somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একজন সুসাহিত্যিকের চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসুন

০৬ ই জুলাই, ২০১২ রাত ১১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আজকে সত্যিই মনে পড়ছে; টাংগাইল সদরে অবস্থিত আমাদের সেই সন্তোষ জাহ্নবী স্কুলের কথা। যেখানে একদিন কবি মুজাফ্ফর আলী তালুকদারের বাংলা ক্লাস করেছি। যার কাছ থেকে সাহিত্য ক্ষেত্রে বরাবরই উৎসাহ পেয়েছি। যার প্রেরণা ও সহযোগিতায় আমরা ১৯৮৮ সালের বন্যার সময় অর্কিড নামক সর্বপ্রথম একটা সাহিত্য সংকলন বের করেছিলাম। এরপর প্রায় ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত টাংগাইলের সাহিত্যাংগনে আমরা সফলতার সাথে বিচরণ করেছি। অতপর ঢাকায় বলতে গেলে প্রায় স্থায়ীভাবে বসবাস করছি। আজ আমাদের সেই স্যার মুজাফ্ফর আলী তালুকদার মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত। কথাটা জানলাম; হঠাৎ তাঁর কাছ থেকে একটা মোবাইল কল পেয়ে। বললেন, তুমি লিটন, (আমার ডাক নাম)। গলার আওয়াজ শুনে সাথে সাথেই বুঝতে পারলাম, স্যার। বললাম- স্যার, আচ্ছালামুআলাইকুম। কেমন আছেন? তুমি আমার কথা জান? বললাম- কিছুদিন আগে বলেছিলেন- আপনি অসুস্থ, চিকিৎসা চলছে। তিনি বললেন- আমার খাদ্য নালীতে সমস্যা এবং বর্তমানে ক্যান্সারে আক্রান্ত, ক্যামোথেরাপী চলছে। তুমি আজকের সমকাল পত্রিকার এক কপি কিনে রেখো। আর যদি ব্ন্ধু- বান্ধবরা মিলে একটা ফান্ড তৈরি করতে পার, তবে বিশেষ উপকার হতো। জানতো, আমার অর্থনৈতিক অবস্থা দুর্বল। এতদিন সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরস্থ একটা হাসপাতালে চিকিৎসা করেছি। সামনের সপ্তাহে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আসবো।

তখন আমি আমাদের স্কুলে, লেজার পিরিয়ডে পাঠ-পরিকল্পনা তৈরি করছিলাম। এরপর গতকাল (৫-৭-১২ ইং) সন্ধ্যার পর অনেক কষ্ট করে অর্থাৎ শবেবরাতের রাত মানুষের ঢল আর গাড়ির জটলা পেরিয়ে মিরপুর ১২ নম্বর থেকে ১১ নম্বর গিয়ে স্যারের কথা মতো একটা পেপার কিনে দেখলাম; তার লেখা সাহিত্য বিষয়ক কোন আর্টিকেল নাই। ভাবছিলাম, অসুস্থতার আগে তিনি টাংগাইলের লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে কাজ করছিলেন। এ জন্য বছর দেড়েক আগে তিনি একজন তরুণ সাহিত্য প্রেমীকে সাথে নিয়ে আমার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় ডাটা সংগ্রহ করেছিলেন। পত্রিকা খুলে খালি চোখে তেমন কিছু দেখলাম না। বর্তমানে আমার চোখের পাওয়ার আগের থেকে অনেক কমেছে। সাথে চশমা না থাকায় খালি চোখে কোন লেখা দেখা বেশ কষ্টকর। তবুও একটা পত্রিকা কিনলাম। কারণ স্যার বলেছেন, একটা কপি কিনে রাখতে। যদিও ইন্টারনেট থেকে সবই পাওয়া যায়। তবুও স্যার বলেছেন। আর পত্রিকায় কি এসেছে তাও তিনি স্পেসিফিক কিছু বলেননি। বাসায় এসে পেপারটা তন্য তন্য করে খুঁজে দেখি- ১৭ নং পৃষ্টার ৮ম কলামের নিচ দিকে তার অসুস্থতার কথা এবং সাহায্য করার আবেদনটা সংক্ষিপ্ত আকারে হলেও বড়ই সুন্দর করে ছেপেছেন । আমি এ জন্য সমকাল পত্রিকার কতৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞ।

এখন চিন্তা করছি; কিভাবে আমি ফান্ড তৈরির উদ্যোগ নেই। আমার ঘনিষ্ট বন্ধু সতীর্থ দেলওয়ার হোসেন বাবনও আজ কুয়েতে স্বকীয় চাকুরীতে। ওকে একটা ফোন দিতে হবে। রফিকুল ইসলাম ভাইও টাংগাইলে। এখন তার সাথেও তেমন কোন যোগাযোগ নাই। এছাড়াও বর্তমানে আমি নিজেও রূহানী মেথডের গবেষণার জন্য বই-পুস্তক আর কম্পিউটার নিয়ে বলতে গেলে সীমিত জীবন যাপন করছি। স্কুলের পর বাসায় এসেই পারিবারিক বিশেষ কাজ ব্যতীত বেশির ভাগ সময়ই লেখালেখি নিয়ে পড়ে থাকি। গবেষণা শেষ। এডিটিং চলছে। বিষয়টা স্যারও জানেন- তিনি এ সম্পর্কে কিছু মন্তব্যও লিখেছিলেন। যা পরবর্তীতে তুলে ধরার ইচ্ছা রাখি।

আমিও বর্তমানে অর্থনৈতিক ভাবে এমন সাবলম্বী নই যে স্যারকে ব্যক্তিগত ভাবে বিশেষ কোন অর্থনৈতিক সাহায্য করবো। আসলে বাংলাদেশের বেশির ভাগ লেখকদের অবস্থা এমনই যে তারা নিজেরা উদ্যোগী হয়েই সাহিত্য সেবা করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে অর্থ জমানোর চেয়ে অর্থ ব্যয়ই বেশি হয়। যেমন- আমি ইচ্ছা করলে; স্কুলের বাইরের সময়ে রূহানী মেথড নিয়ে পড়ে না থেকে প্রাইভেট নিয়ে পড়ে থেকে অথবা হাকিমী চিকিৎসা করে কিছু অতিরিক্ত টাকা-পয়সা রোজগার করতে পারি। কিন্তু আমার বিবেক বলে, আমি আমার লেখার মাধ্যমে যদি দেশ ও জাতিকে সত্যিকারের কিছু দিতে পারি, তবে সেটাই আমার জন্য সবচেয়ে বড় কাজ। কাজ সম্পন্ন হলে, দেশ ও জাতি এবং বিশ্ববাসী আমার এ গবেষণাকে সাদরে গ্রহন করলে হয়তো, একদিন এ দৈন্যতা থাকবে না।ইনশা-আল্লহ। তদ্রুপ স্যারও তেমনি অকাতরে আলো বিলিয়েছেন, তাঁর অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী, তরুণ কবি, সাহিত্যিক এবং লেখকদের মাঝে।

এখন আমার চিন্তা হলো, আমি স্যার কে কিভাবে একটু হলেও উপকার করতে পারি। মনে আসলো, স্যামহোয়্যার ইন ব্লগের কথা। যেখানে বিভিন্ন সময় কত মানুষ এর ব্যাপারে সাহায্য সহযোগিতার বিষয়টা স্টিকি করে দেখানো হয়। তাহলে, আজই কিছু লিখতে হবে। সবাইকে জানাতে হবে, স্যারের অসুস্থতার কথা। মহান আল্লহপাক অনেককে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করেছেন, তারা যদি আমার স্যারের সুচিকিৎসার জন্য এগিয়ে আসতে পারেন, তবে তো একটা বিশেষ সওয়াবের কাজ হয়। যে উপকার এমন একজন নাগরিককে করা হবে, যিনি দেশ ও জাতির সম্পদ। যারা মানুষের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করেন এমন একজন মানুষ; একজন শিক্ষক, কবি ও সাহিত্যিক জনাব, মুজাফ্ফর আলী তালুকদার। তাঁর রোগ মুক্তির জন্য দু’আ করা এবং যতটুক সম্ভব চিকিৎসা সেবায় অর্থনৈতিক সাহায্যে এগিয়ে আসা বিশেষ প্রয়োজন।

যোগাযোগ- মুজাফফর আলী তালুকদার । সঞ্চয়ী হিসাব নং-8926. জনতা ব্যাংক- নারান্দিয়া, টাংগাইল। মোবাইল নং -01728909135. ।।
সমকাল পত্রিকার লিংক ও তথ্য।
http://www.esamakal.net/index.php?opt=view&page=17&date=2012-07-05
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুলাই, ২০১২ রাত ৮:৪০
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছবির গল্প, গল্পের ছবি

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:১৫



সজিনা বিক্রি করছে ছোট্ট বিক্রেতা। এতো ছোট বিক্রেতা ও আমাদের ক্যামেরা দেখে যখন আশেপাশের মানুষ জমা হয়েছিল তখন বাচ্চাটি খুবই লজ্জায় পড়ে যায়। পরে আমরা তাকে আর বিরক্ত না করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে লীগ আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে জামাত

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬


বাংলাদেশে রাজনৈতিক ছদ্মবেশের প্রথম কারিগর জামাত-শিবির। নিরাপত্তার অজুহাতে উনারা এটি করে থাকেন। আইনী কোন বাঁধা নেই এতে,তবে নৈতিক ব্যাপারটা তো অবশ্যই থাকে, রাজনৈতিক সংহিতার কারণেই এটি বেশি হয়ে থাকে। বাংলাদেশে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঙ্গালির আরব হওয়ার প্রাণান্ত চেষ্টা!

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:১০



কিছুদিন আগে এক হুজুরকে বলতে শুনলাম ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে নাকি তারা আমূল বদলে ফেলবেন। প্রধানমন্ত্রী হতে হলে সূরা ফাতেহার তরজমা করতে জানতে হবে,থানার ওসি হতে হলে জানতে হবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৪৩

সেকালের পাঠকপ্রিয় রম্য গল্প "অদ্ভূত চা খোর" প্রসঙ্গে

চা বাগানের ছবি কৃতজ্ঞতা: http://www.peakpx.com এর প্রতি।

আমাদের সময় একাডেমিক পড়াশোনার একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য ছিল। চয়নিকা বইয়ের গল্পগুলো বেশ আনন্দদায়ক ছিল। যেমন, চাষীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অবিশ্বাসের কি প্রমাণ আছে?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৬ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩১



এক অবিশ্বাসী বলল, বিশ্বাসের প্রমাণ নাই, বিজ্ঞানের প্রমাণ আছে।কিন্তু অবিশ্বাসের প্রমাণ আছে কি? যদি অবিশ্বাসের প্রমাণ না থাকে তাহলে বিজ্ঞানের প্রমাণ থেকে অবিশ্বাসীর লাভ কি? এক স্যার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×