শিশুদের জলবসন্ত হলে ভয়ের কিছু নাই শুধু কিছু নিদের্শ মেনে চললেই হলো।
বসন্ত এলে শিশুদের চিকেন পক্স বা জলবসন্ত রোগের প্রকোপ বাড়ে। এটা ভাইরাসজনিত রোগ এবং সংক্রামক। তাই স্কুল-বাড়ি-পাড়ায় এক শিশুর শরীর থেকে দ্রুত আরেক শিশুর মধ্যে ছড়ায়। প্রথম দুয়েক দিন শরীরে সামান্য ব্যথা, জ্বর থাকে। তারপর সারা শরীরের ত্বকে গুটি গুটি দানা বেরোয়। সেগুলো প্রথমে লালচে থাকলেও আস্তে আস্তে পানিতে ভরে ওঠে এবং তাতে প্রচণ্ড চুলকায়।
জলবসন্ত এমনিতে সাধারণ অসুখ। এতে ভয়ের কিছু নেই। কিন্তু এ থেকে কিছু জটিলতা হতে পারে। যেমন ত্বকের সংক্রমণ। এছাড়া এ সময় পুষ্টির অভাব হতে পারে, রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে পারে। জলবসন্ত হলে শিশুর যত্ন, পথ্য ও চিকিত্সা নিয়ে এখনও অনেকের ভুল ধারণা আছে। জেনে নিন এ বিষয়ে কিছু তথ্য :
১। জলবসন্তে কী কী খাওয়া নিষেধ?
আসলে কোনো নিষেধ নেই, যদিও আমাদের দেশে অনেকেই এ সময় শিশুকে মাছ-মাংস খেতে দেন না। কিন্তু বাস্তবতা হল, এ সময় শিশুর বেশি বেশি পুষ্টি প্রয়োজন হয়। তাই প্রোটিনসহ সব ধরনের খাবারই তাকে খেতে দিন। প্রচুর পানি ও তরল খাবার দিতে হবে।
২। জলবসন্তে আক্রান্ত রোগীদের গোসলে উপকরিতা কি ?
অনেকেই জলবসন্তে আক্রান্ত শিশুর গায়ে পানি লাগাতে দেন না। কিন্তু প্রতিদিন গোসল করানো ভালো। কারণ, পানিসহ গোটাগুলো ভাইরাসে পূর্ণ। একটা ফোসকা ফেটে গেলে সেই তরল যেখানে স্পর্শ করে সেখানেই আবার সংক্রমণ হয়। প্রতিদিন পরিষ্কার পানি দিয়ে গোসল করালে সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটা কমে যায়।
৩। বদ্ধ ঘরে কত দিন থাকতে হবে ?
বাইরের বাতাস গায়ে লাগাতে বারণ নেই। ঘরের দরজা জানালা খুলে দিন বা খুলে রাখুন। হালকা করে পাখা দিয়ে বাতাস করুন ফ্যান ছাড়ুন। তবে এই অসুখ নিয়ে স্কুলে যাওয়ার কোন দরকার নেই। কেননা অন্য শিশুরা আক্রান্ত হতে পারে বা হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তা ছাড়া রোগীর বিশ্রামেরও প্রয়োজন আছে।
৪।চুলকানিতে কেন খোঁচাখুঁচি নয় ?
শিশুর নখ ছোট ছোট করে কেটে দিন, যাতে সে চুলকানি হলে নখ দিয়ে যেন খুঁটতে না পারে। কেননা তাতে ত্বকে সংক্রমণের আশঙ্কা থাকে।
৫।কোন অ্যান্টিবায়োটিক কি লাগবে?
ভাইরাসজনিত রোগে অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো ভূমিকা নেই। তবে জ্বর বাড়লে এবং গোটাগুলো হলুদ হয়ে গেলে বুঝতে হবে ত্বকে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ হয়েছে। সেক্ষেত্রে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক দিন।
৬। জলবসন্তের কি কোন টিকা আছে ?
চিকেন পক্স বা জলবসন্তের প্রতিষেধক বা টিকা এখন সহজলভ্য বা অনেক ডাক্তার দোকান অথবা হাসপাটালে পাওয়া যায়। এখনও আপনার শিশুকে টিকাটি না দেয়া হয়ে থাকলে আপনার শিশুকে এই টিকাটি অতি সিগ্রই দিয়ে দিতে পারেন।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ।
তথ্যসূত্রঃ
অধ্যাপক তাহমীনা বেগমের লেখা,সকালের খবর থেকে নেয়া
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই মার্চ, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:১৪