somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রজাপতি প্রজাপতি কোথায় পেলে ভাই এমন রঙ্গিন পাখা ( প্রজাপতি জীবন কাহিনী )

০৩ রা অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ৯:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


দেশ জুরে শারদিয় উৎসবের আমেজে প্রজাপতিরা রঙ্গীন পাখনা মেলে উড়ছে ফুলে ফুলে ও আরাধনা মন্ডপে মন্ডপে ।প্রজাপতি প্রজাপতি কোথায় পেলে এত রঙ্গিন পাখা
লিংকটাতে ক্লিক করে এদের নাচগান উপভোগ করতে করতে চলুন এগিয়ে চলি প্রজাপতি কাহনে।

প্রজাপতি লেপিডুপেটরা বর্গের আকর্ষণীয় রঙের এক পতঙ্গ বিশেষ । উল্লেখ্য মথ ও প্রজাপতি উভয়ই এই লেপিডুপেটরা গুত্র ভুক্ত। লেপিডুপেটরা একটি গ্রীক শব্দ যা দিয়ে ‘’মাপযুক্ত পাখনা’’ বুঝায়। প্রজাপতি ও মথ একই গুত্রভুক্ত হলেও নিম্মলিখিত ভাবে এরা পার্থক্য মন্ডিত ।


সাধারণভাবে , প্রজাপতি নিম্নলিখিত উপায়ে মথ থেকে পার্থক্য মন্ডিত ১) প্রজাপতির পরিস্কার দুটি এন্টিনা বা পাখনা আছে কিন্তু মথের ঝাপসা বা পালকবৎ এন্টেনা আছে ২) প্রজাপতি সাধারণত দিনমান সময় সক্রিয় কিন্তু মথেরা রাতে সক্রিয় থাকর ৩) প্রজাপতি বিশ্রামে থাকার সময় তার পাখনা উলম্ব থাকে কিন্তু মথ যখন বিশ্রামে থাকে তখন তার পাখনা উইংস সঙ্গে আউট ফ্ল্যাট ছড়িয়ে রাখে ৪) প্রজাপতি সাধারণত মথের থেকে অনেক বেশী উজ্জ্বলভাবে রঙ্গিন দেখা যায় ।
এদের জীবনচক্রের দৈর্ঘ্য প্রজাতিভেদে ভিন্ন ভিন্ন। প্রজাপতি জন্ম থেকেই স্বাধীন। অথচ খুব বেশি দিন বাঁচে না প্রজাপতি। জাতভেদে আয়ু তাদের ৫ দিন থেকে ১০ মাস পর্যন্ত । দুটু পা দুটি জটিল চোখ আর একটি সুরযুক্ত মুখ নিয়েই এদের অনিশ্চিত পথচলা।
এরা ঘণ্টায় ১২ মাইল থেকে ২৫ মাইল বেগে উড়তে পারে। কিছু বিশেষজ্ঞের মতে, এরা ঘুমায় না। বিশ্রাম নেয় মাত্র। এ পতঙ্গটি সাধারণত ফুলের মধু খেয়ে বাঁচে। তবে এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে ফুলের রেণু,গাছের রস, পচা ফল, গোবর, পচনশীল মাংস অথবা ময়লায় দ্রবীভূত অবস্থায় থাকা খনিজ পদার্থ।
প্রজাপতিরা সাধারণত ১২টি গোত্রে বিভক্ত। সারা পৃথিবীতে প্রায় ২৫০০০ বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে বলে জানা যায় । বাংলাদেশে প্রায় ৪০০টি বিভিন্ন প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে বলে জানা যায়। বাড়ীর বাগান থেকে শুরু করে ঝোপঝাড় ও বনভূমির সর্বত্র বিভিন্ন পরিবেশে প্রজাপতিরা বিচরণ করে । এদের জীবন ব্যবস্থা যেহেতু উদ্ভিদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত তাই পরিবেশের যেকোন প্রতিকূল পরিবর্তনে এরা বিশেষভাবে প্রভাবিত । ঝোপ, ঝাড়, বনে , ফুলে ফুলে কবিতায় গানে, গুগল মামার ইমেজের বাগানে দেখা যায় নাম না জানা প্রজাপতিদের কতনা বিচরণ। তাই এ ব্লগে ছবির সাথে কিছু সেরা মথ , প্রজাপতি ও ফড়িংএর ছবি করা হলো উপস্থাপন ।
ছবি-১/ : এডনিস ব্লো ( Adnis Blue)


ছবি-২/ ব্রাউন আরগুস ( Brown Argus)


ছবি-৩/ চেক হিল ব্লো Check hill blue ( Female)


ছবি-৪/ ডার্ক গ্রীণ ফ্রটিলারী ( Dark Green Fritillary)


ছবি -৫/ এসেস্ক স্কীপার (Essex skipper)


ছবি -৬/ গেইট কিপাড় (Gate keeper)


ছবি -৭/ হলি ব্লো ( Holy blue )


ছবি-৮/ লার্জ ব্লো ( Large blue)


ছবি- ৯/ উড হোয়াইট (Wood whilte ( Male/female)


ছবি-১০/ মিডো ব্রাউন ( Meadow Brown)


ছবি -১১/ নর্দান ব্রাউন আরগুস (Northern Brown Argus)


ছবি -১২/ অরেঞ্জ টিপ (16.Orange tip ( male)


ছবি -১৩/ পেইনটেড লেডি ( Painted Lady)


ছবি -১৪/ পার্পল এমপেরর (Purple emperor ( Male)


ছবি -১৫/ রেড এডমিরাল (Red Admiral )


ছবি-১৬/ স্মল স্কিপাড় ( small skipper)


ছবি-১৭/ হামিংবার্ড বাটার ফ্লাই



কেন প্রজাপতিরা গুরুত্বপূর্ণ
অনেক কারণে প্রজাপতিরা গুরুত্বপুর্ণ, নীচে তার কিছু বিবরণ দেয়া হল ।
অন্তর্নিহিত মূল্য
• প্রজাপতির রয়েছে অনেক অন্তর্নিহিত মূল্য ফলে নিজস্বগুনেই এরা হয় সংরক্ষণ যোগ্য।
• এরা অন্তত ৫০ মিলিয়ন বছর ধরে বিচরণ করছে এ ধরায় এবং সম্ভবত ১৫০ মিলিয়ন বছর আগে হয়েছে বিবর্তিত ।

নান্দনিক জগতে অবদান

• প্রজাপতিরা দেখতে সুন্দর এবং জনপ্রিয়
• কবিতায় ও গানে, সৌন্দর্য ও ব্যাসায়িক বিজ্ঞাপনে প্রজাপতি হচ্ছে ব্যবহার বিভিন্ন বিশেষনে ।

শিক্ষাখাতে অবদান

প্রজাপতিদের চটুল জীবন-চক্র অনেক দেশে প্রাকৃতিক বিশ্ব সম্পর্কে শিশুদেরকে শিক্ষা দিতে হয় ব্যবহৃত। প্রাপ্ত বয়স্ক প্রজাপতির ডিম তা হতে শুঁয়াপোকায় রূপান্তর হয়ে পরে ডানাওয়ালা প্রজাপতিতে পরিনত হওয়া প্রকৃতির সে এক বিস্ময়কর সৃস্টিধারা। একটি মনার্ক প্রজাপতির জীবন চক্র অবলোকনের জন্য Butterfly - My animal friends - Animals Documentary এই লিংকটি ভিজিট করতে ভুলবেন না যেন , তাহলে প্রজাপতির নীজ মুখে তার জীবন কাহিনী সাথে সুন্দর সুন্দর মনোমুগ্ধকর ছবি মিস করবেন। দেখতে পাবেন মনার্ক জাতীয় প্রজাপতি দল বেধে কিভাবে কানাডা হতে মেক্সিকো পর্যন্ত উড়ে যায় । এটা শুধু মনার্ক জাতীয় প্রজাপতির বেলাতেই সম্ভব । এরা শুধু দিনের বেলাতেই উড়ে ।
ছবি-১৮/ মনার্ক বাটারফ্লাই ( Monark Butter fly )


ছবি-১৯/ : প্রজাপতির জীবনচক্র



বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে অবদান
• বৈজ্ঞানিক গবেষনায় প্রজাপতিকুল ব্যবহৃত হয়ে আসছে শত শত বছর ধরে, এটি একটি গুরুত্বপুর্ণ বৈচিত্র্যময় গবেষণা ক্ষেত্র, কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ, ভ্রূণতত্ত্ব, বিবর্তন, জেনেটিক্স সহ জৈব গবেষণার জন্য সমাদরে আদৃত । অনেক এলাকায় জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে এরা পেয়েছে স্থান সকল গুরুত্বপুর্ণ জাতীয় উদ্যানে । ইদানিংকালে জলবায়ু পরিবর্তনের উপর বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য এরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও প্রমাণিত ।
চীনা বিজ্ঞানীদের কাছে প্রজাপতি এখন একটি গুরুত্বপুর্ণ গবেষণার বিষয় কারণ, পতঙ্গটির ডানার নিচে সোলার কালেক্টরের অস্তিত্ব বিজ্ঞানীরা টের পেয়ে গেছেন বহুদিন আগেই । আর সম্প্রতি চীনা বিজ্ঞানীরা প্রজাপতির পাখার বর্ণিল আলোকচ্ছটা আর ফিনফিনে ডানার গাঠনিক কাঠামো গবেষণার পর বলছেন, আগামী দিনগুলোতে প্রজাপতির ডানার এ অনন্য যান্ত্রিক কৌশল সস্তা ও অধিক কার্যকর সোলার সেল উদ্ভাবনকে করবে প্রভাবান্বিত ।

ইকোসিস্টেমে অবদান

• প্রজাপতিরা একটি সুস্থ পাকৃতিক পরিবেশ এবং সুস্থ বাস্তুতন্ত্র (Ecosystem) সূচক।
• তারা অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রজাতির গঠন বিস্তার এর ইঙ্গিত বাহক।
• প্রজাপতিরা সম্মিলিতভাবে পুষ্পের পরাগায়ন এবং প্রাকৃতিকভাবে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণ সহ বিভিন্ন ধরনের পরিবেশগত সুবিধাপ্রদানে সহায়ক ।
• প্রজাপতিরা পাখি, বাদুড় এবং অন্যান্য কীটাশী পশুদের জন্য পাকৃতিক খাদ্য শৃঙ্খলের ( Natural food chain) একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, শুধু তাই নয় এরা ফসলের জন্য ক্ষতিকর অনেক শোয়োপোকা খেয়ে দরকারী ফসলকে অনিস্ট হতে করে রক্ষা (উদাহরণস্বরূপ, ব্রিটেন ও আয়ারল্যান্ডের, ব্লু স্টার জাতীয় প্রজাপতি প্রতিবছর আনুমানিক ৫০ বিলিয়ন শুঁয়োপোকা খেয়ে বিভিন্ন ধরনের ফসলকে ক্ষতির হাত হতে রক্ষা করে ।

স্বাস্থ্য খাতে প্রজাপতির অবদান

• জনগণ তাদের বাড়ির চারিদিকে ও দিগন্ত বিস্তৃত ফসলের মাঠে প্রজাপতির সৌন্দর্য উপভোগে লাভ করেন মানসিক প্রশান্তি ।
• হাজার হাজার মানুষ দেশের বিভিন্ন জাতীয় উদ্যানে গিয়ে প্রজাপতি পর্যবেক্ষনও করেন, এটা পর্যটন শিল্পে বয়ে আনে বাড়তি আকর্ষন ।

অর্থনৈতিক অবদান

হাজার হাজার মানুষ প্রতি বছর দেশে বিদেশে প্রজাপতি ও মথের সন্ধানে ইকো-ট্যুরে যায় । ইকো টুরের কারণে বিশ্বজুড়ে অনেক উন্তত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে পর্যটন শিল্পখাত হতে প্রভুত আয় হয় (উদাহরনস্বরূপ বলা যায় রোডস দ্বিপের প্রজাপতি উপত্যকায় এবং মেক্সিকোতে রাজকীয় বিশ্রাম উপত্যকায় বিচিত্র প্রজাপতি দেখার জন্য হাজার হাজার পর্যটকের ঘটে সমাগম )।
ছবি -২০ / বাটারফ্লাই পার্ক ইন মেক্মিকো ( Butterfly park in Mexico)


• আশ্রয়দাতা উদ্ভিদের জন্য ক্ষতিকর প্যরাসাইটকে পরাস্ত করার জন্য প্রজাপতিরা নীজেদের মধ্যে একটি নিজস্ব রাসায়নিক স্যুট বিকশিত করে । উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মনার্ক জাতীয় প্রজাপতিদের মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিক তৈরীর উপাদান(যা প্রজাপতিকুলের একটি বৃহৎ অংশ)। এসব রাসায়নিক উপাদানের রয়েছে বিশাল অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ।
ছবি-২১/ : প্রজাপতি তার নিজস্ব রাসায়নিক স্যুট বিকশিত করছে



বাংলাদেশের প্রজাপতি ও ফড়িং সমাচার

বাংলাদেশে যে সমস্ত প্রজাপতি আছে তার মধ্যে হিসপিরিডাই, পেলিপনডাই, পেরিডাই, নীমফেলিডাই, ঢানিডা , সেটিরাইড, লিসানিডাই, এমাথুসাইডি, এক্রিডাই এবং রিউডিনাই উল্লেখযোগ্য । একমাত্র হামিংবার্ড প্রচাপতি ছাড়া পুর্বে দেয়া প্রজাপতি গুলির ছবির সাথে বাংলাদেশের প্রজাপতিদের রয়েছে ব্যপক সাদৃশ্য । একটি বিষয় এখানে জোড় দিয়ে বলা যায় তা হল বাংলাদেশের ফড়িংগুলি অতি বৈচিত্রময় ও সৌন্দর্যে অতুলনীয় ।
‘যে জীবন ফড়িংয়ের দোয়েলের, মানুষের সাথে দেখা হয় নাকো তার...’ কবি জীবনানন্দ দাশের কবিতার সাথে পরিচয় আছে অনেকের, আমাদের চারপাশে ফড়িং নামের আশ্চর্য সুন্দর সৃষ্টিটি উড়ে বেড়ায়, ঘুরে বেড়ায়। ওদেরকে আমাদের প্রায়শই চোখে পড়ে, দেখা হয়। কিন্তু আসলে কি আমরা ওদের চিনি? আমরা কি জানি, বাংলাদেশে কত প্রজাতির ফড়িং আছে? কোন ফড়িং কোথায় থাকে, কেমন তাদের স্বভাব—এসবও আমরা জানি না। দেশের একজন প্রখ্যাত আলোকচিত্রী কবীর শাহরীয়ার বছর চারেক ধরে ফড়িংয়ের পেছনে দেশের নানা জায়গা ঘুরে ক্যামেরাবন্দী করেছেন প্রায় ৫৬ প্রজাতি। তার মধ্য হতে গুটি কতক দেখানো হল নীচে ।
ছবি - ২২/ : এসোসিমা পেনরপয়ডিছ


ছবি-২৩/ : অরথেট্রকম পুরুইনেসাম


ছবি-২৪ / : নিউরোথেমিছ ফালভিয়া


ছবি-২৫/ : রায়োথেমিছ ভেরাগুটা ভেরাগুটা


ছবি-২৬/ : যিক্মোমা পেটিউলেটাম


ছবি-২৭/ : ব্রাকিথেমাস কনটামিনেটা


ছবি-২৮/ : গাইনাকানথা কাসিয়াকা



বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যানে প্রজাপতি পার্ক সমাচার

বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যানগুলিতে প্রজাপতি পার্কের লক্ষই হলো উদ্ভিদ জগতের ভিতরে বৈচিত্র্যময় প্রজাপতি বিচরণ ও নতুন প্রজাপতি প্রজাতি সৃষ্টি জন্য একটি সাইট তৈরি করা । নিম্মে বাংলাদেশের জাতীয় উদ্যানগুলিতে বিদ্যমান কয়েকটি প্রজাপতি পার্কের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হল
ক) ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক : ঢাকার অদুরে গাজীপুরে ১৯৭৪ সনে প্রতিষ্ঠিত হয় । সাম্প্রতিক সময়ে, EBBL ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কে একটি "ওপেন প্রজাপতি পার্ক ও প্রজাপতি উপনিবেশকরণের সেন্টার 'প্রতিষ্ঠার জন্য পরীক্ষা নিরীক্ষা শুরু করেছে । অনুমান করা হয় ভাওয়াল ন্যাশনাল পার্ক এলাকায় প্রায় ৩০০ প্রজাতির প্রজাপতি রয়েছে (বাশার ২০১৩)।
ছবি-২৯/ : ভাওয়াল জাতীয় উদ্যান


ছবি-৩০/ : ভাউয়াল জাতীয় উদ্যানে প্রজাপতি


খ) মধুপুর জাতীয় উদ্যান : বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অংশে ( টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ জেলার অংশ বিশেষ ) একটি বড় উচ্চভূমি এলাকা। এই বন এখন অবশ্য অনেক ছোট হয়ে গেছে । এখানেও রয়েছে বৈচিত্র্যময় পরিবারের প্রজাপতি জনসংখ্যা । ১৯৯ সনে EBBL কতৃক পরিচালিত গবেষনায় দেখা যায় যে এ বনেও প্রায় ৩০০ প্রজাতীর প্রজাপতি রয়েছে ।
ছবি-৩১/ : মধুপুর জাতীয় উদ্যানে প্রজাপতি


গ) লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্ক : মৌলভিবাজার জেলাধীন শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত । এটা বাংলাদেশের একটি অন্যতম বৃহত জাতীয় উদ্যান ও প্রকৃতি রিজার্ভ । এটা মনে রাখতে হবে যে অসাধারণ, Birdwings নামক বাংলাদেশর বৃহত্তম প্রজাপতি এই বনেই পাওয়া যায়।
ছবি- ৩২/ লাউয়াছড়া ন্যাশনাল পার্কে সাউদার্ন বার্ডউইং প্রজাপতি


২০০১ সনের EBBL রেকর্ড অনুযায়ী প্রায় ২৫০ প্রজাতির সাক্ষাত পাওয়া যায় এ বনে ।

ঘ) সাতছড়ী ন্যাশনাল পার্ক : সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলার রঘুনন্দন পাহাড়ে অবস্থিত। আক্ষরিক অর্থ "সাত প্রবাহের" স্রোত এই জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়, এই বনেও প্রায় ২০০ এর অধিক প্রজাতীর প্রজাপতির আবাস । এই বনের ঝোপ জঙ্গলে পাওয়া যায় বৃহত্তম প্রজাতীর বার্ডউইঙ্ জাতীয় প্রজাপতি ।বার্ডউইঙ্ প্রজাপতিগুলি উদ্যানের ভিতর কমলালেবু বাগানে ফুটে থাকা ফুলে ফুলে বিচরণ করে । সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের এই ভিডিউডি ক্লিক করুন এটা না দেখলে বুঝাই যাবেনা যে কত রকমের জীব বৈচিত্র রয়েছে এই ছোট্ট বনে ।
ছবি- ৩৩/ : সাতছড়ী ন্যাশনাল পার্ক ও প্রজাপতি


ক) প্রজাপতি সংরক্ষণ ও রিসার্চ সেন্টার : এটা চট্টগ্রামের পতোঙ্গাতে ২.৫ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এটা একটি প্রজাপতি খামার ,জাদুঘর ও গবেষণা কেন্দ্র (মণ্ডল, ২০১৩) এখনো এর প্রাথমিক কাজ চলছে (মণ্ডল, ২০১৩)।
ছবি- ৩৪/ : বাটারফ্লাই কনজারভেশন ও রিসার্চ সেন্টার , চট্টগ্রাম


খ) প্রজাপতি গবেষণা পার্ক: এটা ভাওয়াল গাজীপুর এ অবস্থিত, গাজীপুর ।মোট আয়তন ১০ একর, এটা একটি প্রাকৃতিক পার্ক যেখানে শুধুমাত্র প্রজাপতিই নয় অধিকন্ত আরো অনেক প্রাকৃতিক প্রাণীর আবাসের সেটিং আছে সেখানে। এ পার্কে প্রায় ২২০ ধরনের উদ্ভিদ রয়েছে যা প্রজাপতি উদ্দীপনার সাথে সম্পর্কিত ।
ছবি- ৩৫/ : বাটারফ্লাই রিসার্চ পার্ক , গাজীপুর


গ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক : এটা ঢাকার অদুরে গাজীপুরের অবস্থিত । এই সাফারী পার্কে বিভিন্ন ধরনের প্রায় ২০০০ প্রজাতির পশু পাখী, পাখ পাখালী ও প্রজাপতি ও ফড়িং দিয়ে ঠাসাঠাসি করে রাখা হয়েছে । কর্তৃপক্ষ এখানে প্রায় ৩০০ ধরনের গাছের একটি হার্বেরিয়াম গড়ে তুলেছে।
ছবি-৩৬/ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রদর্শনী ম্যাপ


পর্যটক, ছাত্র, এবং গবেষক এই সাফারী পার্ক থেকে বিশাল জ্ঞান লাভ রকরতে পারবেন. যদিউ প্রধানত পার্কের বন্যপ্রাণীর জন্য এই পার্ক তৈরি করা হয়েছে তথাপি প্রজাপতি পার্ক এই পার্কের একটি আকর্ষণীয় অংশ । তবে এই প্রজাপতি পার্কে প্রজাপতিদের উড়ার জন্য গ্রেভিটেশনাল ধারণক্ষমতা খু্বই নীচু মাত্রার, তাছাড়া প্রজাপতিদের বেঁচে থাকার জন্য আর্দ্রতার মাত্রাও যথেষ্ট নয় , এটা পরিবেশ বান্ধব নয়, প্রজাপতি বেড়ে উঠার জন্য মৌলিক উদ্ভিদও এখানে যথেষ্ট নেই, তাই প্রজাপতির বিকাশ , প্রজনন ও বেড়ে উঠার জন্য এখানে প্রজাপতি সহায়ক উদ্ভিদের আরো বেশী সমাহার প্রয়োজন (মণ্ডল, 2013) ।
ছবি-৩৭/ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে প্রজাপতি পল্লী


ঘ) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজাপতি সেন্টার অ্যান্ড এক্সিবিশন : এখানে প্রতি বছর একটি প্রজাপতি মেলা এবং পাখি মেলা অনুষ্ঠিত হয় . প্রজাপতি প্রদর্শনের জন্য এখানে একটি অস্থায়ী প্রজাপতি শেল তৈরি করা হয়। প্রধানত caterpillars শেল এ রাখা হয় এবং তাদের বেড়ে ওঠা দেখা হয়, কিন্তু প্রজাপতিতের প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার কারণে অধিকাংশ প্রজাপতিই প্রদর্শণী চলাকালীন সময়েই ইন্তেকাল করে । তবে এটা মুলত করা হয় জনগনের সচেতনতার জন্য ।
ছবি-৩৮/ : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রজাপতি সেন্টার অ্যান্ড এক্সিবিশন


ছোট্ট এ জীবনে প্রজাপতিগনে মানবের জন্যে দিয়ে যাচ্ছে শুধু অবদান । উল্লেখ্য যে রেশম মথেরা মরে গিয়েও নীজ জীবনের বিনিময়ে দিয়ে যাচ্ছে বাহারী শিল্ক বস্ত্রের জন্য মুল্যবান উপাদান ।
হাজার প্রাণের বিনিময়ে সুন্দরী ললনাদের জন্য একটি রেশমী শাড়ী এখানে ক্লিক করে দেখতে পারেন কেমন করে রেশম মথেরা রেশম শিল্পের জন্য অকাতরে বিলিয়ে দিচ্ছে তাদের প্রাণ ।

ধন্যবাদ এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ।

তথ্য ও ছবি সুত্র :
Bashar M. A., (2013.a), “Forests of Bangladesh and butterfly biodiversity”, Environmental Biology and Biodiversity Laboratory (EBBL), Dhaka University.
Bashar M. A., (2013.b), Dictionary of Biodiversity, Mohammad Publications, Dhaka, Bangladesh. pp. 57.
Butterfly Conservation Europe (BEC), (2008), “Why butterflies matter”.
Chowdhury, S. H. and Hossain M., (2013), Butterflies of Bangladesh: A Pictorial Handbook, pp. 1,9, Revised and Enlarged Version 1. Dhaka, Bangladesh.
Mondal, S. C. (2013), “Butterfly Conservation and Research Centre, Srimongol, Sylhet”,
Images : From Google net

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মার্চ, ২০২০ সকাল ৮:১৬
৪২টি মন্তব্য ৪০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা সকলের দায়িত্ব।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩৮



এগুলো আমার একান্ত মতামত। এই ব্লগ কাউকে ছোট করার জন্য লেখি নাই। শুধু আমার মনে জমে থাকা দুঃখ প্রকাশ করলাম। এতে আপনারা কষ্ট পেয়ে থাকলে আমি দায়ী না। এখনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফেতনার সময় জামায়াত বদ্ধ ইসলামী আন্দোলন ফরজ নয়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৮



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ১০৩ নং আয়াতের অনুবাদ-
১০৩। তোমরা একত্রে আল্লাহর রজ্জু দৃঢ়ভাবে ধর! আর বিচ্ছিন্ন হবে না। তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর।যখন তোমরা শত্রু ছিলে তখন তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

=নীল আকাশের প্রান্ত ছুঁয়ে-৭ (আকাশ ভালোবেসে)=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:১৯

০১।



=আকাশের মন খারাপ আজ, অথচ ফুলেরা হাসে=
আকাশের মন খারাপ, মেঘ কাজল চোখ তার,
কেঁদে দিলেই লেপ্টে যাবে চোখের কাজল,
আকাশের বুকে বিষাদের ছাউনি,
ধ্বস নামলেই ডুবে যাবে মাটি!
================================================
অনেক দিন পর আকাশের ছবি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পানি জলে ধর্ম দ্বন্দ

লিখেছেন প্রামানিক, ০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫২


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

জল পানিতে দ্বন্দ লেগে
ভাগ হলোরে বঙ্গ দেশ
এপার ওপার দুই পারেতে
বাঙালিদের জীবন শেষ।

পানি বললে জাত থাকে না
ঈমান থাকে না জলে
এইটা নিয়েই দুই বাংলাতে
রেষারেষি চলে।

জল বললে কয় নাউযুবিল্লাহ
পানি বললে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×