¤ ময়ূরের সৌন্দর্য হল পেখমে, সিংহের সৌন্দর্য হল কেশরে,
আর পুরুষ জাতির সৌন্দর্য হল দাড়িতে।
যাদের জন্মগত ভাবেই দাঁড়ি হয় না তাদেরকে মাকুন্দ বলা হয়ে থাকে। আর তারা দাঁড়ির জন্য এতই আফসোস করে যা ভাষাই প্রকাশ করা অসম্ভব। তবে যাদের দাঁড়ি উঠে না তারা তা সহজেই বুঝতে পারবে।
আর কিছু ভাই আছে তারা এই দাঁড়িটা রাখতে চায় না। তাদের অনেকেই বলে থাকে, দাড়ি রাখলে মেয়েরা পছন্দ করে না, প্রমিকা পছন্দ করে না বা স্ত্রী পছন্দ করে না। তাই দাঁড়ি রাখি না।
আচ্ছা কখনো কি ভেবে দেখেছেন, দাঁড়ি রাখলে তো আপনার প্রমিকা বা স্ত্রী পছন্দ করে না, কিন্তু দাঁড়ি না রাখলে যে, এমন ব্যক্তি পছন্দ করে না যার সুপারিশ ব্যতীত জান্নাতে যাওয়া যায় না।
এখন আপনে কাকে খুশি করবেন, আপনার প্রেমিকাকে ? না এমন ব্যক্তিকে (রাসূল সাঃ) যার সুপারিশ ছাড়া জান্নাতে যাওয়া না?
যদি জান্নাতে যেতে চান তাহলে তাহলে কিন্তু অবশ্যই দাঁড়ি রাখতে হবে।
এখন আপনেই চিন্তা করুন কি করবেন জান্নাতে যাবেন নাকি স্ত্রীকে খুশি করবেন ?
এখন কথা হলঃ
দাঁড়ি রাখা কি হাদীস দ্বারা প্রমাণিত?
তা জানার জন্য নিম্নের হাদীসগুলো দেখুন তাহলেই বুঝতে পারবেন।
১. দাড়ি বাড়াও।
(বুখারী, মুসলিম শরীফ)
২. দাড়ি পূর্ণ কর।
(মুসলিম শরীফ)
৩. দাড়ি ঝুলন্ত ও লম্বা রাখ। (মুসলিমশরীফ)
৪. দাড়ি বহার রাখ।
(মাজমাউল বিহার)
৫. দাড়ি বেশী রাখ
(বুখারী, মুসলিম)
৬. দাড়িকে ছাড়, অর্থাৎ কর্তন করো না।
(তাবরানী)
দাঁড়ির ব্যাপারে সাহাবায়ে কেরামের আমল :
১.হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা.যখন হজ্জ্ববা উমরা আদায় করতে, তখন স্বীয়দাঁড়ি মুষ্টি করে ধরতেন, অতঃপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন।
(বুখারী শরীফ- ২/৮৭৫)
২. হযরত আবু হুরায়রা রা. স্বীয়দাঁড়ি ধরতেন, অতঃপর অতিরিক্ত অংশকেটে ফেলতেন।
(মুসান্নাফ লি-ইবনি আবি শাইবা- ১৩/১১২)
আর রাসূল (সাঃ) বলেছেন, তোমরা আমার এবং আমার সাহাবাদের সুন্নাতকে আকঁড়ে ধর।
দাঁড়ির ব্যাপার ফুকাহায়ে কেরামের উক্তি:
১. হানাফী মাযহাবের কিতাবশরহে মুনহাল ও শরহে মানজুমাতুর আদবেরমধ্যে লিখেছেন, নির্ভরযোগ্য ফতোয়া হলদাড়ি মুন্ডানো হারাম।
২.মাওলানা আশেকে এলাহী মিরাঠী রহ.তার প্রণিত “’”দাড়ি কী কদর ও কীমত”কিতাবে চার মাজহাবের ফক্বীহগণের মতামত শাফেয়ী মাজাহাবের প্রামান্যগ্রন্থ “আল ওবাব” হতে উদ্বৃত করেছেন :ইমাম ইবনুর রাফ’আ বলেন, ইমামশাফেয়ী রহ. “আলউম্ম” কিতাবে লেখেনযে, দাড়ি কাটা হারাম।
৩. মালেকী মাজহাব মতেও দাড়ি মুন্ডনকরা হারাম। অনুরূপভাবে ছুরতবিগড়ে যাওয়া মত ছেটে ফেলাও হারাম।(কিতাবুল ওবদা)
৪. হাম্বলী মাজহাবের কিতাব “শাহহুলমুন্তাহা” ও “শরহে মুজ্জুমাতুল আদব” এরউল্লেখ হয়েছে যে, নির্ভরযোগ্য মত হলদাড়ি মুন্ডন করা হারাম।
অনুরূপ অন্যান্য গ্রন্থাকারওদাড়ি রাখা ওয়াজিব হওয়ারব্যাপারে মাননীয় ইমামদের ইজমা (ঐকমত)বর্ণনা করেছেন।
দাড়ি কর্তনকারী আল্লাহ পাকের দুশমনদের মধ্যে গণ্য হওয়ার সম্ভাবনা: ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল রহ. নিজ রচিত “কিতাবুজ্জুহুদে” আকীল ইবনে মোদরেকসালামী হতে উদ্ধৃতি করেন যে, আল্লাহজাল্লা শানুহু বনী ইস্রাইলের এক নবীরনিকট এই অহী প্রেরন করেন যে, তিনি যেন নিজ কওম বনী ইস্রাইলকে একথা জানিয়ে দেন যে,
তারা যেন আল্লাহ তা’য়ালার দুশমনদের বিশেষ খাদ্যশুকরের গোশত না খায় এবং তাদের বিশেষপানীয় অর্থাৎ শরাব(মদ) পাননা করে এবং তাদের শিক্ল ছুরত (আকৃতি)না বানায়। যদি তারা এমন করে অর্থাৎ শুকরের গোশত খায়, বা মদ পান করে,অথবা দাড়ি মুন্ডায় বা ছোটকরে (ফ্রেন্সকাট করে) অথবা বড় বড় মোচরাখে, তা’হলে তারাও আমার দুশমন হবে,যেমন তারা আমার দুশমন। (দালায়েলুলআসর)
কওমে লূতের নিন্দনীয় বৈশিষ্ট্য ওধ্বংসের কারন:
প্রখ্যাত মুহাদ্দিস ইবনে আসাকেরসহআরো কতিপয় মুহাদ্দিস হযরত হাসান রা.হতে নবী করীম স. এর এই মুবারক হাদীসবর্ণনা করেন যে, দশ প্রকার পাপে লূতসম্প্রদায় ধ্বংস হয়েছিল;তন্মধ্যে দাড়ি কাটা, গোঁফ বড়রাখা অন্যমত।
আরো জানতে এখানে দেখুনঃ
Click This Link
তাই আসুন আমরা আল্লাহ সুবানুহুতা’'য়ালার কাছে দু'আ করি তিনি যেন আমাদের সকলকে দাঁড়ি রাখার গুরুত্ব অনুধাবনকরে দাঁড়ি রাখার তৌফিক দান করেন এবং যারা দাঁড়ি সম্পর্কে আজেবাজে মন্তব্য করে তাদের হেদায়াত দান করেন।
আমীন।