প্রতিদিন সময়ের অনেকটা যায় দৈনিক পত্রিকাগুলো পড়ে। প্রতিদিনই বেশ কয়েকটা খুনের খবর পড়তে হয়। রাহাজানি, ছিনতাই, কালো বেড়াল, ইত্যাদীতো পড়েই আছে। এসব দেখে মন খারাপ হয়। খারাপ লাগে দেশের মানুষগুলো এত কষ্টে আছে। কিন্তু কেন যেন ইলিয়াস আলী কথাটা শুনে মন খারাপ হয়নি। বরং ইলিয়াস আলীকে নিয়ে ব্লগারদের লেখাগুলো দেখে মনে হয়েছে -এরা এত সহজে ভুলে যায় কি করে।
প্রথম যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকি - ইলিয়াস আলি আর অভির কি দাপট। বন্ধুক যুদ্ধ এদের কাছে তখন ছেলেখেলার মত। একদিন মনে আছে - এরা মনের সুখে গোলাগুলি করছে আর আমরা লেকচার থিয়েটারের বারান্দায় উপুর হয়ে শুয়ে আছি। কোথাও যেতে পারছি না আর টিয়ার গ্যাসের ঝাঝে জান যায় যায়। রাত নয়টা কি দশটার দিকে আই বি এ ভবন টপকিয়ে কোনভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হই। পরের দিন পেপারে দেখলাম একজন ছাত্র নিহত। এটা প্রায়ই হত। আমার এতকিছু ভাল করে মনে নেই -তবু মনে হয় ইলিয়াস সাহেবকে এর কিছুদিন পর ইউনিভারসিটি থেকে বের করে দেয়া হয়। তবুও পরবর্তিতে ইনিই হন ছাত্রদলে নেতা।
আমি হয়ত ভুল হতে পারি। গ্রামে গন্জে থেকে ঢাকার রাজনীতি বোঝা বড় দায়। বিরোধিদল বলছেন - সরকার ইলিয়াস আলিকে গুম করেছেন। লোকে দেখেছে। তাদের মত অনুযায়ী তারা কালো বিড়ালের ঘটনা ধামাচাপা দিতে চান। কিন্তু আওয়ামি রাজনীতিত সেটা বলে না। তারা ইচ্ছা করলেই জামাতের নেতাদের গুম করে ফেলতে পারত। বংগবন্ধুর হত্যাকারীদের গুম করে ফেলতে পারত। সেটা তারা করেনি। গ্রেনেড হামলা, কিবরিয়ার হত্যাকারী বলে কাউকে ধরে গুম করে ফেলতে পারত। তারা সেটা করেনি। তাহলে ইলিয়াস আলি কেন-আর এত মানুষ থাকতে। আচ্ছা ব্যাপারটাত জামায়াতও করতে পারে। এখন আওয়ামী লীগ আর বিএনপি মধ্যে গোলযোগ লেগে দেশে অস্হিরতা সৃষ্টি হলে জামাতের চেয়ে বেশি আর কে খুশি হবে। তবু তর্কের খাতিরে ভাবলাম জামায়াত করেনি(!)। এত বড় একজন নেতা(!)। উনার যেমন প্রচুর বন্ধু তেমন শত্রুর ও ত অভাব হওয়ার কথা না। আবার উনি ব্যাবসায়ি(!)। এই কিছুদিন হল এক বিশাল বাড়ি করেছেন। উনার ব্যাবসায়ের শত্রুওত থাকতে পারে। তাই আরেকটু খোজ খবর করে তারপর হরতাল দিলে হত না?
বিরোধিদল হরতাল দিয়েছেন। সারাদেশ তাদের কথায় হরতাল পালন করবে। একজন মানুষের জন্য হাজার হাজার লোকের দৈনিক রোজগার বন্ধ হয়ে যাবে। হাজার হাজার বাচ্চারা না খেয়ে থাকবে। এটা কোন ব্যাপার না। হরতাল হলেত শুধু সরকার আর সরকারী দলের ক্ষতি। কারন বিরোধীদলতো দেশের খারাপ করতে পারেন না। একজন নেতার জন্য এটা কোন ত্যাগই না। হাজার হাজার মানুষ না খেয়ে থাকলেও একজন ইলিয়াস ফিরে আসলে দেশের অনেক ভাল হবে। ইলিয়াসের মায়ের কান্না হয়ত থামবে।
ইলিয়াছ সাহেবের মায়ের কান্নার কথা পেপার ছাপা হয়েছে। আমি জানি - মা, আপনি অনেক কষ্ট পাচ্ছেন। আমি জানি - মায়েদের কত কষ্ট হয়। আমি আমার নিজের মাকে দেখেছি - বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিরতে দেরি হলে - না খেয়ে বসে থাকতেন। আমি বাবা। আমার ছেলের একটু অসুখ করলেই নিজের কিছুই ঠিক থাকে না। কিন্তু মা - আপনিকি কখনো আপনার ছেলেকে বকেছেন - ওর জন্য আর কত মায়ের ছেলে মারা গেছে। আপনি হয়ত বকেছেন। আমরা জানি না। আল্লাহ আপনাকে শক্তি দিন সহ্য করার যেমন দিয়েছেন আরও অনেক মাকে- যাদের বুক আরও অনেক আগেই খালি হয়ে আছে আপনার ছেলের জন্য।
আমি আশাবাদি। আমি চাই ইলিয়াস আলি ফিরে আসুক। সুস্হ স্বাভাবিক ভাবে ফিরে আসুক। (না, উনার স্ত্রীর মত বলব না - লাস হলেও ফিরিয়ে দিন)। আমি চাই উনি ভাল থাকুন।
আমার কিন্তু সপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে...........
হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে.....
দেখা হবে তোমায় আমায় অন্য গানের ভোরে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০১২ সকাল ১০:৪৯

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




