somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রহস্যান্বেষী সিরিজ (এপিসোড ১); পৃথিবির বিখ্যাত কিছু রহস্যময় এবং রহস্যেঘেরা স্থান

৩১ শে অক্টোবর, ২০১৪ রাত ১১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রহস্যের আকর্ষন দুর্নিবার। মানুষ মাত্রই তার হাতছানিতে সম্মোহিত হয়ে পড়ে। যুগে যুগে কালে কালে শুধুমাত্র রহস্যভেদ করার আকাংখা নিয়ে ঘর ছেড়েছে বহু মানুষ। কেউ কেউ তাদের মধ্যে লক্ষ্যে পৌছাতে পেরেছে আবার বহু জানা অজানা মানুষ হারিয়ে গেছে কালের অতলে। রহস্য তৈরি হয় মানুষের মুখে মুখে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নগন্য কোন ঘটনাকে বহুকাল ধরে ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে রহস্যের মোড়ক দেয়া হয়। আর কিছু আছে সত্যিকার প্রাকৃতিক রহস্য।
মানুষ আবার নিজে রহস্য তৈরি করে বিভিন্ন প্রয়োজনে। জবাবদিহিতার অভাবে এটা তৈরি হতে পারে, দেশের প্রয়োজনে হতে পারে, শাসনের প্রয়োজনে হতে পারে, নিরাপত্তার জন্য হতে পারে। মোট কথা পৃথিবীতে রহস্য ছিল, আছে, থাকবে। কোনটা ভেদ হবে, কোনটা আবার চিরকাল রহস্যই থেকে যাবে।
আমাদের এই পৃথিবিতে অগনিত স্থান আছে যা প্রত্যেক বছর লক্ষ লক্ষ দর্শককে আকর্ষন করে। পৃথিবির এক প্রান্ত হতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত আবার এমন বহু জায়গা বা বস্তু বা ইনফ্রাস্ট্রাকচার আছে, যার অস্তিত্ব বহু লোকের অজানা। এইসব জায়গা অগনিত গোপনীয়তার আঁতুড়ঘর।
জানতে ইচ্ছা হয়? চলুন কয়েকটা বিখ্যাত(!) রহস্যঘেরা জায়গা সম্পর্কে জেনে নিই। আসল রহস্য হয়ত কোনদিন জানতে পারব না, কিন্তু এটাতো জানা হবে যে, জায়গাগুলো আর দশটা স্থানের মত না। মনে মনে কল্পনা করে নেব সেখানে কি হয়! জায়গাগুলো ঘিরে মানুষের মুখে মুখে যে মিথ বা তত্ত্ব প্রচলিত আছে তা নিজের মত করে ভেবে নেব। রহস্য তাতে ভেদ হবে না ঠিকই কিন্তু দুধের স্বাদ ঘোলে তো মিটবে।

১. ইয়ংবিয়ন নিউক্লিয়ার সায়েন্টিফিক রিসার্চ সেন্টার, উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়ার ইয়ংবিয়ন নিউক্লিয়ার সায়েন্টিফিক রিসার্চ সেন্টার সম্ভবত বিশ্বের সর্বাধিক গোপন স্থানের লিস্টে প্রথমদিকে থাকবে। প্রথমত এই ফ্যাসিলিটি এমন দেশে অবস্থিত যেখানে যে কোন বিদেশী নাগরিকের প্রবেশ নিষিদ্ধ, আর এই প্রধান পারমানবিক স্থাপনা বিশ্বের অবশিষ্ট সব দেশের কাছ থেকে গোপন রাখা হয় ১৯৭৯ সালে এর নির্মানের সময় থেকেই। ৬ বছর পরে ১৯৮৫ সালে যখন এর ৫ মেগাওয়াট নিউক্লিয়ার রিয়েক্টরে সমস্যা দেখা দেয়, তখনই মাত্র সারা বিশ্বের মানুষ এই স্থাপনার অস্তিত্ব সম্পর্কে জানে।
জনশ্রুতি অনুযায়ী এই পারমানবিক স্থাপনা ১৯৯৪ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয় উত্তর কোরিয়া এবং আমেরিকার মধ্যে এক চুক্তি অনুযায়ী। কিন্তু ২০০২ সালে চুক্তি ভংগ হয়ে গেলে আবার স্থাপনাটি তার কাজ পুনরারম্ভ করে।
২. জলমগ্ন ধ্বংসস্তূপ, জাপান

আপনি যদি বিশ্বের সবচেয়ে উৎসাহী স্কুবা ডাইভার হন, তারপরেও আপনি সম্ভবত ইয়নাগুনির দক্ষিন উপকূলে শতাব্দী প্রাচীন ধ্বংসস্তূপে যেতে পারবেন না। এটা বিশ্বের মধ্যে একটা অত্যন্ত গোপনীয় স্থান এবং এটা এতই রহস্যময় যে এর কোন অফিসিয়াল নামপর্যন্ত দেয়া হয়নি। ১৯৯৫ সালে পথভ্রষ্ট এক ডুবুরী এটা আবিষ্কার করে। জাপানের এই ধ্বংসস্তুপকে ভাবা হয় কোন ভৌগলিক ঘটনার ফল। যদিও এটা নিশ্চিত করা হয়েছে যে, এই ধ্বংসস্তূপ মানুষের হাতে গড়া।
এই দাবির পক্ষে তাহলে যুক্তিগুলো কি? ওখানে গিয়েছে এমন মানুষের সংখ্যা খুব নগন্য, সুতরাং এমন দাবি তুলতে গেলে কিছু ফটোগ্রাফের উপরই শুধু ভরসা করতে হবে। যেগুলোতে আছে দুর্বোধ্য ভাস্কর্য, খোদাই, জটিল সিড়িবিন্যাস, আর বিভিন্ন স্ট্রাকচারের এমন সব নিখুত বিন্যাস যা সাধারনত প্রকৃতিতে দেখা যায়না বরং মানবসৃষ্ট হলেই বেশি মানায়।

৩. লেক ভস্টক, এন্টার্কটিকা

প্রচণ্ড ঠাণ্ডা আর খুবই প্রতিকূল আবহাওয়ার কারনে এন্টার্কটিকা পৃথিবির সবচেয়ে কম জানা এবং সবচেয়ে রহস্যময় স্থান। এই রহস্যময় ভূখণ্ডের মাঝেও একটা জায়গা আছে যেটা রয়ে গেছে সবচেয়ে গোপনতাপুর্ন- লেক ভস্টক।
যখন লেকের পানির প্রথম স্যাম্পলের বিশ্লেষণ করে একেবার বিশুদ্ধ পানি পাওয়া গেল, তাতে করে কিন্তু বলা গেল না যে, অতীতে এখানে কোন ধরনের জীবনের অস্তিত্ব ছিল। প্রাথমিক ফলাফল যেখান থেকে এসেছিল তা ছিল ড্রিলের দাতের সাথে লেগে থাকা বরফ, সেই পানি না যা লেক থেকে উঠে এসেছিল ড্রিলের ফলে তৈরি হওয়া গর্ত পুর্ন করতে। এখন পর্যন্ত কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে, লেক ভস্টকের নিচের দিকের বিশ্লেষণে পরে একসময় না একসময় প্রমানিত হবে যে, এই লেক একসময় কিছু প্রজাতির আবাসস্থল ছিল যারা কিনা আনুমানিক ১৫ বিলিয়ন বছরের পুরানো।

৪. লেপটিস মাগনা, লিবিয়া

লিবিয়া বিশ্ব মানচিত্রে সম্ভবত গাদ্দাফির সৈন্য বাহিনীর আবাসস্থল হিসেবে বেশি পরিচিতি পেয়েছে ২০১১ সালে লিবিয়ান সিভিল ওয়ারের সময়, কিন্তু খুব কম লোকই জানে যে, লিবিয়াতে আছে প্রাচীন স্থাপত্যের এক অত্যাশ্চর্য ধ্বংসস্তুপের সংগ্রহ। রোম বাদে, লেপটিস মাগনা হল স্থাপত্য এবং ইতিহাসপ্রেমীদের আরেক তীর্থস্থান স্বরূপ।
এই জায়গায় প্রাচীন রোমান সাম্রাজ্যের এক নগরী ছিল সুতরাং এখানে যে বিখ্যাত এবং দর্শনীয় রোমান ধ্বংসস্তূপ পাওয়া যাবে তাতে আর আশ্চর্য কি!

৫. মাউন্ট ওয়েদার ইমারজেন্সি অপারেশন্স সেন্টার, আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র

যদি টপ সিক্রেট আন্ডারগ্রাউন্ড ফ্যাসিলিটির কথা বলা হয়, তবে খুব কমই মাউন্ট ওয়েদার ইমারজেন্সি অপারেশন্স সেন্টার ঘিরে থাকা রহস্যের সাথে তুলনায় যেতে পারবে। ওয়াশিংটন ডিসি থেকে প্রায় ৪৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই মিলিটারি বেসে জীবনধারণের জন্য এবং দীর্ঘসময় ধরে টিকে থাকার জন্য যে সব সরঞ্জামাদি দরকার তার সবই মজুদ আছে বলে ধারনা করা হয়। যারা এই ফ্যাসিলিটির ভিতরে কাজ করে, হাই র‍্যাংকিং অফিসিয়াল যারা কোন জাতীয় দুর্যোগের সময় সেখানে যাবার উপযুক্ত এবং যারা ফ্যাসিলিটিটা তৈরি করেছে একমাত্র তারাই জানে যে, এর অভ্যন্তরটা আসলে কিরকম(সেখানকার কমোড কি হাই, নাকি লো! কফি কি সবসময় ব্লাকই খেতে হয় নাকি হোয়াইটনারও মেশানো যায়, এইসব আরকি!!! হা হা হা )।
মাউন্ট ওয়েদার ইমারজেন্সি অপারেশন্স সেন্টার স্নায়ু যুদ্ধের সময় ১৯৫০ সালে তৈরি করা হয়। এখন পর্যন্ত এটা অপারেট করা হচ্ছে, “শেষ ভরসা” হিসেবে। এটার চার্জে আছে ফেডারেল ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট এজেন্সি স্টাফ (FEMA)। ইতোমধ্যেই, যখন প্রয়োজন হয় বেশিরভাগ ইউ এস টেলিকমিউনিকেশন ট্র্যাফিক এই ফ্যাসিলিটি থেকে নিয়ন্ত্রন করা হয়, যাতে ইমার্জেন্সির সময় ভালভাবে অপারেট করা যায়।(এত ভয় কেন ওদের? সবকিছু আগে থেকে তৈরি। কিছু হলেই গাট্টি বোচকা নিয়ে ঢুকে পড়বে ইদুরের গর্তে!!)

৬. গ্রুম লেক, নেভাডা

এই লেক রহস্যময় মাত্র এবং শুধুমাত্র একটা কারনেঃ এরিয়া ৫১। এই গোপন মিলিটারি বেসকে ঘিরে যত কন্সপিরেসি থিয়োরি, ডকুমেন্টারি, মুভি এবং একাডেমিক ডিবেট হয়েছে অর্ধ শতাব্দী ধরে, তা বিশ্বের অন্য কোন ফ্যাসিলিটি নিয়ে হয়েছে কিনা কে জানে! গ্রুম লেক নেভাডার দক্ষিন অংশে অবস্থিত, লাস ভেগাস থেকে ৮৩ কিলোমিটার দূরে। ওখানে কি চলেছে বা চলছে তা এখন পর্যন্ত অজানা। বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্টাল এয়ারক্রাফট এবং এডভান্স ওয়েপন্স সিস্টেম পরীক্ষা করা হয় বলে জানা যায় ওখানে। কিন্তু অনেক কন্সপিরেসি থিয়োরিষ্ট বলেন যে, এই ফ্যাসিলিটিতে ধ্বংসপ্রাপ্ত এলিয়েন স্পেসশিপ আছে এবং সরকার এখানে কাটিং এজ ইউএফও রিসার্চ চালাচ্ছে(ভাবতে তো আমারই ভাল লাগছে!! থ্রিল বোধ করছি। আমি এলিয়েন অস্তিত্বে বিশ্বাসী)। আমরা হয়ত কোনদিনই কিছু জানতে পারব না এই জায়গা সম্পর্কে।
বিনামুল্যে সবাইকে একটা উপদেশ দান করি, খবরদার ভুলেও কেউ গ্রুম লেকের কাছাকাছি যাবেন না। কারন গার্ডদের আদেশ দেওয়া আছে কাউকে দেখামাত্র গুলি করার(shoot on sight)। (সেনসিটিভ আমেরিকান সরকার!!!! ভাবুন তো, ওখানে বড় মাথা-বাকা চোখের কোন এলিয়েন আমেরিকান আর্মির কোন চার তারকা জেনারেলের সাথে বসে হুইস্কি খাচ্ছে। আর সাথে চলছে নতুন ধরনের অস্ত্র বা ফাইটার বিমান বা উচ্চগতির মহাকাশযান নিয়ে আলোচনা। ইন্টারপ্ল্যানেটরি রিলেশনশিপ আর কি!! ফায়দা লুটছে আমেরিকা, আর কাউকে লুটতে দেবে না তাই এই গোপনীয়তা! মজা না? ভাই, আমরা আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর নিয়ে আমাদের লাভ কি?)

৭. রিও টিনটো, স্পেন

স্পেনের কথা শুনলেই স্বাভাবিকভাবে মনে পড়ে যায় বুলফাইট, ম্যাটাডর আর মুখে জল আনা স্প্যানিশ ডিশের কথা। সেই স্পেনের সাথে মঙ্গল গ্রহের সাদৃশ্যের কথা শুনে চমকে উঠবেন না এমন লোক খুব কমই আছে। চমকে গেলেন? আহা, চমকাবেন না। আপনি তো আর আগে রিও টিনটোর নাম শুনেন নাই।
রিও টিনটো বিশ্বের আর এক রহস্যময় স্থান। স্পেনের দক্ষিণপশ্চিম অঞ্চলে এটা অবস্থিত, এই নদী লাল এবং উচ্চ অম্লীয় পানি দ্বারা প্রতিপালিত। আয়রন সহ প্রচুর খনিজ উপাদান আছে এই নদীর গভীরে; যেগুলো নদীটার বিবর্ন চেহারার জন্য দায়ী। রিও টিনটো নিয়ে যেসব বিজ্ঞানী গবেষণা করছেন তাদের কাছে এই নদীর অম্লত্ব এখনো ধাঁধা হিসেবে রয়ে গিয়েছে।

৮. উমেরা প্রোহিবিটেড এরিয়া, দক্ষিন অস্ট্রেলিয়া

ফ্যাসিলিটির নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে, এই জায়গা পিকনিক করার জন্য মোটেই আদর্শ জায়গা নয়। সেধে পড়ে কে ই বা নিজের পিতৃপ্রদত্ত প্রাণটা খোয়াতে চায় বলুন? খুব সিলেকটিভ কিছু লোকই কেবলমাত্র এখানে প্রবেশাধিকার রাখে। যদিও স্থাপনাটার বিশাল আকার আর অবস্থান একে গোপন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে কিন্তু এর হাইলি রেস্ট্রিকটেড এয়ারস্পেস এবং প্রকাণ্ড এক্সক্লুশন জোনই এই ফ্যাসিলিটিকে রহস্যের চাদরে মুড়ে ফেলার জন্য যথেষ্ট। খুব কম লোকই জানে যে, এই দানবীয় ওয়েপন্স টেস্টিং রেঞ্জে কি চলছে।

৯. আইস গ্র্যান্ড শ্রাইন, জাপান

দেশের উচ্চপদস্থ যাজক-যাজিকা এবং রাজবংশের লোক ছাড়া আর অন্য যে কোন কারও প্রবেশাধিকার সম্পুর্নভাবে নিষিদ্ধ এই শ্রাইনে(মঠ)। এটাকে বিবেচনা করা হয় জাপানের সবচেয়ে পুন্য এবং পবিত্র জায়গা হিসেবে। বলা হয় আইস গ্র্যান্ড শ্রাইন প্রত্যেক দুই দশকে একবার ভাঙ্গা এবং পুনঃনির্মান করা হয় শিন্টো দর্শন “মৃত্যু এবং পুনঃজন্ম”র প্রতি সম্মানবশত।
এই শ্রাইন সুর্যদেবী “আমাতেরাসু”র প্রতি উৎসর্গকৃত এবং ৪র্থ খ্রিস্টপুর্বাব্দ থেকে এখন পর্যন্ত এটা অবস্থান করছে। ধারনা করা হয় প্রধান মঠে জাপানের রাজবংশের ইতিহাসের একক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপুর্ন জিনিসটা রাখা আছেঃ নাইকু(Naiku)। এটা জাপানি মিথলজির একটা আয়না, যেটা জাপানের প্রথম সম্রাটের আশির্বাদপ্রাপ্ত। ( ঠিক আছে ভাই-বোনেরা, মনের সুখে আপনারা নিজেদের চেহারা দেখেন গিয়ে, আপনাদের কেউ মানা করবে না। কি মনে করছেন? আমার স্মার্টফোনের ফ্রন্ট ক্যামেরায়ও নিজের ছবি দেখা যায়। গেলাম না আপনাদের শ্রাইনে!!)

১০. গোপনীয় রাশিয়ান শহর “মেঝগোরী”

রাশিয়ায় মেঝগোরী নামে এক শহর আছে, যেখানে সকলের প্রবেশ নিষিদ্ধ। বিশ্বাস করা হয় শুধুমাত্র যারা কঠিন গোপনীয়তাপুর্ন মাউন্ট ইয়ামান্টাও সাইটে(আল্ট্রা সিক্রেট রিসার্চ ফ্যাসিলিটি হতে পারে অথবা পারমানবিক ফ্যাসিলিটি) কাজ করে, তারাই ঢুকতে পারে। ১৯৭৯ সালে এটা তৈরি করা হয়। শহরটি ৫,৩৮১ ফুট উঁচু, উরাল পর্বতশ্রেনীর সর্বোচ্চ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত, যেখানে আমেরিকান স্যাটেলাইটগুলো বিশাল স্কেলের খননকাজের ছবি রেকর্ড করেছিল। হতে পারে এটা কোন খনি কিংবা রাশিয়ান সম্পদের এক ভাণ্ডার অথবা জরুরী অবস্থায় সরকারী হাই প্রোফাইল লোকদের জন্য শেল্টার। অনেকরকম কল্পনাই করা যায় কিন্তু এটা আসলে যে কি তা কেউ জানেনা। (ঠিক আছে গেলাম না মেঝগোরী। যাবার জন্য সারা বিশ্বে শহরের অভাব পড়েছে নাকি!!)
১১. রহস্যময় মস্কো মেট্রো ২

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে, ধারনা করা হয় একটা গৌণ এবং গোপন ভুগর্ভস্থ মেট্রো সিস্টেম আছে, যা কিনা মস্কো মেট্রো ২ নামে পরিচিত এবং তা পাবলিক মেট্রোর পাশাপাশি পরিচালনা করা হয়। মনে করা হয় এটা স্টালিন এর সময়ে তৈরি করা হয়েছিল, কেজিবির প্রজেক্ট ছিল এটা যার কোডনেম ডি-৬। FSB (Federal Security Service of the Russian Federation) অথবা মস্কো মেট্রো এডমিনিস্ট্রেশন নিজেরা এই ভূতুড়ে সিস্টেমটার অস্তিত্ব নিশ্চিত করেনি আবার অস্বীকারও করেনি (ঝুলিয়ে রাখা যাকে বলে! বুদ্ধি ভালই। সরকার বলতে চায়, নিজেই বুঝুন। মস্কো মেট্রো ২ নিয়ে চিন্তা করবেন নাকি পাবলিক মেট্রোতে চড়ে নিজের কাজে যাবেন!)।
গুজব আছে এটা নাকি পাবলিক মেট্রো থেকে দৈর্ঘ্যে অনেক বড় এবং চারটা লাইন দ্বারা তৈরি, চলে মাটির ৫০ এবং ২০০ মিটার নিচ দিয়ে। এটা ক্রেমলিন এর সাথে FSB(আগে ছিল কেজিবি) হেডকোয়ার্টার, ভুনুকোভো-২ সরকারী বিমানবন্দর, ভুগর্ভস্থ শহর রামেনকি এবং অন্যান্য কিছু স্থানকে যুক্ত করেছে।

১২. রুম ৩৯, উত্তর কোরিয়া

উত্তর কোরিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দুর্দশাপুর্ন রাষ্ট্র। রুম ৩৯(মাঝে মাঝে বলা হয় ব্যুরো ৩৯) তাদের বিভিন্ন গোপন সংগঠন এর ভিতর সবচেয়ে গোপনীয়তাপুর্ন। উত্তর কোরিয়ার নেতার জন্য ফরেন কারেন্সি কিভাবে সংগ্রহ করা যায় তার বিভিন্ন মেথড খোঁজার জন্য এটা তৈরি করা হয়। ১৯৭০ সালের শেষ দিকে এটা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং রাজবংশীয় কিম পরিবারের লেনদেন এর দিকটা দেখতে শুরু করে। রুম ৩৯ এমন একটা গোপনতাপুর্ন প্রতিষ্ঠান যে কেউ জানেনা ওখানে আসলে কি চলে।
বিশ্বাস করা হয় যে সুইজারল্যান্ড এবং চীনে ১০ থেকে ২০ টা ব্যাংক একাউন্ট আছে যা বিভিন্ন বেআইনি কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট যেমন জালিয়াতি, মানি লন্ডারিং, মাদকদ্রব্য পাচার এবং অবৈধ অস্ত্র বিক্রি, যা এখান থেকে পরিচালনা করা হয়। জনশ্রুতি অনুযায়ী এই সংগঠনের ১২০ টা বিদেশী বানিজ্য কোম্পানি আছে যেগুলো এটা অপারেট করে। ক্ষমতাশীল পরিবারের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রনে এগুলো পরিচালিত হয়, যারা সুস্পষ্টভাবে কোন ধরনের বেআইনি কাজের সাথে নিজেদের সংশ্লিষ্ট থাকার দায় অস্বীকার করে। বিশ্বাস করা হয় রুম ৩৯ উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ের ক্ষমতাশীল ওয়ার্কার্স পার্টি বিল্ডিং এর ভিতরে অবস্থিত, কিন্তু নিশ্চিতভাবে কেউ জানেনা।

১৩. RAF মেনউইথ হিল, যুক্তরাজ্য

আমেরিকা এবং ব্রিটিশ সরকার দ্বারা পরিচালিত গ্লোবাল ECHELON স্পাই নেটওয়ার্ক এর জন্যই রয়াল এয়ার ফোর্সের মেনউইথ হিল তৈরি। এখানে আছে এক্সটেনসিভ স্যাটেলাইট ট্র্যাকিং গ্রাউন্ড সিস্টেম। এই কমিউনিকেশন্স ইন্টারসেপ্ট এবং মিসাইল ওয়ার্নিং সাইটকে বলা হয় পৃথিবির সর্ববৃহৎ ইলেকট্রনিক মনিটরিং ষ্টেশন। এটা আমেরিকার ন্যাশন্যাল রেকোনাইস্যান্স অফিস(এন আর ও) এর স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড ষ্টেশন হিসেবে কাজ করে, যা সার্ভ করে আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সিকে(ড্যান ব্রাউন এই দুইটা সংগঠনকেই তার বইয়ে উল্লেখ করেছেন। ডিশিপশন পয়েন্ট এবং ডিজিটাল ফরট্রেস)।
ধারনা করা হয় স্নায়ু যুদ্ধের সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং তাদের পুর্ব ব্লক জোটের মিলিটারি এবং কূটনৈতিক যোগাযোগ মনিটর করার জন্য ECHELON সিস্টেম তৈরি করা হয়েছিল। বর্তমানে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ খুঁজে বের করার জন্য, মাদকদ্রব্য পাচার সংক্রান্ত তথ্যের জন্য এবং রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক ইনটেলিজেন্স এর জন্য এটা ব্যবহার করা হচ্ছে। আরও বিশ্বাস করা হয় এই স্থাপনা পশ্চিমা বিশ্বে সর্বপ্রকার টেলিফোন কল এবং রেডিও কমিউনিকেশন্স ফিল্টারিং কাজের সাথে জড়িত, যদিও এটা প্রমানিত নয়(আরে বাবা, যা রটে তার কিছু তো বটে!!)। ও আরেকটা কথা, আমজনতারা কিন্তু চাইলেই এখানে ঢুকতে পারবে না, কারন এটাকে খুব কড়া পাহারায় রাখা হয়।
হায়রে ডেমোক্রেসি, তুই নাকি by the people, for the people!!! ফাইজলামির আর জায়গা পায়না বক্তারা।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ দুপুর ১:৫০
১০টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×