প্রথম এপিসোডের লিংকঃ Click This Link
দ্বিতীয় এপিসোডের লিংকঃ Click This Link
তৃতীয় এপিসোডের লিংকঃ Click This Link
৭. মিশরীয় টেম্পলের লুকানো জুতা
২০০৪ সালে মিশরে এক এক্সপিডিশন চালানোর সময় আর্কিওলজিস্টরা এক অস্বাভাবিক “সম্পদ” আবিষ্কার করেন। ইটের তৈরি দুইটা দেয়ালের মাঝের এক ছোট ফাঁকা জায়গায় একটা পাত্রের ভিতর রাখা অন্য একটি পাত্রের মধ্যে, তারপর আবার আরেক পাত্রের ভিতর সংরক্ষিতভাবে রাখা সাতটা জুতা পাওয়া যায় (সম্পদ বটে। ফারাও দের মত সম্মান কপালে জুটল। তিন স্তর বিশিষ্ট কফিনে রাখা হত ফারাও দের, আর এনারা পেলেন তিন স্তরবিশিষ্ট জার!!)। এগুলোর ভিতর দুই জোড়া ছিল বাচ্চাদের জুতা, আর অবশিষ্টগুলো কোন প্রাপ্তবয়স্কের ছিল, যে ছিল সম্ভবত খোঁড়া।
আর্কিওলজিস্ট এঞ্জেলো সেসানা বলেন যে, এই “পাদুকা পাত্র” গুলো ইচ্ছাকৃতভাবে কম করে হলেও ২০০০ বছরের বেশি সময় আগে লুকানো হয়েছিল। আন্দ্রে ভেল্ডমেইজার নামে এক প্রাচীন পাদুকা বিশেষজ্ঞ (ভাইরে, কালে কালে যে কত প্রফেশন দেখব মানুষের!! আমরা নিউ মডেলের জুতা যখন খুজছি বাজারে, আরেকজন তখন প্রাচীন আমলের জুতা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে!) এই আবিস্কারকে “বিস্ময়কর” খেতাব দিয়েছেন, কেননা জুতাগুলো খুব ভালভাবেই সংরক্ষিত ছিল (গবেষণার জন্য দুর্দান্ত স্যাম্পল পেয়ে গেল লোকটা)। তিনি সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তত্ত্ব প্রদান করেন যে, সেগুলো খুব দামী ছিল এবং পদমর্যাদা নির্দেশ করত এগুলো। তিনি আরও বলেন যে, এই পাদুকা লুকানো কে ঘিরে রহস্য জড়িত আছে, কেন মালিকেরা আবার সেগুলো পুনরোদ্ধার করলেন না!
ভেল্ডমেইজার মত প্রকাশ করেন যে, হয়ত এই এলাকায় কোন ধরনের বিক্ষোভ/উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, কোন অজানা কারনে কেউ একজন তাদের জুতা লুকিয়ে রাখে এবং পালিয়ে যায় (আমার মাথায় একটা আইডিয়া এসেছে। জুতার সোল খুলে দেখেন তো পাদুকা বিশেষজ্ঞ আংকেল। কোন ধরনের লুকানো ম্যাপ হয়ত আছে। সেটা ধরে হয়ত কোন ফারাও এর রত্নভাণ্ডার আবিষ্কার হয়েও যেতে পারে!!! ব্যাপুক বিনুদুন)।
৮. Baiae টানেল
২০০০ বছরেরও বেশি সময় আগে থেকে রোমের Baiae টেম্পল একটা জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল ছিল। এ কারনেও এটা পরিচিত ছিল যে, এখানে এমন খনিজ পদার্থ আছে যার আছে অমরত্ব দেবার ক্ষমতা এবং বিশ্বাস করা হত, এই টেম্পলে আছে “হেডেস” এ ঢোকার প্রবেশদার।
বর্তমানে শুধু রহস্যময় ধ্বংসাবশেষ পড়ে আছে। ১৯৬০ সালে রবার্ট পাগেট এবং কেইথ জোনস সিদ্ধান্ত নেন এই ধ্বংসাবশেষ ঘুরে দেখার। সংকীর্ন প্রবেশপথ দিয়ে বহুকষ্টে প্রবেশ করার পর দেখতে পান যে তারা একটা সরু টানেলে এসে পড়েছেন এবং সেটা ভলকানিক গ্যাসের গন্ধে পরিপুর্ন। পাগেট দেখতে পান যে, টানেল কমপ্লেক্সের শুরুটা গ্রীষ্মের সুর্যোদয়ের দিকে মুখ করে আছে এবং টানেলগুলো বিষুবরেখা বরাবর পুর্ব থেকে পশ্চিমে চলে গিয়েছে। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, এগুলো তৈরি করার সময় ধর্মীয় কোন ব্যাপার মাথায় রাখা হয়েছিল।
রবার্ট পাগেট এবং কেইথ জোনস টানেলের ভিতর বাতি বা মশাল রাখার জন্য অনেক কুলুঙ্গি দেখতে পান এবং অবাক হন যে, কি পরিমান মেধা খাটাতে হয়েছে এই টানেলগুলো তৈরি করতে এবং গোপন রাখতে! তারা আরও দেখতে পান যে, টানেলের ভিতর ভেন্টিলেশন সিস্টেম রয়েছে। তারা দুজনে যখন একটা খাঁড়া টানেলের শেষে এসে উপস্থিত হন, তখন তারা সবচেয়ে রহস্যময় জিনিসটার মুখোমুখি হন। একটা তিক্ষ্ম বাঁকের পরেই বয়ে যাচ্ছে একটা তপ্ত পানির ঝরনা। পাথরে তৈরি একটা ল্যান্ডিং এর মত একটা জায়গা গরম পানির ভিতর থেকে বেরিয়ে সামনের অন্ধকারের ভিতর হারিয়ে গেছে। তারা সিদ্ধান্তে আসেন যে, যদি সত্যিই “হেডেস” থেকে থাকে, তাহলে তারা সেই পৌরাণিক প্রবেশদ্বার খুঁজে পেয়েছেন (উর্বর মস্তিষ্ক!!!)। ১৯৬৫ সালে তারা কর্নেল ডেভিড লুইসের এর সহযোগিতায় নির্নয় করেন যে, ভুগর্ভস্থ ভলকানিক চেম্বারই এই তপ্ত পানির ঝরনার উৎপত্তির জন্য দায়ী। এই নতুন তথ্য তারা জানলেও, ইতিহাসের ধোঁয়াশা মাখা অতীতে কারা এই টানেল তৈরি করেছিল এবং ঠিক কি কাজে ব্যবহার করা হত সেই রহস্য উদঘাটন করতে পারেননি।
৯. এন্টিলোপ স্প্রিংস ফুটপ্রিন্ট
১৯৬৮ সালের ১লা জুন, এক সৌখিন জীবাশ্ম সংগ্রহকারী উইলিয়াম জে. মেইস্টার তার পরিবারসহ এন্টিলোপ স্প্রিংস এ ঘুরতে যান। মেইস্টার সাহেব কিন্তু তার জীবাশ্ম সংগ্রাহক জ্যাকেট নিতে ভোলেননি (ব্যাটা দেখি নিজের তালে ঠিক আছে!) এবং খুজতে থাকেন ট্রাইলোবাইট ফসিল। তিনি অবশেষে একটি ফসিল খুঁজে পান যা দেখতে ছিল কোন জুতার তলার ছাপের মত, গোড়ালির দিকটা অন্য অংশের তুলনায় বেশি ডেবে ছিল। সেই ছাপের তলায় তিনি দুইটা ট্রাইলোবাইট ফসিল খুঁজে পান। তিনি প্রথমে ভাবেন যে, কোন জুতা পরিহিত ব্যক্তি ফসিল গুলোকে মাড়িয়ে দিয়েছে। পরে পরীক্ষা করে মেইস্টার এবং সহকর্মী গবেষকরা দেখেন যে, এই ফসিল এর বয়স কমপক্ষে ৬০০ মিলিয়ন বছর এবং নির্নয় করেন যে, মিডিল ক্যাম্ব্রিয়ান হুইলার শিলাতে এই ফসিল তৈরি হয়েছে।
তারা যখন সেই এলাকায় আরও অনুসন্ধান করেন, তখন মাডস্টোন এর কিছু ফলক আবিষ্কার করেন, যেগুলো একসময় পুরো এলাকার ভূত্বক জুড়ে ছিল। রহস্য হল, জুতার ছাপ নির্দেশ করছে যে কেউ একজন ট্রাইলোবাইট গুলোর দাঁড়িয়েছিল বা হেঁটেছিল কিন্তু ট্রাইলোবাইট গুলোর নিজেদের উপর কোন প্রকার চাপ পড়ার প্রমান পাওয়া যায়নি (ভরহীন পাদুকাধারী!! আলিফ লাইলার যাদুর পাদুকা নয়ত!!)। আরও একটা ব্যাপার হল, ট্রাইলোবাইট রা জলজ জীব; তার মানে যারই জুতার ছাপ হোক না কেন সে ট্রাইলোবাইটদের এলাকায় প্রবেশ করেছিল।
ঠিক কি কারনে, কেউ জানেনা।
১০. হেলিনিকন এর পিরামিড
যদিও এটা অদ্ভুত লাগে শুনতে যে ইউরোপে পিরামিড আছে, কিন্তু কথা হল খুব অল্প হলেও পিরামিড পাওয়া যায় এখানে। এক গ্রীসেই ১৬ টা পিরামিড আছে, তাদের মধ্যে সবচেয়ে ডাকাবুকো জন হল আরগস এর হেলিনিকন পিরামিড সাহেব! এই পিরামিড সম্পর্কে প্রথম তথ্য পাওয়া যায় প্রাচীন গ্রীক ভূগোলবিদ পাউসিয়ানস এর লেখায়। গ্রীসের বর্ননায় তিনি এই স্থাপত্য সম্পর্কে বলেন, “একটি ভবন যা দেখতে পিরামিড এর মত এবং এর উপরে একটা গ্রীক ঢাল কারুশিল্পের সাহায্যে আকা রয়েছে।” তিনি একটি যুদ্ধের কথা উল্লেখ করেন যা এই পিরামিডের পাশে সংঘটিত হয়েছিল এবং একটা পুনর্মিলনও উল্লেখ করেন, যা তার পরবর্তি সময়ে সংঘটিত হয়েছিল। যারা এই যুদ্ধে নিহত হয়েছিল তাদের জন্য একটি “সাধারণ সমাধি” এখানে তৈরি করা হয়েছিল। এই পিরামিডের আনুমানিক নির্মানকাল ব্যতীত আর তেমন কিছু জানা যায়নি। নির্মানকাল প্রথমে ভাবা হয়েছিল খ্রিষ্ঠপুর্ব ৩০০ সাল কিন্তু পরে ধরা হয় খ্রিষ্ঠপুর্ব ২০০০-২৭২০।
যদি এই অনুমান সঠিক হয়, তাহলে হেলিনিকন পিরামিড মিশরের সবচেয়ে প্রাচীন পিরামিড এর চেয়েও পুরানো। কিন্তু এই পিরামিড এর সবচেয়ে বড় রহস্য কিন্তু এর বয়স নয়, তা হল কেউই এখন পর্যন্ত জানেনা এটা কারা তৈরি করেছিল এবং কি উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হত।
So, mystery remains………………….

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




