তো প্রেমে তো পড়েই গেলাম। মেয়ের নাম আকলিমা। দেখতে একটু কালো হলেও মাসাল্লা রকম সুন্দর। কাজল টাইপ। দুপুর রোদে ছাদের মধ্যে বসে থাকি বিজ্ঞান বই নিয়ে। ভাবটা হল ঘরে পড়তে পড়তে বোরড। তাই ছাদে এসে....বসে আছি বিজ্ঞানী হওয়ার জন্য। আসলে ব্যাপারটা হল কখন মাইয়া আসবে কাপড় শুকাতে, আমাকে দেখে একটু তাকাবে, একটু হাসবে। আমি দেখব তার সৌন্দর্য।
তখন ক্লাশ টেনে পড়ি। টাকা পয়সার দরকার। কিন্তু কি করি? প্রেম প্রকাশ করতে গেলেও তো টাকা লাগবে। কি করব? মহা চিন্তার মধ্যে আছি। একদিন এক বড়ভাই কে বল্লাম কি করা যায়? বড়ভাই অনেক চিন্তাভাবনা কইরা কইল-আলু -তুই তরকারির বিজনেস কর। আমার মনটা খারাপই হয়ে গেল। কেউ সিরিয়াস ভাবে নেয় না আমারে। যার নাম আলুমিয়া -তারে সিরিয়াস ভাবে নেয়ার কিছু নাই। কি আর করা....ভাবতে ভাবতে মনে হয় সামনে রাখা খাতার উপর কয়েক কোটিবার আকলিমা, আলিমা, কলিমা, মাকআলি লিখে ফেলেছি। হঠাৎ দেখি চুলের উপর রাম টান।
আরে ধ্যাত শেয়াল কোথা.........
আমার বাপটা দাড়িয়ে হোতা....
আমার বাপ আমার জন্মকে নাজায়েজ উপায়ে বর্ননা করে আমাকে পিতা পরিচয় থেকে বন্চিত করল। অবশ্য আমি এতে কখনই কিছু মনে করিনাই। কারন এটা তার ও তার স্ত্রীর ব্যপার। যাহোক - আমি কই কম্ম কাবার। বাপরত্নটি এমন এক চটকনা দিল যে-মনে হল আক্কেল দাত খানা মনে হয় বাপ বাপ করে উঠল। উনার আরও গোটা কতক কিল, ও ঘুসির ফলে- মন থেকে আকলিমা বাষ্প হয়ে বেরিয়ে গলে। রয়ে গেল তার সৃত্মি। তার ঘামানো বগলের প্রতিচ্ছবি। তারা শুকানো ফাটা পায়ের অমলিন হাসি। আমি মজনু হয়ে গেলাম। মজনু হলে তো নেশা করতে হয়। আমারও নেশা করতে হবে। আমার পিতাকে দেখিয়ে দিতে হবে-কি ক্ষতি সে আমার করেছে। কিন্তু নেশা করতেও ত টাকা লাগে। পকেটে ১টাকা ২৫পয়সা আছে। বের হলাম উন্মত্ত হয়ে। গলির সামনে টংয়ের দোকান। গোল করে কাটা একটা কার্ডবোর্ডে লেখা.....
তামাক আর ফিল্টার
দুজনে দুজনার।- উইলসকিংস।
এইত চাই।
কিনলাম একটা সিগারেট। আগুনওলা দড়িটা টেনে নিয়ে ধরালাম, দিলাম একটা টান। পাশ থেকে কেউ যেন দোকানদার বলল- আধাপোয়া মুসুরের ডাল দেন। তাকিয়ে দেখি আকলিমা।
এখন পিছন ফিরে যখন দেখি - তখন নিজেকে ভাদ্র মাসের কুকুর মনে হয়।
[email protected]
Ontario, CANADA.
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:৪৩