বলেছেন তা।তা পড়ে পাঠক আঁচ করতে পারলে তো হলোই। )

ছবি আঁকা শেষ।তারা দুইজন বসে চা খাচ্ছিলেন।এমন সময় তৃতীয় একজন ব্যক্তি এসে উপস্থিত। এসেই প্রশ্ন,কি করছেন? ছেলেটি ভাবল উনাকেই বিচারক বানিয়ে ফেলি।একদম মোক্ষম সময়ে তার আগমন। ছেলেটি বলল,এখানে একটা ছবি আঁকা হয়েছে,সমুদ্রের ছবি।একটু দেখে বলবেন কেমন হয়েছে?আপনি একবার সমুদ্রের দিকে তাকাবেন আর একবার এই ছবির দিকে তাকাবেন ।তারপর বলবেন কোথায় কি আছে।মানে আপনি একজন বিচারক।

বিচারক ব্যাক্তিটি যা বলল, সেটা ভদ্রলোক যা বলেছেন তার সাথে হুবহু মিলে গেল।আঁকা ছবিটি, ছেলেটির নিজের চোখে দেখা সমুদ্র আর তৃতীয় একজনের চোখে দেখা তিনটা সমুদ্রই অবিকল একই রকম।

ছেলেটি মিটিমিটি হাসছিলো।মিটিমিটি হাসছিলেন প্রথম ভদ্রলোক আর বিচারক ভদ্রলোকও।আর আসল হাসিটা হাসছেন অন্য কেউ।

সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:১২
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×