রবিবার ১০ ফেব্রুয়ারী বিকাল সাড়ে চারটায় বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ সংলগ্ন সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী নামধারী কতিপয় সশস্ত্র সন্ত্রাসীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে এ.আই.ইউ.বির CSE ডিপার্টমেন্টের শেষ বর্ষের আবীর নামের একজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হন। এসময় তাকে বাঁচাতে গিয়ে তার সাথে থাকা একই ডিপার্টমেন্টের আরো ৪ জন শিক্ষার্থী সন্ত্রাসীদের সাথে সংঘর্ষে আহত হন।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একজন ভাসমান চা-বিক্রেতার ভাষ্যমতে, আজ বিকেল আনুমানিক ৪ টার দিকে আবীর ও তার কয়েকবন্ধু মিলে সাউথ-ইস্ট ও এ.আই.ইউ.বি সংলগ্ন একটি টং থেকে সিগারেট কিনতে গেলে দোকানীর সাথে খুচরা ফেরতের ব্যাপারে আবীরের তর্ক বাধে। এসময় পাশে দাড়িয়ে থাকা সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির দুস্কৃতিকারী শিক্ষার্থী বেশধারী কিছু ব্যক্তি আবীরকে লক্ষ্য করে অনাকাঙ্খিত মন্তব্য ছুড়ে দিলে তিনি প্রতিবাদ করেন এবং তর্কে জড়িয়ে পড়েন। বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে সাউথ ইস্ট-এর দুস্কৃতিকারীরা উত্তেজিত হয়ে আবীরের গায়ে হাত তোলে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের চলাকালে সন্ত্রাসীরা টং দোকানদারের সহযোগীতায় রামদা বের করে আবীরকে উপর্যপুরি আঘাত করলে তিনি হাতে, পিঠে ও গলার কাছে গুরুতর আঘাত পান। সংখ্যাধিক্যের ও অতিউত্সাহের বশবর্তী হয়ে ঐমুহুর্তে সাউথ ইস্টের আরো কিছু শিক্ষার্থীও আবীরের সাথে বন্ধুদের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এদিকে ঘটনাস্থল সংলগ্ন এ.আই.ইউ.বির EEE ক্যাম্পাসে এই খবর পৌছলে উত্তেজিত এ.আই.ইউ.বিয়ানরা তত্খনাত ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে দুষ্কৃতিকারীরা দৌড়ে সাউথ ইস্টের ক্যাম্পাসের ভেতর ঢুকে পড়ে। একে একে এ.আই.ইউ.বির CSE, BBA ও Campus 7 থেকে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এসময় কামাল আতাতুর্ক সংলগ্ন পুরো এলাকা সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্রশুন্য হয়ে পড়ে।
ঘটনার পর রহস্যজনক ভাবে সাউথ ইস্ট কর্তৃপক্ষ ক্যাম্পাসের মেইন গেট বন্ধ করে দুস্কৃতিকারীদের অন্যত্র সরিয়ে দেয়। এতে করে ঘটনাস্থলে উপস্থিত এ.আই.ইউ.বিয়ানরা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে গুলশান থানা থেকে পুলিশ এসে উপস্থিত হয়েও কিছু করতে না পেরে এ.আই.ইউ.বি অথিরিটির সহায়তা কামনা করে। পুলিশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবং অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে AIUB Office of Student Affairs এর স্পেশিয়াল এসিস্ট্যান্ট সানিয়াত রহমান জিসান ও ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্টের অফিস এক্সেকিউটিভরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উত্তেজিত এ.আই.ইউ.বিয়ানদের নিবৃত্ত করেন ও ইলেকট্রিক্যাল ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন।
আহত আবীর ও তার বন্ধুদেরকে ভার্সিটি ম্যাডিকেল সেন্টারে প্রাথমিক চিকিত্সা দেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাসায় ফেরৎ পাঠানো হয়েছে। CCTV footage, মোবাইলে ধারণকৃত ছবির ভিত্তিতে প্রকৃতঅপরাধীদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়ে এ.আই.ইউ.বি অথরিটি শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলো। এব্যাপারে এ.আই.ইউ.বি অথরিটি মামলা গ্রহনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে অফিস সুত্রে জানা যায়।
AIUB-তে বর্তমানে বিভিন্ন অনুষদে প্রায় সাড়ে দশ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। প্রশাসনিকভবন সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি ক্যাম্পাসের সবগুলোই বনানীর কামাল আতাতুর্ক এভিনিউতে অবস্থিত। দেশের প্রথম সারির এবং বনানীস্থ সবচাইতে বড় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্বেও এ.আই.ইউ.বিয়ানরা সব সময়েই প্রতিবেশী ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সাথে সহাবস্থানে থেকে এসেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলোর মাধ্যমে একটি মহল এ.আই.ইউ.বিয়ানদের সেই সহাবস্থান সূচক চিন্তাধারা থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে উস্কানি দিচ্ছে বলে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা জানান। আগামী ডিসেম্বরে বসুন্ধরার নির্মাণাধীন নিজস্ব ক্যাম্পাসে চলে যাওয়ার আগে এমন ঘটনা আরো ঘটলে এবং আজকের ঘটনার জন্যে দোষী সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা না করলে অচিরেই এ.আই.ইউ.বিয়ানরা সব ধরনের সহাবস্থান ভুলে গিয়ে যথাযথ ভুমিকায় অবতীর্ন হতে দ্বিধা করবেনা বলেও শিক্ষার্থীরা হুশিয়ারী দেন।
এ কোন ধরনের মধ্যযুগিও বর্বরতা ! ! সাউথ ইস্ট ইউনিভার্সিটির সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় আহত ৫ এ.আই.ইউ.বিয়ান ।
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
=স্মৃতির মায়ায় জড়িয়ে আছে মন=

ঘাস লতা পাতা আমার গাঁয়ের মেঠো পথ, ধানের ক্ষেত
জংলী গাছ জড়ানো লতাবতী - আহা নিউরণে পাই স্মৃতির সংকেত,
রান্নাবাটির খেলাঘরে ফুলের পাপড়িতে তরকারী রান্না
এখন স্মৃতিগুলো পড়লে মনে, বুক ফুঁড়ে বেরোয় কান্না।
ফিরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইউনুস সাহেবকে আরো পা্ঁচ বছর ক্ষমতায় দেখতে চাই।

আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি পুরো ১৫ মাস ধরেই ছিলো। মব করে মানুষ হত্যা, গুলি করে হত্যা, পিটিয়ে মারা, লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারা, পুলিশকে দূর্বল করে রাখা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...
হাদির যাত্রা কবরে, খুনি হাসছে ভারতে...

হ্যাঁ, সত্যিই, হাদির চিরবিদায় নিয়ে চলে যাওয়ার এই মুহূর্তটিতেই তার খুনি কিন্তু হেসে যাচ্ছে ভারতে। ক্রমাগত হাসি।... ...বাকিটুকু পড়ুন
'জুলাই যোদ্ধারা' কার বিপক্ষে যুদ্ধ করলো, হ্তাহতের পরিমাণ কত?

সর্বশেষ আমেরিকান ক্যু'কে অনেক ব্লগার "জুলাই বিপ্লব" ও তাতে যারা যুদ্ধ করেছে, তাদেরকে "জুলাই যোদ্ধা" ডাকছে; জুলাই যোদ্ধাদের প্রতিপক্ষ ছিলো পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, ছাত্রলীগ; জুলাই বিপ্লবে টোটেল হতাহতের... ...বাকিটুকু পড়ুন
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল কারা এবং ক্রোধের আক্রশের শিকার কারা ?
হাদিকে মারল জামাত/শিবির, খুনি নাকি ছাত্রলীগের লুংগির নীচে থাকা শিবির ক্যাডার, ডাকাতি করছিল ছেড়ে আনলো জামাতি আইনজীবি , কয়েকদিন হাদির সাথে... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।