somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

~~ ভালো আছি ! ( গল্প ) ~~~

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভাবছি!
আর সুস্থ হবো না ,
যেমন আছি তেমনটাই থেকে যাবো।
আমি জানি যদি সুস্থ হয়ে যাই তাহলে আর হাসপাতালে থাকা হবে না !
সবাই যে কেন বলে হাসপাতাল অনেক খারাপ যায়গা এখানে নাকি অসুস্থ হয়ে আসে একজন আর বের হয়ে যায় দুই জন , কারন. রোগী যে আছে সে তো ভালো হয়ই না সাথে রোগীর সাথে যে থাকে সেও অসুস্থ হয়ে যায়।

আমার হাসপাতালে থাকতে চাওয়ার প্রধান কারন আমার জীবন শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সব চেয়ে গত ১৪ দিন ধরেই সুখে আছি। অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি।
না! আমি এ বলবো না জীবনে কোন দিন কারও কাছ থেকে ভালোবাসা পাইনি , হা পেয়েছি আর এখন সে আমার পাশেই আছে। আমি বলছি আমার জীবন সঙ্গিনীর কথা সে আমাকে খুব ভালোবাসতো , এখনো বাসে। আর আমি তাকে ভালো বাসি কিনা জানতে চাচ্ছেন? আমি শুধু এই কথা বলবো কেন ভালো বাসবো না! যেমন রূপবতী , তেমন বুদ্ধিমতী , আর তেমন তার গুন। কি পারেনা আমি আজ পর্যন্ত জানি না ,
হ্যা , আমদের বিয়ে হয়েছে বেস কিছু বছর আগে , আমি আর তমা একই বিশ্ব বিদ্যালয়ের একই বিষয় নিয়ে লেখাপড়া করেছি । (আপনারা অবশ্যই বুঝেছেন তমা কে , নতুন করে কিছু বলার আছে? )

তমা আর আমি লেখাপড়া করেছি এক সাথে কিন্তু আমি কিছুই করতে পারি নি , আর তমা একটা চাকরি করে ওটা দিয়েই আমাদের সংসার নামের চাকা ছাড়া যানটিকে চালাতে হতো । আমি কিছুই করতে পারি নি , চেষ্টা করেছি অনেক কিন্তু পারি নি।
ওই তো তমা এসেছে , এসে আমার দূর্বল হাতের উপর হাত রেখেছে । যাতে করে আমার একটু বল হয় এই তো অর্ধাঙ্গিনী । কিন্তু ? আপনাদের কাছে একটা প্রশ্ন রেখে গেলাম উত্তরটা পরে দিলেও চলবে।

তমার সাথে আমার পরিচয় কলেজে পরিচয় বলা যাবে তার কারন তখন তাকে শুধু চিনতাম এর কারন ছিলো মেয়েদের মধ্যে পরীক্ষায় তমা সবচেয়ে বেশি নাম্বার পেত আর স্যার মেডামরা এসে তার কথা বলতো। তাই আমার ইচ্ছে হয়েছিলো দেখার কে এই তমা। ও আপনাদের বলা হয় নি আমাদের কলেজে মেয়েরা ক্লাস করতো সকালে আর আমাদের ক্লাস হতো দুপুরে। আর এই কারনেই কলেজে মেয়েদের সাথে তেমন একটা পরিচয় হয়নি। ও যেখানে ছিলাম আমি চিন্ত করলাম তমাকে আমার কালকেই দেখতে হবে। অনেক বন্ধুদের বললাম আমার পরিকল্পনার কথা তারা বললো এটা কোন বেপার না , তুই বললে আমরা কথাও বলিয়ে দিতে পারি। আমি বললাম আমার অত কিছু লাগবেনা ,শুধু বলে দিলেই হবে তমাটা কে। আরে তুই নিশ্চিত থাক কালকে তমা তোকে খোজবে , তোর আর খোজার কোন দরকারই নাই। যদিও আমি জানতাম তারা কিছুই করবেনা , তার পরও বিশ্বাস করলাম।

পরদিন বন্ধুদের কাউকে আর আসে পাশে পেলাম না , হয়তো গা ঢাকা দিয়েছে ,কিন্তু সেই দিনই তমার সাথে আমার দেখা হয়।
আমি আগে জানতাম যারা লেখাপড়া ভালো তারা নাকি সুন্দরী হয় না , কিন্তু ও এত সুন্দর যে আমি সামনে যেতে ভয় পাচ্ছিলাম। কারন অনেক চালাক , খারাপ ছেলেরাই সুন্দরীদের সামনে যেতে ভয় পায় আর আমি …

আমি সেই দিন পারিনি , তমার সাথে কথা বলতে। অন্য একদিন হয়েছিলো , সেই কথা আপনাদের আর একদিন বলবো। তমার সাথে আমার পরিচয় সেই দিন হয় নি কিন্তু বেশ কিছু দিনের জন্য আমার মনে স্থান পেয়ে যায়। আমি কাউকে প্রথম দেখলেই তার প্রেমে পরে যাই কিন্তু সেই ভালো লাগা বেশি দিন থাকে না , তমার ক্ষেত্রেও একই হলো।

কলেজের সময় গুলো তখন খুব ব্যাস্ত কাটাচ্ছি , এই রকম কোন এক দিনে তমার সাথে আমার লেগুনায় দেখা হয়ে যায়। অনেক ইচ্ছে করছিলো তার সাথে কথা বলি , কেউ ভাববেন না তাকে আমি প্রেমের কথা বলতে তার সাথে কথা বলতে চেয়েছি। আমার মনে এখন আর ওই সব কাজ করছেনা। মানসিক সব প্রস্তুতির পরে তমার সাথে কথা বলতে যাব ঠিক তখনই সে লেগুনা থেকে নেমে গেল। কি আর করা আজও পরিচিত হওয়া হলো না।

কলেজ এর ঠিক শেষ সময় নির্বাচনি পরীক্ষা হয়েছে একমাস হলো , আজ রেজাল্ট দেওয়ার কথা রেজাল্ট দেওয়া হলো ভালোই করলাম প্রথম ৫ জনের মধ্যে আছি। আর অন্য দিকে মেয়েদের মধ্যে তমা হয়েছে আমাদের বিভাগে মেয়েদের মধ্যে প্রথম। যেহেতু আমি ছেলেদের মধ্যে ৩য় হয়েছি আর তমা মেয়েদের প্রথম সেই সুত্রে আমাদের সাথে হালকা একটু পরিচয় হয় , আর সেই পরিচয় পর্বে এসে বাধ সাধেন আমার ক্লাস টিচার - আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন , তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে খুব খুশি , মনে রাখবে আমার বিষয়ে তুমি কিন্তু প্রায় ফেল করেছিলে আমি তোমাকে জোর করে পাশ করিয়ে দিয়েছি কথাটা মনে রাখবে।
আমি শুধু বললাম , আচ্ছা স্যার্। ( আমার সব শেষ আরে স্যার আপনি আমাকে সারাদিন অপমান করতেন তাই বলে একটা মেয়ের সামনে? )
স্যারের উপর খুব রাগ হচ্ছিলো।
(একটা কথা বলে রাখা ভালো আমাদের কলেজের ইতিহাস ছিলো যে ছাত্র নির্বাচনি পরীক্ষায় জিপিএ-৩.০০ পাবে সে নিশ্চিত থাকতে পারে এইচএসসি পরীক্ষায় এ+ পাবে )

এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর দেখা গেল তমা আমার থেকে অনেক ভালো রেজাল্ট করলো আমি খুব খারাপ করেছি তাও বলবো না , বেশি ভালো করিনি কিন্তু সব জায়গায় চালিয়ে দেওয়ার মত। আমি অখুশি হইনি , এখন আর তমার সাথে দেখা না হলেই হয়।

বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রথম দিনের ক্লাস , কি ভাবছেন ! কত সহজে বিশ্ব বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে গেলাম , না জীবনে কোন দিন এমন প্রেম করিনি বই খাতার সাথে যা করেছিলাম রেজাল্ট দেওয়ার পরের মাস গুলো। এর পর বিশ্ব বিদ্যালয় ,ভুলে থাকতে চেয়েছিলাম সেই দিন গুলোর কথা আর তাই এড়িয়ে চলার চেষ্টা করছিলাম।

বিশ্ব বিদ্যালয়ে প্রথম যার সাথে পরিচয় হলো সে হচ্ছে তমা , হ্যা এই সেই তমা যার সামনে আমাকে অপমান করা হয়েছিলো প্রথম পরিচয়ের দিনেই। আজ আমি আর তমা একই ভার্সিটির একই বিভাগের শিক্ষার্থী।

এবার বলি কিভাবে পরিচয় হলো , আমি সে দিন আমাদের বিভাগের সামনের করিডোর দিয়ে হাটছিলাম এমন সময় পাশ থেকে একটি মেয়ে আমাকে বললো , এই যে শুনছেন?
তাকিয়ে দেখি তমা ,
আরে তমা কি খবর? তুমি কি এইখানেই আছো নাকি?
হ্যা , তুমি?
হ্যা আমিও এখানেই আছি ,
(তমা একা দাড়িয়ে ছিলো , তাই ভাবলাম হয় তো কারও জন্য অপেক্ষা করছে)
আমি বললাম কারও জন্য অপেক্ষা করছো নাকি?
না , এভাবেই দাড়িয়ে ছিলাম। তুমি কোথায় যাচ্ছো?
তাহলে চলো , একটু ঘুরে আসি পরের ক্লাস হতে এখনো অনেক বাকি।
ঠিক আছে তাহলে চলো।
সেই দিনই প্রথম তমার সাথে আমি ভালো করে করে কথা বলি।

এর পরে দেখতাম , অনেক বড় ভাই তমার সাথে কথা বলতে আসতো কিন্তু তমা তাদের সাথে কোন দিন কথা বলতো না আর আমি বলতে না চাইলেও আমার সাথে এসে কথা বলতো ।
এক বড় ভাই তমাকে সরাসরি প্রেমের প্রস্তাব দেয় এবং বলে সে আজকে তার জবাব নিয়েই যাবে । তমা তাকে বলেছিলো ভাই কালকে আসেন আমাকে একটু ভাবতে সময় দেন । অনেক বোঝানোর পর সে চলে গেল।
পরদিন এই সবের কিছুই আমি জানি না , তমা আমাকে নিয়ে তার সামনে হাজির ওই বড় ভাই কিছু না বলে চলে গেল।
এর কিছু দিন পর আমি বাসায় যাচ্ছিলাম , ওই বড় ভাই আমাকে ডাকলেন তার. পাশে আরও অনেকে আছে ।

(চলবে)


(দ্বিতীয় অংশে সমাপ্ত।)
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জেনারেল রাও ফরমান আলী ছিল ইন্ডিয়ান 'র'-এর এজেন্ট

লিখেছেন ধূসর সন্ধ্যা, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:২২



জেনারেল রাও ফরমান আলী ছিল ইন্ডিয়ান 'র'-এর একজন এজেন্ট। এই তথ্য কেউ জানতো না। তার ফ্যামিলিও জানতো না। ১৯৪১ সালে বর্ডার ক্রস করে সে ঢুকেছিল পাকিস্তান। তারপর আস্তে আস্তে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×