সবাইকে শুভেচ্ছা
আমার প্রথম ব্লগ লিখা
তাই সাহিত্য দিয়ে লেখা শুরু করলাম আপনাদের জন্য।
মোহাম্মদ আল-আমীন।
একছিল ছ্যাঁকামাইসিন
......মোহাম্মদ আল-আমীন
"ভালবাসা মোরে ভিখারী করেছে, তোমারে করেছে রাণী। আহ................................"
আমার বন্ধু জিসানের টাকার পার্স এখন যে তার সাথে থাকে না তা তার গান গাওয়া দেখেই বৃঝা যায়। দীর্ঘ ৩৬০ ঘন্টা টানা অসহয়োগ আন্দোলনের মতোই রাজপথ দাপিয়ে, নানা জায়গায় গণসংযোগ আর বহুবিধ আল্টিমেটাম দেবার পর কণার সাথে সমঝোতা, অতঃপর ভালবাসার সৌধ। কালক্রমে সে ভালবাসার সৌধ আজ কেবলই স্মৃতি। আর সে ভালবাসার মূল্য কষতে গিয়েই বন্ধু আমার হুশ-টুশ হারিয়ে একাকার।
"আমার স্বপ্নে দেখা রাজকণ্যা তুমি, থাকো চার তালার ঐ উপরে। কেমন করে ছুড়বো তোমায় গোলাপেই ফুল।" এটা আমার বন্ধুর জীবনের প্রথম কবিতার প্রথম লাইন। আর দ্বিতীয় লাইন হচ্ছে-" প্রেমের নাম ছলনা, ভালবাসা কেন মরীচিকা।" এই লাইন লিখতে বন্ধুর নাকি সময় লেগেছিল ৬ মাস। মনে হচ্ছে জিসান-কণার প্রেম সমাধিতে পরিণত। ৫ ফুট আড়াই ইঞ্চি কণার প্রেমে জড়িয়ে প্রেমিকার দাবি পূরণে বন্ধু ফতুর। পড়ন্ত বিকেলে কণার ফুসকা খাওয়ার দাবি, সন্ধ্যায় পীজা আর রাতে রেস্তোরাঁয় বিল পরিশোধ করতে বিশ্ব ব্যাংক খ্যাত বাবার পকেট সাফাইও করেছে কয়েকবার। দোস্ত এখন সুরকার, গান গায় আপন মনে, শুনুন একটা-" ছ্যাঁকা খেয়ে পাগল হইছে কজনা ও মন জানো না, হেমায়েতপুরে পাগল সংখ্যা কজনা ও মন জানো না, ঐ খানে বাস করে পাগল কজনা ও মন জানো না।" আমরা দোস্তের হায়-হুতাশ দেখে সান্ত্বনা দেই আর বলি তুই পাগল হইস না দোস্ত, মর্জিনার কী হইব!
প্রেম করে যে ছ্যাঁকা খেয়েছে, কবিতা লিখে সে কবি হয়েছে। দোস্ত ইদানীং কবিতার ঝড় তুলছে-" ঐ বাড়ির মর্জিনা
আমায় ভালোবাসে না
পাশের বাড়ির কণা
তার জন্য আমার দিল ফানা ফানা
তুমি দরজায় আমি জালানায়
তোমার হাতে কি
আমার আছে লাভ ক্যান্ডি"
একদিন দোস্তের নিমন্ত্রণ পত্র হাতে পেলাম। খুলে সবার টাসকি খাওয়ার উপক্রম। বন্ধু ছ্যাঁকামাইসিন খাওয়ার অর্ধ বর্ষের দিন আমাদের বন্ধুমহল নিয়ে তার আসন্ন ছ্যাঁকা দিবস উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি কমিটি ঘোষণা করবে। সরকারের নিকট দাবি-দাওয়া থাকবে, থাকবে আল্টিমেটামও। প্রকাশ করা হবে বিশেষ ক্রোড়পত্র। পত্র পড়ে বন্ধুদের সবার ঐক্যমত প্রকাশ - " পাগল না হইলেও অর্ধপাগল"
এবার অনুষ্ঠান সর্ম্পকে জানুন। অর্ধপাগল দোস্তের স্বাগত বক্তব্য -" প্রিয় ছ্যাঁকামাইসিন বন্ধুমহল, ১৪ ফেব্রুয়ারী আমার জীবনের প্রথম ছ্যাঁকা দিবস আর এ অনুষ্ঠানের আওতামুক্ত যারা প্রেম করিয়া ছ্যাঁকা খাননি তাদের জন্য বিশ্ব ভালবাসা দিবস। আরে ছ্যাঁকা তো জীবনে খাইছেনই, প্রেম করছেন কয়টা। দেশে এখন ছ্যাঁকা-প্রেম-ছ্যাঁকা বৃত্তের মধ্যে চলছে। এ বৃত্ত ভাঙ্গতে হবেই। আসুন সবাই ছ্যাঁকা খাওয়ার পর পুনরায় প্রেম করা থেকে বিরত থাকি। আমার হাতকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে সবাই ঐক্যকন্ঠে ঘোষণা করি " বিশ্ব ভালাবাসা নয় বিশ্ব ছ্যাঁকা দিবস হোক। দিন বদলাইয়া গেছে না।
সরকারকে ছ্যাঁকামাইসিনদের পূনর্বাসনের লক্ষ্যে " ছ্যাঁকামাইসিন মন্ত্রণালয়" প্রতিষ্ঠা করতে হইবে। বিশ্ব ছ্যাঁকা দিবসকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হইবে। ছ্যাঁকা দিবসের প্রতিবাদস্বরূপ বিশেষ ক্রোড়পত্র "ছ্যাঁকাঞ্জলি" প্রকাশ করিতে হইবে। অন্যথায় গড়ে তোলা হবে ছ্যাঁকামাইসিন জেনারেশন গ্রুপ। যেখানে দেখা মিলবে প্রেমিকযুগল, সেখানেই চলবে তীব্র প্রতিরোধ।
অনুষ্ঠানের শেষের দিকে আয়োজন করা হলো ছ্যাঁকামাইসিন সংস্কৃতি সন্ধ্যা। আবেগ ভরাকন্ঠে ছ্যাঁকামাইসিন জেনারেশন গ্রুপের চেয়ারম্যান অর্ধপাগল দোস্ত গাই গাইতে আরম্ভ করলেন-----
" এক মিনিটের নাই ভরসা, সাঙ্গ হইবো প্রেমলীলা, ছ্যাঁকা খাইলে হইবা যে বে-হুশ...."
সত্যি সত্যিই হুশ হারিয়ে দোস্ত আমাদের বে-হুশ। হাসপাতালে জ্ঞান ফিরে দোস্ত বলিলো, " আমি কে, কি চান? অবশেষে পাবনা (হেমায়েতপুর)। #